কোন মৌসুমে কোন ফসল ভালো জন্মে | কোন মাটিতে কোন ফসল ভালো হয়
আপনারা যারা কোন মৌসুমে কোন ফসল ভালো জন্মে এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে এই
আর্টিকেলে এসেছেন তারা অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেল একদম মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। কারণ
আপনাদের সুবিধার্থেই আজকে আমি এই বিষয়টি সঠিকভাবেই আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ার জন্য আপনার কাছে আমার অনুরোধ রইল।
আপনারা যারা সঠিকভাবে ফসল উৎপাদন করতে পারেন না তারা অবশ্যই কোন মৌসুমে কোন ফসল
ভালো জন্মে এবং বর্ষাকালে কোন ফসল ভালো জন্মে এই বিষয়গুলো জানা অত্যন্ত জরুরী।
তাই পাঠক আপনাদের সুবিধার জন্য এই বিষয়গুলো সঠিকভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
তাই আসন আর দেরি না করে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন।
ভূমিকা
বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। এই দেশে দারিদ্রতা এবং খাদ্য চাহিদা মেটাতে অনেক
কৃষকেরা রয়েছে যারা বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করে থাকে। তবে এই ফসলগুলো সঠিক
মৌসুমে উৎপাদন করার প্রক্রিয়া অনেকেই জানেন না। কোন মৌসুমে কোন ফসল ভালো
জন্মে এবং বর্ষাকালে কোন ফসল ভালো জন্মে এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিকভাবে জানিয়ে
দেওয়ার চেষ্টা করব। তাই আপনারা যারা এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানেন না তারা অবশ্যই
সম্পূর্ণ আর্টিকেল একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। আশা করি এই
আর্টিকেল থেকে আপনারা সকলেই জেনে যাবেন কোন মৌসুমে ভালো ফসল জন্মে থাকে। তাহলে
চলুন আর দেরি না করে বিস্তারিত তথ্য সঠিকভাবে জেনে নিন।
কোন মাসে কোন ফল পাওয়া যায়
কোন মাসে কোন ফল পাওয়া যায় বিষয়টি অনেকেরই অজানা। তাই আপনাদের সুবিধার্থে আজকে
আমি এই বিষয়টি সঠিকভাবে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। বন্ধুরা বাংলাদেশে
সারা বছরে ফল পাওয়া যায় তবে ছয় ঋতুর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাহারি ফলের দেখা যায়
বৈশাখ ও জৈষ্ঠ মাসে অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত।
এই সময়ে মধু মাসও বলা হয়। অনেক বিশেষজ্ঞ মতে এই দেশে তাপমাত্রা আবহাওয়া জলবায়ু
আদ্রতা মাটি এবং পরিবেশ সারা বছর বিভিন্ন ধরনের ফল চাষের জন্য অনেক বেশি উপযোগী।
আর এই কয়েক মাসেই আপনারা অনেক ভালো ফল পেয়ে যাবেন।
তবে বাংলা পিডিয়ার মতে বাংলাদেশের উৎপাদিত ফলে প্রায় ৬০% পাওয়া যায় বৈশাখ মাস
থেকে শ্রাবণ এই ৪ মাসের মধ্যে। আর বাকি যে ৪০% ফল পাওয়া যায় তা অবশিষ্ট এই ৮
মাসের মধ্যে।
- মূলত গ্রীষ্মের মধুমাসে আম, তরমুজ, ডালিম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস সহ আরো বিভিন্ন ধরনের ফল পাওয়া যায়। তাই এই মাসটিকে অনেকে মধুমাসও বলে থাকেন।
- শুধু তাই নয় বর্ষাকালেও পাওয়া যায় জাম্বুরা, জামরুল, পেয়ারা, কামরাঙ্গা, কাউ, আমড়া, লটকন, গাবসহ নানা ধরনের ফল যা বর্ষাকালে অনেক বেশি উৎপাদন হয়ে থাকে।
- অন্যান্য মাসের পাশাপাশি শরৎকালে পাওয়া যায় জলপাই, আমলকি, চালতা, ডুমুর, বরই, সহ ইত্যাদি।
- হেমন্ত মাসে পাওয়া যায় পানিফল, কদবেল, আতা, তেতুল ইত্যাদি। আর অন্যান্য যে সারা বছর রয়েছে সেগুলোতে পাওয়া যায় কলা, নারকেল ইত্যাদি। তাহলে বন্ধুরা আশা করি কোন মাসে কোন ফল পাওয়া যায় তা সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন।
কোন মাটিতে কোন ফসল ভালো হয়
আজকে আমি যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব তা হয়তো আপনাদের মধ্যে অনেকেরই অজানা।
মূলত আমি যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব সেটি হল কোন মাটিতে কোন ফসল ভালো হয় এই
সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে নিন আপনাদের এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর।
যদি আপনারা ভালো ফসল নিতে চান তাহলে অবশ্যই মাটির প্রকারভেদ সম্পর্কে এবং মাটির
বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে হবে।
মাটির প্রকারভেদঃ বিভিন্ন ধরনের মাটি যেমনঃ দোআঁশ, ও বেলে, কাদামাটির
গুণগত মান ভিন্ন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়ঃ সব ধরনের ফসলের জন্য উপযুক্ত মাটি হলো
দোআঁশ মাটি।
সাধারণত এই মাটির প্রকারভেদ গুলো থাকলেই চলবে না পাশাপাশি মাটিতে ফসফরাস
নাইট্রোজেন পটাশিয়াম সহ নানা ধরনের পুষ্টি অবদান থাকাও অত্যন্ত জরুরী। এতে করে
আপনার ফসল আরো দ্রুত উন্নত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করবে। যদি উপর উল্লেখিত উপাদান
গুলোর অভাব হয় তাহলে কখনোই ভালো ফসল আশা করা যাবে না।
এছাড়াও তাপমাত্রারও অনেক প্রয়োজন বিভিন্ন ফসলের জন্য তাপমাত্রা ভিন্ন ভিন্ন হতে
হবে যেমন ধানের জন্য ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা একদম আদর্শ
তাপমাত্রা। পাশাপাশি যথেষ্ট বৃষ্টি প্রয়োজন কারণ ফসলের জন্য পর্যাপ্ত পানি
সরবরাহ না করলে কখনোই ভালো ফসল তৈরি হবে না। তাই ফসলের জন্য পর্যাপ্ত পানি
অত্যন্ত প্রয়োজন।
উদাহরণস্বরূপ, পেঁয়াজের জন্য ৫০০ থেকে ৮০০ মিমি বৃষ্টিপাত প্রয়োজন। এছাড়াও ফসল
বৃদ্ধ হওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সূর্যের আলো গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে ফসল খুব ভালোভাবে
উৎপাদন হয়। উদাহরণস্বরূপঃ গমের জন্য ৬-৮ ঘণ্টা সূর্যালোক প্রয়োজন।
শুধু তাই নয় পাশাপাশি পরিচ্ছন্ন বায়ু ফসলের বৃদ্ধি ও রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। বায়ুর
দূষণ ফসলের গুণগত মানকে কমাতে পারে। আশা করি উপর উল্লেখিত বিষয়গুলো সঠিকভাবে
অবলম্বন করলে আপনারা দোআঁশ মাটিতে ভালোভাবে ফসল উৎপাদন করতে পারবেন।
কোন মৌসুমে কোন ফসল ভালো জন্মে
বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। এখানকার জলবায়ু ও মাটি বিভিন্ন ধরনের ফসল
উৎপাদনের জন্য উপযোগী। তবে ফসলের সফল উৎপাদনের জন্য মৌসুমের সাথে সামঞ্জস্য রাখা
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি ফসলের জন্য নির্দিষ্ট জলবায়ু, তাপমাত্রা এবং
আর্দ্রতার প্রয়োজন হয়।
সঠিক মৌসুমে ফসল চাষ না করলে ফলন কমে যেতে পারে। এই কারণে, কৃষকদের মৌসুমভিত্তিক
ফসল বাছাই করা অত্যাবশ্যক। বাংলাদেশে কৃষি মৌসুমকে প্রধানত ২ ভাগে ভাগ করা যায়।
- খরিফ মৌসুম
- রবি মৌসুম
খরিফ মৌসুম (মার্চ থেকে অক্টোবর): এই মৌসুমে বৃষ্টি বেশি হয় এবং গরম আবহাওয়া
বিরাজ করে। তাই খরিফ মৌসুমের ফসলগুলোর জন্য বেশি পানি প্রয়োজন। ধান, পাট, ভুট্টা,
মরিচ, এবং শাকসবজি এই মৌসুমে ভালো জন্মে। তাই আপনারা চাইলে এই সময় ভালো ফসল
উৎপাদন করতে পারেন।
রবি মৌসুম (নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি): শীতকালীন এই মৌসুমে শুষ্ক ও ঠান্ডা
আবহাওয়া বিরাজ করে ফলে এই সময়কার ফসলগুলোর পানির প্রয়োজন অনেক কম পড়ে সাধারণত
ঠান্ডা আবহাওয়া গম চাষের জন্য মাটি অনেক বেশি উপযোগ।
শুধু তাই নয় শীতের মৌসুমে আলো চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায় পাশাপাশি তেলের
জন্য সরিষা চাষ করলেও ঠান্ডা আবহাওয়া এটি দ্রুত বৃদ্ধি পায়। তাই আপনারা চাইলে
এই শীতকালীন সময়ে এই ধরনের ফসল চাষ করে ভালো ফলন উৎপাদন করতে পারেন।
বর্ষাকালে কোন ফসল ভালো জন্মে
আমাদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছে যারা বর্ষাকালে কোন ফসল ভালো জন্মে এ সম্পর্কে
জানতে চাই আজকে আমি তাদের জন্যই এই আর্টিকেল সঠিকভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
পাঠক বর্ষাকালে বিভিন্ন ধরনের ফসল রয়েছে যেগুলো অনেক ভালো জন্মায়। যেমন বেগুন
মটরশুটি ঢেঁড়স ইত্যাদি।
সাধারণত বর্ষাকালে খুব ভালো ফসল হিসেবে বেগুন চাষ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বেগুনে
বীজ এমন জায়গায় রোপন করতে হবে যেখানে সরাসরি রোধ করে প্রতিনিয়ত হালকা পানি
দিনে বেগুনে গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পাবে ফলে ফসলও ধরবে তাড়াতাড়ি।
শুধু তাই নয় বর্ষাই মটরশুটে ও অনেক বেশি বৃদ্ধি পায় তাই এই সময় যদি আপনারা
মটরশুঁটি বীজ রোপন করেন এবং ভালোভাবে যত্ন নিতে পারেন তাহলে আশা করি এখান থেকেও
ভালো ফসল পাবেন পাশাপাশি ঢেঁড়সের বীজ রোপণের জন্য বর্ষার মরশুম আদর্শ সময়।
আপনারা চাইলে এই ফসল করে ভালো উৎপাদন পেতে পারেন বর্ষাকালে।
গ্রীষ্মকালে কোন ফসল ভালো জন্মে
গ্রীষ্মকালীন শুরুতে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন ভালো হয়। কিন্তু আমাদের মধ্যে
অনেকের রয়েছে যারা গ্রীষ্মকালে কোন ফসল ভালো জন্মে জানেন না। সাধারণত
গ্রীষ্মকালে বিভিন্ন ধরনের ফসল রয়েছে যেগুলো সবচেয়ে বেশি ভালো জন্মায়।
যেমনঃ শসা, বেগুন, বাঁধাকপি, ফুলকপি, মুলা, টমেটো, কুমড়া ইত্যাদি। এই সময়ে
আপনারা চাইলে এই ধরনের ফসলগুলো উৎপাদন করে অধিক লাভবান হতে পারেন। তাই আপনারা
দেরি না করে এ সময়ে যারা কখনো ফসল উৎপাদন করেন নাই আশা করি এখন থেকে শুরু করে
দিন।
কোন এলাকায় কোন ফসল ভালো হয়
বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের ফসল হয়ে থাকেন যেমন রাজশাহীর পবায় পতিত চরে
প্রায় ১৬ ফসলের চাষ হয়ে থাকে যেমনঃ পটোল, টমেটো, কপি, পেঁয়াজ, খেসারি, কলা,
মুলা, ভুট্টা, সূর্যমুখী ফুল, লাউ, গম, মরিচ, শসা, কলা, খেসারি।
লেখকের শেষ কথাঃ কোন মৌসুমে কোন ফসল ভালো জন্মে
কোন মৌসুমে কোন ফসল ভালো জন্মে আশা করি আপনারা সকলেই উপরে সঠিকভাবে জানতে
পেরেছেন। সাধারণত উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো জেনে আপনারা যারা উপকৃত হয়েছেন তারা
অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবের সাথে এই পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।
যদি আপনাদের এই পোস্ট পড়ে কোন মন্তব্য জানানো থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে সেটা
জানিয়ে যাবেন। নিয়মিত এরকম পোস্ট পেতে অবশ্যই এই ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন।
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url