বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের আয় কত বিস্তারিত জেনে নিন
বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের আয় কত এই সম্পর্কে জানতে চান? এই বিষয়টি সম্পর্কে
জানতে চাইলে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি পড়ুন। কারণ আপনি যদি প্রথম থেকে
শেষ পর্যন্ত না পড়েন, তাহলে ভালোভাবে বুঝতে পারবেন না। তাই আশা করি যে বিষয়টি
সম্পর্কে জানতে এসেছেন সেটা সম্পূর্ণ সঠিকভাবে জেনে নিন।
এই আর্টিকেলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে, দেশে প্রায় কত রকম ফ্রিল্যান্সিং
সেবা দেওয়া হয়, ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত টাকা লাগে, ফ্রিল্যান্সিং এ বাংলাদেশের
অবস্থান ২০২৪, কত সংখ্যক ফ্রিল্যান্সার বাসায় বসে কাজ করে?, এই সমস্ত বিষয়গুলো
জানতে পারবেন।
ভূমিকা
বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সাররা আজকের দিনে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
করছে। ঘরে বসে কাজ করে তারা বিদেশী মুদ্রা অর্জন করছেন এবং দেশের অর্থনীতিতে
অবদান রাখছেন। এই ব্লগ পোস্টে আমরা বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের আয়, তাদের সামনে
চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যতে এই খাতের সম্ভাবনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
এছাড়াও এই আর্টিকেলে একজন ফ্রিল্যান্সার এর মাসিক আয় কত এই বিষয়েও আলোচনা করব।
তাই আপনারা যারা নতুন ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চান, তারা অবশ্যই শুরু থেকে শেষ
পর্যন্ত আর্টিকেল মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
কত সংখ্যক ফ্রিল্যান্সার বাসায় বসে কাজ করে?
ঘরে বসে আয়ের জনপ্রিয় মাধ্যম ফ্রিল্যান্সিং। আধুনিক যুগে ইন্টারনেটের বিস্তৃতির
সাথে সাথে ফ্রিল্যান্সিং একটি জনপ্রিয় পেশায় পরিণত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী লক্ষ
লক্ষ মানুষ বিভিন্ন দক্ষতা ব্যবহার করে ঘরে বসে কাজ করে আয় করছে। তবে সঠিক
সংখ্যা নির্ণয় করা কঠিন কারণ এই সংখ্যা ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে।
কেন ফ্রিল্যান্সিং এত জনপ্রিয়?
স্থান ও সময়ের স্বাধীনতাঃ ফ্রিল্যান্সাররা নিজেদের পছন্দমতো সময় ও
স্থানে কাজ করতে পারে।
বিভিন্ন কাজের সুযোগঃ লেখালিখি, গ্রাফিক্স ডিজাইন, প্রোগ্রামিং, ডিজিটাল
মার্কেটিং, ভিডিও এডিটিং ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং করা যায়।
আয়ের সম্ভাবনাঃ দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে ফ্রিল্যান্সাররা উচ্চ
আয় করতে পারে।
বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং
বাংলাদেশেও ফ্রিল্যান্সিং একটি উদীয়মান খাত। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি)
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ জানিয়েছেন, বর্তমানে বিশ্বের মোট ফ্রিল্যান্সারের
মধ্যে ১৪ শতাংশই বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন। এই সংখ্যা থেকেই বোঝা যায়
বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং কতটা জনপ্রিয়। তবে আস্তে আস্তে প্রযুক্তি যত উন্নতির
দিকে যাবে দিন দিন আরো ফ্রিল্যান্সিং এর সংজ্ঞা বৃদ্ধি পাবে বলে জানায়
প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ।
ফ্রিল্যান্সিং একটি স্বাধীন ও সৃজনশীল পেশা। যারা নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে
আয় করতে চায় তাদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং একটি চমৎকার বিকল্প। তবে সফল
ফ্রিল্যান্সার হতে হলে কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য এবং নিরন্তর শিক্ষা অর্জন করা জরুরি।
কত সংখ্যক ফ্রিল্যান্সার বাসায় বসে কাজ করে? তা নিশ্চয়ই এতক্ষণে জানতে পেরেছেন।
ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত টাকা লাগে
বর্তমান সময়ে চাকরি ছেড়ে ফ্রিল্যান্সিং এ অনেকেই যোগ দিচ্ছে। কারণ দিন যত যাচ্ছে
বেকারত্বের হার অনেকটাই বেড়ে যাচ্ছে। তাই সবাই মুক্ত বিষয় হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং
বাছাই করে নিচ্ছে। অনেকে মনে করেন ফ্রিল্যান্সিং শিখতে হাজার হাজার টাকার
প্রয়োজন হয়। কিন্তু আসলে এই কথাটা কতটা সত্য চলুন আজকের এই আর্টিকেল থেকে আমরা
জেনে নেই।
মূলত ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত টাকা লাগে বা ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কতদিন লাগে এ
বিষয়বস্তু নিয়েই আজকের এই আর্টিকেল। তাই আসুন আর দেরি না করে আপনার প্রশ্নের
সঠিক উত্তর পোস্টটির মাধ্যমে থেকে জেনে নিন।
ফ্রিল্যান্সিং এর অনেকগুলো সেক্টর রয়েছে। যেমনঃ ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব
ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, ওয়েব ডিজাইন, সহ আরো অনেক সেক্টর
রয়েছে ফ্রিল্যান্সিংয়ে। এই সেক্টরের মধ্যে আপনার পছন্দমত যেকোনো একটি সেক্টরের
ওপর দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। মূলত ফ্রিল্যান্সিং শিখতে আহামরি টাকার প্রয়োজন
হয় না।
(আইডিয়া) ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে আপনি যেকোনো ফ্রিল্যান্সিং শিখে
দক্ষতা অর্জন করে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং
শেখার জন্য বাংলাদেশে এখন হাজার হাজার প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়েছে। আপনি অফলাইনে বা
অনলাইনে যে কোন ভাবেই ফ্রিল্যান্সিং শিখে আয় করতে পারবেন।
তবে আপনি কোন সেক্টরের ওপর দক্ষতা অর্জন করবেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সব
সেক্টরগুলোতে সবাইকে দিয়ে হয় না। আপনার যদি একটু মেধা ভালো থাকে বা কঠোর
পরিশ্রম করতে পারবেন এবং এরকম মনোবল থাকে তাহলে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বা গ্রাফিক্স
ডিজাইন এই কাজগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি কাজ করতে পারেন।
উপরে উল্লেখিত যে সকল সেক্টরগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো আপনি যতটা সহজ মনে করছেন
ততটাও সহজ নয়। আপনি একটি বিষয়ে অবশ্যই মনে রাখবেন যেকোনো সেক্টরে অভিজ্ঞতা হতে
হলে আপনাকে হাতে ১ থেকে ২ বছর সময় নিয়ে আসতে হবে। এরপর আপনাকে কঠোর পরিশ্রম
করতে হবে। তারপরেই আপনি সফলতা অর্জন করতে পারবেন।
তবে আপনি যে সেক্টরগুলোতে কাজ করতে ইচ্ছুক তা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার উপর।
পছন্দ করা হয়ে গেলে আপনি সেই সেক্টরের ওপর ভালো একটি আইটি প্রতিষ্ঠানে গিয়ে
কোর্স শিখে নিবেন। আপনি চাইলে এগুলো ফ্রিতে করতে পারবেন। কি শুনে হয়তো অবাক
লাগছে? আসলে এখানে অবাক লাগার কোন কিছুই নেই।
আপনি যে কাজ শিখবেন তার সমস্ত রিসোর্সগুলো youtube এ বা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে
দেওয়া আছে। আপনি চাইলে সেগুলো দেখেও কাজ শিখতে পারেন। যদি আপনি ফ্রিতে
ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চান তাহলে আপনাদের জন্য সেরা মাধ্যম হবে ইউটিউব। ইউটিউবে
পাবেন না এমন কোন কিছুই নেই। সমস্ত তথ্যগুলো ইউটিউবে বড় বড় ইউটিউবাররা দিয়ে
রেখেছেন।
তবে আমি সাজেস্ট করব ইংলিশ ইউটিউবারের ভিডিওগুলো দেখতে। যদিও বুঝতে একটু কষ্ট হতে
পারে কিন্তু তারা অনেক সুন্দর করে বুঝিয়ে থাকেন। youtube এ আপনাকে নিজের মতো করে
কাজ শিখতে হবে। তাই আপনার যদি সেরকম মনোবল থাকে তাহলে আশা করি ইউটিউবে ভিডিও দেখে
আপনি সফল হতে পারবেন।
তবে নতুনদের কাছে ইউটিউব দেখে কাজ শেখাটা খুবই কষ্টকর। এখন কথা হচ্ছে নতুনরা
কিভাবে শিখবে? আমার ব্যক্তিগত মতে নতুনরা ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য অনেক ভালো
ভালো আইটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলোতে টাকা দিয়ে কোর্স করে শিখতে পারেন। আশা করি
আপনারা সঠিকভাবে কোর্স করলে সফলতা অবশ্যই পাবেন।
সতর্কতা
একটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখবেন বাংলাদেশে সব আইটি প্রতিষ্ঠান কিন্তু এক নয়। কিছু
কিছু আইটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা ফ্রিল্যান্সিং শেখার নাম করে ভুয়া কাজ করায়।
কাজ শেখানোর পর কোনরকম রেসপন্স পাওয়া যায় না। ভুল-ভাল কাজ শিখে কোন ইনকাম
ধরিয়ে দিতে পারেন না। তাই এগুলো প্রতিষ্ঠান থেকে অবশ্যই দূরে থাকবেন। এখন মনে
প্রশ্ন জাগতে পারে ভালো আইটি কোনটা কিভাবে বুঝব?
ভালো আইটি কোনটা কিভাবে বুঝবেন জেনে নিনঃ
দেখুন আপনি যেই আইটি প্রতিষ্ঠানে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য যান না কেন তাদের কাজের
এক্সপেরিয়েন্স প্রতিষ্ঠা মালিকের ইনকাম প্রুফ এইগুলো দেখে নেবেন। অনেক আইটি
প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা রয়েছে যারা তাদের ইনকাম প্রুফ দেখাতে দ্বিধাবোধ করেন। তাই
যারা দেখাতে চাইনা তাদের প্রতিষ্ঠানে কখনোই ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই। আর যারা
তাদের ইনকাম প্রুভ দেখাতে পারবে তাদের আইটি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবেন।
আর হ্যাঁ আরেকটি বিষয়ে মনে রাখবেন লাইফ টাইম সাপোর্ট পাবেন কিনা সেটা অবশ্যই
জেনে নেবেন। কারণ ফ্রিল্যান্সিং শেখার পরে লাইফ টাইম সাপোর্ট না পেলে সামনে
এগুলোটা খুবই কষ্টকর হয়ে যায়। তাই লাইফ টাইম সাপোর্টটা আমার ব্যক্তিগত মতে খুবই
গুরুত্বপূর্ণ। এইগুলো জেনে বুঝে তারপরে ভালো একটি আইটি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে
আপনার ফ্রিল্যান্সিং যাত্রা শুরু করবেন।
বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের আয়
বর্তমান ডিজিটাল যুগ। এই যুগে নতুন তরুণীরা বেকার বসে না থেকে অনেকেই ঘরে বসে
ফ্রিল্যান্সিং পেশাকে চাকরি হিসেবে গ্রহণ করছেন। দিন দিন বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সার
হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার কারণে আগের তুলনায় এখন বর্তমানে অনেক ডলার বাইরের দেশ
থেকে বাংলাদেশ আসছে। অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ মজুরি অনেক কম।
তার একটাই কারণ বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের ৮৩ শতাংশের বয়স ৩৫ বছরের কম। বিশ্বের
অন্যান্য দেশে তুলনায় বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের বয়স কম হওয়ার কারণে প্রতি
ঘন্টায় গড় আয়ের দিক থেকে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা এখনও পিছিয়ে রয়েছে।
জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশের যে সকল ফ্রিল্যান্সার রয়েছে তাদের মধ্যে যারা স্নাতক
ডিগ্রি অর্জন করেছেন তারা প্রতি ঘন্টায় প্রায় ২০ ডলার আয় করে থাকেন।
বাংলাদেশের যেসকল ফ্রিল্যান্সার রয়েছে তারা তাদের কাজের দক্ষতা দিয়ে আস্তে
আস্তে বাংলাদেশ অনেক উপরে নিয়ে আসছে। ৩০ ফ্রিল্যান্সিং দেশের র্যাঙ্কিংয়ের
তালিকায় বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান ২৯ তম।
এই রেংকিং একমাত্র দক্ষতা দিয়েই ফ্রিল্যান্সাররা নিয়ে এসেছে। ফ্রিল্যান্সিং
সেক্টরে ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, প্রোগ্রামিং এই সকল
কাজের দখল অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে। তবে, ধীরে ধীরে
বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের চাহিদা দিন দিন আরো বৃদ্ধি পাবে বলে জানা
যায়।
ডিজিটাল প্রযুক্তি আরো যত বেশি উন্নত হবে ভবিষ্যির ফ্রিল্যান্সিং আরও ততো বেশি
বৃদ্ধি পাবে। এক প্রতিবেদনে জানা গেছে ২০২০ সালে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা
প্রতি ঘন্টায় গড়ে ১০ ডলারের কম আয় করতেন। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের
ফ্রিল্যান্সাররা প্রতি ঘন্টায় গড়ে এখন ১৮ ডলার আয় করেন। এশিয়া এবং অন্যান্য
যে দেশগুলো রয়েছে সেগুলো থেকে প্রতি ঘন্টায় গড়ে ২০ থেকে ২৬ ডলার আয় করেন
বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা।
ফ্রিল্যান্সারদের কম টাকা কেন আয় হয়? জেনে নিন
কম টাকা আয় করার জন্য বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সার জাকির হোসেন বলেন, যেহেতু
বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা প্রায় অনেক কম বয়সি তাই শুরুতে অনেক বেশি মজুরিতে
কাজ দিতে চাই না অনেক ক্লায়েন্টেরা। পেওনিয়ারের জরিপ থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের
৯৩% ফ্রিল্যান্সাররা নির্দিষ্ট বা ঘন্টা ভিত্তিক মজুরিতে কাজ করে থাকেন।
তবে যাদের স্নাতক ডিগ্রী রয়েছে তারা অন্যদের তুলনায় প্রতি ঘন্টায় গড়ে অনেক
বেশি ডলার আয় করে থাকেন। পেওনিয়ারের প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, বাংলাদেশী
ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি হচ্ছে আর এর ফলে অনেক ক্লাইন্টও বেড়েছে।
বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের আয় তখনই বৃদ্ধি হবে যখন আস্তে আস্তে ফ্রিল্যান্সারের
সংখ্যা বাড়বে।
বর্তমানে বাংলাদেশে এখন প্রায় সাড়ে ১০ লাখ ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। যারা তাদের
দক্ষতা দিয়ে কাজ করে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস থেকে।
তাহলে আশা করি আপনারা এই আর্টিকেলটির অংশটুকু থেকে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের
আয় সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন।
একজন ফ্রিল্যান্সার এর মাসিক আয় কত
আপনার যদি প্রশ্ন হয়ে থাকে একজন ফ্রিল্যান্সারের মাসিক আয় কত? তাহলে এক্ষেত্রে
আমি বলব একজন ফ্রিল্যান্সারের নির্দিষ্ট কোন আয়ের সীমারেখা নেই। কিছু কিছু
ফ্রিল্যান্সার প্রতি মাসে ২০,০০০ টাকা ইনকাম করেন। আবার কিছু কিছু ফ্রিল্যান্সার
প্রতি মাসে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা ইনকাম করেন। মূলত একজন ফ্রিল্যান্সার এর মাসিক আয়
কত তার নির্ভর করে দক্ষতা এবং কাজের উপর।
তাই কখনো হতাশ হওয়া যাবে না। যারা প্রথমে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করে তারা এক টাকাও
ইনকাম করতে পারে না। কিন্তু এটা দেখে যদি হতাশ হয়ে যান তাহলে কখনোই
ফ্রিল্যান্সিং এ সফল হতে পারবেন না। ফ্রিল্যান্সিং পেশা এমন একটি পেশা যেখানে
আপনাকে প্রথম দিকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। তারপরেই সফলতা অর্জন করতে
পারবেন।
অনেক প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সাররা রয়েছে যারা প্রতি মাসে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা
পর্যন্ত ইনকাম করে থাকে। তারাও কিন্তু প্রথমে এক টাকাও ইনকাম করতে পারে নাই।
আস্তে আস্তে দক্ষতা অর্জন করেছেন। তাই আপনাকে তাদের মত করেই চলতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে এসে যত বেশি কঠোর পরিশ্রম করতে পারবেন আপনার ধীরে ধীরে তত
বেশি ইনকাম বৃদ্ধি হবে।
এখানে আপনি হুট করে এসে লাখ টাকা ইনকাম করার স্বপ্ন দেখলে হবে না। একটা কথা মনে
রাখবেন ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা উপার্জনের লোয়ার লিমিট আছে কিন্তু আপার লিমিট
নেই। ফ্রিল্যান্সিং ছাড়া আপনি অন্য কোন কাজে গেলেও পরিশ্রম ছাড়া আপনাকে কেউ এক
টাকাও দিবে না। তাই আগে পরিশ্রম করুন তারপর প্রতি মাসে লাখ টাকা ইনকাম করার
স্বপ্ন দেখুন।
যত বেশি পরিশ্রম করবেন তত বেশি ইনকাম বৃদ্ধি করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে
যত বেশি পরিশ্রম, সময় ও ধৈর্য দিয়ে কাজ করবেন শুরুতে আয় কম হলেও ধীরে ধীরে তা
বাড়তে থাকবে। তাই একবারে সঠিকভাবে বলা যাবে না একজন ফ্রিল্যান্সার এর মাসিক আয়
কত টাকা।
ফ্রিল্যান্সিং এ বাংলাদেশের অবস্থান ২০২৪
অনেক আগে থেকে বাংলাদেশ দাবি করে আসছিলো যে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম আউটসোর্সিং
এর কাজ হয় বাংলাদেশ থেকে। কিন্তু এই কথাটি কতটুকু সত্য তা অনেকেই জানেন না।
পৃথিবীতে প্রায় ২৪% আউটসোসিংয়ের কাজ করে ভারত ফ্রিল্যান্সাররা। শুনে হয়তো চমকে
গেলেও এটাই বাস্তব। আর এর পরেই ১৬% কাজের ভাগ নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান।
ফ্রিল্যান্সিং এ বাংলাদেশের অবস্থান অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেকটাই নিচে।
ফ্রিল্যান্সার নিয়োগের জন্য সেরা দেশ ২০২৪ এর ৩০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের
অবস্থান রয়েছে ২৯ নাম্বার রেঙ্কে। ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান তানজিবা
রহমান বলেন বিভিন্ন কারণেই আজ বাংলাদেশের অবস্থান ২৯ তম তালিকায় রয়েছে।
এটি তালিকা করা হয়েছে (hyaring) অর্থাৎ কাজ দেওয়ার প্রবণতা উপর নির্ভর করে।
তানজিমা রহমান আরো জানান বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা কম মজুরিতে অনেক বেশি
পারিশ্রমিকের কাজ করেন। আর বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রায় ফ্রিল্যান্সাররা ৩৫ বছরের
নিচে হওয়ার কারণে অনেক ক্লাইন্টেরাই কাজ দিতে চাইনা।
ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন এর মত কাজের চাহিদা বা
প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। যার কারণে বাংলাদেশে এই ধরনের কাজের উপস্থিতি খুবই কম।
এখনো আগের মতোই ৭ থেকে ১০ ডলারের কাজ নিয়ে প্রতিযোগিতায় নেমেছেন সব
ফ্রিল্যান্সাররা। কিন্তু আস্তে আস্তে এটি বৃদ্ধি হবে বলে জানান তানজিবা
রহমান।
বিশেষ করে প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ না থাকার কারণে অনেকেই বাংলাদেশের
ফ্রিল্যান্সারদের কাজ দেই না। এছাড়াও সঠিক সময়ে কাজ না দেওয়ার কারণেও এ
সমস্যাটা তৈরি হয়। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি সমস্যা ভাষাগত যোগাযোগের
ক্ষেত্রে।
এই জায়গায় এসে অনেক বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সাররা দুর্বল হয়ে আছে বলে আজ তালিকায়
এত পিছনে। তবে আস্তে আস্তে যদি কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারে এবং ভাষাগত যোগাযোগ
ঠিক করতে পারে তাহলে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের আয় অনেক গুন বৃদ্ধি হবে।
দেশে প্রায় কত রকম ফ্রিল্যান্সিং সেবা দেওয়া হয়
বর্তমান সময়ে আপনার কাছে একটি ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ ও ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে আপনি
খুব সহজেই অনলাইন থেকে আয় করতে পারবেন। বাংলাদেশের লাখো লাখো তরুণ-তরুণীরা
ফ্রিল্যান্সিং করে অনেক টাকা ইনকাম করছেন। বাংলাদেশে প্রায় অনেক রকমেরই
ফ্রিল্যান্সিং সেবা রয়েছে।
যেগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি সেক্টর থেকে আপনি কাজ করে ইনকাম করতে পারবেন। অনেক
নতুন তরুণ তরুণীরা রয়েছে যারা দেশে প্রায় কত রকম ফ্রিল্যান্সিং সেবা দেওয়া হয়
সেই সম্পর্কে জানেন না। তাই আপনারা যারা এ বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না তারা অবশ্যই
এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশের প্রায় ১৬০০ রকমের ফ্রিল্যান্সিং সেবা দেওয়া
হয়। ফ্রিল্যান্সিংয়ে অনেক জনপ্রিয় কাজ রয়েছে যার মধ্যে আপনি যেকোনো একটি
সেক্টর পছন্দ করে নিয়ে তার ওপর দক্ষতা অর্জন করে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস
থেকে লাখ লাখ টাকা আয় করতে পারেন।
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এ সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ কম্পিউটার
প্রোগ্রামিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন,
ওয়েব ডিজাইন, ভিডিও এন্ড অ্যানিমেশন, ট্র্যাক্স ফাইল প্রস্তুতি, রাইটিং অ্যান্ড
ট্রান্সেলেশন ইত্যাদি।
এই সকল সেক্টরগুলোতে কাজ করে অনেক তরুণীরা ভালো একটি দক্ষতা অর্জন করতে পারেন।
দিন দিন যত বেশি প্রযুক্তি উন্নত হবে আস্তে আস্তে ফ্রিল্যান্সিং এর সংখ্যা তত
বেশি বৃদ্ধি হবে।
লেখকের শেষ কথা | বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের আয়
প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আশা করি বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের আয় এবং
একজন ফ্রিল্যান্সার এর মাসিক আয় কত এই সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন। আপনি
বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সার হয়ে আয় করতে চাইলে আপনাকে সেই ভাবেই কঠোর পরিশ্রম করতে
হবে। কখনো নিজের মধ্যে বিরক্ত কর অনুভব নিয়ে আসার চেষ্টা করবেন না। একটি বিষয়
জেনে থাকুন সফলতা অর্জন করতে হলে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।
উপরে উল্লেখিত যে তথ্যগুলো আপনাদেরকে আজকে আমি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে শেয়ার
করেছি সেগুলো আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। এরকম আরো অনলাইন রিলেটেড আর্টিকেল
পেতে আমাদের ওয়েবসাইট প্রতিনিয়ত ভিজিট করুন। আর সর্বশেষে আপনাকে জানাই অসংখ্য
ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url