সহদেবী গাছের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

সহদেবী গাছের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আজকে আমি এই আর্টিকেলে আপনাদেরকে এই বিষয়টি সম্পর্কে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সঠিক তথ্য জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। তাই আপনারা যারা এই বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না তারা অবশ্যই এই আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
সহদেবী গাছের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়লে, নয়নতারা গাছের উপকারিতা, ধুতরা গাছের উপকারিতা, আমলকি গাছের উপকারিতা, এই সমস্ত বিষয়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সঠিকভাবে জেনে যাবেন।

ভূমিকা

সহদেবী গাছ (বৈজ্ঞানিক নাম: Sida cordifolia) একটি গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ উদ্ভিদ, যা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশে এই গাছের ঔষধি গুণের জন্য এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সহদেবী গাছের পাতা, ফুল, এবং শেকড় বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে কার্যকর। এই গাছের প্রধান উপকারিতা হলো ব্যথা উপশম এবং স্নায়ু সমস্যার চিকিৎসায়। সহদেবী গাছের উপকারিতা মধ্যে থাকা উপাদানগুলো প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি হিসেবে কাজ করে, যা শরীরের প্রদাহ ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি অ্যাজমা, ঠান্ডা, কাশি এবং জ্বর নিরাময়ে সহায়ক। সহদেবী গাছ হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে এবং পাচনতন্ত্রের সমস্যা দূর করতেও ব্যবহৃত হয়। এটি ত্বকের রোগের জন্যও প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে কাজ করে, যেমন চর্মরোগ এবং ফোঁড়ার চিকিৎসায় সহায়ক।

আমলকি গাছের উপকারিতা

আমলকি, বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র পাওয়া এক অত্যন্ত উপকারী ফল। এটি শুধু সুস্বাদুই নয়, এর ভেতর রয়েছে অসংখ্য ওষধি গুণ। আমলকি গাছের পাতা ও ফল দুটোই ওষুধই রূপে ব্যবহার করা হয়। এই আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা পিয়ারার চেয়েও তিনগুণ বেশি। 
এর যে বিশেষ উপকারিতা রয়েছে তা অনেকেই জানেন না। এই আর্টিকেলে আমরা আমলকির বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই আপনারা যারা এ বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না তারা অবশ্যই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে করুন।

আমলকির বিভিন্ন ঔষধি গুনাগুনঃ

আলসার চিকিৎসায় আমলকিঃ যে সকল ব্যক্তিরা গ্যাস্ট্রিক বা আলসার সমসায় ভুগছেন তারা প্রতিনিয়ত খালি পেটে আমলকি খেলে গ্যাস্ট্রিক বা আলসারের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিতে আমলকিঃ আমলকীতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে। যার কারণে যে সকল বাক্তিদের দৃষ্টি শক্তি কম তাদের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করতে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে এই আমলকি। এছাড়াও চোখ লাল হয়ে যাওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া, চোখ চুলকানো সহ ইত্যাদির সমস্যা দূর করতে অনেক বেশি সাহায্য করে আমলকি। আপনারা যদি আমলকি রসের সাথে সামান্য একটু মধু মিশ্রণ করে খেতে পারেন তাহলে আশা করি চোখের জ্যোতি বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।

কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলসের সমস্যা দূর করেঃ আমলকিতে সলিউবল নামে এক ধরনের ফাইবার থাকে যা শরীর থেকে টক্সিক উপাদান বের করে দিতে সহায়তা করে এবং হজমে সাহায্য করে। এই আমলকির রস কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এবং পাইলসের সমস্যা থেকে মুক্তি প্রদান করেন।

দাঁতের মাড়ি রোগ স্কার্ভি দূরীকরণেঃ সাধারণত ছোট থেকে প্রাপ্তবয়স্ক অনেক ছেলে-মেয়ের দাঁতের মাড়িতে স্কার্ভি রোগ দেখা যায়। বিশেষ করে শরীরে ভিটামিন সি এর অভাবে দাঁতের মাড়িতে স্কার্ভি রোগ দেখা দেয়। এই রোগ হলে দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত বের হওয়া, শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া, মাড়িতে ঘা বের হওয়া, ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া, হাড়ের পরিবর্তন ও চামড়ার নিচে রক্তক্ষরণ হওয়া দেখা দেয়। 

তবে আপনারা যদি এই সমস্যা দূর করতে চান তাহলে আমলকি রস খেতে পারেন। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা কার্ভি রোগের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। তাই কেউ যদি প্রতিদিন এক থেকে দুইটি করে আমলকি খেতে পারে তাহলে আশা করি এই সমস্যাগুলো থেকে খুব সহজেই মুক্তি পেয়ে যাবে।

চুলের যত্নে ও খুকশির সমস্যা দূর করতেঃ অনেকেরই বিভিন্ন কারণে চুলের যত্ন নেই না। যার কারণে চুল অযত্নের অভাবে অনেকের মাথায় খুশকি হওয়া, চুল জট লেগে যাওয়া, চুল গন্ধ হয়ে যাওয়া, চুলের অপুষ্টি, কম বয়সে চুল পেকে যাওয়া সমস্যা হয়ে থাকে। 

তাই এগুলো রোধ করতে প্রতিদিন সকালে আমলকির রস এবং মধু একসঙ্গে মিশ্রণ করে খেতে পারলে আশা করি আপনার চুলের সমস্ত সমস্যা দূর হবে পাশাপাশি চর্মরোগ নিরাময় হবে। তাছাড়া এই মিশ্রণটি খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে এবং মুখের চামড়ায় কোন দাগ পড়বে না।

হাড় মজবুত করতেঃ সাধারণত যাদের বয়স দিন দিন বৃদ্ধি হয়ে যায় সাথে সাথে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয়। পাশাপাশি হাড় অনেক দুর্বল হয়ে যায়। যার কারণে অনেকেই ভালোভাবে হাঁটাচলা করতে পারে না। তবে আমলকি আপনার হাড় দুর্বলতা দূর করতে হয়ে উঠতে পারে সমস্যা সমাধান। আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে যা হাড় মজবুত করতে অনেক বেশি সাহায্য করবে।

ক্ষুধামন্দা দূর করতে আমলকিঃ আমলকি হলো একটি প্রাকৃতিক ফল, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ক্ষুধামন্দা বা ক্ষুধা না লাগার সমস্যায় এটি বিশেষভাবে কার্যকর। আমলকির মধ্যে থাকা ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান হজমশক্তি বাড়ায় এবং ক্ষুধামন্দা দূর করতে সাহায্য করে।

রক্তের সুগার কমাতেঃ এক গবেষণায় দেখা গেছে যে আমলকি রয়েছে পলিফেনল যা রক্তের অক্সিডেটিভ শর্করা থেকে শরীরকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। ফলে শরীরে ইনসুলিন চুষে নিয়ে ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে।

রক্ত পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করেঃ আমলকি রক্ত পরিষ্কার রাখতে বেশ কার্যকর। মূলত এই আমলকিতে এন্টি-এক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে যার কারণে শরীর থেকে টক্সিন উপাদান দূর করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন আমলকি খাওয়ার ফলে রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করে।

গলা ব্যথা এবং ঠান্ডা দূর করতেঃ সাধারণত কিছু কিছু মানুষ রয়েছে যাদের শীতের সময় গলা ব্যথা এবং ঠান্ডা লাগা শুরু হয়। আবার কিছু মানুষের গরমের সময়ও গলা ব্যথা এবং ঠান্ডা লাগা শুরু হয়। বিশেষ করে ছোট শিশুদের গলা ব্যথা এবং ঠান্ডা অনেক বেশি লেগে থাকে। 
তবে গলা ব্যথা ও ঠান্ডা দূর করার জন্য আমলকি বেশ কার্যকর। সামান্য মধু এবং আমলকির গুঁড়ো একসাথে মিশ্রণ করে দিনে ৩ থেকে ৪ বার খেলে গলা ব্যাথা ও ঠান্ডা দূর হয়ে যায়। যাদের দীর্ঘমেয়াদী কাশি ও সর্দি রয়েছে তাদের জন্যও এই নির্যাস অনেক উপকারী।

দেহের চর্বি কমাতে সাহায্য করে আমলকিঃ দিনের পর দিন বিভিন্ন খাবার খাওয়ার ফলে শরীরে চর্বি অনেক বৃদ্ধি হয়ে যায়। যার কারণে কোন কাজ করতে গেলে সমস্যার মধ্যে পড়তে হয় শরীর নিয়ে। তবে এই চর্বি কমাতে আমলকির সাহায্য নিতে পারেন। প্রতিদিন নিয়ম করে আমলকি খেলে শরীরের প্রোটিনের স্তর বৃদ্ধি করে যা দেহের চর্বি কমাতে অনেক বেশি সাহায্য করে। 

এছাড়াও এই আমলকি খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। তাই যারা ওজন কমাতে চান তারা প্রতিদিন নিয়ম করে আমলকি খাওয়ার চেষ্টা করুন। আশা করি আপনার ওজন কিছুদিনের মধ্যেই কমতে শুরু করবে।

সহদেবী গাছের উপকারিতা

সাধারণত বাড়ির আশেপাশে বা ঝোপ ঝাড়ে কিংবা রাস্তার সাইডে দেখা যায় সহদেবী গাছ। অনেকে হয়তো চিনেন কিন্তু নাম জানেন না। মূলত এই গাছটি আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারে সেটা অনেকেই জানেন না। এই সহদেবী গাছটি অনেকটা শ্বেত বেড়েলা গাছের মতো। এই গাছটি চন্দনের মিশ্র এবং গোলাপ মতো একটি গন্ধ বের হয়। 
যার কারণে দূর থেকেই এই গাছটিকে সহজে চেনা যায়। তবে এই গাছটির কিছু অসাধারণ উপকারিতা রয়েছে যা আপনারা অনেকেই জানেন না। সহদেবী গাছের উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা যদি না জেনে থাকেন, তাহলে আসুন এই পোস্টটির মাধ্যমে জেনে নিন।

সহদেবী গাছের উপকারিতাঃ

স্রাব নিয়মিত করতেঃ মহিলাদের মাসিক কালের সময় নিয়মিত স্রাব না হওয়ার কারণে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বিশেষ করে কয়েক মাস এরকমভাবে কেটে গেলে তলপেটে প্রচন্ড ব্যথা হয়। যদি এইরকম সমস্যায় কোন মহিলা পড়েন তাহলে সহদেবী গাছ থেঁতো করে রস তৈরি করে নিবেন। এরপর সামান্য গরম করে নিয়ে সেবন করবেন। আশা করি অনেক উপকার পাবেন।

ফাইলেরিয়া নিরাময়েঃ অনেক মানুষের ফাইলেরিয়া সমস্যায় ভুগেন। তবে এই সমস্যা দূর করার জন্য সহদেবী গাছ অনেক উপকারী। এটি খাওয়ার নিয়ম প্রথমে আপনাকে সহদেবের গাছ নিতে হবে। এরপর গোলমরিচ, বড় একটি এলাচ একসঙ্গে মিশে ভালোভাবে বেটে নিতে হবে। এরপর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে মিশ্রণ করে প্রতিদিন সকালে খেলে ফাইলেরিয়া সমস্যা থেকে খুব সহজেই মুক্তি পেয়ে যাবেন।

মাথা ব্যথা নিরাময়েঃ অনেকেরই মাথা ব্যাথা হয়ে থাকে। তবে এই মাথা ব্যাথা প্রচণ্ড আকারে হয়ে গেলে অসহ্যকর একটা কষ্ট অনুভূতি হয়। যা সহ্য করার মতো নয়। তাৎক্ষণিক সহদেবী গাছ পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিয়ে থেঁতো করে নিবেন। এরপর হালকা কুসুম গরম করে নিয়ে থেঁতো করা সহদেবী গাছের সাথে অল্প কিছু চিনি মিশ্রণ করে খেলে মাথা ব্যাথা খুব দ্রুত ভালো করতে সাহায্য করবে।

পেটের ব্যথা নিরাময়েঃ অনেক সময় বিভিন্ন কারণে পেট ব্যথা হয়ে থাকে। তবে এই সময় সহযোগী পাতার রস হালকা কুসুম গরম করে নিয়ে খেতে পারেন, তাহলে পেট ব্যথা দ্রুত ভালো হয়ে যায়।

হাত-পায়ের খিল ব্যথা দূর করতেঃ অনেক সময় হাত-পা অনেক খিচ অথবা খিল ধরলে ব্যথা অনুভব হয়। এই অবস্থায় সহযোগী গাছের পাতার রস পরিষ্কার পানির সাথে মিশ্রণ করে খেলে হাত-পায়ের খিল ব্যথা আশা করি দূর হয়ে যাবে। আশা করি সহদেবী গাছের উপকারিতা সম্পর্কে আপনি সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন।

নয়নতারা গাছের উপকারিতা

নয়নতারা একটি জনপ্রিয় ঔষধি গাছ, যা শুধুমাত্র সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে নয়, এর ঔষধি গুণাগুণের জন্যও বিখ্যাত। বৈজ্ঞানিক নাম Catharanthus roseus হলেও এটি বাংলাদেশে নয়নতারা নামেই পরিচিত। এর পাতা, ফুল এবং শেকড় বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। এই আর্টিকেলে আমরা নয়নতারা গাছের উপকারিতা সম্পর্কে জানবো। তাই আসুন আর দেরি না করে বিস্তারিতও তথ্য জেনে নিন।

ডায়াবেটিসঃ দেশে এখন অনেক মানুষ ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছেন। তবে এই ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পেতে নয়নতারা ফুলের গুরুত্ব অপরিসীম। এই নয়ন তারা গাছের ফুল ও শিকড় শুকনো হলে এক গ্রাম আর কাঁচা হলে দুই গ্রাম একসঙ্গে একটি মাঝারি কাপের এক কাপ পানিতে রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই পানিটা ফুটিয়ে নিয়ে অর্ধেক করে সকালে এবং রাতে পান করুন। আশা করি আপনার ডায়াবেটিসের সমস্যা দূর হয়ে যাবে। তবে এই ওষুধ ব্যবহার করার আগে অবশ্যই রক্ত পরীক্ষা করে নিয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণেঃ যে সকল ব্যক্তিদের ব্লাড প্রেসারের সমস্যা রয়েছে তারা ৮ থেকে ১০টি নয়নতারা পাতা একসঙ্গে থেঁতো করে নিয়ে তার রস প্রতিদিন সকালে বা রাতে ঘুমাতে আগে খেলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। পাশাপাশি হার্ট সুস্থ থাকবে।

অ্যাংজাইটি, টেনশন, স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণেঃ আজকাল বিভিন্ন ধরনের রোগ আমাদের শরীরে বাসা বাঁধে। প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের টেনশন, অ্যাংজাইটি, ঘুম না হওয়া, ভুলে যাওয়ার সমস্যা সহ ইত্যাদি সমস্যায় ভুগেন। শরীরে যখন অসুখ বাসা বাঁধে তখন বোঝা যায় না কিন্তু পরবর্তীতে যখন রোগটা সৃষ্টি হয় তখন বোঝা যায়। 

তবে এই সমস্যার সমাধান পেতে এক মুঠো শুকনো নয়নতারার পাতা ও ফুল হালকা কুসুম গরম পানিতে ফুটিয়ে নিয়ে তারপর সেটা ছেঁকে নিয়ে এক চামচ মধু মিশ্রণ করে প্রতিদিন সকালে খালি এক কাপ করে খেলে আশা করি অ্যাংজাইটি, টেনশন, স্ট্রেস এই সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

স্মরণশক্তি বৃদ্ধিঃ যাদের স্মরণ শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে তারা নয়নতারার ফুল এবং মূল ও পাতা খেলে স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পাবে। এটি খাওয়ার নিয়ম হলো প্রথমে আপনাকে দুই গ্রাম নয়ন তারা ফুল এবং মূল ও পাতা ২ গ্রাম নিতে হবে। এরপর এক কাপ পানি দিয়ে সেগুলো সিদ্ধ করে নিতে হবে। 

এরপর সেদ্ধ করা হয়ে গেলে পানিটুকু থেকে ফুটিয়ে আধা কাপ করে নিতে হবে। এরপর সেই পানি অর্ধেক করে সকালে এবং বিকালে টানা ৩০ তিন অর্থাৎ ১ মাস পান করলে আশা করি স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।

কৃমি রোগের সমস্যা দূর করতেঃ যাদের কৃমি রোগের সমস্যা রয়েছে তারা দুই গ্রাম কাঁচা অথবা যদি শুকনো হয় তাহলে এক গ্রাম পরিমাণের নয়নতারার গাছের ফুল, মূল ও পাতা একসঙ্গে একটি পাত্রে রাতে ভিজে রাখুন। এরপর সকালে ঘুম থেকে উঠে সেই পানিটা ছেঁকে ফুটিয়ে অর্ধেক করে নিন। 

এরপর অর্ধেক করা ফোটানো পানি দুই ভাগে ভাগ করে সকালে এবং রাতে এক সপ্তাহ থেকে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতিদিন খেলে আশা করি কৃমির সমস্যা দূর হয়ে যাবে। তবে, ছোট বাচ্চাদের খাওয়ানোর আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

অনিয়মিত ঋতুস্রাব ও লিউকোরিয়াঃ যে সকল মহিলাদের অনিয়মিত মাসিক হয়ে থাকে বা অধিক স্রাব পিরিয়ড, কালীন যন্ত্রণা ইত্যাদি সমস্যায় ভোগেন। তারা এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নয়নতারা গাছের ফুল, মূল ও পাতা ফুটিয়ে টানা ৩০ দিন অর্থাৎ ১ মাস খেলে আশা করি সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন। এছাড়াও লিউকোরিয়ার মতো অসুখ থেকেও মুক্তি মিলবে নয়নতারা গাছের ফুল, মূল ও পাতা খেলে।

বিভিন্ন পোকামাকড়ের জ্বালাপোড়া দূর করতেঃ বিভিন্ন পোকামাকড় যেমন বোলতা, মৌমাছি, কাঠপিঁপড়ে, ভোমরা ইত্যাদি প্রভৃতির পোকামাকড় কামড়ালে সেখানে অনেক জ্বালা যন্ত্রণা হয়। তবে এই জ্বালা যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে নয়নতারা গাছের পাতা থেঁতো করে সেই রস বাটা করে লাগিয়ে রাখলে সে সমস্ত জ্বালা যন্ত্রণা দূর হবে।

স্কিন সমস্যা এবং চর্ম রোগঃ অনেকেরই স্কিনের সমস্যা কারণে বিভিন্ন ওষুধ ব্যবহার করেন স্কিন সমস্যা দূর করার জন্য। তবে নয়নতারা পাতা বেটে তার রস ব্যবহার করলে স্কিনের সমস্যা এবং চর্ম রোগের সমস্যা দূর হবে। এছাড়াও শহরে চুলকানি এবং ফাঙ্গাসজনিত সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া যাবে এই নয়নতারা গাছের পাতা রস করে ব্যবহার করলে। 

এছাড়াও এই নয়নতারা গাছের পাতা সেদ্ধ করে সেই পানি ব্যবহার করলে ত্বক হয়ে ওঠে উজ্জ্বল এবং তরতাজা। এছাড়াও আপনি চাইলে নয়নতারা গাছের পাতার সঙ্গে সামান্য কিছু হলুদ মিশ্রণ করে একটি ফেসপ্যাক তৈরি করে মুখে লাগিয়ে রাখলে ত্বকের জেল্লা রাতারাতি বৃদ্ধি হয়।

ক্যানসারের মতো সমস্যা দূর করতেঃ বিশেষ করে অনেক মানুষেরই ক্যান্সার রোগের সমস্যায় ভোগেন। তবে নয়নতারা ক্যান্সার রোগের মত সমস্যা দূর করতে অসাধারণ কাজ করে। তাই আপনাদের যাদের এই সমস্যাটি রয়েছে তারা নয়নতারা গাছ ব্যবহার করতে পারেন।

এছাড়াও যাদের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করা প্রয়োজন, বাতের ব্যাথা সমস্যার সমাধান, রক্তক্ষরণ বন্ধ করা সহ ইত্যাদি সমস্যার সমাধান এই নয়নতারা গাছটি। তাই আপনারা যারা এই সমস্যায় ভুগছেন তারা অবশ্যই নয়নতারা গাছ ব্যবহার করে আপনাদের সমস্যার সমাধান নিন। 

তবে যে সকল ব্যক্তিদের হার্টের সমস্যা, কিডনির সমস্যা, লিভারের সমস্যা এবং রেড সংক্রান্ত যে সমস্যাগুলো আগে থেকে রয়েছে তারা অবশ্যই নয়নতারা গাছ ব্যবহার করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন।

ধুতরা গাছের উপকারিতা

গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত একটি গাছ হচ্ছে ধুতরা গাছ। এই গাছটি একটি ভেষজ উদ্ভিদ। মূলত ধুতরা গাছের ফুলের সৌন্দর্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও মনোভাব। বর্ষাকালে ধুতরা গাছের ফুল ফোটা শুরু হলেও সেটি হেমন্তকাল জুড়ে ফুল দেখা যায়। এই গাছের শাখা প্রশাখায় সুন্দর সুন্দর সাদা ফুল ধরে ধরে। এই গাছটি লম্বা আকৃতির মতো দেখতে হয়। 

এই গাছটির দুটি জাত রয়েছে একটি সাদা ফুল আরেকটি সাদা বেগুনি মিশ্রণ ফুল ফোটে। তবে এই গাছের যে ওষুধি গুনাগুন রয়েছে সেটা অনেকেই জানেন না। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলে ধুতরা গাছের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। আসুন তাহলে জেনে নিন এই গাছটির কি কি ওষুধি গুণ রয়েছে।

শ্বাসকষ্টের সমস্যা দূর করতেঃ ধুতরা গাছের যে পাতা, মূল, ফুল ও ফল রয়েছে সেগুলো সিদ্ধ করে বুকে সেঁক দিলে শ্বাসকষ্ট সমস্যা দূর হয়ে যায়। তাই যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে তারা এই পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন।

হাঁপানি রোগেঃ যাদের হাঁপানির মতো সমস্যা রয়েছে তারা কৃষ্ণ ধুতরা গাছের শুকনা পাতা এবং ফুল বাসক পাতা ভালোভাবে সিগারেটের মত জড়িয়ে তৈরি করে আগুন দিয়ে টানলে হাঁপানির কষ্ট থেকে অনেকটাই মুক্তি মিলবে।

স্তনের বেদনায়ঃ যারা স্তনের বেদনায় ভুগেন তারা ধুতরা পাতা এবং কাঁচা হলুদ একসঙ্গে থেঁতো করে স্তনের বেদনা স্থানে লাগিয়ে রেখে পড়ে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিলে স্তনের বেদনা থেকে অনেকটা মুক্তি মিলবে।

মাথার টাক রোগেঃ মাথা টাক হয়ে যাই বিভিন্ন সমস্যার কারণে। কিছু কিছু মানুষের হরমোনের কারণে আবার কিছু কিছু জীবাণু ঘটিত কারণে মাথার চুল উঠে গিয়ে টাক পড়ে যায়। তবে, জীবন ঘটিত কারণে যদি আপনার মাথার চুল পড়ে গিয়ে টাক পড়ে যায় তাহলে ধুতরা পাতার রস মাথার এক পাশে লাগিয়ে রেখে পরের দিন অপর পাশে লাগালে এবং একদিন অন্তর ব্যবহার করলে আশা করা যায় টাক রোগ থেকে মুক্তি মিলবে।

বাত ব্যথা থেকে মুক্তি মিলবেঃ অনেক মানুষেরা বাত ব্যথার জন্য খুবই কষ্টে ভুগেন। তবে বাত ব্যথা দূর করার জন্য ধুতরা পাতার রস এবং সরিষার তেল একসঙ্গে মিশ্রণ করে গরম করে নিবেন। এরপর সেই মিশ্রণ করা প্যাকটি গরম অবস্থায় বেদনা স্থানে মালিশ করলে সেই বাত ব্যথার বেদনা থেকে অনেকটা আরাম পাওয়া যাবে।

লেখকের শেষ কথা | চিনিগুড়া গাছের শিকড়ের উপকারিতা

প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আশা করি সহদেবী গাছের উপকারিতা এবং নয়নতারা গাছের উপকারিতা সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন। আপনারা যদি আর্টিকেলটি পড়ে একটুও উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই আপনারা বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এই আর্টিকেলটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করলে আপনার বন্ধুরা সহ আরও অনেকেই জানতে পারবে।

তাই আর দেরি না করে আপনার বন্ধুদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করুন। এই রকম আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার কোনো মতামত জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে সেটা জানিয়ে যাবেন। এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪