গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খেলে কি হয়? কতোটুকু খাওয়া নিরাপদ জেনে নিন

গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খেলে কি হয়, এই বিষয়টি সম্পর্কে আপনারা কি জানতে চাচ্ছেন? যদি আপনারা এই বিষয়টি সঠিকভাবে জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। কারণ এই আর্টিকেলে একজন গর্ভবতী মা তেঁতুল খেলে কি হয় বা কি কি উপকার রয়েছে বা ক্ষতি রয়েছে তা বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খেলে কি হয়? কতোটুকু নিরাপদ জেনে নিন
তাই এই আর্টিকেল শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনারা গর্ভাবস্থায় ফুচকা খাওয়া যাবে কি না বা গর্ভাবস্থায় আচার খাওয়া যাবে কি না আরো অনেক বিষয়ে সঠিকভাবে জেনে যাবেন। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেল ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য অনুরোধ রইল।

ভূমিকা

গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের কি কি খাবার গ্রহণ করা উচিত সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হয়। শুধু তাই নয় একজন গর্ভবতী মায়ের সুস্থ থাকার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবারের পাশাপাশি বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে থাকতে হয়। সকল দিক বিবেচনা করেই একজন গর্ভবতী মায়েদের দিন পার করতে হয়। অনেক গর্ভবতী মায়েরা রয়েছে যারা বিভিন্ন টক জাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করেন। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলে গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খেলে কি হয়, প্রতিদিন তেঁতুল খেলে কি হয়, গর্ভাবস্থায় টক খেলে কি হয়, তেতুল খেলে কি ক্ষতি হয়,গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয়, তেতুল খেলে কি পিরিয়ড হয়, এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে যাবেন। তাই পাঠক আসুন আর দেরি না করে বিস্তারিত জেনে নিন।

প্রতিদিন তেঁতুল খেলে কি হয়

তেতুল খেতে পছন্দ করেন না এরকম মানুষকে খুব কমই রয়েছে। তেতুলের নাম শুনলেই অনেকের জিভে দিয়ে পানি এমনিতেই পড়ে যায়। বিশেষ করে তরুণীদের খাবারের তালিকায় এই তেঁতুল পাওয়া যায়। তবে অনেকেরই ধারণা তেতুল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু আসলে তেতুল স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারিতা চলুন আজকের এই আর্টিকেলে জেনে নিন।

অনেকের মতে তেঁতুল খেলে রক্ত পানি হয়ে যায় অথবা ব্রেনের ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণই ভুল। সবকিছুর যেমন ভালোমন্দ আছে ঠিক তেমনি তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। 
বিশেষ করে গরমের সময় এই তেতুলের কদর অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়। কিন্তু সব সময় ছেলে উভয় তেঁতুল খেতে পছন্দ করেন। তেতুলের কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। যা হয়তো আপনারা অনেকেই জানেন না। নিচে সেই স্বাস্থ্যকর উপকারিতা উল্লেখ করা হয়েছে জেনে নিন।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ তেতুলের বীজ ব্লান্ড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে অনেক বেশি সাহায্য করে। ফলে ডাইবেটিসের মাত্রা অনেকটা কমিয়ে রাখে। শুধু তাই নয় তেতুলে উপস্থিত এক ধরনের এনজাইম থাকার কারণে রক্তে চিনির মাত্রা কমায় ফলে ডায়াবেটিস আস্তে আস্তে কমিয়ে নিয়ে আসতে সহায়তা করে।

হার্ট ঠিক রাখেঃ তেতুলে থাকা ফ্ল্যাভরনয়েড ব্যাড কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয় উপস্থিত উচ্চ পটাশিয়াম থাকার কারণে রক্তচাপ কমাতেও সাহায্য করে ফলে হার্ট ঠিক থাকে।

ক্যান্সার রোধ করেঃ বর্তমান সময়ে ক্যান্সারের সমস্যা অনেক মানুষের হয়ে থাকে। বিভিন্ন চিকিৎসা করার পরেও এই ক্যান্সার রোধ করতে পারেন না। তবে আপনি তেতুল খেয়ে একবার চেষ্টা করে দেখতে পারেন। তেতুলে উপস্থিত উচ্চ পরিমাণে অক্সিডেন্ট রয়েছে যা ক্যান্সার রোধ করতে সাহায্য করে।

ক্ষত সারিয়ে তোলেঃ কিছু কিছু সময় বিভিন্ন কারণে শরীরে ক্ষত হয়ে যায় আর এই ক্ষত শরিয়াতুলদের পারে তেঁতুলের পাতা এবং গাছের ছাল। কারণ এই তেঁতুলের পাতায় এবং গাছের ছালে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টি সেপটিক রয়েছে যা ক্ষত সারিয়ে তুলতে অনেক বেশি সাহায্য করে।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ অনেকেই হজমের সমস্যা হয়ে থাকে। এই সমস্যা থেকে নিস্তার পেতে পেছনের সাহায্য নিতে পারে। কারণের মধ্যে থাকা বিভিন্ন উপাদান হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ অনেকেরই পেট ব্যথা বা কোষ্ঠকাঠিনের মত সমস্যায় ভুগেন। তবে এর সমাধান পেতে চাইলে আপনাকে তেঁতুলের সাহায্য নিতে হবে। কারণ তেতুলের মধ্যে থাকা ম্যালিক অ্যাসিড, টার্টারিক অ্যাসিড এবং পটাশিয়াম কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। 
শুধু তাই নয় ডায়রিয়া সারাতেও অত্যন্ত কার্যকারী। এছাড়াও তেঁতুলের গাছের ছাল এবং পেট ব্যথা দূর করতে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে।

ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ অনেকেই ওজন নিয়ে খুব চিন্তার মধ্যে থাকেন। বিভিন্ন কাজকর্ম করতে গেলে শরীরে ওজন বৃদ্ধি হওয়ার কারণে অনেক সময় খুবই অস্বস্তিকর লাগে। তবে এই ওজন কমাতে আপনি তেতুলের সাহায্য নিতে পারেন। 

এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রতিদিন তেতুল খাওয়ার পরে ওজন আস্তে আস্তে কমতে শুরু করে। এছাড়াও তেতুলে উপস্থিত হাইড্রোক্সাইসেটিক অ্যাসিড খিদে কমাই। যার ফলে ওজন এমনিতেই কমতে শুরু করে।

লিভার সুরক্ষিত রাখেঃ আপনি যদি লিভার সুরক্ষিত রাখতে চান তাহলে তেতুলের পাতা ব্যবহার করতে পারেন। কারণ নিয়মিত একজন মানুষ তেতুলের পাতা ব্যবহার করতে ড্যামেজ লিভার খুব সহজেই সেরে ওঠে।

ত্বক উজ্জ্বল করেঃ আমরা কমবেশি অনেকেই ত্বক উজ্জ্বল করতে চাই। আর এর ফলে বিভিন্ন ওষুধ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে থাকি। কিন্তু আপনি সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে আশা করি আপনার খুব সহজেই উজ্জ্বল হয় যাবে। 
বিশেষ করে প্রতিদিন তেতুল ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল। শুনে হয়তো চমকে গেলেও এটাই সত্য। তেতুলে থাকা হাইড্রক্সি অ্যাসিড ত্বকের এক্সফলিয়েশন করতে সাহায্য করে। ফলে ত্বকের মরা কোষগুলো উঠে যায় এবং ত্বক উজ্জ্বল দেখায়।

সর্দি কাশি সারাতে সাহায্য করেঃ তেতুলে থাকা অ্যান্টিহিস্টামিনিক বৈশিষ্ট্য এলার্জি হতে বাধা যায়। পাশাপাশি তেতুলে উপস্থিত ভিটামিন শরীরের ইউনিটি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে ফলে সর্দি কাশি খুব সহজেই দূর হয়ে যায়।

পেপটিক আলসার রোধ করেঃ পেপটিক আলসার বেশিরভাগ সময় ক্ষুদ্রান্ত্রে কিংবা পেটে হয়ে থাকে। আলসার খুবই কষ্টদায়ক। তবে এই সমস্যা থেকে দূর করতে প্রতিদিন তেতুলের বীজের গুঁড়ো খেলে পেটটিকালচার খুব সহজেই সেরে যাবে। তেঁতুলে থাকা পলিফেনলিক কম্পাউন্ড আলসার সারিয়ে তুলতে অনেক বেশি সাহায্য করে।

গর্ভাবস্থায় টক খেলে কি হয়

অনেকেই মনে করেন গর্ভাবস্থায় টক খেলে বা টক জাতীয় কোন খাবার খেলে গর্ভপাত হবে। কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। বরং টক জাতীয় খাবার একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কারণ টক জাতীয় খাবারের ভিটামিন সি রয়েছে আর একজন গর্ভবতী মায়ের ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার প্রয়োজন।

টক খেলে মুখের স্বাদ ও রুচি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তবে অতিরিক্ত পরিমানে টক জাতীয় খাবার খেলে সমস্যা হতে পারে। তাই অতিরিক্ত না খেয়ে পরিমাণমতো টক খেলে কোনরকম সমস্যা হবে না। টক জাতীয় খাবারের মধ্যে খাবারের মধ্যে রয়েছে লেবু, টমেটো, আঙ্গুর, কমলালেবু, টক আপেল ইত্যাদি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। 
কিন্তু গর্ভাবস্থায় আনারস বা পেঁপে এগুলো খাওয়া উচিত নয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে গর্ভাবস্থায় আনারস বা পেঁপে খেলে গর্ভপাতের ঝুঁকি হতে পারে। তাই এই সময় স্বাস্থ্যকর ফল শাক সবজি কোনগুলো খাওয়া উচিত তা সঠিক নির্ধারণ করতে পারবেন ডাক্তার। তাই গর্ভাবস্থায় সবচেয়ে ভালো একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া। আশা করি গর্ভাবস্থায় টক খেলে কি হয় তা জানতে পেরেছেন।

তেতুল খেলে কি ক্ষতি হয়

সবকিছুর যেমন ভাল মন্দ আছে ঠিক তেমনি তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতাও রয়েছে। অনেকেই জানেন না খেজুর খেলে কি ক্ষতি হয়। তাই এই বিষয়টি সঠিকভাবে জানানোর জন্যই আজকের এই আর্টিকেল। 

বিশেষ করে যাদের এলার্জি সমস্যা রয়েছে তারা অতিরিক্ত পরিমাণে কখনো তেঁতুল খাবেন না। এতে করে আপনার ফুসকুড়ি, চুলকানি, শ্বাস নিতে অসুবিধা, ঘা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, এগুলো উপসর্গ অনুভব করতে পারেন।
এছাড়াও অতিরিক্ত তেঁতুল খেলে শরীরে রক্তপাত বৃদ্ধি হতে পারে। শুধু তাই নয় গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে এই তেঁতুল। বিশেষ করে তেতুল বেশি পরিমাণে খেলে দাঁত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও বেশি পরিমাণে তেঁতুল খেলে ওজন দ্রুত কমে যায়। পাশাপাশি অতিরিক্ত তেঁতুল খাওয়ার ফলে পাকস্থলীতে এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায় ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বা বুক জ্বালাপোড়া হয়ে থাকে। 

তাই তেতুল খেলে পরিমাণমতো খাওয়া উচিত। পরিমাণ মত খেলে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকার। তাই পরিমাণের চেয়ে কখনোই বেশি খাওয়ার চেষ্টা করবেন না। আশা করি তেতুল খেলে কি ক্ষতি হয় তা সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন।

গর্ভাবস্থায় আচার খাওয়া যাবে কি

হ্যাঁ, গর্ভাবস্থায় আচার খাওয়া যাবে তবে পরিমাণ মতো। একজন গর্ভবতী মা গর্ভবস্থায় বিভিন্ন ধরনের আচার টক জাতীয় খাবার খেতে বেশি পছন্দ করেন। বিশেষ করে তাদের খাদ্য তালিকার ওপরের দিকে এগুলো দেখা যায়। তবে অতিরিক্ত নাকে পরিমাণ মতো খেলে অনেক উপকার রয়েছে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক গর্ভাবস্থায় আচার খাওয়ার উপকারিতা।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের হজমের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। আর এই সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে আচার খেলে হজমের সমস্যা দূর হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আচারে অনেক ধরনের উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে। যার কারণে আচার খাওয়ার ফলে পরিপাকতন্ত্রের স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ বিভিন্ন ফল ও সবজি থেকে তৈরি হওয়া টাটকা আচার শরীরে অত্যাবশিক ভিটামিন গুলির পাশাপাশি আয়রন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং খনিজও পেয়ে থাকেন। তাই একজন গর্ভবতী মা প্রতিদিন পরিমাণ মত আচার খাওয়ার ফলে তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখেঃ একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরে ইলেকট্রোলাইটের অত্যন্ত প্রয়োজন। যেমন সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের মতো খনিজ লবণ। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় পেটে বেড়ে ওঠা গ্রহনের চাহিদা মেটাতেও অনেক বেশি প্রয়োজন ইলেক্ট্রোলাইটের। তাই আজারে উল্লেখযোগ্য পটাশিয়াম এবং পরিমাণ লবণ থাকার কারণে এটি পরিমাণ মতো খেলে এর চাহিদা মেটাতে অনেক বেশি সাহায্য করে।

ফ্রি র‌্যাডিক্যালের সাথে লড়াই করাঃ টাটকা আচারে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর প্রভাব রয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন তবে এটি আসলে সত্য। আচারের ফল বাস সবজির মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলো সংরক্ষিত থাকে যার কারণে সেগুলো রান্না করা হয় না। ফলে এন্টিঅক্সিডেন্ট গুলো গর্ভবতী মায়ের শরীরের ফ্রি রেডিকেল থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। 

এতক্ষণে নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন গর্ভাবস্থায়ী আচার খাওয়ার উপকারিতা বা গর্ভাবস্থায় আচার খাওয়া যাবে কি না। সবকিছু যেমন তিক ভালো মন্দ রয়েছে ঠিক তেমনি গর্ভাবস্থায় আচার খাওয়ারও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

গর্ভাবস্থায় আচার খাওয়ার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া

কমবেশি প্রত্যেক আচারেই অধিক মাত্রায় লবণ থাকে যা একজন গর্ভাবস্থায় গর্ভকালীন মায়ের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ আচারে প্রচুর পরিমাণে লবণ থাকলে সেটা গর্ভাবস্থায় গর্ভকালীন মায়ের উচ্চ রক্তচাপের কারণ হতে পারে। সাথে স্টোকের ঝুঁকি বেড়ে যায় এবং হার্ট অ্যাটাকের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। 
এছাড়াও যে আচারগুলো ভারতের প্রস্তুত বেশির ভাগ করে সেগুলোতে অত্যাধিক তেল থাকে যা গর্ভাবস্থায় গর্ভকালীন মায়ের শরীরের কোলেস্টেরল এবং ফ্যাটের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। শুধু তাই নয় অনেক আচারে প্রচুর পরিমাণে ঝাল থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় ঝাল খেলেও গ্যাসের কারণ হতে পারে।

তাই আপনি আচার খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ভালোভাবে দেখে বুঝে তারপর পরিমাণ মতো খাওয়ার চেষ্টা করবেন। যদি আপনার আচার খাওয়ার ফলে কোন বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হয় তাহলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করবেন।

গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খেলে কি হয়

তেঁতুল খেতে পছন্দ করেন না এরকম মানুষ খুব কম রয়েছেন। বিশেষ করে যারা গর্ভবতী নারী রয়েছে তাদের তো তেতুল মনে হয় সব খাবারের মধ্যে প্রধান খাবার। খুব কম সংখ্যক গর্ভবতী মহিলা রয়েছেন যারা তেতুল পছন্দ করেন না। বেশিরভাগ গর্ভবতী মহিলারাই তেতুল খেতে পছন্দ করেন। 
গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খেলে কি হয়? কতোটুকু নিরাপদ জেনে নিন
তেতুলের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের আচার টক জাতীয় খাবার ইত্যাদি পছন্দ করেন। কেউ কেউ মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতেও বেশ পছন্দ করে। কিন্তু এখন কথা হচ্ছে গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খেলে কি হয়? অনেক গর্ভবতী মহিলা রয়েছেন যারা এই বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। 
তবে আজকে আমি আপনাদেরকে এই আর্টিকেলে এ বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আশা করি আপনার অনেক উপকৃত হবে।

গর্ভাবস্থায় নারীদের বিশেষ খাদ্যাভ্যাস মেনে চলতে হয়, কারণ এই সময়ে খাবারের উপাদানগুলো গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। তেঁতুল একটি সাধারণ ফল যা গর্ভাবস্থায় নারীদের কাছে টক স্বাদের জন্য আকর্ষণীয়। তবে গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়ার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখা উচিত।

বিশেষজ্ঞের মতে অতিরিক্ত তেতুল খাওয়া গর্ভধারণের পর শরীরের জন্য ক্ষতিকর। বিশেষ করে প্রথম ট্রাইমেস্টারে বেশি পরিমাণে তেঁতুল খাওয়া একদমই উচিত নয়। তেতুল অধিক মাত্রায় খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মায়ের শরীরের প্রোজেস্টেরন হরমোনের উৎপাদন অনেকটাই কমিয়ে যায়। 

তেঁতুলে অত্যাধিক মাত্রায় ভিটামিন সি থাকার কারণে এই সমস্যাটি হয়। যদি গর্ভবতী মায়ের শরীরে প্রোজেস্টেরনের উৎপাদন কমে যায় তাহলে সময়ের আগে শিশুর জন্ম হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি বেড়ে যায়। এছাড়াও গর হতে। পাশাপাশি তেতুলে থাকা অত্যাধিক পরিমাণে ভিটামিন সি থাকার কারণে ধনের কোষ নষ্ট করেও দিতে পারে। 

তাই গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খেতে পারবেন কিন্তু পরিমান মত। অধিক মাত্রায় কোন খাবারই খাওয়া উচিত নয় এতে করে শরীরের জন্য ক্ষতিকর। ঠিক তেমনি তেঁতুল। গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের অনেক সময় বমি বমি ভাব হয়। তবে এই সমস্যা দূর করার জন্য তেঁতুল বেশ কাজ করে। 
এছাড়াও তেঁতুলে থাকা প্রাকৃতিক ফাইবার গর্ভাবস্থায় হজমে সহায়ক, যা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমাতে সহায়তা করে। তাই গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন তেতুল খেলে ১০ গ্রাম এর বেশি খাবেন না। এছাড়াও গর্ভকালীন সময়ে সকালে খালি পেটে একদমই তেঁতুল খাওয়া যাবে না। 

যদি আপনার তেতুল খেতেই হয় তাহলে খাবার গ্রহণ করার ৩০ মিনিট অর্থাৎ আধা ঘন্টা পর অল্প পরিমাণে তেতুল খেতে পারবেন। আশা করি গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খেলে কি হয় এই বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন।

গর্ভাবস্থায় ফুচকা খাওয়া যাবে কি

গর্ভাবস্থায় ফুচকা খাওয়া যাবে কি না এই নিয়ে অনেক মানুষের মনে নানা জল্পনা-কল্পনা রয়েছে। তবে গর্ভাবস্থায় কি খাওয়া যাবে কি খাওয়া যাবেনা এগুলো সম্পর্কে অবশ্যই অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে। কারণ গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন খাবার তালিকা থেকে বাদ দিতে হয় আবার যোগ করতে হয়। 

তাই সঠিকভাবে খাবার তালিকায় যোগ না করলে পরবর্তীতে দেখা যাবে আপনার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে। তাই আগে থেকেই সতর্ক থাকা উচিত। তেঁতুলের মত অনেকেই ফুচকা খেতেই পছন্দ করেন। কিন্তু এখন কথা হচ্ছে গর্ভাবস্থায় ফুচকা খাওয়া যাবে কিনা? সংক্ষিপ্ত উত্তরে হ্যাঁ, সাধারণত ফুচকা গর্ভবতী মহিলাদের খাওয়া নিরাপদ। 
তবে ফুচকা খেতে চাইলে কয়েকটি বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। প্রথমত আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে ফুচকা গুলো তাজা এবং সঠিকভাবে প্রস্তুত করা কিনা। বিশেষ করে রাস্তার পাশে যারা ফুচকা বিক্রি করে সেখানকার কিছু স্বাস্থ্যবিধির মাননীয় প্রশ্ন উঠতে পারে তাই সেখানে ফুচকা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। 

দ্বিতীয়ত আপনি কতটুকু তেতুলের টক এবং ফুচকার উৎপাদন সম্পর্কে সচেতন। নিশ্চিত করুন তেতুলের যে টক রয়েছে সেটি ফুটিয়ে আগে ঠান্ডা করিয়েছে কিনা এবং পাশাপাশি জানুন ফুচকা রান্না করা ময়দা দিয়ে তৈরি কিনা। এগুলো সব কিছু নিশ্চিত করুন। এরপর, সর্বশেষে আপনাকে নিজের শরীরের দিকে খেয়াল দিতে হবে। পরিমাণ মতো কয়েক পিস ফুচকা খেতে পারবেন সমস্যা নেই। 

কিন্তু গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত মাত্রায় ফুচকা খেলে তা বদহজম কিংবা অম্বল হতে পারে। তাই অতিরিক্ত ফুচকার না খাওয়ায় ভালো। যদি গর্ব অবস্থায় ফুসকা খাওয়ার পর কোন রকম অসস্তি বোধ করেন তাহলে সাথে সাথে ফুচকা খাওয়া থামুন এবং খাওয়ার আগে কয়েকদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। গর্ভাবস্থায় ফুচকা খাওয়া যাবে কি না আশা করি জানতে পেরেছেন।

গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় বেশি পরিমাণে ঝাল খাওয়া মোটেও উচিত নয়। কারণ এ সময় গর্ভবতী মায়ের পেশার উঠানামা করে তাই ঝাল খেলে উচ্চ রক্তচাপের আশঙ্কা থাকে। শুধু তাই নয় অতিরিক্ত পরিমাণে ঝাল খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, বদহজম ইত্যাদি হতে পারে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলারা বেশি ঝাল খেতে পছন্দ করেন। 
কিন্তু অত্যাধিক ঝাল খেলে গর্ভবতী মা ও শিশু দুজনার জন্যই ক্ষতি। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ওষুধ সেবন করা একদমই উচিত নয়। এতে করে আপনার গর্ভপাতের ঝুঁকি অনেকটা বেড়ে যেতে পারে। শুধু তাই নয় গর্ভ অবস্থায় খাওয়া যাবে না এতে করে প্রেসার বেড়ে যেতে পারে। তাই সবকিছু বিবেচনা করে পরিমাণ মতো ঝাল খাওয়া যেতে পারে।

তেতুল খেলে কি পিরিয়ড হয়

অনেক মেয়েরা রয়েছে যারা তেঁতুল খেলে কি পিরিয়ড হয় এই প্রশ্ন করে থাকেন। কারণ বেশিরভাগ মেয়েরাই তেঁতুল খেতে পছন্দ করে। তাই এটি খেলে পিরিয়ড হয় কিনা এটা জানার জন্য অনেক বেশি আগ্রহ প্রকাশ করেন। তবে পিরিয়ডের সময় তেতুল কিনবা কোন টক জাতীয় ফল খেলে পেটের ব্যথা বা রক্তপাত বাড়ে না। 

কিন্তু এমন কিছু খাবার রয়েছে যে খাবারগুলো খাওয়ার ফলে আপনার পেট ব্যথা বা রক্তপাতের মতো সমস্যাগুলো হতে পারে। তাই পিরিয়ডের সময় খাবারের তালিকা থেকে সে খাবার গুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিৎ। বিশেষ করে লবণযুক্ত টক খাবার। 
এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের আচার রয়েছে যেগুলোতে অধিক মাত্রায় লবণ মিশ্রিত থাকে পিরিয়ডের সময় এগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়াও পিরিয়ডের সময় লবণ যে কোন টক ফল খাওয়া যাবে না। এতে করে সমস্যা বৃদ্ধি হতে পারে। 

পিরিয়ডের সময় টক ফল খেতে পারবেন কিন্তু লবণ ছাড়া। একজন মেয়ে পিরিয়ডের সময় অনেক বেশি কষ্টের সম্মুখীন হয়। আর এই সময় বেশি করে দুর ডিম ফলের রস এগুলো খাওয়া উচিত। তবে মিষ্টি জাতীয় খাবার যেগুলো রয়েছে এগুলো না হয় উচিত। তবে পিরিয়ডের সময় আনারস পরিমানের চেয়ে কম খাবেন। 

অনেক মেয়েরা রয়েছে যারা পিরিয়ডের সময় খাবার খেতে ইচ্ছে করে না। ওই সময় তাদের কোন কিছুই ভালো লাগেনা। তাই পিরিয়ডের সময় কোন খাবার খাওয়া যাবে কোন খাবার খাওয়া যাবেনা সেগুলোর দিকে নজর রাখতে হবে। তবে আপনি চাইলে পিরিয়ডের সময় তেতুল খেতে পারবেন তবে লবণ ছাড়া। 

লেখকের শেষ কথা | গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খেলে কি হয়

প্রিয় পাঠক আশা করি সম্পূর্ণ আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খেলে কি হয় এবং গর্ভাবস্থায় ফুচকা খাওয়া যাবে কি না এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন। গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে দিন পার করতে হয়। গর্ভাবস্থায় স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া বিশ্রাম করা ব্যায়াম করা এগুলোর দিকে বেশি নজর দিতে হয়।
শুধু তাই নয় গর্ভকালীন সময়ে অনেক মায়েরা তেঁতুল খেতে বেশি পছন্দ করেন। এছাড়াও বিভিন্ন টক জাত খাবার এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার অনেকেই খেতে পছন্দ করেন। এই সবগুলো বিষয়েই বিস্তারিত আলোচনা করেছি এই আর্টিকেলে। আশা করি আপনারা এই বিষয়গুলো জেনে অনেক উপকৃত হয়েছেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪