ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা - ফেসবুক থেকে আয় করার উপায়
ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা এই বিষয়টি সম্পর্কে যদি আপনার জানা না থাকে তাহলে এই
আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। এই আর্টিকেল সম্পূর্ণ পড়লে আশা করি আপনার ফেসবুকের যত
ধরনের প্রশ্ন রয়েছে সবগুলোর উত্তর পেয়ে যাবেন। তাই আর দেরি না করে আসুন
বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন।
যদি আপনারা এই আর্টিকেল সম্পূর্ণ পড়তে পারেন তাহলে ফেসবুক থেকে কত ভিউ হলে কত
টাকা ইনকাম করতে পারবেন বা ফেসবুকে কিভাবে ইনকাম করা যায় তা সম্পূর্ণ আলোচনা করা
হয়েছে। তাই আর্টিকেলটি পড়লে আশা করি আপনারা অনেক উপকৃত হবেন।
ভূমিকা
বিশ্বের অন্যতম সেরা প্লাটফর্ম হল ফেসবুক। ফেসবুকে বর্তমান সময়ে খুব সহজে ইনকাম
করার কয়েকটি উপায় রয়েছে যা আপনারা অনেকেই জানেন না। হয়তো আপনারা এই বিষয়টি
জানেন যে আগে ভিডিও দেখে ইনকাম করা যেত এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করা যেত
কিন্তু আপনারা কি জানেন রিলস থেকে ইনকাম করা যায়? হ্যাঁ, এখন বর্তমান সময়ে এই
সেক্টর থেকেও খুব সহজে ইনকাম করা সম্ভব। তবে যদি আপনি সঠিক দিক নির্দেশনা অনুসরণ
করেন তাহলেই এটা সম্ভব। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলে ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা হয় এবং
রিলস থেকে কিভাবে ইনকাম করা যায় তার সবগুলো সঠিকভাবে আলোচনা করব। তাই আসুন আর
দেরি না করে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন।
ফেসবুকের ভিউ কি? জেনে নিন
ফেসবুকের ভিউ বলতে বোঝায়, কোনো ভিডিও, পোস্ট বা কন্টেন্ট কতবার দেখা হয়েছে।
ফেসবুকে ভিউ কাউন্ট হলো একটি পরিসংখ্যান, যা দেখায় আপনার কন্টেন্ট কতজন মানুষ
দেখেছেন বা স্ক্রল করে থেমে কিছু সময়ের জন্য দেখেছেন। এটি সাধারণত ভিডিও এবং পেজ
ইনসাইটসের জন্য ব্যবহৃত হয়।
ফেসবুকের ভিডিও ভিউ মূলত তখনই কাউন্ট হয় যখন কেউ অন্তত ৩ সেকেন্ডের জন্য ভিডিওটি
দেখে। ভিউ সংখ্যা কেবল কন্টেন্টের জনপ্রিয়তা এবং এনগেজমেন্ট বোঝায় না, বরং
কন্টেন্টের ব্যাপ্তি বা অডিয়েন্স রিচকেও প্রকাশ করে। ভিউ সংখ্যা বেশি হলে এটি
কন্টেন্টের আরো মানুষের কাছে পৌঁছানোর সম্ভাবনা বাড়ায়। আর এই ভিউ বিভিন্ন
কনটেন্টের ওপর নির্ভর করে যেমনঃ-
ভিডিওঃ মূলত আপনার ভিডিওর ভিউ গণনা তখনই হবে, যখন আপনার ভিডিওগুলোতে ৩
সেকেন্ড বা তার বেশি সময় ধরে কোনো একজন ব্যক্তি দেখবেন।
ছবি বা পোস্টঃ আপনার পোস্ট বা ছবির ক্ষেত্রে বলতে বোঝানো হয়েছে যে কতজন
ব্যক্তি বা ব্যবহারকারী আপনার পোস্ট বা ছবি তাদের নিউজ ফিল্ডে দেখিয়েছে। এর উপর
নির্ভর করে আপনার ভিউ কাউন্ট হয়ে থাকে।
স্টোরিঃ ফেসবুকের স্টোরিতে ইউ তখনই কাউন্ট করা হয় যখন আপনার স্টোরি ঠিক
সম্পূর্ণ দেখা হয় বা অধিকাংশভাবে দেখে থাকে। মূলত আপনার কুসংখ্যার ওপর নির্ভর
করেই জানতে পারবেন আপনার পোস্ট ভিডিও বা কনটেন্ট কতগুলো মানুষের কাছে পৌঁছিয়েছে
আবার জনপ্রিয় পেয়েছে।
ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা
ফেসবুকে কত ভিউতে কত টাকা আয় করা যাবে এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে কেবল ভিউয়ের
সংখ্যার উপর নয়, আরও অনেকগুলো ফ্যাক্টরের উপর। সাধারণত ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা
এটা নির্ভর করে সম্পূর্ণ কন্টেন্টের ধরন, বিজ্ঞাপনের ধরন, ফেসবুকের পলিসি ও
ভিউয়ের ওপর।
যেমন আপনার ভিডিও যদি মানসম্মত হয়ে থাকে এবং দর্শকের মনের মত আকর্ষণীয় হয়ে
থাকে তাহলে সেই ভিডিওগুলোতে অনেক বেশি ভিউ আসে। তবে, ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা
জানাতে হলে আপনাকে সবার প্রথমে CPM, CPC ও CTR সম্পর্কে জানতে হবে। তাই আসুন আর
দেরি না করে জেনে নিন।
- CPM মানেঃ প্রতি ১ হাজার ভিউতে বিজ্ঞাপনের লোকেরা কত টাকা দেয় সেটা বোঝা যায়।
- CPC মানেঃ যখন কোনো বিজ্ঞাপনে ভিউয়ার ক্লিক করে, ঠিক তখন কত টাকা পাওয়া যায় সেটা বোঝা যায়।
- CTR মানেঃ কত পার্সেন্ট মানুষ বা ভিউয়ার বিজ্ঞাপনে ক্লিক করছে তা বোঝার জন্য CTR ব্যবহার করা হয়।
যেমনঃ- আপনার ভিডিওতে ১ হাজার ভিউ এর জন্য দেওয়া হয়ঃ
- CPM -- ১ ডলারঃ ১ ডলার
- CPC -- ০ দশমিক ১ ডলারঃ ০ দশমিক ১ ডলার -- (১০ জন মানুষ ক্লিক করলে)
- CTR -- ১০ পার্সেন্টঃ ০ দশমিক ১ ডলার -- (১০০ জন ভিউয়ারের মধ্যে ১০ জন ক্লিক করলে)
১০ হাজার ভিউ এর জন্যঃ-
- CPM -- ১ ডলারঃ ১০ ডলার
- CPC -- ০ দশমিক ১ ডলারঃ ১ ডলার -- (১০০ জন মানুষ ক্লিক করলে)
- CTR -- ১০ পার্সেন্টঃ ১ ডলার -- (১০০০ জন ভিউয়ারের মধ্যে ১০০ জন মানুষ ক্লিক করলে)
উপরে দেখানো মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই কত ভিউ এ কত টাকা হয় তা সঠিকভাবে নির্ধারণ
করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি আরো অন্য একটি উপায়ে কত ভিউ কত টাকা পাওয়া যাবে সেটা
নির্ধারণ করতে পারবেন। যেমন- একটু খেয়াল করলে দেখবেন যদি বাইরের দেশ থেকে ভিউ
হয়।
তাহলে টাকা অনেক বেশি পাওয়া যায় এবং স্থানীয় বাংলাদেশ থেকে ভিউ হলে টাকার
পরিমাণ অনেক কম পাওয়া যায়। তাই বলা যায়, এটা সম্পূর্ণ দেশের উপর নির্ভর করে কত
ভিউ কত টাকা হয় তা নির্ধারণ করা যাবে। উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো পড়ে আশা করি
ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা হয় তা সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন।
১ মিলিয়ন ভিউতে ফেসবুক কত টাকা দেয়
ফেসবুকে ১ মিলিয়ন ভিউ থেকে আয় নির্ভর করে আপনার ভিডিও কন্টেন্টের মান, দর্শক
অঞ্চল, এনগেজমেন্ট, এবং বিজ্ঞাপনদাতাদের ওপর। ফেসবুক সাধারণত ইন-স্ট্রিম অ্যাডস
ব্যবহার করে ভিডিও কন্টেন্ট মনিটাইজ করার সুযোগ দেয়। এতে ভিডিওর মাঝে বিজ্ঞাপন
দেখানো হয় এবং ভিডিও নির্মাতারা ভিউ অনুযায়ী আয় করতে পারেন।
ফেসবুকে ১ মিলিয়ন ভিউতে আয় ২০০ থেকে ১,০০০ ডলারের মধ্যে হতে পারে, যা টাকার
মূল্যে প্রায় ২০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এই আয় মূলত ভিউয়ারদের
অবস্থান এবং বিজ্ঞাপনদাতাদের বাজেটের ওপর নির্ভর করে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপীয় দেশের ভিউয়ারদের জন্য আয়ের হার বেশি হতে পারে,
কারণ এই অঞ্চলের বিজ্ঞাপন দাতারা সাধারণত উচ্চ দামে বিজ্ঞাপন দেয়। সাধারণত এটি
আমি একটি আনুমানিক ধারণা দিলাম মাত্র। ফেসবুকের আয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো
নিয়মিত এবং আকর্ষণীয় কন্টেন্ট তৈরি করা, যা ভিউ এবং এনগেজমেন্ট বাড়াতে সহায়ক।
10000 ভিউতে ফেসবুক কত টাকা দেয়
প্রিয় বন্ধুরা আপনাদের মধ্যে এমন অনেকই রয়েছে যারা 10000 ভিউতে ফেসবুক কত টাকা
দেয় এই বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে চাই। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলে আপনাদের
এই বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। বন্ধুরা যদি আপনার
ফেসবুক পেজে দশ হাজার ফলোয়ার থাকে এবং ৫টি ভিডিও ও ৭ দিনের মধ্যে ৬ লাখ ভিউ থাকে
তাহলে আপনি বিভিন্ন রিলসের অ্যাড দেওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
আর এই এড দেখার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই টাকা ইনকাম করতে পারবেন। তবে এখানে আরেকটি
বিষয় আপনাদের জানা প্রয়োজন সেটি হলো অ্যাডগুলো থেকে যে টাকাগুলো ইনকাম হবে তার
৫৫ শতাংশ আপনি পাবেন এবং ৪৫% ফেসবুক পাবে। কয়েক বছর আগে ফেসবুকে কোনরকম রিলস
দেওয়া যেত না।
আগে শুধু ভিডিও ও বিভিন্ন ওয়েবসাইটে গুগল এডসেন্স এপ্রুভ করার মাধ্যমে অর্থ
উপার্জন করেছেন। কিন্তু এখন বর্তমানে ফেসবুক থেকেও অর্থ উপার্জন করার একটি নতুন
মাধ্যম ঘোষণা করেছেন ফেসবুক মেটা। এই নতুন সিস্টেমে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী
বিভিন্ন রেলস দেখার সময় স্টার দিতে পারবেন।
প্রতি ১০০ স্টারে আপনি পাবেন ১ ডলার। রিস বোনাস বা প্রোগ্রাম রিলস আসার পর থেকে
কমবেশি প্রত্যেকটা বাড়িতে অনেক মেয়েদের এবং অধিকাংশ বেকার ছেলেদের রিলস করার
সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন facebook মেটা। তাই যদি কেউ কোনো ভিডিওতে ৩০ দিনে অর্থাৎ
১ মাসে ১০ হাজার ভিউ নিয়ে আসতে পারে, তাহলে আশা করি টাকা ইনকাম করতে পারবে।
ফেসবুক থেকে আয় করার উপায়
ফেসবুক শুধু একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নয়, এটি বর্তমানে আয়ের একটি শক্তিশালী
প্ল্যাটফর্ম। অনেক মানুষ রয়েছে যারা কন্টেন্ট নির্মাতা, উদ্যোক্তা এবং
ব্যবসায়ীরা ফেসবুক ব্যবহার করে মাসিক ভালো আয় করতে পারছেন। তাই আপনিও যদি তাদের
মত করে ফেসবুক থেকে হাইকোর্টে চান, তাহলে নিচে ফেসবুক থেকে আয় করার কয়েকটি
জনপ্রিয় পদ্ধতি দেওয়া হলো জেনে নিন।
ফেসবুক পেজ মনিটাইজেশনঃ আপনার ফেসবুক পেজে যদি অনেক ফলোয়ার এবং নিয়মিত
এনগেজমেন্ট থাকে, তাহলে ইন-স্ট্রিম অ্যাডসের মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারেন। শুধু
তাই নয় আপনি চাইলে, ভিডিও কন্টেন্টে বিজ্ঞাপন চালিয়েও তাকা ইনকাম করা শুরু করতে
পারবেন।
স্পন্সরশিপ এবং ব্র্যান্ড চুক্তিঃ ফেসবুকে বড় ফলোয়ার বেস থাকলে বিভিন্ন
ব্র্যান্ডের সঙ্গে স্পন্সরশিপ চুক্তি করতে পারেন। ব্র্যান্ড আপনার মাধ্যমে তাদের
পণ্য প্রচার করতে আগ্রহী হতে পারে, যা আয়ের জন্য একটি ভালো উপায়।
এফিলিয়েট মার্কেটিংঃ ফেসবুক পেজ বা প্রোফাইলে এফিলিয়েট মার্কেটিং লিঙ্ক
শেয়ার করে আয় করা যায়। যখন দর্শকরা সেই লিঙ্কের মাধ্যমে পণ্য কিনবে, তখন আপনি
কমিশন পাবেন।
ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে ব্যবসাঃ ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে পণ্য বিক্রি করা একটি
সহজ উপায়। বিভিন্ন পণ্য যেমন পোশাক, ইলেকট্রনিক্স, এবং অন্যান্য পণ্য এখানে
বিক্রি করে আয় বাড়ানো যায়। তাই আপনি চাইলে ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে এইভাবে ব্যবসা
শুরু করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে আয়ঃ আপনি চাইলে একটি ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করে বিশেষ
তথ্য বা সহায়তা প্রদান করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। গ্রুপের ভেতর থেকে
মেম্বারদের সাবস্ক্রিপশন ফি বা প্রিমিয়াম কনটেন্ট অফার করে আয় করতে পারেন।
লেখকের মন্তব্য | ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা
প্রিয় বন্ধুরা সর্বশেষে আপনাদের একটি কথাই বলতে চাই ফেসবুক থেকে ইনকাম করতে
চাইলে আপনাকে অবশ্যই আগে জানতে হবে ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা হয়। আশা করি উপরে
সম্পূর্ণ বিষয়গুলো পড়ে আপনি এই বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন।
সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আপনি যদি একটু উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই কমেন্টের
মাধ্যমে জানিয়ে দিবেন। এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে জানাই অনেক
অনেক ধন্যবাদ।
এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url