গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা করার সমস্ত উপায় জেনে নিন

আপনি কি গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কারণ এই আর্টিকেলে এই বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি সম্পূর্ণ আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনার সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন।
গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা করার সমস্ত উপায় জেনে নিন
এই আর্টিকেলটি একদম শেষ থেকে পড়লে, গনোরিয়া প্রতিরোধে করণীয়, গনোরিয়া এন্টিবায়োটিক ঔষধ, গনোরিয়া কি ভালো হয়?, গনোরিয়া রোগের লক্ষণ, গনোরিয়া রোগের এলোপ্যাথিক চিকিৎসা, গনোরিয়া রোগের চিকিৎসাঃ ডাক্তারের পরামর্শ, গনোরিয়ার ছবি, এই সকল বিষয়ে সঠিকভাবে জেনে যাবেন।

ভূমিকা

গনোরিয়া একটি যৌনবাহিত রোগ (এসটিডি) যা Neisseria gonorrhoeae নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত হয়। এই রোগটি সাধারণত যৌনসম্পর্কের মাধ্যমে ছড়ায় এবং পুরুষ ও নারী উভয়ের প্রজনন অঙ্গে প্রভাব ফেলে। প্রাথমিকভাবে গনোরিয়া সংক্রমণের লক্ষণগুলো মৃদু হলেও, চিকিৎসার অভাবে এটি গুরুতর জটিলতা তৈরি করতে পারে, যেমন বন্ধ্যাত্ব, প্রোস্টেট সমস্যা এবং প্রজনন অঙ্গের স্থায়ী ক্ষতি। প্রচলিত চিকিৎসার পাশাপাশি কিছু প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া উপায় গনোরিয়া উপশমে সহায়ক হতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, গনোরিয়া একটি গুরুতর ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ, তাই প্রাকৃতিক উপায় অনুসরণ করার পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

গনোরিয়া কি ভালো হয়?

গনোরিয়া কি ভালো হয়? এই বিষয়ে যারা জানতে চান তারা আশা করি এই আর্টিকেল অবশ্যই মনোযোগ সহকারে পড়বেন। কেননা এই বিষয়টি অনেকেই জানেনা। আর না জানার কারণে আপনার হয়তো এই আর্টিকেলে এসেছেন। কোনার রোগ অবশ্যই ভালো হবে যদি আপনি খুব দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারেন। 

গনোরিয়া রোগ হওয়ার সময় কিছু লক্ষণ দেখা দেয় সে লক্ষণগুলো যদি আপনি বুঝতে পারেন তাহলে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত। আর না হলে গনোরিয়া রোগের ঘর ও চিকিৎসা রয়েছে সেগুলো করার মাধ্যমে রোগটি ভালো করতে পারেন।
কিন্তু আপনাকে সবার আগে জেনে নিতে হবে গনোরিয়া রোগের লক্ষণ কি কি। মূলত আপনারা যদি লক্ষণগুলো জানতে এবং বুঝতে পারেন তাহলে আশা করি গনোরিয়া রোগ হয়েছে কিনা তা সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারবেন। আর যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারবেন। তাহলে আসুন আর্জেন্টিনা করে গণেরা রোগের লক্ষণ কি কি রয়েছে জেনে নিন।

গনোরিয়া রোগের লক্ষণ

গনোরিয়া রোগের লক্ষণসমূহ পুরুষ এবং নারীর ক্ষেত্রে আলাদা হতে পারে। সাধারণত সংক্রমণের ২ থেকে ১০ দিনের মধ্যে লক্ষণগুলো দেখা দেয়। তাই আপনারা যদি লক্ষণগুলো বুঝতে পারেন তাহলে আশা করি দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করে সঠিক সমাধান নিতে পারবেন। এখানে নিচে কিছু পুরুষ এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে কি কি লক্ষণ সমূহ রয়েছে তা উল্লেখ করা হয়েছে জেনে নিন

পুরুষদের ক্ষেত্রে লক্ষণসমূহঃ

  • প্রস্রাবের সময় জ্বালা-পোড়া বা ব্যথা।
  • লিঙ্গ থেকে পুঁজ বা হলুদ রঙের স্রাব।
  • অণ্ডকোষে ব্যথা বা ফোলাভাব।
  • প্রস্রাবের পর অস্বস্তি অনুভব করা।
নারীদের ক্ষেত্রে লক্ষণসমূহঃ
  • যোনি থেকে অস্বাভাবিক স্রাব।
  • প্রস্রাবের সময় ব্যথা বা জ্বালা।
  • অনিয়মিত পিরিয়ড হওয়া
  • পেটের নিচের অংশে ব্যথা বা অস্বস্তি।
  • জ্বর ও গায়ে ফুসকুঁড়ি হওয়া।
  • যৌন সম্পর্কের সময় ব্যথা বা রক্তপাত।
  • ডিম্বনালিতে প্রদাহ হওয়া।
  • যোনির ওষ্ঠে লালসহ দগদগে ঘা এবং যৌনাঙ্গ ফুলে যাওয়া।
এছাড়াও শরীরের কোন কোন স্থানে গনোরিয়া লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো জেনে নিনঃ
  • চোখ
  • গলা
  • মলদ্বার কিংবা জয়েন্ট গুলোতে

গনোরিয়া প্রতিরোধে করণীয়

গরানিয়া প্রতিরোধ করার জন্য আপনাকে যৌন স্বাস্থ্য রক্ষা সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে হবে। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলের অংশটুকুতে গনোরিয়া প্রতিরোধে করণীয় কি সেই উপায় সম্পর্কে জানিয়ে দিবো। তাই আসুন আর দেরি না করে জেনে নিন।

  • সর্বদা মলদ্বার কিংবা যৌন পথের যৌন মিলনের সময় কনডম ব্যবহার করুন। এতে করে গনোরিয়া হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
  • যৌন সঙ্গী সীমিতকরণ অর্থাৎ আপনি যৌন মিলনের সময় অতিরিক্ত না করে সীমিত করার সব সময় চেষ্টা করুন।
  • আপনি যদি যৌনভাবে সক্রিয় হন তাহলে প্রতি বছর পরীক্ষা করা উচিত। বিশেষ করে আপনার যদি একাধিক অংশীদার কিংবা একজন STI সহ সঙ্গী থাকে তাহলে অবশ্যই যৌন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন এবং চিকিৎসা নিন।
  • আপনি চাইলে হোমোপ্যাথিতেও চিকিৎসা করতে পারেন কিন্তু হোমিওপ্যাথির ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ হোমিও ডাক্তারের পরামর্শ নিন এরপর ওষুধ সেবন করুন।
  • এছাড়াও আপনি চাইলে গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা করেও ভালো করতে পারেন।

গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

আপনি যদি গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে বলবো ঘরোয়া ভাবে এই রোগের তেমন কোনো চিকিৎসা নেই। তবে আপনাদের অবশ্যই কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
যদি আপনারা করতে পারেন তাহলে আশা করি সেটাই আপনার গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা। এই আর্টিকেলের নিচে কিছু বিষয় উল্লেখ করব যা গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া সমাধান।

  • গনোরিয়া রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রথমত আপনাকে যে নিয়মটি অনুসরণ করতে হবে সেটি হলো একজন জীবনসঙ্গীবাদে অন্য কারো সাথে যৌন মিলন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • যখন আপনার পিরিয়ড হবে তখন মাঝে মাঝে প্যাড পরিবর্তন করতে হবে এবং পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করতে হবে।
যদি আপনারা গনোরিয়া রোগে আক্রান্ত হন তাহলে যৌন মিলন একটু কম করার চেষ্টা করতে হবে। বিশেষ করে যদি আপনারা দুইজনে গনোরিয়া রোগে আক্রান্ত হন তাহলে চিন্তা না করে যত দ্রুত সম্ভব যৌন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। ইনশাআল্লাহ আপনার গনোরিয়া রোগ খুব দ্রুত ভালো হয়ে যাবে। 

তবে গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা এর ভেতরে আরেকটি অনেক বেশি প্রয়োজন সেটি হলো সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা। তাই যখন আপনাদের এই গনোরিয়া রোগ হবে তখন কখনোই অপরিষ্কার থাকবেন না। যতক্ষণ পারবেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকবেন এবং দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করবেন।

গনোরিয়া এন্টিবায়োটিক ঔষধ

গনোরিয়া একটি যৌনবাহিত ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ। এই রোগের চিকিৎসায় সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। তবে, গনোরিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা এবং প্রয়োজনীয়তা নির্ভর করে রোগীর স্বাস্থ্য, সংক্রমণের স্তর এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যগত বিষয়ের ওপর।
আপনি চাইলে গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা করেও ভালো করতে পারেন কিংবা অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়ার মাধ্যমেও ভালো করতে পারেন। নিচে কিছু গনোরিয়া এন্টিবায়োটিক ঔষধ এর নাম দেওয়া হয়েছে জেনে নিন।

গনোরিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত এন্টিবায়োটিক ঔষধসমূহঃ

সেফট্রিয়াক্সন (Ceftriaxone) -- সেফট্রিয়াক্সন গনোরিয়ার জন্য সবচেয়ে প্রচলিত এবং কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিক। এটি সাধারণত ইনজেকশনের মাধ্যমে দেওয়া হয়। বর্তমানে সেফট্রিয়াক্সন একটি একক ইনজেকশন হিসেবে দেওয়া হয়, যা গনোরিয়া সংক্রমণ নিরাময়ে কার্যকর।

আজিথ্রোমাইসিন (Azithromycin) -- অনেক সময় সেফট্রিয়াক্সনের সঙ্গে আজিথ্রোমাইসিন ট্যাবলেটও দেওয়া হয়। আজিথ্রোমাইসিন একটি মুখে খাওয়ার অ্যান্টিবায়োটিক, যা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ধ্বংস করতে সহায়তা করে।

ডক্সিসাইক্লিন (Doxycycline) -- কিছু ক্ষেত্রে গনোরিয়ার সঙ্গে যৌনবাহিত অন্য কোনো সংক্রমণ থাকলে ডক্সিসাইক্লিন দেওয়া হতে পারে। এটি মুখে খাওয়ার জন্য ব্যবহৃত একটি অ্যান্টিবায়োটিক।

উপরে উল্লেখিত এন্টিবায়োটিক ওষুধ ছাড়াও আরও অনেক ওষুধ রয়েছে যেমনঃ ক্যাফট্রিয়াক্সোন ইত্যাদি। এইগুলো এন্টিবায়োটিক ওষুধ ব্যবহার করা ফলে গনোরিয়া রোগ দ্রুত ভালো হয়ে যায়।

গনোরিয়া রোগের চিকিৎসাঃ ডাক্তারের পরামর্শ

গনোরিয়ার চিকিৎসা করার আগে সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা পরামর্শ নেওয়া জরুরি। অনেক সময় গনোরিয়া অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি প্রতিরোধী হয়ে উঠতে পারে, তাই চিকিৎসক সঠিক পরীক্ষা করে উপযুক্ত ওষুধ নির্ধারণ করবেন। কোন অ্যান্টিবায়োটিক কতদিন বা কীভাবে গ্রহণ করতে হবে, তা চিকিৎসকই নির্ধারণ করবেন।

গনোরিয়া রোগের এলোপ্যাথিক চিকিৎসা

আপনি চাইলে গনোরিয়া রোগ এলোপ্যাথিক চিকিৎসা করেও ভালো করতে পারবেন। তবে এর আগে অবশ্যই আপনাকে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে যখন আপনারা যৌন মিলন করবেন তখন অবশ্যই কনডম ব্যবহার করবেন। 
গনোরিয়া রোগ দ্রুত ভালো করার জন্য একজন এলোপ্যাথিক চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করবেন। আশা করি সেই ওষুধগুলো খাওয়ার মাধ্যমে আপনি খুব দ্রুত গনোরিয়া রোগ থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন। তাই অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করে গণেরা রোগ থেকে মুক্ত হন।

গনোরিয়ার ছবি

আপনাদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছে যারা গনোরিয়া রোগ দেখতে কেমন হয় সেটা জানেন না। তাই আজকে আমি গনোরিয়ার ছবির মাধ্যমে দেখিয়ে দিব যে গণিতের রোগ দেখতে কেমন হয়। তাই আসুন গনোরিয়ার ছবিটি দেখে নিন।
গনোরিয়ার ছবি
ছবি কালেক্টঃ en.wikipedia.org

লেখকের শেষ কথা | গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

গনোরিয়া একটি যৌনবাহিত রোগ, যা প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা করা জরুরি। গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা করার পাশাপাশি গনোরিয়া রোগ সম্পূর্ণ নিরাময়ের জন্য ডাক্তারি পরামর্শ এবং আধুনিক চিকিৎসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘরোয়া ভাবে ভালো হলেও কিন্তু যথাযথ মেডিকেল ট্রিটমেন্ট গ্রহণ না করলে রোগটি জটিল আকার ধারণ করতে পারে। তাই, রোগের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ পরামর্শ নেওয়া উচিত। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪