গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয় বিস্তারিত জেনে নিন

গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয় এই বিষয়টি সম্পর্কে আপনারা যদি না জেনে থাকেন। তাহলে এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিতে পারেন। এই আর্টিকেলে এই বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি পাঠক আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে এ বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে যাবেন। তাই আসুন আর দেরি না করে মনোযোগ দিয়ে সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ুন।
গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয় বিস্তারিত জেনে নিন
এই আর্টিকেলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে, গর্ভাবস্থায় খালি পেটে থাকলে কি হয়, গর্ভাবস্থায় পানি কম খেলে কি হয়, গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়, গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয়, গর্ভাবস্থায় কান্না করলে কি হয়, গর্ভাবস্থায় পেটে চাপ লাগলে কি হয়, গর্ভাবস্থায় খালি পেটে থাকলে কি হয়, এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিকভাবে বিস্তারিত জেনে যাবেন।

ভূমিকা

গর্ভাবস্থায় ঘুমের সঠিক ভঙ্গি মায়ের আরাম ও শিশুর সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত, বিশেষজ্ঞরা গর্ভবতী নারীদের বাম পাশে ঘুমানোর পরামর্শ দেন, কারণ এটি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং গর্ভস্থ শিশুর জন্য পুষ্টি সরবরাহে সহায়তা করে। তবে ডান পাশে ঘুমানোও খুব একটা ক্ষতিকর নয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে এটি অস্বস্তিকর হতে পারে। তাই আজকের এই আর্টিকেলে গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয় এবং গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয় এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। পাশাপাশি আরও বিষয়গুলো বিয়েও আলোচনা করবো। তাই আসুন এই আর্টিকেল মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

গর্ভাবস্থায় খালি পেটে থাকলে কি হয়

স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন শুরু করার সময় যেগুলোর থেকে অনেক বেশি খেয়াল রাখতে হবে তার মধ্যে অন্যতম হলো ডায়েট। কারণ গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন সেগুলোর দিকে অবশ্যই নজর রাখতে হবে। এমনকি আপনাকে ফাস্ট ফুড প্রক্রিয়াজাত খাবার ও মিষ্টি খাওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে। 

অনেক গর্ভবতী মেয়েরা রয়েছে যারা তাদের ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণে বা শরীরের আকার বৃদ্ধি হওয়ার কারণে খালি পেটে থাকা শুরু করেন। কিন্তু আপনাকে এগুলো বুঝতে হবে যে এই সময় আপনার শরীরে কেন পরিবর্তন। এই পরিবর্তন একটা স্বাভাবিক বিষয়। অন্যদিকে আপনি যদি খালি পেটে থাকেন, তাহলে আপনার গর্ভে থাকা সন্তানের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। 
তাই আপনাকে সবসময় খেয়াল রাখতে হবে শরীরচর্চা ও ডায়েটের উপর। তাহলে অনেক ভালো হবে। গর্ভাবস্থায় খালি পেটে থাকলে অতিরিক্ত মাথা ঘোরা সহ গর্ভবতী মা ও শিশু উভয়েরই সমস্যা তৈরি হবে। তাই গর্ভাবস্থায় কখনোই না খেয়ে থাকবে না। যদি গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন দেখা দেয় তাহলে একজন অভিজ্ঞ স্বাস্থ্যকর ডাক্তারে পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

গর্ভাবস্থায় পানি কম খেলে কি হয়

সুস্থ থাকতে হলে আমাদের প্রতিনিয়ত প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা প্রয়োজন। এখন প্রশ্ন হল গর্ভাবস্থায় পানি কম খেলে কি হয়। কিংবা গর্ভাবস্থায় কতটুকু পানি পান করা উচিত। এই ধরনের প্রশ্নের উত্তর নিয়েই আজকের এই আর্টিকেল। প্রিয় বন্ধুরা আপনাদের এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানানোর জন্যই আজকের আর্টিকেল। তাই আসুন এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে নিন।

সাধারণত একজন সুস্থ সবল গর্ভবতী মায়েদের প্রতিদিন ২ লিটার পানি পান করা উচিত। এছাড়াও অতিরিক্ত ৫০০ মিলিলিটার পানি পান করা যাবে। পাশাপাশি ফলের রস, স্যুপ, এগুলো খেলেও সেগুলোর মাধ্যমে শরীরে আরো পানি প্রবেশ করে থাকে। 
একজন গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করার পাশাপাশি ডায়েটের ওপর নজর দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ তবে আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে কোন খাবার খান তাহলে সেভাবেই আপনাকে পানি খাওয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে। তবে একটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখবেন গর্ভাবস্থায় ডিহাইড্রেশন কিন্তু অত্যন্ত ক্ষতিকর। 

নিজের শরীরে পানির ঘাটতি পরে তাহলে গর্ভবতী মা ও সন্তান উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর। আপনি যদি গর্ভাবস্থায় পরিমাণ মতো পানি পান না করেন, তাহলে আপনি ক্লান্তি হয়ে পড়বেন এবং কনস্টিপেশন হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় পানি কতটুকু পান করছেন তার দিকে অবশ্যই মনোযোগ দেওয়া উচিত। 

গর্ভাবস্থায় এমন অনেক হতে পারে যে আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করছেন কিন্তু আপনার ভেতরে ভেতরে ডিহাইড্রেটেড হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থা হলে যত দ্রুত সম্ভব আপনার ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় কনস্টিপেশন হলেও অনেক বেশি পানি পান করা উচিত। 

গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয় তা আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের সঠিকভাবে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। পাঠক আপনারা অনেকেই এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানার জন্য এই আর্টিকেলে এসেছেন। তাই আপনাদের সঠিক তথ্য দেওয়াটাই আমার মূল লক্ষ্য। তাই আসুন জেনে নিন।

গর্ভাবস্থায় বিশ্রাম নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, তবে বেশি শুয়ে থাকা বা নিষ্ক্রিয় থাকা মা ও শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। গর্ভাবস্থায় শরীরের নিয়মিত কার্যক্রম বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি মায়ের স্বাস্থ্য ও শিশুর সঠিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। 
গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কিছু সাধারণ পরিবর্তন ঘটতে পারে। কারণ গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের শরীর বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটে আর এই সময় বেশি বেশি শুয়ে থাকলে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। যেমন-

  • রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া
  • পেটে থাকা বাচ্চার অসুস্থতা দেখা দেওয়া
  • গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া
  • শ্বাসকষ্টের সমস্যা হওয়া
  • মাংসপেশির দুর্বলতা
  • শরীরে পানি স্তর কমে যাওয়া
  • ওজন বৃদ্ধি হওয়া
  • মেজাজের উপর প্রভাব
তাই এই সমস্যাগুলো এড়াতে গর্ভাবস্থায় নিয়মিত হাটাহাটি করা উচিত। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় শুয়ে থাকার ও বড় অনেক কিছু নির্ভর করে। তাই যখন গর্ভাবস্থায় শুয়ে থাকবেন তখন বুকের উপরে শুয়ে না থাকাই ভালো। ডান বাম হয়ে শুয়ে থাকবেন। দেহের উপরের অংশ সামান্য উঁচুতে রাখার চেষ্টা করবেন। 

যখন গর্ভাবস্থায় শুয়ে থাকবেন তখন শরীরে অতিরিক্ত প্রেসার দিয়ে কোন ভাবেই শুয়ে থাকবেন না। এতে করে আপনার পেটে থাকা সন্তানের সমস্যা হতে পারে। গর্ভাবস্থায় বেশি বেশি শুয়ে থাকলে বাচ্চার ততোটাও সমস্যা হয় না যতটা মায়ের সমস্যা হয়। বিশেষ করে অনেক বেশি শরীর ব্যথা হতে পারে।

এছাড়াও গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন ব্যায়াম করলে মা ও শিশু উভয় সুস্থ থাকে। শুধু তাই নয় গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত পরিমাণ স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করতে হবে এতে করে বাচ্চা ও মা উভয় সুস্থ থাকবে। আর পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মাসে ১বার করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরী।

গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয়

গর্ভাবস্থায় ডানপাশে ঘুমালে কি হয় এই বিষয়টি জানা একজন গর্ভবতী মায়ের অত্যন্ত জরুরী। তাই আপনাদের সুবিধার্থে আজকে আমি এই আর্টিকেলে এ বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। গর্ভকালীন সময় একজন নারীর জন্য খুবই স্পর্শকাতর। 

এইসময় গর্ভবতী মায়েদের খাবারের অরুচি, ঘুমের সমস্যা, বমি বমি ভাব, মাথা ব্যাথা, ঘুম ভেঙ্গে যাওয়া, পেটে ব্যথা ইত্যাদি সমস্যায় ভোগেন। তবে চিকিৎসা করে বলেন গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত ঘুম মা ও শিশুর জন্য খুবই জরুরী। অনেক মহিলা রয়েছেন যারা গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমিয়ে থাকে। 
কিন্তু গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয় তা জানার আগ্রহ অনেক গর্ভবতী মায়ের রয়েছে। তাই আপনাদের সঠিক তথ্য দেওয়াই আমার মূল লক্ষ্য। আসুন আর দেরি না করে সঠিক তথ্য জেনে নিন।

গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাস গর্ভবতী মা যে কোন পজিশনে ঘুমাতে পারবেন। এতে কোন সমস্যা নেই। গর্ভকালীন সময়ে ঘুমানোর সময় পিঠের ব্যথা কমাতে এবং পিঠের চাপ কমাতে পায়ের মাঝে বালিশ দিয়ে রাখতে পারেন। এতে করে পিঠের, ওপর চাপ কিছুটা কমবে। 

এছাড়াও বুক জ্বালাপোড়া হলে কিংবা শ্বাসকষ্ট হলে বালিশ দিয়ে ও শরীরের উপরের অংশ উঁচু করে ঘুমাতে পারেন। এতে করে এই সমস্যা আল্লাহর রহমতে দূর হয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞ মতে, গর্ভাবস্থায় নিজের সুবিধা অনুযায়ী ডান বা বাম দিকে হয়ে শুয়ে থাকতে পারবেন। তবে বাম দিকে শুয়ে থাকা সবচেয়ে ভালো। 

কারণ বাম দিকে শুয়ে থাকলে গর্ভবতী মায়েদের শরীরের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। ফলে সুস্থ থাকে গর্ভস্থ শিশুও। বেশ কিছু গর্ভবতী নারীর উপর পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে যে বাম দিকে ফিরে শুয়ে থাকলে শিশু অনেক সুস্থ থাকে এবং অনেক বেশি একটিভ হয়। আবার অন্য চিকিৎসকের মতে, শিশু কতটা একটিভ থাকছে তার নির্ভর করে তারা হার্টের ওপর। 

যদি হার্ট ভালো থাকে তাহলে শিশুও অনেক সুস্থ থাকে। শুধু যে বাম দিক হয়ে সব সময় শুয়ে থাকতে হবে তা নয়। যখন আপনার শরীর ভেঙ্গে যাবে কখনো কাজ হয়েও শুয়ে থাকতে পারবে না। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় হঠাৎ করে ঘুম ভেঙে গেলে যদি দেখেন আপনি চিৎ হয়ে বা উপরে শুয়ে রয়েছেন। 
তখন ঘুম থেকে উঠে সামান্য পানি পান করুন এবং বিশ্রাম নিন। নিজেকে নরমাল করে আবার বাম কাজ হয়ে শুয়ে পড়ুন। শুধু তাই নয় নিজেকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখুন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম পাড়ুন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের মতে গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম অত্যন্ত ভালো। 

পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়াও অত্যন্ত ভালো এতে করে মা ও শিশু উভয় সুস্থ থাকে। আশা করি যাদের ডান বা বামপাশে ঘুমানো নিয়ে সন্দেহ কাজ করতো আশা করি এই আর্টিকেলের সম্পূর্ণ পড়ে গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয় তা সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন।

গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয় তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করেছেন। দেখুন একজন সুস্থ মানুষের বেশি ঝাল খাওয়ার ফলে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। তাহলে গর্ভাবস্থায় মহিলারা ঝাল খেলে অবশ্যই সমস্যা হতে পারে।
তবে গর্ভাবস্থায় কি কি খাবার খাওয়া উচিত নয় বা যেসব খাবার খাওয়া যাবেনা তা অনেকেই জানেন না। তাই আজকের এই আর্টিকেলের সমস্ত বিষয়গুলো সঠিকভাবে জানিয়ে দেবো। তাই আর দেরি না করে আসুন জেনে নেওয়া যাক।

  • প্রথমত কাঁচা বা আধা সেদ্ধ সবজি গর্ভাবস্থায় খাওয়া একদমই উচিত নয়। কারণ সেই খাবারের কারণে বদহজম হতে পারে। তাই অবশ্যই সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। গর্ভাবস্থায় শাক সবজি খেতে হবে টাটকা এবং ভালোভাবে রান্না করা। তবে রান্না করার তরকারিতে ঝাল বেশি না কম রয়েছে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। কারণ অতিরিক্ত ঝাল গর্ভবতী মা ও শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
  • শুধু তাই নয় গর্ভাবস্থায় থার্ড ট্রাইমেস্টারের কারণে উচ্চ রক্তচাপের একটা ঝুঁকি থাকে। তাই খুব বেশি লবণ খাওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে। লবণ কিংবা অন্যান্য লবণযুক্ত খাবার বেশি খাওয়ার ফলে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হতে পারে।
  • এছাড়াও গর্ভাবস্থায় ঝাঁঝালো, তৈলাক্ত, ঝাল খাবার ও ক্যাফেইন জাতীয় খাবারগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এই খাবারগুলো খাওয়ার ফলে শিশু ও মা উভয়ের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
  • গর্ভকালীন সময়ে উচ্চ শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়া একদমই উচিত নয়। কারণ গর্ভকালীন সময়ে অনেক মহিলাদের ডায়াবেটিসের রোগী থাকে। বিশেষ করে গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়েদের মিষ্টি খাবার টক জাতীয় খাবার খাওয়ার উপর চাহিদা থাকে। তাই অতিরিক্ত খাওয়ার পরে ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে যা স্বাস্থ্যর জন্য মোটেও ভালো নয়। তাই উচ্চ শর্করা জাতীয় খাবার গুলো পরিমাণে চেয়ে কম খাওয়া উচিত।
তবে মনে রাখবেনঃ প্রতিটি মানুষের শরীর আলাদা ধরনের হয়ে থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় কোন কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিত তা জানার জন্য একজন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ায় উচিত। 

গর্ভাবস্থায় কান্না করলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় কান্না করলে কি হয়, গর্ভাবস্থায় একজন মহিলার জীবনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই সময়ে শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের ফলে নানা ধরনের অনুভূতির জন্ম হয়। কান্নাও তার একটি। অনেকেই ভাবেন, গর্ভাবস্থায় কান্না করলে শিশুর উপর কিছু প্রভাব পড়তে পারে। তবে আসলে কি তাই? এই আর্টিকেলে আমরা গর্ভাবস্থায় কান্নার কারণ, এর প্রভাব এবং কিভাবে নিজেকে শান্ত রাখা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

গর্ভাবস্থায় কান্নার অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে রয়েছেঃ

হরমোনের পরিবর্তনঃ গর্ভাবস্থায় হরমোনের মাত্রা ক্রমাগত পরিবর্তিত হতে থাকে। এই পরিবর্তনগুলি মেজাজে উঠা-নামা, কান্না এবং বিষণ্নতা সৃষ্টি করতে পারে।

শারীরিক পরিবর্তনঃ গর্ভাবস্থায় শারীরিক পরিবর্তনগুলিও কান্নার কারণ হতে পারে। অস্বস্তি, ব্যথা, ঘুমের সমস্যা ইত্যাদি কারণে মেজাজ খারাপ হয়ে যেতে পারে।

মানসিক চাপঃ গর্ভাবস্থায় নতুন পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়ানো, অর্থনৈতিক চাপ, পরিবারের সমস্যা ইত্যাদি মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং কান্নার কারণ হতে পারে।

অনিশ্চয়তাঃ ভবিষ্যতের প্রতি অনিশ্চয়তা, শিশু লালন-পালনের চিন্তা ইত্যাদিও কান্নার কারণ হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় কান্নার প্রভাবঃ

অনেক মায়ের মনে হয় যে, গর্ভাবস্থায় কান্না করলে শিশুর উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তবে বিজ্ঞানীরা এখনও পর্যন্ত এমন কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ পাননি যে, গর্ভাবস্থায় কান্না করলে শিশুর বিকাশ বা স্বাস্থ্যের উপর কোনো ক্ষতি হয়।

তবে, ক্রনিক স্ট্রেস বা বিষণ্নতা শিশুর বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই যদি আপনি গর্ভাবস্থায় দীর্ঘ সময় ধরে বিষণ্নতা বা অতিরিক্ত চাপ অনুভব করেন, তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

গর্ভাবস্থায় নিজেকে শান্ত রাখার উপায়ঃ

  • ধ্যান করুন। ধ্যান করলে মন শান্ত হয় এবং চাপ কমে।
  • প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করুন। এটি করলে মন প্রশান্ত হয়।
  • পছন্দের কাজ করুন যেমন- গান শোনুন, বই পড়ুন, চিত্র আঁকুন ইত্যাদি।
  • সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন। সুষম খাদ্য গ্রহণ করলে শরীর সুস্থ থাকবে।
  • প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুমান।
  • পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সময় কাটান। এতে করে নিজেকে একা মনে হবে না।
গর্ভাবস্থায় কান্না করা স্বাভাবিক। তবে যদি আপনি দীর্ঘ সময় ধরে বিষণ্নতা বা অতিরিক্ত চাপ অনুভব করেন, তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন। নিজেকে শান্ত রাখার জন্য উপরের উল্লিখিত উপায়গুলি অনুসরণ করুন।

গর্ভাবস্থায় পেটে চাপ লাগলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় মায়েদের শরীর অনেক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে চায়। গর্ভবতী মায়েদের পেটের আকার বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি মায়েদের চলাফেরার অসুবিধা হতে পারে এবং বিভিন্ন সময় পেটে চাপ লাগার ঘটনাও ঘটে যেতে পারে। 

বিশেষ করে পেটে চাপ লাগার ঘটনা দৈনন্দিন মানুষের জীবনের একটি স্বাভাবিক বিষয় হতে পারে কিন্তু গর্ভাবস্থায় একজন নারীর জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কি করে প্রথমবার যদি গর্ভাবস্থায় মায়েদের পেটে চাপ লাগে তাহলে শিশুর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে। 
তাই আসুন এই আর্টিকেল থেকে গর্ভাবস্থায় পেটে চাপ লাগলে কি হয়, গর্ভাবস্থায় পেটে চাপ লাগার কারণ এর প্রভাব এবং করণীয় কি তা জেনে নিন।

গর্ভাবস্থায় পেটে চাপ লাগার কারণঃ

গর্ভকালীন সময়ে বিভিন্ন কারণে পেটে চাপ লাগতে পারে, তবে তার মধ্যে অন্যতম হলোঃ

পেটে আকার বৃদ্ধিঃ সাধারণত গর্ভের শিশুর বৃদ্ধি গর্ভের ভেতরের তরল (Amniotic fluid) থাকার কারণে পেটের আকার অনেক বৃদ্ধি হয়। আর পেটের আকার বৃদ্ধি হওয়ার কারণে ভারসাম্য হারানোর আশঙ্কা বেড়ে যায় ফলে নিজের অজান্তেই পেটে চাপ পড়তে পারে।

জোরে বাঁকা হয়ে বসাঃ গর্ভকালীন সময়ে অনেক মায়েরা রয়েছে যারা মাঝেমাঝে হঠাৎ করে দ্রুত বাঁকা হয়ে বসে। আর এই কারণেই পেটে চাপ লাগবে পারে। এ ধরনের চাপ হালকা হলেও পরবর্তী সময়ে সময় অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।

ঘুমের ভঙ্গিঃ গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ভাবে শুয়ে থাকার কারণে হঠাৎ পেটের চাপ পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বিশেষ করে কেউ যদি পিঠের ওপর শুয়ে থাকে বা সঠিক নিয়মে না ঘুমায় তাহলে পেটে চাপ সৃষ্টি হতে পারে। যা গর্ভাবস্থায় একটি সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

আঘাত পাওয়া বা পড়ে যাওয়াঃ গর্ভাবস্থায় দৈনন্দিন বাড়ির বিভিন্ন কাজকর্ম করার ব্যস্ততার মাঝে বা অসাবধানতার কারণে হালকা আঘাত লাগতে পারে কিংবা ভারসাম্য হারানোর কারণে পেটে আঘাত লাগতে পারে যা গর্ভবতী মায়েদের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

পেটে চাপ লাগলে এর প্রভাবঃ 

গর্ভাবস্থায় পেটে হালকা ভাবে চাপ লাগলে সাধারণত শিশুর কোনরকম ক্ষতি না হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কারণ গর্ভে থাকা শিশুকে অ্যামনিওটিক ফ্লুইড (Amniotic fluid) শক্তিশালী মাংস পেশী তারা সুরক্ষিত রাখা হয়। কিন্তু গর্ভাবস্থায় পেটের চাপ পড়ার উপর কিছু পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। তাই আপনি যদি পেটের চাপের পর নিজের লক্ষণগুলো দেখতে পান তাহলে তা উদ্বেগের কারণ হতে পারে। যেমন -
তীব্র ব্যথাঃ বিশেষ করে গর্ভাবস্থায়ী তীব্র ব্যথা দেখা দিলে তৎক্ষণিক বিশ্রাম নেওয়া উচিত এবং যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

পানি ভাঙ্গাঃ গর্ভাবস্থায় পেটে চাপের পর যদি যোনি থেকে পানি বের হয় তাহলে এটি গর্ভধারণে জটিল সংকেত হতে পারে তাই যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

রক্তপাতঃ গর্ভাবস্থায় যোনি থেকে রক্তপাত বের হলে অভ্যন্তরীণ সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। এমন অবস্থা দেখা দিলে নিকটস্থ অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

গর্বে থাকা বাচ্চার নড়াচড়া কমে গেলেঃ যদি দেখেন যে আপনার গর্ভে থাকা শিশুর নড়াচড়া পরিমাণ অনেক কম বা অস্বাভাবিক নড়াচড়া দেখা যায় তাহলে আপনার এক ধরনের সংকেত হতে পারে যেমন- শিশুর ওপর চাপ পড়েছে। এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করা জরুরী।

পেটে চাপ লাগলে করণীয়ঃ

যদি গর্ভাবস্থায় পেটে চাপ লাগে তাহলে নিচের কয়েকটি পদক্ষেপ দেওয়া হয়েছে সেগুলো অনুসরণ করলে আশা করি পেটের চাপ লাগা থেকে মুক্তি পাবেন।

বিশ্রাম নেওয়াঃ গর্ভাবস্থায় পেটের চাপ লাগলে যত দ্রুত সম্ভব বিশ্রাম নেওয়া জরুরি। শুয়ে থেকে পেটের চাপ কমানোর চেষ্টা করতে হবে এবং আরামদায়ক ভঙ্গিতে শুয়ে বিশ্রাম নিতে হবে।

শান্ত থাকাঃ গর্ভাবস্থায় পেটে চাপ লাগলে প্রথমে চিন্তা না করে শান্ত হয়ে থাকতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় হালকা কিংবা আঘাতে শিশুর কোন ক্ষতি করে না।
শিশুর নড়াচড়া পর্যবেক্ষণঃ গর্ভাবস্থায় পেটে চাপ লাগার পর অবশ্যই শিশু নড়াচড়া করছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যদি আপনার শিশুর নড়াচড়া স্বাভাবিক থাকে তাহলে এত চিন্তার প্রয়োজন নেই। আর যদি শিশু নড়াচড়া কমে যায় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।

চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াঃ গর্ভাবস্থায় যখন পেটে চাপ লাগে তখন যদি কোন কিছু অস্বাভাবিক মনে হয় যেমন রক্তপাত তীব্র ব্যথা শিশু নড়াচড়া বন্ধ হওয়া তাহলে যত দ্রুত সম্ভব অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে সমাধান করুন।

লেখকের শেষ কথা | গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয়

প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আশা করি গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয় এবং গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয় এই সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন। এই বিষয়গুলো সম্পূর্ণ জেনে আপনি যদি অনেক উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের কাছে এই আর্টিকেল শেয়ার করুন। 

পাশাপাশি একটি মন্তব্য করে জানিয়ে দিন আপনি এই আর্টিকেলটি পড়ে কতটুকু উপকৃত হয়েছেন। এইরকম আরো স্বাস্থ্য রিলেটেড আর্টিকেল পেটে নিয়মিত এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। এই আর্টিকেল সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪