ইতালিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি বিস্তারিত জেনে নিন

ইতালিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি তা জানতে হলে এই আর্টিকেলের অংশটুকু হলো করতে হবে। ইটালিতে অনেক ধরনের কাজ তবে কাজ করলে অনেক বেশি টাকা বেতন দিয়ে থাকে এবং চাহিদা বেশি তা সম্পূর্ণ এই আর্টিকেলে দেওয়া হয়েছে। আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আশা করি বুঝতে পারবেন।
ইতালিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি বিস্তারিত জেনে নিন
বিশেষ করে যারা স্টুডেন্ট রয়েছে তাদের অনেকের ইচ্ছা স্টুডেন্ট ভিসায় ইতালিতে যাওয়ার। কিন্তু স্টুডেন্ট ভিসায় ইতালি যেতে কত টাকা লাগে বিষয়ে অনেকেরই জানা নেই। তাই চিন্তার কোন কারণ নেই এই আর্টিকেলে মাধ্যমে আপনি সম্পূর্ণ জেনে যাবেন। তাহলে চলুন এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

ভূমিকা

ইতালি ইউরোপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশ, যেখানে বিভিন্ন সেক্টরে চাকরির প্রচুর সুযোগ রয়েছে। দেশটির অর্থনীতি, পর্যটন, শিল্প, এবং কৃষি সেক্টর বিশ্বব্যাপী পরিচিত। ইতালিতে কাজের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে ইতালিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি অনেকেরই জানা প্রয়োজন। তাই এই আর্টিকেলে এই বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়লে আপনারা সমস্ত বিষয়গুলো সঠিকভাবে জেনে যাবেন। তাই আসুন আর দেরি না করে বিস্তারিত জেনে নিন।

ইতালি যেতে কত টাকা লাগে

বাংলাদেশের এমন অনেক নাগরিক রয়েছে যারা ইতালি যেতে চান। কিন্তু ইতালি যেতে কত টাকা লাগে তা অনেকেই জানেন না। আজকে আমি এই আর্টিকেলে আপনাদের এই বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। 

অনেকেই ইতালিতে ভ্রমণ বা কাজের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেন। ইতালি যাওয়ার জন্য কত টাকা লাগবে, তা নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয়ের উপর, যেমন আপনার ভ্রমণের উদ্দেশ্য, ভিসা ফি, ফ্লাইট খরচ, আবাসন খরচ, এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ।
সাধারণত ইতালি ভিসা ২ প্রকার হয়ে থাকে। ১) সিজোনাল ভিসা ২) নন সিজোনাল ভিসা। যদি আপনি কিছু সময়ের জন্য যেতে চান অর্থাৎ দুই থেকে তিন মাসের জন্য ইতালিতে যেতে চান তাহলে আপনি সিজনাল ভিসা নিয়ে যেতে পারেন। 

বর্তমান সময়ে এই ভিসা নিয়ে ইতালিতে গেলে আপনার সকল খরচ মিলিয়ে সাধারণত ৪ লাখ থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার মতো খরচ হতে পারে। আর অন্যদিকে আপনি যদি দীর্ঘদিন অথবা কোন কাজ করার জন্য যেতে চান, তাহলে আপনাকে নন সিজোনাল ভিসা নিয়ে ইতালিতে যেতে হবে। 

এক্ষেত্রে আপনার ৯ লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। আশা করি এতক্ষণে আপনি নিশ্চিত হতে পেরেছেন যে ইতালি যেতে কত টাকা লাগে।

ইতালিতে থাকা খাওয়ার খরচ কেমন

ইতালি ইউরোপের অন্যতম জনপ্রিয় দেশ, যা তার সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, এবং পর্যটনের জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত। তবে যারা ইতালিতে বসবাস করতে চান বা ভ্রমণে যাচ্ছেন, তাদের জন্য থাকা এবং খাওয়ার খরচ সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরি। 

তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলের অংশটুকুতে ইতালিতে থাকা খাওয়ার খরচ কেমন হতে পারে সে সম্পর্কে সঠিকভাবে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। তাহলে আসুন আর দেরি না করে জেনে নিন।

বাসস্থানের খরচঃ ইতালিতে বাসস্থানের খরচ মূলত শহর অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। বড় শহরগুলো, যেমন রোম, মিলান, এবং ফ্লোরেন্সে ভাড়া তুলনামূলকভাবে বেশি। 
একক রুমের অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়া বড় শহরে মাসে প্রায় ৬০০ ইউরো থেকে ১২০০ ইউরো পর্যন্ত হতে পারে। ছোট শহর বা গ্রামীণ এলাকায় খরচ তুলনামূলকভাবে কম, যেখানে মাসিক ভাড়া ৪০০ ইউরো থেকে ৭০০ ইউরো এর মধ্যে থাকে।

খাবারের খরচঃ ইতালির খাবার বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়। এখানে খাবারের খরচও বিভিন্নতার ওপর নির্ভর করে। একটি সাধারণ রেস্তোরাঁয় খাবারের দাম জনপ্রতি প্রায় ১০ ইউরো থেকে ২০ ইউরো হতে পারে।

ফাস্টফুড বা ক্যাফেতে খাওয়ার খরচ কম, যা ৫ ইউরো থেকে ১০ ইউরো এর মধ্যে থাকে। তবে যারা নিজেরা রান্না করতে পছন্দ করেন, তাদের মাসিক খাবারের খরচ প্রায় ২০০ ইউরো থেকে ৩০০ ইউরো।

অন্যান্য খরচঃ পরিবহন, ইন্টারনেট, এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত খরচ মাসে প্রায় ১০০ ইউরো থেকে ২০০ ইউরো পর্যন্ত হতে পারে।

ইতালিতে থাকা খাওয়ার খরচ শহরের উপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে, তবে নিজের বাজেট অনুযায়ী পরিকল্পনা করলে এখানে মানসম্মত জীবনযাপন করা সম্ভব। তবে থাকা খাওয়া সব মিলিয়ে খরচ হতে পারে ১০০০ থেকে ১৫০০ ইউরো। যা বাংলাদেশি টাকায় ১ লাখ ২৯ হাজার ৬৩০ টাকা থেকে ১ লাখ ৯৪ হাজার ৪৪৫ টাকা খরচ হতে পারে।

ইতালিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি

বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রবাসী ইতালিতে আসে। বিশেষ করে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এবং টুরিস্ট ভিসার জন্য এই ইতালিতে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ আসে। শুধু তাই নয় এই ইতালিতে কাজ করে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা বেতন পাওয়া যায় বলে অনেকেই বেশি টাকা খরচ হলেও এই ইতালিতে এসে কাজ করার সুযোগ খুজে থাকে। 

কিন্তু অধিক মানুষ ইতালির ভাষা না শিখেই ইতালিতে চলে আসে। আর সেজন্য শুরুতে তাদের কাজ পেতে অনেক বেশি দেরি হয়। ইতালিতে প্রতিটি শহরের শহরে অনেক কাজ রয়েছে যেমন ফ্যাক্টরি কাজ অফিসের কাজ কোম্পানির কাজ ইঞ্জিনিয়ার এর কাজ মেকানিক্যাল কাজ ইত্যাদি। এই কাজগুলোর চাহিদা বর্তমানে অনেক বেশি। 
এ ধরনের চাকরি করার জন্য উচ্চশিক্ষা ও কাজের পূর্বে অভিজ্ঞতা থাকলেই কাজগুলো করা সম্ভব। এছাড়াও এর বাইরেও আরো হাজার হাজার কাজ রয়েছে সেগুলো করে প্রতি মাসে ৭০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকাও বেতন পাওয়া যায়। তবে এই কাজগুলোর জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজনও হয় না। 

কিন্তু ইতালিয়ান ভাষা জানার কারণেই এত টাকা প্রতি মাসে ইনকাম করা সম্ভব। যেমন- শ্রমিকের কাজ, ক্লিনারের কাজ, মার্কেটের কাজ, লিভারের কাজ, রেস্টুরেন্টের কাজ, ড্রাইভিং এর কাজ, পোশাক কারখানার কাজ ইত্যাদি। বর্তমান সময়ে ইতালিতে এ সকল কাজেরও অনেক বেশি চাহিদা বেড়েই চলেছে। 

শুধুমাত্র ইতালিতে দক্ষ কর্মীর অভাব রয়েছে। তাই আপনারা যারা ইতালিতে যেতে চাচ্ছেন তারা অবশ্যই কাজের কথা চিন্তা না করে আগে নিজে কি দক্ষতা অর্জন করেছেন সেটার দিকে খেয়াল করে তারপরে ইতালিতে যাওয়া উচিত। ইটালিতে যতটা কাজ পাওয়ার সহজ মনে করছেন ততটাও নয়। এখানে কাজের জন্য নির্দিষ্ট দক্ষতা প্রয়োজন পড়ে। 
 ভালো টাকা ইনকাম করতে গেলে আপনার অভিজ্ঞতার প্রয়োজন পড়বে। তাই আপনারা বাংলাদেশ থেকে কিংবা অন্য কোন দেশ থেকে ইতালিতে যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই কোন একটি বিষয়ের উপর দক্ষতা অর্জন করে তারপরে যাবেন। আশা করি ইতালিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি রয়েছে সে সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক স্টুডেন্ট ভিসায় ইতালি যেতে কত টাকা লাগে।

স্টুডেন্ট ভিসায় ইতালি যেতে কত টাকা লাগে

ইতালি বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় দেশ শিক্ষার্থীদের জন্য, যেখানে উচ্চশিক্ষার জন্য অনেক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভিসা নিয়ে যায়। স্টুডেন্ট ভিসায় ইতালি যেতে কত টাকা লাগে তা নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয়ের উপর, যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি, জীবনযাত্রার খরচ, এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ।

ভিসা প্রসেসিং খরচঃ ইতালিতে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে সাধারণত ৫০ থেকে ১০০ ইউরো ফি দিতে হয়, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকা। ভিসার জন্য আবেদন ফি ভিসা অফিসে জমা দিতে হয়।

টিউশন ফিঃ ইতালির বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর টিউশন ফি তুলনামূলকভাবে অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোর চেয়ে কম। বছরে টিউশন ফি সাধারণত ১,০০০ থেকে ৪,০০০ ইউরোর মধ্যে থাকে, যা প্রায় ১,২০,০০০ থেকে ৫,০০,০০০ টাকা।

জীবনযাত্রার খরচঃ ইতালিতে মাসিক জীবনযাত্রার খরচ ৬০০ থেকে ১,০০০ ইউরোর মধ্যে হতে পারে, যা প্রায় ৭০,০০০ থেকে ১,২০,০০০ টাকার সমান। এর মধ্যে খাবার, বাসস্থান, পরিবহন ও অন্যান্য খরচ অন্তর্ভুক্ত।
স্বাস্থ্যবীমা এবং অন্যান্য খরচঃ ইতালিতে পড়াশোনা করার সময় স্বাস্থ্যবীমা গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক। এর জন্য প্রায় ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা খরচ হতে পারে। এছাড়া, ভিসা আবেদন ও অন্যান্য প্রক্রিয়ার খরচ মিলিয়ে আরও কিছু খরচ হতে পারে।

মোটকথা, স্টুডেন্ট ভিসায় ইতালি যেতে প্রায় ৩,০০,০০০ থেকে ৮,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে, যা নির্ভর করে আপনার বিশ্ববিদ্যালয় এবং জীবনযাত্রার উপর।

ইতালিতে পড়াশোনার খরচ

অনেক শিক্ষার্থীরা রয়েছে যারা জানতে চাই ইতালিতে পড়াশোনার খরচ কত। তাই প্রিয় শিক্ষার্থী আপনাদের সুবিধার্থে আজকে আমি এই আর্টিকেলে এ বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। আশা করি আপনারা এই আর্টিকেলের অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়লে এ বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পারবেন। তাই আসুন জেনে নিন।

ইতালিতে যে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে সেগুলোতে বার্ষিক অর্থায়ন খরচ হয় ৯০০ থেকে ৪ হাজার ইউরো যা বাংলাদেশী টাকায় বর্তমানে ১ লাখ ১৬ হাজার ৬৬৭ টাকা থেকে ৫ লাখ ১৮ হাজার ৫২০ টাকা। 
অন্যদিকে যে সকল ইতালিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে সেগুলোতে কোর্স মূল্য প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৬ হাজার থেকে ২০ হাজার ইউরো যা বাংলাদেশী টাকায় বর্তমানে ৭ লাখ ৭৭ হাজার ৭৮০ টাকা থেকে ২৫ লাখ ৯২ হাজার ৬০০ টাকা।

লেখকের শেষ কথা | ইতালিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি

প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আশা করি ইতালিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং স্টুডেন্ট ভিসায় ইতালি যেতে কত টাকা লাগে এই সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন। তবে একটি কথা অবশ্যই মনে রাখবেন ইতালিতে যাওয়ার আগে যেকোনো একটি কাজের উপর দক্ষতা অর্জন করতে হবে। তাহলে আপনার ইতালিতে ভালো ভালো কাজ করার সুযোগ হবে এবং অনেক টাকা ইনকাম করার সুযোগ হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪