সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা - সোনা পাতা খেলে কি হয়
আপনি কি সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আমাদের এই
আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। কারণ এই আর্টিকেলে আপনাদের এই বিষয়টি সম্পর্কে
সুন্দর করে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি এই বিষয়টি সম্পর্কে জেনে আপনি অনেক উপকৃত
হবেন।
সোনা পাতা আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ সারাতে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে।
তাছাড়া সোনা পাতা কোষ্ঠকাঠিন্যর রোগ দূর করার জন্য মহাঔষধ হিসেবে কাজ করে। তাই
এই আর্টিকেলটি একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে সোনা পাতার উপকারিতা পাশাপাশি
কিভাবে নিয়ম অনুসারে খেতে হয় এবং সোনা পাতা খাওয়ার অপকারিতা কি কি রয়েছে জেনে
যাবেন।
ভূমিকা
গ্রামাঞ্চলে কিংবা জঙ্গলে একটু খেয়াল করলেই দেখবেন সোনা পাতা। বিশেষ করে এই সোনা
পাতার কার্যকারিতা সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই অজানা। পাতা মানবদেহের বিভিন্ন রোগ
প্রতিরোধ করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য বা অন্যান্য শরীরের
যে সমস্যা রয়েছে সেগুলো দূর করতে সহায়তা করে। এছাড়াও সোনা পাতার উপকারিতা অনেক
রয়েছে। আজকে আমি এই আর্টিকেলে ওজন কমানোর জন্য সোনা পাতা খাওয়ার নিয়ম, সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা, সোনা পাতা খাওয়ার অপকারিতা,
সোনা পাতার দাম, সোনা পাতা গাছের ছবি, সোনা পাতার গাছ এই সমস্ত বিষয়ে সঠিকভাবে
আলোচনা করেছি। আসুন এই বিষয়গুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
ওজন কমানোর জন্য সোনা পাতা খাওয়ার নিয়ম
প্রিয় পাঠক আপনাদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছে যাদের ওজন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে
গেছে। অর্থাৎ ওজন বৃদ্ধি হওয়ার কারণে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মধ্যে পড়ছে।
সাধারণত ছেলে ও মেয়ে উভয়েই বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে গেলে ওজন বৃদ্ধি হওয়ার
কারণে অনেক সমস্যা দেখা দেয়।
এই ওজন বৃদ্ধ হওয়ার কারণে বিভিন্ন জায়গায় যে বিভিন্ন আজেবাজে কথাবার্তা শুনতে
হয়। আর সে কারণেই হয়তো ওজন কমানোর জন্য আপনারা বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করছেন।
আজকে আমি এই আর্টিকেলে আপনাদের যে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব সেটি হল
ওজন কমানোর জন্য সোনা পাতা খাওয়ার নিয়ম।
সোনা পাতা ওজন কমানোর জন্য অত্যন্ত কার্যকারী। সোনা পাতা খাওয়ার ফলে আপনার
ক্ষুধা কমে যায় ফলে আপনি কম খাবার খেয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে সক্ষম হবেন।
সাধারণত ওজন কমানোর জন্য সঠিক পরিমাণ এবং সেবন অত্যন্ত জরুরী। তাই আসুন কিভাবে
আপনি খাবেন তা সঠিকভাবে জেনে নিন।
যারা প্রাপ্তবয়স্ক রয়েছে তাদের জন্য সোনা পাতার পাউডার ৪ গ্রাম নিয়ে ১৫০ থেকে
২০০ মিলি পানিতে মিশ্রণ করে প্রতিদিন ১ থেকে ২ বার পান করতে হবে। তাহলে ওজন কমাতে
অনেক বেশি সাহায্য করবে।
আর যারা ৬ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশু রয়েছে তাদের জন্য ২ থেকে ৪ গ্রাম সোনা পাতার
পাউডার ও ১৫০ থেকে ২০০ মিলি পানিতে মিশ্রণ করে প্রতিদিন ১ থেকে ২ বার পান করতে
হবে। যেহেতু শিশু সেহেতু প্রথম অবস্থাই ২ গ্রাম সোনা পাতার পাউডার খাওয়াতে
হবে।
পরবর্তীতে আপনি প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ গ্রাম করে দিতে পারেন। এভাবে খাওয়ালে আপনার
শিশুর ওজন যদি বৃদ্ধি হয় তাহলে আস্তে আস্তে কমে যাবে। আশা করি ওজন কমানোর জন্য
সোনা পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন।
সোনা পাতা খেলে কি হয়
সোনা পাতা খেলে কি হয় এই বিষয়টি জানার আগ্রহ অনেক মানুষেরই রয়েছে। তাই তো আমি
এই আর্টিকেলে বিষয়টি সঠিকভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনারা আজকের
এই অংশ থেকে এই বিষয়টি সঠিকভাবে জেনে যাবেন। তবে আপনাদের কাছে আমার একটাই অনুরোধ
থাকবে, আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
সোনা পাতা মূলত আমাদের শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে অনেক বেশি কার্যকরী। এক
হাদিসে সোনা পাতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, আসমা বিনেত উমাইস (রা.) থেকে বর্ণিত।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি জুলাবের
জন্য কি ব্যবহার করো? আসমা বিনেত উমাইস (রা.) তিনি শিবরমের নাম বললেন।
তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটা তো খুবই গরম। যদি
কোন জিনিসের দ্বারা মৃত্যু থেকে রক্ষা পাওয়া যেত তবে তা সোনা পাতা দ্বারা পাওয়া
যেত। তাহলে আপনারা অবশ্যই বুঝতেই পারছেন সোনা পাতার উপকারিতা কতটুকু রয়েছে। এই
সোনাপাতা মৃত্যু ব্যতীত শরীরের সব রোগের সমস্যার জন্য মহা ঔষধি হিসেবে কাজ
করে।
সোনা পাতায় রয়েছে ১.৫ থেকে ৩% হাইড্রোজায়ানথ্রাসিন-গ্লাইকোসাইড, ৭-১০%
মিউসিলেজ, ১০-১২% খনিজ উপাদান ও ৮% পলিঅল। সোনা পাতা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অনেক
বেশি সাহায্য করে। কম বেশি আমাদের প্রত্যেকটা মানুষই প্রায় কোষ্ঠকাঠিন্যর
সমস্যায় ভোগেন। এই সমস্যা দূর করতে সোনা পাতা চমৎকার মহাঔষধ হিসেবে কাজ
করে।
শুধু তাই নয় সোনা পাতায় থাকা এনথ্রানয়েড (Anthranoids) হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
এবং রেচক হিসেবেও কাজ করে। এছাড়াও যারা ওজন কমানো নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে
রয়েছেন তারা সোনা পাতার গুঁড়া বা পাউডার সেবন করতে পারেন। ফলে আপনার ওজন ধীরে
ধীরে কমতে শুরু করবে। এর বাইরেও ডাইবেটিস ও হিট যন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সোনা পাতা
বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে।
তাই প্রতিদিন আপনি যদি সোনা পাতার গুঁড়া বা পাউডার সঠিক নিয়ম অনুসারে খেতে পারেন
তাহলে আশা করি এই সমস্যা থেকে খুব সহজেই নিস্তার পাবেন। এর বাইরেও সোনা পাতার
উপকারিতা ও অপকারিতা অনেক রয়েছে। সোনা পাতা স্বাস্থ্যের জন্য উপকার যদি আপনি
স্বাস্থ্যকর উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই নিম্নে উল্লেখ করা হয়েছে
জেনে নিন।
সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
সোনা পাতা খাওয়ার উপকারের শেষ নেই। প্রাচীনকাল থেকেই সোনা পাতা ঔষধ হিসেবে
ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আজকে আমরা সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানব।
আপনাদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছে যারা এই পাতাটির উপকারিতা কি কি রয়েছে এবং
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কি কি রয়েছে তা জানেন না। তাই এই বিষয়গুলো সঠিকভাবে
জানানোর জন্যই আজকের এই আর্টিকেল। তাই আসুন আর দেরি না করে বিস্তারিত তথ্য জেনে
নিন।
সোনা পাতা খাওয়ার ১২টি উপকারিতাঃ
আমাদের মধ্যে এমন অনেকের রয়েছে যারা ঘন ঘন খাবার খেয়ে থাকে। এই ঘন ঘন খাবার
খাওয়ার কারণে শরীরের ওজন অনেক বেড়ে যায়। কিন্তু সেটা তারা কখনোই খেয়াল করেনা।
এরকম বেশি বেশি করে ভাত কিংবা অন্যান্য তেল জাতীয় জিনিসগুলো খাওয়ার ফলেই কিন্তু
আমাদের ওজন প্রচুর বেড়ে যায়। তাই ওজন কমানোর জন্য সোনা পাতা খেতে পারেন। কারণ
সোনা পাতা খেলে ক্ষুধা ভাব কম লাগে ফলে ওজন কমিয়ে নিয়ে আসতে অনেকটা সহজ হয়।
- মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় বিশেষ করে শীতকালে। কারণ ওই সময় সূর্যের আলো শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে লাগেনা এবং বিভিন্ন কারণবশত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার ফলে শরীরে বাসা বাঁধে বিভিন্ন রোগ। তবে এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অত্যন্ত কার্যকরী।
- প্রত্যেকটা ছেলেরা বর্তমান সময়ে চুল নিয়ে খুবই সমস্যার মধ্যে ভোগেন। অর্থাৎ অনেকেই বিভিন্ন কাজকর্ম করার ফলে চুল সঠিকভাবে যত্ন নিতে পারেন না ফলে অল্প বয়সেই চুল অপুষ্টির কারণে ঝরে যায়। তবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে সোনা পাতা। সোনা পাতার গুড়া প্রতিদিন খেলে চুল পড়া রোধ করবে এবং চুলের গোড়া শক্ত এবং মজবুত করতে অনেক বেশি সাহায্য করবে।
- আমাদের প্রত্যেকটা মানুষেরই প্রায় কম বেশি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভোগেন। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় এই রোগটি গর্ভবতী মায়েদের জড়িয়ে ধরে। ফলে গর্ভবতী মায়েরা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভোগেন। তবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে সোনা পাতা। সঠিক নিয়মে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ গ্রাম সোনা পাতার গুড়া বা পাউডার ও ১ পোয়া অর্থাৎ ২৫০ গ্রাম পানি দিয়ে একসঙ্গে মিশ্রণ করে খেলে এই কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়। তবে গর্ভাবস্থায় সোনা পাতার গুড়া খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
- যারা উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন তাদের জন্য সোনা পাতা অত্যন্ত কার্যকরী। সোনা পাতায় এক ধরনের বিশেষ উপকারিতা রয়েছে যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে অনেক বেশি সাহায্য করে। ফলে বিভিন্ন সময় স্টক এবং হার্ট অ্যাটাক হওয়া থেকে রক্ষা করে।
- বর্তমান সময়ে ছেলে ও মেয়ে উভয় টকে থাকা ব্রণ নিয়ে খুবই চিন্তার মধ্যে থাকেন। এই ব্রণ ভালো করার জন্য তারা কতই নাকি তাকে ব্যবহার করেন। কিন্তু পরবর্তী সময় দেখা যায় অল্প কিছু সময়ের জন্য ভালো হলেও পরবর্তীতে মুখ আরো বেশি খারাপ হয়ে যায়। তবে এই ত্বকের ব্রণ দূর করার জন্য ঘরোয়া উপায়ে খেতে পারেন সোনা পাতা। এটি আপনার ত্বকের ব্রণ দূর করতে অনেক বেশি সাহায্য করবে।
- মূলত আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ রয়েছে যাদের বজ্র পদার্থ পেটে থেকেই যায়। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের এই সমস্যাটি প্রায় দেখা যায়। তবে পেট থেকে বজ্র পদার্থ নিঃসরণ করতে অনেক বেশি সাহায্য করে মানবতা। এটা আপনার বর্ত্ব বের করে পেট পরিষ্কার রাখতে অনেক বেশি সহায়তা করে।
- আলসারের সমস্যায় ভুগছেন এমন অনেক মানুষ বাংলাদেশ রয়েছেন। সমস্যার কারণে পেটে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাই আপনি যদি আলসারের সমস্যা বুঝতে পারেন বা ইঙ্গিত পান তাহলে যত দ্রুত সম্ভব সোনা পাতা নিয়ম করে খেলে সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
- অর্শ রোগের আক্রান্ত রোগীরা সোনা পাতা খেতে পারেন। কেননা সোনা পাতা/গুরা/পাউডার অর্শ রোগের সমস্যা দূর করতে অনেক বেশি সাহায্য করে।
- অনেক সময় দেখা যায় পেটে কৃমি হওয়ার কারণে হজম শক্তি কমে যায় এবং বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তবে এই সমস্যা দূর করতে সোনা পাতা অত্যন্ত কার্যকারী। সোনা পাতা কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে।
- অনেক সময় বিভিন্ন ভাজাপোড়া কিংবা তেল জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগেন অনেক মানুষ। আর এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে সোনা পাতা অত্যন্ত উপকারী। আপনারা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রোধ করতে চাইলে সোনা পাতা খেতে পারেন।
- সোনা পাতায় থাকা এন্টিসেপটিক টকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। তাই আপনারা চাইলে নিয়ম করে পাতা খেতে পারেন এটা আপনার শরীরের ত্বক সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
- সোনা পাতা আমাদের শরীরের রক্ত পরিষ্কার করতে অনেক বেশি সাহায্য করে এবং মুখের রুচি বাড়াতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে। তাই আপনারা চাইলে মুখের রুচি বৃদ্ধি করার জন্য এবং রক্ত পরিষ্কার করার জন্য এই সোনা পাতা খেতে পারেন।
পাঠক আশা করি আপনারা উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো পড়ে সোনা পাতা খাওয়ার ১২টি উপকারিতা
সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছে যাদের হঠাৎ করে শরীরে
বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হয়।
তাই ওপরে উল্লেখিত যে সমস্যাগুলো রয়েছে তার সমাধান করতে চাইলে অবশ্যই আপনার সোনা
পাতা খাওয়া উচিত। তবে এখানে কিছু গর্ভবতী মহিলাদের উপকারিতা দেয়া হয়েছে।
গর্ভবতী মহিলারা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া সোনা পাতা খাওয়া উচিত নয়।
সোনা পাতা খাওয়ার অপকারিতা
সোনা পাতা খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী হলেও এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে।
সোনা পাতা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে পাশাপাশি
শরীরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতেও সহায়তা করে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সোনা পাতা
খাওয়ার ফলে দেখা দিতে পারে সোনা পাতা খাওয়ার অপকারিতা। তাই চলুন আজকে আমি
মানবতা খাওয়ার কি কি অপকারিতা রয়েছে সে বিষয়ে আলোচনা করব জেনে নিন।
- দীর্ঘদিন সোনা পাতা খাওয়ার ফলে ব্লাড প্রেসার কমে যেতে পারে এবং অতিরিক্ত মাত্রায় সোনা পাতা সেবন করলে বমি বমি ভাব কিংবা বমি হতে পারে।
- গর্ভবতী মা ও শিশুর জন্য সোনা পাতা খাওয়া উচিত নয়। এছাড়াও যাদের শরীর দুর্বল বা বয়স্ক রয়েছে তারাও সোনা পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। তা না হলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
- এছাড়াও আপনি যদি দীর্ঘদিন যাবত সোনা পাতার গুড়া খেয়ে আসেন তাহলে আপনার শরীরে অনেক সময় বেশি দুর্বলতা দেখা দিতে পারে এবং হৃদয় স্পন্দনের সমস্যা হতে পারে। তাই আপনারা যারা দীর্ঘদিন ধরে সোনা পাতা খেয়ে আসছেন তারা যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
- যেসকল রোগীদের অ্যাপেন্ডিসাইড এবং তন্ত্রের ক্ষত রয়েছে তারা সনা পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কারণ এই ধরনের রোগী সোনা পাতা খাওয়ার ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এটি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়াই ভালো।
- যারা দীর্ঘদিন ধরে সোনা পাতা খান তারা আজ থেকেই বাদ দিন। কারণ দীর্ঘদিন পর্যন্ত সোনা পাতা খেলে চোখের বৃষ্টির সমস্যা হয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে অনেক বেশি কষ্ট হয়।
- অতিরিক্ত সোনা পাতা সেবন করার ফলে এবং অনেকদিন পর্যন্ত সোনা পাতা খাওয়ার ফলে শরীরে পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে। শুধু তাই নয় আমশয় রোগীরা এবং ডায়রিয়া রোগীরা সোনা পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কারণ এতে করে আপনার সমস্যা আরো বেশি বেড়ে যেতে পারে।
- যে সকল রোগীরা প্রদাহ এবং যকৃতের ক্যান্সারে ভুগছেন তারা অবশ্যই সোনা পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কারণ এই সকল রোগীরা সোনা পাতা খেলে শরীরে আরো বেশি বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
এছাড়াও সোনা পাতাতে বিদ্যমান এনথ্রাকুইনোন (Anthraquinone) রয়েছে। আর এই কারণে
ইস্তঞ্জা (প্রস্রা) লাল, গোলাপী বা বাদামী রঙের হতে পারে। ফলে আপনার ইনটেসটাইনের
(Intestine) ভিতরের প্রাচীরে পিগমেন্ট জমা হয়ে প্রাচীর আরও পুরু হয়ে যেতে
পারে।
তাই আপনি যদি এরকম অবস্থায় পড়েন তাহলে অবশ্যই সোনা পাতা খাওয়া কিংবা ব্যবহার
করা থেকে বিরত থাকবেন। আশা করি সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সঠিকভাবে
জানতে পেরেছেন।
সোনা পাতার দাম
পূর্বে আমরা সোনা পাতা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জেনে এসেছি। এখন আমরা জেনে সোনা
পাতার দাম বাংলাদেশে কত টাকা। অনেকেই সোনা পাতা ব্যবহার করার জন্য বাজারে কিনতে
যাই কিন্তু সোনা পাতার সঠিক দাম কত টাকা এটা না জানার কারণে অনেকেই বেশি টাকা
নিয়ে নেয়। তাই সঠিক দাম জেনে বাজার থেকে সঠিক পণ্য কিনাটাই উচিত।
- ১০০ গ্রাম সোনা--পাতার--দাম বাংলাদেশি টাকায় শুধুমাত্র ১০০/= টাকা।
- ১৬৫ গ্রাম সোনা--পাতার--দাম বাংলাদেশি টাকায় শুধুমাত্র ১৬৫/= টাকা।
- ২০০ গ্রাম সোনা--পাতার--দাম বাংলাদেশি টাকায় শুধুমাত্র ১৯০/= টাকা।
- ৫০০ গ্রাম সোনা--পাতার--দাম বাংলাদেশি টাকায় শুধুমাত্র ২৫০/= টাকা।
উপরে উল্লেখিত যে দামগুলো ধরা হয়েছে আশা করি সোনা পাতা এই দামগুলোর মধ্যে পেয়ে
যাবেন। তবে বিভিন্নবাজারের ওপর নির্ভরশীল করে দাম কিছুটা কম বেশি হতে পারে।
সোনা পাতা গাছের ছবি
প্রিয় বন্ধুরা আপনারা যারা সোনাপাতা গাছ চিনেন না তাদের জন্য আজকে আমি কয়েকটি
ছবি নিয়ে হাজির হয়েছি। আপনারা চাইলে নিচে দেওয়া ছবিগুলো দেখে খুব সহজেই সোনা
পাতা গাছ চিনে নিতে পারবেন।
সোনা পাতার গাছ এর বিবরণ
প্রিয় বন্ধুরা উপরে উল্লেখিত সোনা পাতা গাছের ছবি থেকে আশা করি আপনারা সোনা পাতা
গাছটি চিনতে পেরেছেন। এখন চলুন সোনা পাতা গাছের কিছু বিবরণ জেনে নেওয়া যাক। সোনা
পাতা গাছের বাংলা নাম হলো সোনামুখী কিংবা সোনা পাতা। এই গাছটির ইংরেজি নাম হলো
(Senna, Tinnevelly Senna) ও বৈজ্ঞানিক নাম হলো (Cassia angustifolia Vahl) এবং
আরবি নাম হলো সোনামাক্কী।
এই গাছটির ফুল ফল ও পাতা সবই ব্যবহার করা যায়। তবে সবচেয়ে বেশি পাতা ব্যবহার
করা হয়। এই গাছটি বিরুৎ জাতীয়। এই সোনা পাতা গাছ উষ্ঞমন্ডলীয় দেশ সমূহে বেশী
জন্মে। যেমন- সোমালিয়া, সুন্ধুপ্রদেশ, সুদান, পাঞ্জাব ও দক্ষিণ ভারতে বাণিজ্যিক
ভবে চাষ করা হয়।
এছাড়াও এই গাছটি বাংলাদেশসহ বিভিন্ন ধরনের উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনেক বেশি
দেখা যায়। বিশেষ করে আরব দেশের জঙ্গলে সোনা পাতা প্রচুর পরিমাণে জন্মে থাকে। এই
গাছটির চারি পাশেই পাতা থাকে। সোনা পাতা গাছটি দেখতে অনেকটা মেহেদি পাতার মতো এবং
এই গাছটির রং কাঁচা অবস্থায় হলুদ ও সবুজ এবং শুকনো অবস্থায় হলুদ ও সোনালী
বর্ণের হয়ে থাকে।
সোনা পাতা গাছটির মাথায় অর্থাৎ আগাতে হলুদ রঙের ফুল ফোটে। এছাড়াও এই গাছটির ফুল
কোন কোন সময় সাদা অথবা গোলাপি রঙেরও হয়ে থাকে। তাহলে আশা করি সোনা পাতা গাছের
সকল বিষয়গুলো আপনি সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন।
লেখকের শেষ কথা | সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রিয় ভিজিটর এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ে আশা করি সোনা পাতা খাওয়ার ১২টি
স্বাস্থ্যকর উপকারিতা এবং সোনা পাতা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে
পেরেছেন। আশা করছি এই আর্টিকেলটি বিস্তারিত করার মাধ্যমে আপনি অনেক উপকৃত
হয়েছেন।
এতক্ষণ এই আর্টিকেলে সময় দিয়ে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই আর্টিকেলটি
পড়ে যদি আপনার কোন মন্তব্য জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই সেটা কমেন্টের মাধ্যমে
জানিয়ে দিবেন। আর অবশ্যই এরকম আরো স্বাস্থ্য রিলেটেড আর্টিকেল পেতে নিয়মিত
আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। (ধন্যবাদ )
এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url