গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয় - গর্ভাবস্থায় চিত হয়ে শুলে কি হয়
গর্ভাবস্থা একজন মহিলার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই সময়ে
শারীরিক পরিবর্তন স্বাভাবিক। তবে, অনেক মহিলাই এই সময়ে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক
অস্বস্তি অনুভব করেন এবং তাই বিশ্রাম নিতে চান। কিন্তু, গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে
থাকলে কি হয়? এই প্রশ্নটি অনেকের মনেই জাগে।
এই আর্টিকেলে আমরা গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকার ফলে কী কী সমস্যা হতে পারে এবং
কতটা বিশ্রাম নেওয়া উচিত সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। পাশাপাশি
গর্ভাবস্থায় চিত হয়ে শুলে কি হয় এই সম্পর্কেও আলোচনা করব। তাই আসুন আর দেরি না
করে জেনে নেওয়া যাক।
ভূমিকা
গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়, গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবে অতিরিক্ত শুয়ে থাকা মা ও শিশুর জন্য কিছু
স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। অনেক সময় বেশি শুয়ে থাকার ফলে রক্ত সঞ্চালন কমে
যেতে পারে, যা মায়ের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়া, দীর্ঘ সময়
শুয়ে থাকলে পিঠে ব্যথা, ওজন বৃদ্ধি এবং শরীরের নমনীয়তা কমে যাওয়ার সমস্যাও
দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত শুয়ে থাকার চেয়ে হালকা শারীরিক কার্যকলাপ যেমন হাঁটা
বা সহজ ব্যায়াম গর্ভাবস্থায় উপকারী হতে পারে। এতে শরীর সুস্থ থাকে এবং প্রসবের
সময় জটিলতা কমে যায়। তবে মায়ের শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী সঠিক বিশ্রামের পরিমাণ
নির্ধারণ করতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থায় প্রথম 3 মাস ঘুমানোর অবস্থান
গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাস ঘুমানোর জন্য কোন আরামদায়ক অবস্থান সম্ভব নয়। কারণ
গর্ভাবস্থা বাড়ার সাথে সাথে চিৎ হয়ে ঘুমানো মাথা পিঠে ভর দিয়ে ঘুমানো কিংবা
পেটে ভর দিয়ে শোয়া এই দুটোই শক্ত হয়ে যায়। সুতরাং যদি আপনার এই দুটি
অবস্থানগুলো পছন্দ হয়ে থাকে তাহলে এখন সেটা পরিবর্তনের সময় এসেছে।
সম্পূর্ণ রাত আপনি কিভাবে আরাম পূর্ন ভাবে ঘুমাবেন তা নিচে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো
জেনে আপনি নিশ্চিত হয়ে ঘুমের জন্য সে অবস্থানগুলোর মধ্যে চেষ্টা করতে পারে।
তাহলে চলুন গর্ভাবস্থায় প্রথম 3 মাস ঘুমানোর অবস্থান কি কি তা সঠিকভাবে জেনে
নিন।
আপনার পিঠে ভর দিয়ে ঘুমানোঃ গর্ভাবস্থায় ঘুমের জন্য সেরা অবস্থান গুলোর
মধ্যে পিঠে ভর দিয়ে ঘুমানো বা শুয়ে থাকা এটি নাও হতে পারে। কিন্তু প্রথম দিকে
এভাবে শুয়ে থাকলে অনেক ভালো কাজ করে। প্রথম ৩ মাসের জন্য এভাবে শুয়ে থাকা
স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতে পারে। এছাড়া যখন আপনার পেট ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাবে তখন
শরীরে চাপ সৃষ্টি হবে।
আর গর্ভাবস্থায় পিঠে ভর দিয়ে দীর্ঘ সময় ঘুমিয়ে থাকলে পিঠে ব্যথা রক্তক্ষরণ
কিংবা নিম্ন রক্তচাপের কারণ হতে পারে। সুতরাং এইভাবে ঘুমানোর চেষ্টা কম করবেন এবং
এটি এড়ানো ভালো হবে। যদিও গর্ভাবস্থায় প্রথম দিকে এটি ভালো ঘুমের অবস্থান হতে
পারে কিন্তু এই অভ্যাসটি প্রথম দিকে থাকলেও পরবর্তীতে বাদ দিতে হবে।
পাশ ফিরে ঘুমানোঃ পাশ ফিরে ঘুমানো অর্থাৎ ডান বা বাম দিকে গর্ভকালীন সময়
প্রথম ৩ মাস ঘুমানো এটি আরামদায়ক হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে অতিরিক্তভাবে ডানদিকে
ঘুমানো উচিত নয়। দীর্ঘক্ষণ ডান দিকে ঘুমালে অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে। সুতরাং
বাম দিকে বেশি বেশি ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে।
আপনার বাম দিকে পাশ ফিরে ঘুমানোঃ গর্ভাবস্থার সময় আপনাকে সব সময় পাশ
ফিরে ঘুমানো উচিত। বিশেষ করে বাম পাশে। কারণ বাম পাশে ঘুমালে গর্ভাবস্থায়
প্লাসেন্টায় রক্ত ও পুষ্টির সর্বাধিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
পাশাপাশি কিডনির কার্যকারিতা উন্নত করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। এটির সাহায্যে
ফোলাভাব দূর হয়। তাহলে বুঝতে পারছেন গর্ভাবস্থায় হাত, পা, গোড়ালি অনেক বেশি
ফোলাভাব হয়ে থাকে সেটি দূর করতে সাহায্য করে।
কুশন আপঃ আপনি যদি ঘুমের সময় উপরে উল্লেখিত সমস্ত অবস্থান চেষ্টা করেও
স্বাচ্ছন্দ বোধ না করেন। তাহলে আপনাকে যেটি করতে হবে প্রথমে একটি বালিশ নিতে হবে।
এরপর সেই বালিশ পায়ে বাঁকিয়ে আপনার পাশে ফিরে শুয়ে আপনার হাটুর মাঝে একটি
বালিশ দিয়ে রাখতে হবে।
আপনি চাইলে একই সময়ে আরেকটি বালিশ নিজের পেটের নিচে নিতে পারেন এবং দেখতে পারেন
এটি আপনার জন্য কতটা কার্যকর বা স্বাচ্ছন্দ বোধ হয় কিনা। এরপর আপনি পাশে ঘুমানোর
সাথে সাথে পেছনে একটা বালিশ দিয়ে বা কুশন দিয়ে রাখুন।
যাতে করে আপনার পিঠে ভর দেওয়া থেকে আটকাতে পারে। যদি আপনি ঘুমানোর চেষ্টা করার
সময় শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয় তাহলে বুকের ওপরে বালিশ রাখতে পারে এবং শ্বাসকে
প্রশস্ত করতে আপনার পাশে ফিরে শুয়ে নিচে বালিশ ব্যবহার করতে পারেন।
এছাড়াও আপনি চাইলে কৌশলগতভাবে বিভিন্ন জায়গায় বালিশ ব্যবহার করতে পারেন,
যতক্ষণ না আপনি স্বাচ্ছন্দ ভাবে ঘুমাতে পারছেন। বিশেষ করে মহিলাদের জন্য একটি
বালিশ পাওয়া যায় যা কি পাশে ফিরে অবস্থানে ঘুমানোর জন্য অনেক মহিলাদের কাজ করে।
আপনি চাইলে সেটিও ব্যবহার করতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় কত ঘন্টা ঘুমানো উচিত
গর্ভাবস্থায় কত ঘন্টা ঘুমানো উচিত এই বিষয়টি সম্পর্কে অনেক গর্ভবতী নারীরা
জানেন না। তাই যারা জানেন না তাদের উদ্দেশ্যেই আজকের এই আর্টিকেল। পাঠক আপনাদের
সুবিধার জন্যই আমি আজকে এ বিষয়টি সঠিকভাবে এই আর্টিকেলে তুলে ধরেছি। আশা করি
আপনারা গুরুত্ব সহকারে এই বিষয়টি পড়বেন। তাহলে চলুন আলোচনা করা যাক।
প্রত্যেক পূর্ণবয়স্ক মানুষের রাতে অন্তত ৬ থেকে ৭ ঘন্টা ঘুমানো উচিত। আর এই ঘুম
যদি না হয় তাহলে শরীর ক্লান্তি, খিটখিতে মেজাজ, অসুস্থ, অমনোযোগী, পড়াশোনায়
ব্যাঘাত, অফিসের বিভিন্ন সমস্যা ইত্যাদি সমস্যা সমূহীন হতে হয়।
বিশেষ করে গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়েদের এই ঘুম না হলে মা ও বাচ্চা উভয়ই
ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। সাধারণত বলা হয় একজন গর্ভকালীন সময় মাকে ৮ থেকে ১০
ঘণ্টা ঘুম ও বিশ্রাম নিতে হবে। দিনে ২ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে এবং রাতে ৮ ঘণ্টা।
এছাড়াও গর্ভবতী মায়েদের ঘুমের স্থান কোলাহলমুক্ত, আরামদায়ক, কম আলো স্থান এরকম
হতে হবে। শুধু তাই নয় গর্ভবতী মায়েদের সব সময় ঢিলেঢালা নরম আরামদায়ক পোশাক
পরিধান করতে হবে। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠিকমতো ঘুম হচ্ছে কিনা
সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ঘুমের আগে চা কিংবা কপি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। বরং ঘুমের এক ঘন্টা আগে
পারলে ১ গ্লাস হালকা কুসুম গরম দুধ পান করলে উপকার পাওয়া যাবে। তাই প্রত্যেক
গর্ভবতী মায়েদের এই নিয়মগুলো ফলো করা উচিত।
গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়, এই বিষয়টি একজন গর্ভবতী মায়ের জানা
জরুরী। অনেক সময় দেখা যায় গর্ভবতী মহিলারা রাতে ভালো করে ঘুমাতে পারেন না। তার
একটাই কারণ অনেক সময় বিভিন্ন চিন্তার কারণে রাত কেটে যায় কিন্তু বলতেই পারেনা।
কিন্তু অন্য সবার মতই গর্ভবতী মহিলাদের পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রামের প্রয়োজন।
গর্ভকালীন সময়ে মা ও শিশু সুস্থ থাকার জন্য রাতে অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো
উচিত।
গর্ভকালীন সময়ে ভালো ঘুম না হলে প্রেগন্য়ান্সিতে নানা জটিলতাও দেখা দিতে পারে।
তবে ভালো ঘুমানোর পাশাপাশি আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে অতিরিক্ত ঘুমের দিকেও। কারণ
আপনি যদি অতিরিক্ত ঘুমান তাহলে আপনার বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।
বিশেষ করে গর্ভকালীন সময়ে ৯ থেকে ১০ ঘন্টার বেশি ঘুমালে তা গর্ভস্থ শিশুর জন্য
ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠতে পারে। গর্ভাবস্থায় পেট বড় হয়ে যাওয়ার কারণে শারীরিক
পরিবর্তন এবং হরমোনাল নানা পরিবর্তনের কারণে অনেক সময় ভালো ঘুম হয় না।
এছাড়াও গর্ভকালীন সময়ে বিভিন্ন কারণে ঘুমানোর মোট ঘন্টা বেড়ে যায়। বিশেষ করে
যাদের হরমোন জনিত সমস্যা রয়েছে তাদের গর্ভকালীন সময়ে ইনসমনিয়া দেখা দিতে পারে।
ফলে প্রোজেস্টেরোন লেভেলবৃদ্ধ হয়ে যাই আর এর কারণেই ক্লান্তি বাড়ে।
সে কারণেই ঘুমের ঘন্টাও বেড়ে যায়। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় মহিলাদের শরীরে
পাকস্থলীর উপরে অতিরিক্ত চাপ বেড়ে যায় যার কারণে অ্যাসিড রিফ্লাক্স, বদহজম
এগুলো হয়ে থাকে অনেকের। বিশেষ করে শুয়ে থাকলে মনে হয় বিভিন্ন খাবার গলা দিয়ে
উঠে আসছে সে কারণেই ঠিকমতো ঘুমাতে পারে না অনেক গর্ভবতী মহিলারা। ঘুমের মোট ঘন্টা
নিয়ন্ত্রণ রাখতে ভালো ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজন।
ঘুমের বিভিন্ন সমস্যা শারীরিক পরিবর্তনের কারণে হয়ে থাকে। তাই একজন ডাক্তারের
পরামর্শ করে সেটা ঠিক করে নেওয়া উচিত। পাশাপাশি ঘুমের নির্দিষ্ট রুটিন বানিয়ে
নেওয়া এবং রাতে ঘুমানোর ৩০ মিনিট আগে সব গ্যাজেট বন্ধ করে ঘুমানো উচিত। এগুলো
করার পাশাপাশি উদ্বেগ কমানোর চেষ্টা করতে হবে। তাহলেই অতিরিক্ত ঘুম অনেকটা
নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। আশা করি গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়
তা জানতে পেরেছেন।
গর্ভাবস্থায় চিত হয়ে শুলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় চিত হয়ে শুলে কি হয় এই বিষয়টি সম্পর্কে জানা একজন গর্ভবতী নারীর
জন্য অত্যন্ত জরুরি। কারণ গর্ভ অবস্থায় চিৎ হয়ে শুয়ে থাকলে অনেক ধরনের সমস্যার
সম্মুখীন হতে হয় যা অনেকেরই জানা নেই। তাই চলুন আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা
সে বিষয়গুলো সঠিকভাবে জেনে নিন।
গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাস চিত হয়ে ঘুমানো নিরাপদ। কিন্তু যখন মাঝামাঝি সময় চলে
আসে তখন জরায়ু ভারী হয়ে যায় বলে শোয়ার ভঙ্গি গুলো সঠিকভাবে বেছে নেওয়ায়
ভালো। এছাড়াও গর্ভাবস্থার প্রথম ১৫ থেকে ২০ সপ্তাহের মধ্যে যদি আপনি চিৎ হয়ে
ঘুমান তাহলে রক্ত প্রবাহ চলার পথে যথেষ্ট বড় হয়ে যায়। ফলে ইনফিরিয়র ভেনা কাভা
সংকুচিত হয়ে পড়ে।
এখানে যে বড় শিরাটি রয়েছে তা মেরুদন্ডের ডান দিকে থাকে এবং এর নিম্ন ও মাঝখানের
অংশ থেকে অক্সিজেনহীন রক্ত হার্টে নিয়ে যায়। শোয়ার কারণে মহা ধমনী সংকুচিত হতে
পারে। যার ফলে আপনার শরীর থেকে প্লাসেন্টায় প্রধান রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতে
পারে। বিশেষ করে একজন গর্ভবতী মহিলা যদি চিৎ হয়ে শুয়ে থাকে, তাহলে তার হার্টবিট
বেড়ে যায়।
ফলে হার্টের রক্ত প্রবাহ কমে যেতে পারে। শুধু তাই নয় গর্ভাবস্থায় তীর হয়ে
শুয়ে থাকলে সংশ্লিষ্ট অন্য সমস্যাও রয়েছে যেমন- হজমের সমস্যা, পিঠে ব্যথা,
দুর্বল, রক্ত সঞ্চালন, হেমোরয়েড বা আরো অন্যান্য সমস্যা হতে পারে। তাই
গর্ভাবস্থায় চিৎ হয়ে না শুয়ে ডান বা বাম হয়ে শুয়ে থাকাটা উত্তম।
গর্ভাবস্থায় বাম কাত হয়ে শোয়ার উপকারিতা
ঘুমানোর সময় আমরা অনেকেই সাধারণত নিজের ইচ্ছামত পজিশনে ঘুমিয়ে থাকি। কেউ বাম
দিকে কেউ আবার ডান দিকে কেউ ওপড় হয়ে কেউ আবার চিৎ হয়ে। অর্থাৎ যে যার মত
পছন্দমতো শুয়ে থাকতে বেশি পছন্দ করেন। কিন্তু গর্ভাবস্থায় কিভাবে শুয়ে থাকলে
অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায় তা কেও কি জানি? হইত অনেকেই জানি না।
তাই এই আর্টিকেলে গর্ভাবস্থায় বাম কাত হয়ে শোয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত
আলোচনা করব। আপনারা যারা এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে এই আর্টিকেলে এসেছেন। তারা
আশা করি শেষ পর্যন্ত পড়লে সঠিকভাবে জেনে যাবেন। তাই আসুন আর দেরি না করে জেনে
নিন।
গর্ভকালীন সময়ে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি সঠিক পজিশনে ঘুমানো জরুরী।
গর্ভকালীন সময়ে অনেক মহিলারা রয়েছে যারা চিৎ হয়ে শুয়ে থাকে পছন্দ করেন।
কিন্তু এটি একদমই উচিত নয়। বিশেষজ্ঞের মতে গর্ভবতী মহিলাদের বাম দিকে ফিরে
ঘুমানো কিংবা শুয়ে থাকা অত্যন্ত ভালো। আর এর ফলে শ্বাস নিতে ভালো সুবিধা
হয়।
একজন গর্ভবতী মা ভালোভাবে শ্বাস নিতে পারলে গর্ভের সন্তান অনেক ভালো থাকবে।
আমাদের পেটের ডানদিকে লিভার থাকে তাই ডানদিকে শুয়ে থাকলে শরীরের সবচেয়ে বড়
অঙ্গের ওপর চাপ পড়ে। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের এটি এড়ানোর জন্যই বামদিকে ফিরে
শোয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
যাতে করে সন্তান গর্ভে সুস্থ থাকে এবং ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারে। শরীরের লিভার
যাতে ঠিকঠাক মতো কাজ করে তার জন্য যথেষ্ট জায়গা লিভারকে দিতে হবে। এছাড়াও
শরীরের সবচেয়ে বড় শিরা হচ্ছে ইনফিরিয়র ভেনা কাভা। যা মহিলার শরীরের ডানদিকে
থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় ডান দিকে ঘুমালে কিংবা শুয়ে থাকলে শিরার ওপর চাঁদপুরের
শরীরে রক্ত সঞ্চালনা ব্যাহত হয়।
আর গর্ভাবস্থায় বামদিকে শুয়ে থাকলে কিংবা ঘুমালে হার্ট বেশি রক্ত পাম্প করতে
পারে, ফলে রক্ত ও পুষ্টি শরীরের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ভালো ভাবে ছড়িয়ে পড়ে। তাই
আপনারা সব সময় চেষ্টা করবেন গর্ভাবস্থায় বাম কাত হয়ে শুয়ে থাকার। তাহলে আপনি
এবং আপনার গর্ভে থাকা শিশু উভয় সুস্থ থাকবে। বিশেষ করে বাম কাত হয়ে সব সময়
শুয়ে থাকার জন্য ডাক্তার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
গর্ভাবস্থায় না খেয়ে থাকলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় না খেয়ে থাকলে কি হয়, এই বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য অনেকে আমার
কাছে প্রশ্ন করেছেন। তাই আপনাদের প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেয়ার জন্য এই আর্টিকেলে
এই বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনারা এ
বিষয়টি সম্পর্কে জেনে অনেক উপকৃত হবেন। তাই আসুন আর দেরি না করে জেনে নিন।
গর্ভাবস্থায় না খেয়ে থাকাটা শারীরিক ও মানসিক সমস্যার একটি কারণ। আপনি যদি
গর্ভাবস্থায় না খেয়ে থাকেন, তাহলে গর্ভস্থ শিশু ও আপনি দুজনেই বিভিন্ন পুষ্টি
উপাদানের ঘাটতির সম্মুখীন হতে পারেন। তাই গর্ভকালীন সময়ে অনেক বেশি পুষ্টিকর
খাবার খাওয়া অনেক বেশি জরুরি।
এই সময় পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হতে পারে। যেমন-
শক্তি কমে দুর্বল হয়ে যাওয়া, হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি, ওজনের তারতম্য, পায়ে পানি
আসার সহ আরো অনেক বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। বিশেষজ্ঞের মতে টানা ১৪ ঘণ্টা
না খেয়ে থাকলে একজন গর্ভবতী মায়ের সবচেয়ে বড় যে ঝুঁকি তৈরি হতে পারে সেটি হল
পানিশূন্যতা এবং অ্যাসিডিটি।
পাশাপাশি গর্ভস্থ শিশুর অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহের অভাব ও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা।
শুধু তাই নয় ওজন কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ফলে সন্তান জন্ম নেওয়ার ঝুঁকিও
অনেক তৈরি হতে পারে। তাই গর্ভকালীন সময়ে যত বেশি পারেন স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ
করবেন। এতে করে আপনার গর্ভে থাকা শিশু ও আপনি উভয়ই সুস্থ থাকবেন।
লেখকের শেষ কথা | গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়
গর্ভকালীন সময়ে অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা এবং বিশ্রাম না প্রয়োজন।
আশা করি এই আর্টিকেল পড়ে আপনি গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয় এবং
গর্ভাবস্থায় চিত হয়ে শুলে কি হয় এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে
পেরেছেন। পাশাপাশি অন্যান্য যে বিষয়গুলো রয়েছে সেগুলোও সঠিকভাবে জানতে
পেরেছেন।
তাই আপনারা যদি এই বিষয়গুলো পড়ে একটু উপকৃত হয়ে থাকেন, তাহলে মন্তব্য করে আপনার
মতামত জানিয়ে যাবেন। পাশাপাশি এই আর্টিকেলটি আপনার বন্ধুবান্ধবদের মাঝে শেয়ার
করবেন। এই আর্টিকেল শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অভিনন্দন।
এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url