অনলাইনে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন
অনলাইনে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম আপনার যদি জানা না থাকে। তাহলে আজকের
এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। বাংলাদেশে অনেক মানুষের ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে।
কিন্তু এমন অনেকেই রয়েছে যারা একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানেন না। তাই আশা
করবো আপনারা যারা জানেন না তারা আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ুন।
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন। তাহলে বিদেশ থেকে ইসলামী
ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম, ইসলামী ব্যাংক কারেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম , ইসলামী
ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুবিধা ও অসুবিধা, ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট চার্জ,
ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য কি কি লাগে, এই সকল বিষয়ে সঠিকভাবে জেনে যাবেন।
ভূমিকা
বর্তমানে বেসরকারি যতোগুলো ব্যাংক রয়েছে তার মধ্যে একটি উন্নত মানের ব্যাংক ধরা
যায় ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। এই ব্যাংকে আপনি অ্যাকাউন্ট খুললে বিভিন্ন ধরনের
সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে একটি বিষয়ের না বললেই নয় ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার
জন্য অনেক গ্রাহকেরা আগ্রহী। কিন্তু কিভাবে তারা ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলবে সেই
নিয়ম সম্পর্কে জানেন না। তাই আজকে আমি সেই নিয়মটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা
করব। তবে বর্তমানে ইসলামী ব্যাংক সবচেয়ে বড় যে সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে সেটি হচ্ছে
অনলাইনের মাধ্যমে একাউন্ট খোলা। আপনি যদি চান তাহলে অনলাইনের মাধ্যমেও ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবেন। তবে
সেক্ষেত্রে আপনাকে অনলাইনে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে সঠিকভাবে
আগে জেনে নিতে হবে। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলে অনলাইনে কিভাবে আপনি সঠিক নিয়মে
একাউন্ট খুলবেন সেই সম্পূর্ণ দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করি এই
দিক-নির্দেশনা সম্পূর্ণ অবলম্বন করলে খুব সহজেই ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলে নিতে
পারবেন। তাই আপনাদের কাছে আমার একটাই অনুরোধ এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ
সহকারে পড়ুন।
ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুবিধা ও অসুবিধা
আজকে আমি এই আর্টিকেলের অংশটুকু যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব সেটা হচ্ছে ইসলামী
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে। বাংলাদেশের যতগুলো উন্নত
মানের ব্যাংক রয়েছে তার মধ্যে একটি ব্যাংক হচ্ছে ইসলামী। এই ইসলামী ব্যাংকে আপনি
বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকবেন। একজন গ্রাহক কি কি সুবিধা ও অসুবিধা
ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট থেকে পেয়ে থাকেন সে বিষয়টি সঠিকভাবে জানিয়ে দেব। তাই
আসুন আর দেরি না করে এ বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে নিন।
মূলত ইসলামী ব্যাংকে তিনটি অ্যাকাউন্ট খোলা যায়ঃ
- স্টুডেন্ট একাউন্ট
- সেভিংস একাউন্ট
- কারেন্ট একাউন্ট
এই তিনটি একাউন্টের মধ্যে আপনারা বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকবেন। যেমনঃ
স্টুডেন্ট একাউন্ট যে সকল শিক্ষার্থীদের রয়েছে তাদের যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা
ইসলামী ব্যাংক রয়েছে সেগুলো হলোঃ
ইন্টারনেট ব্যাংকিংঃ আপনি যদি কোন দুরবর্তী স্থানে থাকেন তাহলে সেখান থেকে
আপনি একাউন্টে ম্যানেজমেন্ট করতে পারবেন। এটি একটি ইসলামী ব্যাংকের অনেক বড়
সুবিধা।
সাহায্যের জন্য ২৪ ঘন্টা হেল্পলাইনঃ যদি আপনি ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার
পর কোন সমস্যার মধ্যে পড়েন তাহলে যেকোনো সময় আপনি হেল্পলাইনে ফোন দিয়ে খুব
দ্রুত সাহায্য নিতে পারবেন। এছাড়াও ইসলামী ব্যাংকের যারা হেল্প লাইনে থাকে তারা
সবসময় একটিভ থাকে আপনাকে সাহায্য করার জন্য। এতে করে আপনার অ্যাকাউন্ট অনেক
নিরাপত্তা থাকে।
সেলফিন অ্যাপসঃ স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার পরে আপনি সেলফিন অ্যাপস ব্যবহার
করতে পারেন। আপনি নিজেই যেকোনো ধরনের লেনদেন এবং আপনার (history) চেক করতে
পারবেন।
চার্জ ফ্রি ভিসা - রেপিড ডেবিট কার্ডঃ আপনি ইসলামী ব্যাংকের স্টুডেন্ট
একাউন্টে খোলার পরে সেখান থেকেই আপনি চার্জ ডেবিট কার্ড (Charge debit card)
ব্যবহার করে আপনি নিজেই বিভিন্ন ধরনের লেনদেন খুব সহজেই করতে পারবেন।
ফ্রি এসএমএস নোটিফিকেশন সার্ভিসঃ আপনি যদি ইসলামী ব্যাংকে স্টুডেন্ট
একাউন্ট খুলেন। সেক্ষেত্রে আপনার এসএমএস ও নোটিফিকেশন সার্ভিসের জন্য কোন রকম
চার্জ নেওয়া হবে না। যেটা অন্যান্য ব্যাংকের ক্ষেত্রে চার্জ নেওয়া হয়।
ইসলামী ব্যাংকে স্টুডেন্ট একাউন্ট এর অসুবিধাঃ
আপনি যদি ইসলামী ব্যাংকে একটি স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলে থাকেন। তাহলে সেখানে আপনার
অ্যাকাউন্টের নির্দিষ্ট সময় থাকবে। যদি সেই স্টুডেন্ট কার্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণ
হয়ে যায় তাহলে আপনার হয়তো সমস্যা হতে পারে।
ইসলামী ব্যাংকের সেভিংস একাউন্ট খোলার সুবিধাঃ
- ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্টের জন্য আপনার প্রতি মাসে ৭.৫% কেটে থাকে ইসলামী ব্যাংক। এবং ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রত্যেক সেভিংস একাউন্ট খোলা গ্রাহকদের ৩.৫% হারে মুনাফা দেওয়া হয়।
- এছাড়াও এই ব্যাংকের আরো সুযোগ সুবিধা জানতে হলে সরাসরি ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট এর সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আপনি চাইলে (https://www.islamibankbd.com) এখান থেকেও সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট খোলার অসুবিধাঃ
এই সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলার যেমন সুবিধা রয়েছে ঠিক তেমনি তার অসুবিধা রয়েছে।
ইসলামী ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট খোলার যে অসুবিধে রয়েছে সেটি হচ্ছেঃ
১। এককালীন বেশি টাকা জমা রাখা যাবে না অর্থাৎ ২ লাখ ৩ লাখ ৪ লাখ টাকা একবারে
রাখতে পারবেন না।
২। বেশি পরিমাণে টাকা এককালীন উত্তোলন করতে পারবেন না।
৩। দিনে নির্দিষ্ট পরিমাণ চেকের বেশি দিতে পারবেন না।
৪। অন্য ব্যাংক থেকে টাকা একাধিক লেনদেন করতে পারবেন না।
ইসলামী ব্যাংকে কারেন্ট একাউন্ট খোলার সুবিধাঃ
ইসলামী ব্যাংকে কারেন্ট একাউন্ট খোলার যে সুবিধা রয়েছে সেগুলো হচ্ছে ইন্টারনেট
ব্যাংকিং, বৈধ লেনদেন করার একটি সুরক্ষিত অবস্থান সহ আরো ইত্যাদি।
ইসলামী ব্যাংকে কারেন্ট একাউন্ট খোলার অসুবিধাঃ
১। কারেন্ট একাউন্ট খুলতে ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন হবে।
২। প্রতিনিয়ত কারেন্ট একাউন্টে লেনদেন করতে হবে। যদি আপনি লেনদেন বন্ধ করে দেন
পরবর্তীতে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৩। কম পরিমানে টাকা লেনদেন করা যাবে না। অর্থাৎ প্রতি মাসে আপনার নির্দিষ্ট
পরিমাণের টাকা ব্যাংকে ডিপোজিট করতে হবে।
৪। ব্যাংকের যে কোন সেবার জন্য আপনাকে চার্জ দিতে হবে।
ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট চার্জ
মূলত আপনার ইসলামী ব্যাংকের সেভিংস একাউন্ট এর যে চার্জ রয়েছে সেটা আপনার
অ্যাকাউন্টের এক্টিভিটির উপর ভিত্তি করেই নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। তবে আপনার যদি
একাউন্ট একটিভ চলতে থাকে তাহলে আপনাকে প্রতিবছরে ছয় মাস পর পর চার্জ পরিশোধ করতে
হবে বাধ্যতামূলক। প্রতিবছরের ছয় মাস পর পর আপনার ব্যাংক একাউন্ট থেকে নির্দিষ্ট
পরিমাণের চার্জ নেয়া হবে।
- যদি আপনার একাউন্টে ১০০০ টাকার বেশি থাকে এবং ২৫ হাজার টাকা কম থাকে তাহলে আপনার সেখান থেকে কাটা হবে ১৫% অর্থাৎ ১০০ টাকা।
- যদি আপনার ব্যাংক একাউন্টে ২৫ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা থাকে তাহলে আপনার চার্জ প্রযোজ্য হবে ২০০ টাকা।
- যদি আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২ লক্ষ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা থাকে তাহলে আপনার চার্জ প্রযোজ্য হবে ২০০ টাকা।
- সর্বশেষ ১০ লক্ষ টাকা থেকে এর ওপরে আরো যদি টাকা রাখেন তাহলে আপনার চার্জ হিসেবে কাটা হবে ৩০০ টাকা।
আপনি যদি একজন ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট ব্যবহারকারী হিসেবে সেভিংস অ্যাকাউন্ট তৈরি
করে রাখেন তাহলে উপরে উল্লেখিত যে চার্জ রয়েছে সেগুলো আপনার একাউন্টের জন্য
প্রযোজ্য হবে। আশা করি এই বিষয়টি সম্পর্কে আপনি সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন। এছাড়া
আপনার যদি আরও বেশি জানার ইচ্ছা থাকে তাহলে সরাসরি আপনার নিকটস্থ ইসলামী ব্যাংকে
যেয়ে জেনে নিতে পারেন।
ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য কি কি লাগে
ইসলামী ব্যাংক একটি বাংলাদেশের শরীয়াহ্-ভিত্তিক ব্যাংক। এটি বাংলাদেশের একটি
বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক। এই বেসরকারি খেতের সর্ববৃহৎ এ বাণিজ্যিক ব্যাংকটির
প্রতি দেশের মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। প্রতিটা মানুষ এই ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট
খোলার জন্য অনেক বেশি আগ্রহ থাকে। কিন্তু ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য কি কি
লাগে এটা অনেকেই জানেন না। তাই আজকে আমি এ বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জানিয়ে
দেয়ার চেষ্টা করব। আপনারা যারা এ বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না তারা অবশ্যই এই
আর্টিকেল এর অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে প্রয়োজনীয় যে নথিপত্র দরকারঃ
জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) / পাসপোর্টঃ প্রথমে আপনাকে অবশ্যই আপনার পরিচয় এর
প্রমাণের জন্য বৈধ একটি জাতীয় পত্র অথবা পাসপোর্ট প্রয়োজন হবে।
ফটোঃ আপনার পাসপোর্ট সাইজের ২ কবি ছবি প্রয়োজন হবে।
বর্তমান ঠিকানাঃ আপনার বর্তমান ঠিকানার জন্য বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল অথবা
টেলিফোন বিল জমা দিতে হবে।
আয়ের প্রমাণ দিতে হবেঃ আপনি যদি একটি সঞ্চয় হিসাব খুলতে চান যার
জন্য আপনার আমানত প্রয়োজন। তাহলে আপনাকে অবশ্যই আয়ের যে প্রমাণ রয়েছে সেটা জমা
দিতে হবে। যেমনঃ ব্যবসা নিবন্ধন সনদ, কর প্রদানের রশিদ এবং বেতন স্লিপ।
অন্যান্যঃ এই সম্পূর্ণ দেয়ার পরেও আপনাকে হয়তো অতিরিক্ত কোন কিছু
নথিপত্র জমা দিতে হতে পারে যেমন একটি নমিনির তথ্য অথবা সুপারিশ পত্র।
উপরে উল্লেখিত যে বিষয়গুলো দেয়া হয়েছে সেগুলো আপনার ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট
খোলার জন্য প্রয়োজন পড়বে। তবে একটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখবেন কোন কিছু ভুয়া
দেয়ার চেষ্টা করবেন না। এতে করে আপনার পরবর্তীতে বিপদ বাড়বে। আশা করি বিষয়টি
সঠিকভাবে বোঝাতে পেরেছি।
ইসলামী ব্যাংক কারেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
বাংলাদেশের যে বেসরকারি ব্যাংকগুলো রয়েছে তার মধ্যে একটি অন্যতম ব্যাংক হচ্ছে
ইসলামী ব্যাংক। অনেক গ্রাহকেরা এই ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন।
কিন্তু ইসলামী ব্যাংক কারেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম যেটা রয়েছে সেটা অনেকেই জানেন
না। তাই আজকে আমি এই বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জানিয়ে দেয়ার চেষ্টা করব। তাই
আপনারা যারা এ বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না তাদের কাছে অনুরোধ রইলো এই আর্টিকেলের
অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ইসলামী ব্যাংক কারেন্ট একাউন্ট খুলতে যা লাগবেঃ
- এই অ্যাকাউন্টটি খোলার জন্য আপনার ট্রেড লাইসেন্স, ই-টিন সার্টিফিকেট ও প্রতিষ্ঠানের প্যাডে হিসাব খোলার জন্য আবেদনপত্র প্রয়োজন পড়বে।
- এছাড়াও এই একাউন্ট খোলার জন্য আপনার ঠিকানার প্রমাণ / ভাড়াচুক্তির দলিল, কোম্পানি অথবা প্রতিষ্ঠানভেদে অন্যান্য কাগজপত্র প্রয়োজন পড়বে।
- এছাড়াও আপনারা জাতীয় পরিচয় পত্র, পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি ছবি,পাসপোর্টের কপি, নমিনীর পরিচয়পত্র/পাসপোর্টের কপি ও ১ কপি ছবি প্রয়োজন পড়বে।
অনলাইনে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
বর্তমানে বাংলাদেশে সবকিছুই অনলাইনের মাধ্যমে করা সম্ভব। আপনি যদি ঘরে বসে ইসলামী
ব্যাংক একাউন্ট অনলাইনে মাধ্যমে খুলতে পারেন তাহলে এর থেকে ভালো কি হতে পারে তাই
না। তাই কিভাবে আপনি অনলাইনে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম জানবেন তা নিয়ে
বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই আপনারা যারা খুব দ্রুত অনলাইনে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট
খুলতে চান বা খুলনার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তারা অবশ্যই এই আর্টিকেলের অংশটুকু
মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আশা করি আপনি যে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান তা সঠিকভাবে
জানতে পারবেন।
এখন বর্তমানে ইসলামী ব্যাংক অনলাইনের মাধ্যমে একাউন্ট খোলার সুযোগ-সুবিধা করে
দিয়েছে। যার কারণে অল্প সময়ে আপনি খুব দ্রুত অনলাইনে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট
খুলে নিতে পারবেন। তাই চলুন আর দেরি না করে সেলফিন অ্যাপ ব্যবহার করে কিভাবে আপনি
অনলাইনের মাধ্যমে একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলবেন সেটা বিস্তারিত পয়েন্ট আকারে নিচে
দেওয়া হলো জেনে নিন।
- প্রথমে আপনাকে যেটা করতে হবে মোবাইল ফোন দিয়ে গুগল প্লে স্টোর (google play store) থেকে সেলফি অ্যাপ ডাউনলোড করে নিতে হবে।
- এরপর ইন্সটল করা শেষ হলে সেই অ্যাপটি ওপেন করে রেজিস্টার (Register) বাটনে ক্লিক করুন এবং পরের ধাপে বাংলাদেশ লেখা অপশনে সিলেক্ট করুন।
- এরপরে ২টি অপশন আপনার সামনে আসবে একটি হচ্ছে (BANK AC) এবং অন্যটি হচ্ছে (National ID). যেহেতু আপনি ন্যাশনাল (National ID) আইডি কার্ড দিয়ে অ্যাকাউন্ট করবেন তাই অবশ্যই আপনাকে ন্যাশনাল আইডি (National ID) সিলেক্ট করতে হবে।
- এরপরে আপনাকে মোবাইলের নাম্বার দিয়ে ৬ সংখ্যার পিন নাম্বার লিখে রেজিস্টার (“Register”) বাটনে ক্লিক করে লগইন করে নিতে হবে।
- এরপর আপনার সেলফিন অ্যাপ এ থাকা (Open A/C) বাটনে ক্লিক করতে হবে। তারপর আপনার সামনে একটি পেজ চলে আসবে সেখানে লেখা থাকবে (Bank Account Register) এর মধ্যে আপনি যে এলাকায় থাকেন সেখানকার ব্যাংকের শাখার ব্রাঞ্চ সিলেক্ট করতে হবে।
- তারপর আপনার মাতার নাম, পিতার নাম, মাসিক ইনকাম, বৈবাহিক অবস্থা, জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী স্থায়ী ঠিকানা, তারপর আপনার জেলা, আপনার থানা ও পোস্টাল কোড দেওয়ার পরে (next) বাটনে ক্লিক করতে হবে।
- এরপর আপনার সামনে অন্য আরেকটি পেজ আসবে সেখানে লেখা থাকবে (Account Type). তারপর আপনার পছন্দ অনুযায়ী কি ধরনের অ্যাকাউন্ট করতে চাচ্ছেন সেটা সিলেক্ট করুন এবং (next) বাটনে ক্লিক করুন।
- (next) বাটনে ক্লিক করার পর আপনার সামনে অন্য একটি পেজ চলে আসবে যেখানে (Term) লিখা থাকবে। সেই Term বাটনে ক্লিক করে ৫ বছর অথবা ১০ বছর সিলেক্ট করুন। তারপর ওই পেজের মধ্যে একটু লক্ষ্য করলে দেখবেন যে (Installment Amount) লেখাটি রয়েছে। সেখানে আপনি কত টাকা জমা করতে চাচ্ছেন সেই টাকার পরিমাণটি দিয়ে (next) বাটনে ক্লিক করুন।
- এরপর আপনার সামনে একটি ফরম আকারে পেজ চলে আসবে। সেখানে আপনাকে নমিনির নাম, নমিনির পিতার নাম, মাতার নাম, এনআইডি (NID) নাম্বার এবং আপনার সাথে রিলেশনশিপ লিখে (next) বাটনে ক্লিক করুন।
- তারপর আপনাকে নমিনির ঠিকানা, জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী জাতীয় ঠিকানা, থানা ও জেলার নাম দিতে হবে। তারপর (next) বাটনে ক্লিক করতে হবে। এরপরে আপনাকে নমিনীর যে ভোটার আইডি কার্ড রয়েছে সেটার ছবি দিতে হবে। তার জন্য (Choose File) অপশনে ক্লিক করুন। এরপর নমিনীর যে ভোটার আইডি কার্ড রয়েছে সেই কার্ডের সামনের ও পিছনের ছবি প্রবেশ করান। তারপর (next) বাটনে ক্লিক করুন।
- এ সকল তথ্য দেওয়া হয়ে গেলে কিছুক্ষণ পর (Bank Account Opened Successfully) এই লেখাটি আপনার সামনে চলে আসবে এবং সাথে সাথে আপনার ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট থেকে নাম্বারটি আসবে এবং সেই নাম্বারটি আপনি যত দ্রুত সম্ভব খাতায় লিখে নিবেন। আপনার নিরাপত্তার জন্য। তাহলে আপনার অ্যাকাউন্ট সম্পন্ন হবে।
উপরে উল্লেখিত যে পদ্ধতিগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো যদি আপনি অনুসরণ করতে পারেন।
তাহলে আপনি মোবাইলের মাধ্যমে ঘরে বসে অনলাইনে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলে নিতে
পারবেন। তবে একটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখবেন সেটি হচ্ছে অনলাইনে অ্যাকাউন্ট খোলা
হয়ে গেলে আপনি আপনার নিকটস্থ ইসলামী যে ব্যাংক রয়েছে সেখানে যোগাযোগ করে আপনার
চেক বই এবং ডেবিট কার্ড অথবা ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন।
এছাড়াও আপনি চাইলে সেলফিন অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে আপনি যেকোনো ধরনের লেনদেন ঘরে
বসেই করতে পারবেন। আশা করি অনলাইনে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে
সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন। এছাড়া আপনার যদি আরো কোন তথ্য জানার আগ্রহ থাকে তাহলে
অবশ্যই এই ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন এবং কমেন্ট করে সেটা জানিয়ে রাখুন। (ধন্যবাদ)
বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
অনেক বিদেশীরা রয়েছে যারা বাংলাদেশের নাগরিক। কিন্তু অনেকেই রয়েছে যারা বিদেশ
থেকে কিভাবে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলবে সেই নিয়ম সম্পর্কে জানেন না। তাই আজকে
আমি এই আর্টিকেলের অংশটুকুতে বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনারা যারা এ বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না তারা
অবশ্যই এই আর্টিকেলের অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়বেন। বিদেশি নাগরিকরা ইসলামী
ব্যাংকে সহজেই একটি সাধারণ সম্পাদ্য অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। তবে এমন কিছু
নিয়মকানুন রয়েছে সেটা অনেকেই জানেন না। তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে নিন।
বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য যে যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
লাগবে সেগুলো হলোঃ
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
- পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি ছবি।
- বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস/কমিশনের যাচাইকৃত পাসপোর্ট।
- আয়ের উৎসের প্রমাণ (যেমনঃ কর্মচারীর সনদপত্র, ব্যবসার নিবন্ধন)
- আপনার বিদেশস্থ ব্যাংকের স্টেটমেন্ট প্রয়োজন পড়বে। (সাম্প্রতিক তিন মাসের)
- এরপর আপনার অনলাইন আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে।
উপরে উল্লেখিত যে বিষয়গুলো দেওয়া হলো সেগুলো বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংক
অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম। তাই আপনারা যারা এই নিয়ম জানেন না তারা হয়তো এতক্ষণে
নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন। তবে এখানে কোন রকম ভুয়া তথ্য দেয়ার চেষ্টা করবেন না।
কারণ বাংলাদেশে যতোগুলো ব্যাংক রয়েছে সমস্ত ব্যাংক সঠিক তথ্য যাচাই-বাছাই করার
পরে একাউন্ট খোলার জন্য অনুমতি দিয়ে থাকেন। আশা করি বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।
লেখকের শেষ কথা | অনলাইনে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
(আসসালামু আলাইকুম) প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আশা করি অনলাইনে ইসলামী
ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার
নিয়ম সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন। আপনারা যদি আর্টিকেলটি পড়ে একটুও
উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই আপনারা বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এই
আর্টিকেলটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করলে আপনার বন্ধুরা সহ আরও অনেকেই জানতে পারবে।
তাই আর দেরি না করে আপনার বন্ধুদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করুন। এই রকম আরো
আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার
কোনো মতামত জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে সেটা জানিয়ে যাবেন। (ধন্যবাদ)
এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url