নগদ একাউন্ট হ্যাক হলে করণীয় - কিভাবে নগদ একাউন্ট হ্যাক হয়

নগদ একাউন্ট হ্যাক হলে করণীয় এ বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। কারণ নগদ একাউন্ট হ্যাক হলে আপনাদের কি কি করণীয় রয়েছে তা এই আর্টিকেল এর মধ্যে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করা যায় সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়লে আপনারা খুব সহজেই এই বিষয়টি সম্পর্কে জেনে যাবেন।
নগদ একাউন্ট হ্যাক হলে করণীয় কি জেনে নিন
এই আর্টিকেলটি একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে কোন ফোন ব্যাবহারকারীর নগদ একাউন্ট হ্যাক হয়, কাদের নগদ একাউন্ট হ্যাক হয়, কিভাবে নগদ একাউন্ট হ্যাক হয়, নগদ অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা, নগদ কাস্টমার কেয়ার নাম্বার, এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে যাবেন।

ভূমিকা

বর্তমান সময়ে নগদ একাউন্ট প্রচুর পরিমাণে হ্যাকাররা হ্যাক করে নিচ্ছে। তার একটাই কারণ সরকারিভাবে বয়স্ক মহিলারা বিভিন্ন ধরনের টাকা পেয়ে থাকে যেমন বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা সহ আরো নানা ভাবে টাকা নগদে পেয়ে থাকে। আর হ্যাকাররা সে সকল মানুষদের টার্গেট করে যারা এই সরকারি টাকাগুলো পায়। তবে নগদ একাউন্ট হ্যাক হলে করণীয় কি এবং কিভাবে নগদ একাউন্ট হ্যাক হয় A to Z জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। তাই আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ রইলো আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

কোন ফোন ব্যাবহারকারীর নগদ একাউন্ট হ্যাক হয়

বিশেষ করে যারা মুঠোফোন ব্যবহার করেন তাদের ৯৫% ফোনের নগদ একাউন্ট হ্যাক হয়ে থাকে। তার একটাই কারণ সেটি হলো অনেক মানুষেরই মুঠোফোনে সরকারি ভাতা পেয়ে থাকে। অধিকাংশ মানুষের সরকারি ভাতা মুঠোফোনে আসে। আর এই মুঠোফোনের নগদের অ্যাক্সেস থাকে না। 

নগর দুটি সিস্টেমে ব্যবহার করা হয় একটি হলো USSD কোড দিয়ে আরেকটি হলো Apps এর মাধ্যমে। যেহেতু কোনটারই এক্সেস থাকে না সেহেতু সরকারি ভাতার টাকা অনেক হ্যাকাররা স্মার্টফোনে এক্সেস করে নিতে পারে। ফলে আপনার নগদ একাউন্ট খুব সহজেই হ্যাক করে নিয়ে থাকে। 
তাহলে বুঝতেই পারছেন কোন ফোন ব্যাবহারকারীর নগদ একাউন্ট হ্যাক হয়। তাই যখনই আপনার নগদ একাউন্টে টাকা আসবে যত দ্রুত সম্ভব সেটি তুলে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। তাহলে আপনার নগদ একাউন্ট থেকে কেউ টাকা নিতে পারবে না।

কাদের নগদ একাউন্ট হ্যাক হয়

সাধারণত সব নগদ একাউন্ট হ্যাক হয় না। কিছু একাউন্টের উপর হ্যাকাররা টার্গেট করে থাকে। বিশেষ করে যে সকল মানুষেরা সরকারি ভাতা পায় যেমন বয়স্ক ভাতা বিধবা ভাতা স্টুডেন্ট উপপতি পঙ্গু ভাতা এই ধরনের গ্রাহককে হ্যাকারা টার্গেট করে থাকেন। 

আর যখনই একাউন্টে সরকারিভাবে টাকা আসে ঠিক তখনই হ্যাকাররা নগদ একাউন্ট হ্যাক করে নেয়। তবে নগদ একাউন্টে টাকা আসার সাথে সাথেই আপনারা যত দ্রুত সম্ভব তুলে নিলে এই ধরনের সমস্যা থেকে পাওয়া যাবে। নয়তো পরবর্তীতে অনেক ধরনের সমস্যায় পড়ে যাবেন।

নগদ একাউন্ট হ্যাক হলে করণীয়

আজকে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব সেটি হল নগদ একাউন্ট হ্যাক হলে করণীয় কি? যদি হ্যাকাররা আপনার কাছ থেকে কোন কোড নিয়ে নেই বা আপনি করতে বলে থাকেন তাহলে আপনাকে কিছু পদক্ষেপ অনুসরণ করতে হবে। 

অর্থাৎ আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে টাকা নিয়ে গেলে যে সকল পদক্ষেপ নিবেন তা আজকে আমি এই আর্টিকেলের অংশটুকুতে আলোচনা করব। তাই আপনারা যদি এ ধরনের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে অবশ্যই আমাদের সাথেই থাকুন।
১) যদি হ্যাকাররা আপনার নগদ একাউন্টের টাকা নিয়ে যাই তাহলে আপনি প্রথমে নগদ কাস্টম কেয়ারে ফোন দিবেন। নগদ কাস্টম কেয়ার এর নাম্বার হলো 16167 অথবা 09609616167। ফোন করার পর নগদ একাউন্টের কাস্টমার আপনার সাথে কথা বলার জন্য বলবে ঠিক তখন আপনাকে তাদের কাছে সকল বিষয়গুলো বিস্তারিত বলতে হবে। 

এরপর তারা যাচাই বাছাই করে দেখবে যে আপনার একাউন্টের টাকা অন্য কোন নাম্বারে গিয়েছে কিনা। এরপর যদি আপনার একাউন্টের টাকা সেই নাম্বারে যে থাকে তাহলে কিছু সময়ের মধ্যেই তার অ্যাকাউন্ট লক করে দেবে।

২) এরপর আপনাকে আরেকটি পদক্ষেপ নিতে হবে সেটা হলো কাস্টম কেয়ারে ফোন করে কথা বলে তখনই আপনার সমস্ত ডিটেইলস দিয়ে পিন নাম্বার পরিবর্তন করে নিতে হবে। মূলত আগের যে পিন নাম্বারটি রয়েছে সেটি চেঞ্জ করে নতুনভাবে একটি পিন নাম্বার দেবেন। 

এতে করে আপনার অ্যাকাউন্টটি অনেক স্ট্রং থাকবে। তবে চেষ্টা করবেন পিন নাম্বার বিভিন্ন সংখ্যা নাম এবং আরো অন্যান্য @, # % ইত্যাদি দিবেন। উদাহরণস্বরূপঃ (147@%kH68@Me) এরকমভাবে পাসওয়ার্ড দেওয়ার চেষ্টা করবেন।

৩) এরপর আপনি চাইলে আরো একটি পদক্ষেপ নিতে পারেন সেটি হল পুলিশের কাছে আপনার অ্যাকাউন্টের টাকা হারিয়ে গিয়েছে বলে জিডি করতে পারেন। আপনারা চাইলে ঘরে বসে অনলাইনে জিডি করতে পারেন অথবা নিকটস্থ থানায় গিয়ে যোগাযোগ করে জিডি করতে পারেন। সেখানে গিয়ে আপনার বিস্তারিত তথ্য সঠিকভাবে জানান। তাহলে পুলিশ আপনার টাকাগুলো ফিরিয়ে নিয়ে সে দিবে।
৪) আপনার যে নগদ একাউন্ট হ্যাক হবে সেই একাউন্টের সিম নাম্বারটি আপনার ফোনে তুলুন। এরপর নগদ অ্যাপস ডাউনলোড করে ইন্সটল করুন। এরপর নগদ অ্যাপ এসে নাম্বার দিয়ে লগইন করুন। আর যদি আপনার স্মার্টফোন থাকে তাহলে অবশ্যই লগইন করুন। এরপর একটা নগদ অ্যাপসে একটা নগদ একাউন্টের অ্যাক্সেস থাকে। 

তাই হ্যাকারের কাছে যদি আপনার নগদ একাউন্টের অ্যাক্সেস চলে গিয়ে থাকে তাহলে আপনার ফোনে অ্যাক্টিভ থাকবে। তাহলে দ্বিতীয়বার হ্যাক বা টাকা চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। তাহলে আশা করি নগদ একাউন্ট হ্যাক হলে করণীয় টা সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন।

কিভাবে নগদ একাউন্ট হ্যাক হয়

হ্যাকাররা মূলত যে সকল ব্যক্তিরা সরকারি ভাতা পায় তাদের সকল ইনফরমেশন ডাটা কালেক্ট করে নিয়ে আসে। এরপর সেই নাম্বারগুলোতে হ্যাকার ফোন দিয়ে থাকে। কিন্তু হ্যাকাররা কখনোই তাদের নিজস্ব নাম্বার দিয়ে ফোন করবে না। তারা মূলত ফোন করে বাংলাদেশ টেলি কমিউনিকেশন এর বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে। 
যেটা অনেক মানুষই অফিশিয়াল নাম্বার ভেবে বিভিন্ন information দিয়ে দেয়। হ্যাকাররা যে সকল মোবাইল নাম্বার দিয়ে ফোন দেয় সে সকল মোবাইল নাম্বারের শুরুতে হয়ে থাকে যেমন- +88089। হ্যাকাররা কিছু ধাপ অনুসরণ করে নগদ একাউন্ট হ্যাক করে। চলুন সেই ধাপগুলো জেনে নিন।

  • হ্যাকাররা প্রথমে ফোন করে একাউন্টের মালিক কে জিজ্ঞেস করেন নগদ কার নামে রয়েছে কোন ধরনের ভাতা পায় এবং কোথায় ঠিকানা সকল কথা বলে অফিসার হিসেবে বা হেল্পলাইন হিসেবে নগদ একাউন্টের মালিকের সাথে কথা বলেন।
  • এরপর হ্যাকাররা আপনাকে কিছু জ্ঞানমূলক কথা বলবে যাতে করে তারা তাদের আওতায় নিতে পারে।
  • এরপর তারা আপনাকে বলবে আপনার নগদ একাউন্টের কিছু সমস্যা হয়েছে এরকম কিছু কথা বলে আপনার তো কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের ইনফরমেশন নিবে।
  • এরপর আপনাকে বলবে অফিসের নতুন বই করতে হবে এবং আপনার পুরাতন পিন নাম্বার কাজ করবে করবে না তাই নতুন পিন নাম্বারটি দিন। এরকমভাবে হ্যাকাররা নগদ একাউন্টের পিন নাম্বার নিতে চাইবে।
  • এরপর তারা আরো কিছু বলতে পারে যেমন আপনার নগদ একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন বাতিল হতে পারে এ ধরনের কথাবার্তা।
  • আবার আপনাকে কিছু একটা উৎসবের বোনাস দিতে চাইবে হ্যাকাররা। যাতে করে আপনি তাদের কাছে পিন নম্বরটি বলার জন্য প্রস্তুত হন।
  • আবার হয়তো আপনাদের কাছে এমনও গল্প করতে পারে যেমন ভুল করে টাকা চলে গিয়েছে এরকম ধরনের কথা বলে ভুলাতে পারে।
  • এছাড়াও আপনাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি বা সমস্যার কথা বলতে পারে। যাতে করে আপনি ভয় পেয়ে তাদের কাছে নগদ একাউন্টের সমস্ত ইনফরমেশন দিয়ে দেন।
  • তবে একটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখবেন তারা কিন্তু পিন নম্বর চাইবে না মূলত আপনার কাছ থেকে SMS কোড পাঠাবে সেই কোডটি জানতে চাইবে। মূলত হ্যাকাররা এই কোড নিয়ে নগদ একাউন্ট হ্যাক করে থাকে।
  • তবে হ্যাকাররা সরাসরি আপনার কাছ থেকে SMS পাওয়া কোড নাম্বারটি চাইবে না। তারা বিভিন্ন টেকনিক অবলম্বন করে আপনার কাছ থেকে কোড নিবে।
  • অনেকেই রয়েছেন যারা মনে মনে ভাবেন আমি তো পিন দিচ্ছি না কোড দিলে কোন সমস্যা নেই। এরকম ভাবে অনেকেই কোড দিয়ে তাদের নগদ একাউন্ট হ্যাক করে সমস্ত টাকা গুলো নিয়ে নেই।
প্রিয় বন্ধুরা উপরে উল্লেখিত যে সমস্যাগুলোর বলা হয়েছে এগুলো বলে বিভিন্ন হ্যাকাররা আপনার নগদ একাউন্ট হ্যাক করার চেষ্টা করবে। তাই আপনি কখনোই নগদ একাউন্টের পিন নাম্বার বলবেন না এবং এসএমএস এ আশা কোড নাম্বারটি কারো কাছেই শেয়ার করবেন না।

নগদ অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা

নগদ একাউন্টের নিরাপত্তা আপনার নিজের হাতেই। আপনি নিজে নিজে কখনোই নগদ একাউন্টের পিন নাম্বার কিংবা ওটিপি কোড কারো সাথেই শেয়ার করবেন না। মনে রাখবেন যখন আপনি এগুলো বিষয় কারো কাছে শেয়ার করবেন তখনই আপনার নগদ একাউন্টে হ্যাক হয়ে যাবে। 

একটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখবেন নগদ এর কোন কর্মকর্তা কখনোই আপনার কাছ থেকে পিন নাম্বার, ওটিপি কোড কিংবা একাউন্টের কোন গোপনীয় তথ্য জানতে চাইবে না। আর কেউ যদি ফোন করে এই বিষয়গুলো জানতে চাই তাহলে আপনাকে ভেবে নিতে হবে হ্যাকার ফোন দিয়েছে। 
তাই সব সময় নিজের একাউন্ট নিজেই নিরাপত্তা রাখবেন। যদি পারেন প্রতারনার ঘটনাসময় জানাতে নগদ 16167 নাম্বারে ফোন করে জানাতে পারেন। নিজের নগদ একাউন্ট নিজেই ব্যবহার করুন, নিরাপদে থাকুন।

নগদ কাস্টমার কেয়ার নাম্বার

আপনারা চাইলে নগদ কাস্টমার কেয়ারে বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগ করতে পারবেন। তার মধ্যে বিশেষ করে মানুষ ফোনে বেশি যোগাযোগ করে থাকেন। নগদ কাস্টমার কেয়ার নাম্বার হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে 6788 এবং বিদেশ থেকে +880 9610 16788. আপনারা চাইলে এই নাম্বার গুলোতে ফোন করে নগদ কাস্টমার কেয়ারের সাথে যোগাযোগ করে নগদের সকল বিষয়বস্তু সম্পর্কে তথ্য জানতে পারবেন

লেখকের মন্তব্যঃ নগদ একাউন্ট হ্যাক হলে করণীয়

সম্মানিত পাঠক আশা করি নগদ একাউন্ট হ্যাক হলে করনীয় কি  তা সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে জানতে পেরেছেন। মূলত নগদ একাউন্ট নিজের কাছেই নিরাপত্তা রাখা সব থেকে ভালো। অনেকে রয়েছে যারা ভুলবশত নগদ একাউন্টের পিন নাম্বার কিংবা ওটিপি কোড দিয়ে থাকে। তবে এগুলো দেওয়া থেকে দূরে থাকুন এবং আপনার নগদ একাউন্ট ব্যবহার করে নিরাপত্তা থাকুন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪