দোয়া ইউনুস প্রতিদিন ১০০০ বার পাঠের ফজিলত

দোয়া ইউনুস প্রতিদিন ১০০০ বার পাঠের ফজিলত সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? যদি আপনারা এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই এই আর্টিকেল একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। কেননা এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের সঠিক নিয়মে দোয়া পাঠ করা ও ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তাই আশা করি আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য অনেক উপকৃত হবে।
দোয়া ইউনুস প্রতিদিন ১০০০ বার পাঠের ফজিলত
সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়লে আশা করি, দোয়া ইউনুস, দোয়া ইউনুস পাঠের ফজিলত, দোয়া ইউনুস কখন পড়তে হয়, দোয়া ইউনুস কতবার পড়লে খতম হয়, দোয়া ইউনুস কত নাম্বার আয়াত, দোয়া ইউনুস পড়ার নিয়ম কি এই সকল বিষয়ে জেনে যাবেন।

ভূমিকা 

দোয়া ইউনুস ইসলামে একটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া, যা নবী ইউনুস (আ.) বিপদের সময় আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও সাহায্যের জন্য পড়েছিলেন। এই দোয়াটি পড়ার মাধ্যমে মুমিনগণ আল্লাহর রহমত, ক্ষমা এবং সাহায্য লাভের প্রত্যাশা করেন। প্রতিদিন ১০০০ বার দোয়া ইউনুস পাঠ করলে তা দুশ্চিন্তা, বিপদ এবং কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়ার এক শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত। এই দোয়ার নিয়মিত পাঠ মনের প্রশান্তি আনে, আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং বিপদের সময়ে আল্লাহর কাছ থেকে সাহায্য লাভের আশা জাগায়। ইসলামে বিশ্বাসী অনেকেই তাদের জীবনের জটিল সময়ে এই দোয়া পাঠ করে থাকেন এবং মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এছাড়াও দোয়া ইউনুস প্রতিদিন ১০০০ বার পাঠের ফজিলত কতটুকু হয়েছে তাও এই পোষ্টের মাধ্যমে জেনে যাবে।

দোয়া ইউনুস

দোয়া ইউনুস হলো কোরআনের একটি বিশেষ দোয়া, যা প্রায়ই কঠিন বিপদের সময়ে সাহায্যের জন্য পাঠ করা হয়। এই দোয়াটি পবিত্র কোরআনের সূরা আল-আম্বিয়ায় (আয়াতঃ ৮৭) উল্লেখিত হয়েছে এবং এটি হজরত ইউনুস (আ.) এর দ্বারা পাঠ করা হয়েছিল। 

যখন তিনি সমুদ্রের গভীরে মাছের পেটের মধ্যে ছিলেন। এই দোয়াটিকে কঠিন বিপদ থেকে মুক্তির দোয়া হিসেবে ধরা হয় এবং তা নিয়মিত আমলের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়।

  • দোয়া ইউনুস বাংলা উচ্চারণঃ "লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ-জালিমীন"
  • বাংলা অর্থঃ “তুমি ব্যতীত কোনো মাবুদ নেই, তুমি পবিত্র; আমি নিশ্চয়ই জালিমদের দলভুক্ত।”

দোয়া ইউনুস পাঠের ফজিলত

দোয়া ইউনুস অত্যন্ত কার্যকারী একটি দোয়া। আমাদের ইসলাম ধর্মে এই দোয়াটিকে বলা হয় বিপদের হাত থেকে রক্ষা করার তাবিজ। দোয়া ইউনূসের মহত্ব ও গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহতালার নবী ইউনুস (আ.) এই দোয়াটি পাঠ করে আল্লাহর অশেষ রহমতে মাছের পেট থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। 
যদি কোন মানুষ দোয়া ইউনুস কয়েকবার পড়ে দোয়া করে তাহলে তার দোয়া আল্লাহ তায়ালা কবুল করে। যদি কোন মানুষ বিপদগ্রস্ত বা অন্যান্য কঠিন অবস্থায় রয়েছে এ সময় আল্লাহ তাআলার কাছে ইউনুস পাঠ করলে আশা করি সে বিপদ থেকে আল্লাহ রক্ষা করতে সাহায্য করবে। তাহলে আপনারা বুঝতেই পারছেন দোয়া ইউনুস পাঠের ফজিলত কতটুকু রয়েছে।

দোয়া ইউনুস প্রতিদিন ১০০০ বার পাঠের ফজিলত

অনেকেই দোয়া ইউনুস প্রতিদিন ১০০ বার আবার ১০০০ বার পাঠ করেন। আবার কেউ কেউ এক লাখ পঁচিশ হাজার বার পাঠ করেন। কিন্তু আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছে যারা দোয়া ইউনুস প্রতিদিন ১০০০ বার পাঠের ফজিলত কি কি রয়েছে তা জানেন না। 

তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলে আপনাদের এ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। তাই দেরি না করে আর্টিকেল মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

কোন ব্যক্তি যদি দৈনিক ১০০০ বার দোয়া ইউনুস পড়তে পারে তাহলে পদমর্যাদা সমুন্নত হয়। এছাড়াও আল্লাহ তায়ালা এই দোয়াটি পাঠ করার জন্য রুজি রোজগারের সমৃদ্ধি দান করেন। শুধু তাই নয় আমাদের মধ্যে অশান্তি পেরেশানি দুঃখ যন্ত্রণা কষ্ট সবকিছু দূর করতে আল্লাহতালা সাহায্য করে। এই দোয়াটি 1000 পাঠ করলে আল্লাহ তায়ালা তার সকল কল্যাণের দ্বার খুলে দেন। শয়তানের হাত থেকে তাকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
এছাড়াও দোয়া ইউনুস ১ লাখ ২৫ হাজার বার করলে (যাকে বলা হয় খতমে ইউনুস) সব ধরনের অপকার থেকে রক্ষা, বিভিন্ন রোগ-শোক থেকে রক্ষা এবং বিপদ-আপদ থেকে দূরে থাকা যায় বলে বিভিন্ন বর্ণনায় রয়েছে। শুধু তাই নয় এই দোয়াটি পাঠ করলে হতাশা এবং তাড়াহুড়া করে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে রক্ষা করে। 

এছাড়াও এই দোয়াটি পাঠ করার ফলে ক্ষতি ও অসুস্থতা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তাহলে আপনারা হয়তো নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন দোয়া ইউনুস প্রতিদিন ১০০০ বার পাঠের ফজিলত এবং দোয়া ইউনুস ১ লাখ ২৫ হাজার বার পাঠের ফজিলত সম্পর্কে।

দোয়া ইউনুস কখন পড়তে হয়

আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছে যারা দোয়া ইউনুস কখন পড়তে হয় জানেন না। সাধারণত এই দোয়াটি পাঠ করার একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। ওই নির্দিষ্ট সময়ে পাঠ করলে দোয়া ইউনুস এর ফজিলত অনেক গুণ বেড়ে যায়। তবে সাধারণত বিপদ-আপদের সময় বা দুঃশ্চিন্তার সময় এই দোয়া বেশি বেশি করে পড়তে হয়। এছাড়াও --

  • যখন আপনি হঠাৎ অসুস্থতা হয়ে যাবেন বা ক্ষতি কিংবা ক্ষতির দ্বারা আক্রান্ত হবেন ওই সময় দোয়া ইউনুস পাঠ করতে পারেন।
  • যখন আপনি কোন সমস্যার মধ্যে পড়েন ও বিভ্রান্তি থেকে বের হওয়ার পথ খুঁজে পান না তখন দোয়া ইউনুস পাঠ করলে সে বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
  • এছাড়াও গর্ভবতী মহিলাদের সন্তান প্রসবের সময় অসুবিধা এবং জটিলতা কমাতে দোয়া ইউনুস বেশি বেশি পাঠ করা ভালো।
  • আমার/আপনার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এবং পরিবর্তনের আগে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে দোয়া ইউনুস দোয়াটি পাঠ করুন।
  • এছাড়াও দোয়া ইউনুস অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনা বা বিপর্যয় মোকাবেলা করার সময় পাঠ করুন।
  • ঝড়, ভূমিকম্প, আগুন বা যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় দোয়া ইউনুস পাঠ করুন।
  • এছাড়াও আপনারা যারা একা একা ভ্রমণের সময় ভয় পান কিংবা অন্য কোন জায়গায় যে হারিয়ে যান তাহলে সাথে সাথেই দোয়া ইউনুস পাঠ করুন।
  • আল্লাহর দরবারে গুনাহ জন্য ক্ষমা প্রার্থনা এবং তাওবা করার সময় দোয়া ইউনুস পাঠ করে মোনাজাত করুন।
পাঠক উপরে উল্লেখিত সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য দোয়া ইউনুস অত্যন্ত কার্যকারী। তাই আপনারা চাইলে এই দোয়াটি ভালোভাবে মুখস্ত করে সব সময় পড়ার চেষ্টা করুন। আশা করি এই দোয়াটি পড়ার কারণে আল্লাহ তাআলা আপনার মনের আশা বিপদ-আপদ বালা-মুসিবত সবকিছু থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে।

দোয়া ইউনুস পড়ার নিয়ম কি

কোনো বিপদ-আপদ, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ ইত্যাদি থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহর কাছে দোয়া ইউনুস পাঠ করার জন্য অত্যন্ত কার্যকর আমল হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু এই দোয়া ইউনুস কিভাবে কখন এবং কতবার পড়তে হয় এবং দোয়া ইউনুস পড়ার নিয়ম কি তা অনেকেই জানেন না। 
তাই আজকে আমি আপনাদের এ বিষয়টি সম্পূর্ণ সঠিকভাবে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। তাই আসুন আর দেরি না করে বিস্তারিত জেনে নিন।

দোয়া ইউনুস পড়ার সঠিক নিয়ম হলোঃ

তাহাজ্জুদের নামাজেঃ রাতে তাহাজ্জুদের নামাজের পর এই দোয়া পড়লে আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা লাভের সম্ভাবনা বাড়ে।

অযুর পরঃ পবিত্র অবস্থায় অযু করে এই দোয়া পড়া বিশেষভাবে উপকারী। এটি ইবাদতের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

বিপদের মুহূর্তেঃ কোনো কঠিন পরিস্থিতিতে শান্তি ও সুরক্ষার জন্য এই দোয়া পাঠ করলে মনের মধ্যে ধৈর্য ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়।

উপরে উল্লেখিত সময়ে আপনারা চাইলে দোয়া ইউনুস পড়তে পারেন। তবে এই দোয়া কবুল ও উপকারিতা লাভের কিছু নিয়ম নীতি রয়েছে যা নিচে আলোচনা করা হলো-

প্রথম দোয়া ইউনুস পাঠ করার পর আল্লাহ তাআলার কাছে কাঙ্খিত উদ্দেশ্য নিয়ে দোয়া করলে মহান আল্লাহ তায়ালা দোয়াটি কবুল করবেন। তবে এক্ষেত্রে দোয়া ইউনুস কবুলের শর্তাবলী ও আদব ঠিক থাকতে হবে। 

এই দোয়াটি যে সকল আমলকারীরা পড়বেন তারা অবশ্যই হালাল উপার্জন থেকে খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করতে হবে এছাড়াও হালাল অর্থের ওপর জীবন যাপন করতে হবে এবং দোয়া ইউনুস শুরু করার সময় মহান আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা ও নবী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওপর দুরুদ পাঠ করতে হবে। 

দোয়া শেষ হয়ে গেলে আবারও দুরুদ শরীফ পাঠ করা ভালো। পাশাপাশি আমলকারীদের অন্তরে দোয়া কবুল হওয়ার দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে আসতে হবে। দোয়া ইউনুস পাঠ করার সাথে সাথে একান্ত বিনয়-নম্রতার সাথে কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে বারবার দোয়া করতে হবে। এইভাবে সঠিক নিয়ম অনুসরণ করে দোয়া পাঠ করলে আশা করা যায় আল্লাহ তায়ালা আপনার দোয়াটি কবুল করবেন।

দোয়া ইউনুস কত নাম্বার আয়াত

দোয়া ইউনুস কত নাম্বার আয়াত, তা হয়তো আমাদের মুসলমানের মধ্যে অনেকেই জানেন না। আমাদের মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের দশম সূরা হলো সূরা ইউনুস। এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা হল ১০৯ টি। 

সূরা ইউনূসে ইসলামের মৌলিক উদ্দেশ্যগুলি আখিরাত তাওহীদ ইত্যাদি বিষয়ে যথার্থতা বিশ্বচরাচর এবং তার মধ্যকার পরিবর্তন-পরিবর্তনশীল ঘটনাগুলোর মাধ্যমে প্রমাণ করে দিয়েছেন। সাধারণত এই সূরাটি কিছু উপদেশ মূলক এবং ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর ও কাহিনী অবতারণা করে সে সমস্ত মানুষদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। যারা আল্লাহ তাআলার এই সকল প্রকাশ্য নির্দেশ সমূহের একটুও চিন্তা করেন না।

দোয়া ইউনুস কতবার পড়লে খতম হয়

পাঠক আমরা অনেকেই দোয়া ইউনুস পড়তে পারি আবার অনেকেই পারে না। কিন্তু আমাদের মনে একটি প্রশ্ন সব সময় ঘুরপাক খায় দোয়া ইউনুস কতবার পড়লে খতম হয়? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন।

দোয়া ইউনুস ১ লাখ ২৫ হাজার বার পড়লে খতম হয়। আপনারা যারা এই দোয়াটি ১০০ বার পড়েন তাদেরও আমল হবে। আবার যারা ১ হাজার বার পড়েন তাদেরও আমল হবেন। তবে যারা খতম দিতে চান তারা উপরে উল্লেখিত বার পড়লে আশা করি দোয়া ইউনুস খতম হবে।

লেখকের মন্তব্যঃ দোয়া ইউনুস প্রতিদিন ১০০০ বার পাঠের ফজিলত

সম্মানিত পাঠক আপনারা হয়তো সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে দোয়া ইউনুস প্রতিদিন ১০০০ বার পাঠের ফজিলত কতটুকু রয়েছে তা জানতে পেরেছেন। যদি আপনি কোন বিপদের সম্মুখীন হন বা কোন কঠিন সময় পার করেন তাহলে এই দোয়াটি পাঠ করলে আল্লাহর রহমতে আপনি সেই সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন। 

এই দোয়াটি একটি শক্তিশালী দোয়া। তাই আল্লাহর কাছে কোন কিছু চাওয়ার আগে দোয়ায়ে ইউনুস পাঠ করে চাইলে আল্লাহ অবশ্যই কবুল করবেন। তাই আমাদের দেওয়া তথ্যগুলো অনুসরণ করে আপনি আমল করলে আল্লাহ তা'আলা আপনার সম্পূর্ণ আশা পূরণ করবেন। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে আমল করার তৌফিক দান করুন। (আমিন) 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪