অতিরিক্ত মাথা ঘামার কারন কি - বাচ্চাদের মাথা ঘামার কারণ

অনেকেই অতিরিক্ত মাথা ঘামার কারন কি এই সম্পর্কে জানেন না। তাই আপনারা যারা জানেন না তারা অবশ্যই এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিবেন। অতিরিক্ত মাথা ঘামা কখনোই ভালো লক্ষণ নয়। ছোট শিশু অথবা বড় কোন মানুষ হোক না কেন অতিরিক্ত মাথা ঘামার পেছনে বিভিন্ন রোগের লক্ষণ থাকতে পারে। যা অনেকেই জানেন না। তাই আপনারা যেহেতু জানেন না সেহেতু আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ রইল আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
অতিরিক্ত মাথা ঘামার কারন কি এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
আপনারা যদি এই আর্টিকেল শেষ পর্যন্ত পড়তে পারেন তাহলে অনেক বিষয়েই জানতে পারবেন। যা আপনার জন্য অনেক কাজে দেবে। যেমন- বাচ্চাদের মাথা ঘামার কারণ কি, শীতল ঘাম হওয়া কোন রোগের লক্ষণ, অতিরিক্ত ঘাম কোন রোগের লক্ষণ, অতিরিক্ত ঘাম দূর করার ঘরোয়া উপায়, শরীরে অতিরিক্ত গরম লাগার কারণ কি, এই সকল বিষয়ে সঠিকভাবে জানতে পারবেন।

ভূমিকা

গরমকালীন সময়ে মানুষের শরীরে গরম লাগবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই একই আবহাওয়া যদি আপনার অন্যদের তুলনায় অতিরিক্ত গরম লাগে তাহলে সেটা কখনোই স্বাভাবিক হয় না। কোনো না কোনো কারণে এই সমস্যাটি হয়। তাই আপনারা যারা অতিরিক্ত মাথা ঘামার কারন কি এবং বাচ্চাদের মাথা ঘামার কারণ কি এই সম্পর্কে যদি না জেনে থাকেন, তাহলে অবশ্যই এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিবেন। কারণ আপনার অথবা আপনার পরিবারের বাচ্চার কিংবা বড় মানুষের এই ধরনের সমস্যা হতেই পারে অস্বাভাবিক কিছুই নয়। তাই আপনি যদি এই আর্টিকেল সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়তে পারেন। তাহলে আশা করি আপনি সমস্ত সমস্যার সমাধান সঠিকভাবে পেয়ে যাবেন। তাই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ রইল।

শরীরে অতিরিক্ত গরম লাগার কারণ কি

গরমের সময় মানুষের শরীরে গরম লাগবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু একই আবহাওয়া অন্যদের চেয়ে বেশি গরম অনুভব করলে অবশ্যই এর পেছনে কোন কারণ রয়েছে সেটা খুঁজে দেখা প্রয়োজন। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলের অংশটুকুতে শরীরে অতিরিক্ত গরম লাগার কারণ কি এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে দেব। আপনাদের যাদের অতিরিক্ত গরম লাগে। কিন্তু কি কারণে লাগে সেটা না জানা থাকলে অবশ্যই আর্টিকেলের অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়ুন। চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক।
 
একজন মানুষ অ্যালকোহল, কফি অথবা চা গ্রহণ করলে তাকে অতিরিক্ত গরম লাগবে এটাই স্বাভাবিক। এছাড়াও অতিরিক্ত মসলা দেওয়া খাবারগুলো খেলে সেক্ষেত্রেও অতিরিক্ত গরম লাগতে পারে। কিন্তু এই গরমগুলো একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় থাকে। যার কারণে এই গরমে কোনরকম সমস্যা হয় না। কিন্তু এর বাইরেও আরো বিভিন্ন কারণে অতিরিক্ত গরম লাগে যা আপনার ক্ষতির কারণ হতে পারে। যেমনঃ

দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপঃ কেউ যদি কোন বিষয়ে দুশ্চিন্তা করে তাহলে তাকে অতিরিক্ত গরম লাগতে পারে, অতিরিক্ত ঘামও হতে পারে কিংবা মাথাব্যথাও হয়। তাই আপনাকে চিন্তা করে দেখতে হবে কোনগুলো আপনার বাড়তি চাপ রয়েছে সেগুলো মন শান্ত রেখে কাজ করতে হবে। এছাড়াও বিভিন্ন পারিবারিক সমস্যার কারণে মানসিক চাপ একটা মানুষের হয়ে থাকে। কিন্তু এই মানসিক চাপ হওয়ার কারণে একটা মানুষের শরীর অতিরিক্ত গরম হয় এবং সে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। 
আপনি কারো সাথে তাল মিলিয়ে চলবেন না। নিজের ক্যারিয়ার নিজের মতো করে সাজিয়ে সামনে আগাবেন। যদি আপনি বিবাহিত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে অন্য কারো সাথে প্রতিযোগিতায় নামবেন না। মানুষের নেতিবাচক মন্তব্যে কখনোই কান দেবেন না। এভাবে চলতে পারলে আপনি মানসিক চাপ থেকে মুক্তি থাকবেন। আর এর ফলে শারীরিক অসুস্থ যত দ্রুত সম্ভব দূর হয়ে যাবে।

থাইরয়েড হরমোন বেড়ে যাওয়াঃ যদি থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায় তাহলে আপনার অতিরিক্ত গরম সৃষ্টি হতে পারে। এই হরমোনটি বেড়ে গেলে দুশ্চিন্তায় ভুগতে থাকবেন। আপনার বুক ধরফর করবে এবং অনেক বেশি ক্ষুধা বেড়ে যাবে এর ফলে আপনার ওজনও কমে যাবে এবং ঘুমের সমস্যাও দেখা দিবে। যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

নারীর ক্ষেত্রে আলাদা কিছু কারণঃ একজন নারীর মাসিক শুরু হওয়ার কিছুদিন আগে, গর্ভকালীন সময় এবং মাসিক পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কয়েক বছর আগে থেকে হঠাৎ করে অতিরিক্ত গরম অনুভব করতে পারেন।

ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ একজন উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ব্যবহৃত যে ওষুধগুলো রয়েছে সেগুলো হরমোন জাতীয় ওষুধ, এন্টিবায়োটিক এবং অন্য কিছু ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবেও অতিরিক্ত গরম অনুভব করার সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই অতিরিক্ত গরম হলে কখনোই স্বাভাবিকভাবে নেওয়া উচিত নয়। যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

ডায়াবেটিস এবং বয়স বৃদ্ধিঃ একজন মানুষের যদি বয়স বৃদ্ধি হয়ে যায় তখন তারা গরমে অনেক বেশি কষ্ট পান। এছাড়াও বিশেষ করে যাদের ডাইবেটিস নিয়ন্ত্রণে নেই তাদের অতিরিক্ত গরম রাখতে পারে। তবে এই সমস্যাগুলো যত দ্রুত সম্ভব সমাধান করার চেষ্টা করুন। তাহলে আপনার শরীর সবসময়য়ের জন্য সুস্থ থাকবে। আশা করি বিষয়টি বুঝাতে পেরেছি।

অতিরিক্ত ঘাম দূর করার ঘরোয়া উপায়

সাধারণত গরম হওয়ার কারণে সকল মানুষের গরম লাগবে এটাই স্বাভাবিক। এছাড়াও অনেকে শারীরিক ব্যায়াম করার ফলেও শরীর ঘেমে যেতে পারে। কিন্তু এই ঘামাটা যদি পরিমাণের চেয়ে বেশি হয় তাহলে আপনাকে বুঝে নিতে হবে সেটা অস্বাভাবিক কারণে হচ্ছে। একজন ব্যক্তির হাইপারহাইড্রোসিসের সমস্যার কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত পরিমাণে ঘাম হয়। তাই কিভাবে আপনি ঘরোয়া পদ্ধতিতে অতিরিক্ত ঘাম দূর করবেন সেই বিষয়ে নিচে জানিয়ে দেব। তাই আর্টিকেলের সাথেই থাকুন।

আসুন জেনে নেই অতিরিক্ত ঘাম নিয়ন্ত্রণের উপায়গুলো সম্পর্কেঃ

টমেটোর রসঃ টমেটোতে আছে অ্যাস্ট্রিনজেন্ট যা আপনার ঘাম গ্রন্থিকে সংকুচিত করতে সাহায্য করে। তাছাড়া এর যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টর উপাদান রয়েছে সেটা অতিরিক্ত ঘাম খেয়ে নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। যদি আপনি টানা এক সপ্তাহ প্রতিদিন এক কাপ করে রস খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের জন্য অনেক উপকার মিলবে। 

পরের সপ্তাহ থেকে আপনি একদিন পরপর তাজা টমেটো রস খেলে স্বাস্থ্যর জন্য উপকারী। তাছাড়াও অতিরিক্ত ঘাম হলে সেই স্থানগুলোতে টমেটোর রস ১০ থেকে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রেখে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করে নিলেই আপনার ঘাম দূর হয়ে যাবে। ঘাম নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত আপনি প্রতিদিন এভাবে করতে পারলে অবশ্যই উপকার পাবেন।

লেবু রসঃ লেবু একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা ঘাম থেকে তৈরি দুর্গন্ধ দূর করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। এক গ্লাস পানিতে পরিণত টাটকা লেবুর রস এবং হালকা একটু পানি মিশ্রণ করে কোন একটি তোয়ালে ভিজিয়ে সারা শরীর ভালোভাবে মুছে নিলে অতিরিক্ত গরম থেকে অনেকটাই আরাম মিলবে। এভাবে প্রতিদিন গোসলের আগে টাটকা লেবুর রস মিশ্রিত পানি শরীরে মুছে কিছুক্ষণ পর গোসল করলে আপনার অতিরিক্ত ঘাম আশা করি দূর হয়ে যাবে।

বেকিং সোডাঃ শরীরের অতিরিক্ত ঘাম দূর করতে অনেক বেশি সাহায্য করে ব্রেকিং সোডা। তাই আপনারা যারা অতিরিক্ত ঘাম দূর করতে চান তারা অবশ্যই ব্রেকিং সোডা ব্যবহার করতে পারেন। এটি ব্যবহার করার নিয়ম হল প্রথমে আপনাকে পরিমাণ মতো পানি নিতে হবে এবং এক টেবিল চামচ ব্রেকিং সোডা দিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। 
এরপরে সেই পেস্টের সাথে পছন্দমত ৩ থেকে ৪ ফোটা সুগন্ধি তেল মিশ্রণ করে যেসব জায়গায় বেশি ঘাম সেসব জায়গায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রেখে তারপর ধুয়ে ফেললে অনেক উপকার পাওয়া যাবে।

লাল চাঃ আপনার হয়তো অনেকেই কমবেশি চা খেয়ে থাকেন। কিন্তু এইটা অতিরিক্ত গরম কমাতে কতটা উপকারী সেটা কি জানেন? হয়তো অনেকেই জানেন না। চায়ে থাকা ট্যানিক এসিড অতিরিক্ত ঘাম দূর করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। অতিরিক্ত ঘাম দূর করার জন্য ৩ থেকে ৪ কাপ গরম পানিতে একটি টি-ব্যাগ ৫ থেকে ১০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে দিন। এরপর ওই পানিতে পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে গলা থেকে পা পর্যন্ত সম্পূর্ণ শরীর মুছে ফেলুন। তাহলে আপনার অতিরিক্ত ঘাম খুব সহজেই দূর হয়ে যাবে। আশা করি বিষয়টি সঠিকভাবে বুঝতে পেরেছেন।

অ্যাপল সাইডার ভিনিগারঃ অতিরিক্ত ঘাম নিয়ন্ত্রণের জন্য অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার বেশ কার্যকারী। এটি ব্যবহারের নিয়ম হল যেখানে আপনার অতিরিক্ত ঘাম হয়ে থাকে সেই জায়গাগুলো প্রথমে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর অ্যাপল সাইডার ভিনেগার নিয়ে সেই সকল স্থানে সারারাত লাগে রেখে দিতে হবে। এরপর সকালে ঘুম থেকে উঠে গোসল করে পাউডার লাগাতে হবে। 
এছাড়াও আপনি চাইলে অ্যাপল সাইডার ভিনেগার খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। এটি আপনার অতিরিক্ত ঘাম দূর করতে সাহায্য করবে। সেক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমে এক গ্লাস পানি এবং দুই টেবিল চামচ অ্যাপল সাইডার ভিনেগার নিতে হবে এবং তার সাথে দুই টেবিল চামচ মধু মিশ্রণ করে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে।

অতিরিক্ত ঘাম কোন রোগের লক্ষণ

আজকে আমিআলোচনা করব অতিরিক্ত ঘাম কোন রোগের লক্ষণ এই বিষয়ে। গরমকালীন সময়ে মানুষের শরীরে ঘাম হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই ঘাম অতিরিক্ত হলে সেটা অস্বাভাবিক হয়ে যায়। কিন্তু এর মধ্যে অনেকেই জানেন না অতিরিক্ত ঘাম হলে কোন ধরনের রোগ বা লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তাই অতিরিক্ত ঘামের লক্ষণটি যদি আপনি গুরুত্ব না দেন তাহলে আপনার অথবা আপনার পরিবারের অবশ্যই অনেক বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। তাই আসুন আর দেরি না করে বিষয়টি সঠিকভাবে জেনে নিন।

অতিরিক্ত ঘাম হলে যে সকল রোগের লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

  • হৃদরোগ
  • ব্রেন স্ট্রোক
  • রক্তে ইনফেকশন
  • ডায়াবেটিস
  • নিউরোলজিক্যাল সমস্যা
  • থাইরয়েড
  • টেনশন ও ভয়
হৃদরোগঃ যদি আপনার হার্টের সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা দেখা দিবে। ঘামের সঙ্গে অবসর্গ যেসব থাকতে পারে সেগুলো হল বুকে ব্যাথা বুক ধরফর বুকে চাপ অনুভব অজ্ঞান হয়ে যাওয়া শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি। যদি আপনার হার্টের গতি কমবেশি কিংবা হার্ট ব্লক থাকে তাহলে আপনার অতিরিক্ত ঘাম শুরু থেকে নির্গত হবে।

ব্রেন স্ট্রোকঃ হঠাৎ করে দেখবেন আপনার মাথা যন্ত্রণা শুরু হয়েছে, এছাড়াও একটু লক্ষ্য করলে দেখবেন শরীরে প্যারালাইসিসের মতো কিছু অনুভব করছেন এ সময় আপনার কয়েকদিন অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে।
রক্তে ইনফেকশনঃ যদি আপনার রক্তে ইনফেকশনের সমস্যা থাকে তাহলে আপনার শরীরকে প্রায় উত্তপ্ত করে তুলবে। এ সমস্যায় আপনার ব্লাড প্রেসার অনেক কমে যাবে আর এর ফলে হার্ট চাহিদা অনুযায়ী পরিমিত রক্ত বাম করতে ব্যর্থ হবে। আর এই ক্ষেত্রে রোগীর শরীর ঠান্ডা হয়ে প্রচন্ড ঘাম বের হতে শুরু করবে যা একটি মারাত্মক সমস্যা।

ডায়াবেটিসঃ একজন ডায়াবেটিস রোগীর অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। কারণ হঠাৎ করে একজন ডায়াবেটিস রোগীর ব্লাড সুগার কমে গেলে তাদের শরীর থেকে প্রচন্ড পরিমাণে ঘাম সৃষ্টি হয়। যা একটি বিপদজনক সমস্যা।

নিউরোলজিক্যাল সমস্যাঃ যদি একজন ব্যক্তির মাথায় টিউমার, খেজুরের মত কোনো নিউরোলজিক্যাল সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে সেই সমস্যার প্রাথমিক উপসর্গ হিসেবে অতিরিক্ত ঘাম সৃষ্টি হতে পারে। তাই যত দ্রুত সম্ভব সঠিক সময়ে অতিরিক্ত ঘামের কারণ খুঁজে বের করে দ্রুত চিকিৎসা করা প্রয়োজন। তা না হলে অনেক বড় ধরনের শারীরিক ক্ষতি দিকে চলে যাবে। 

থাইরয়েডঃ অনেক সময় থাইরয়েডের ভারসামতার কারণে অনেক বেশি ঘাম হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। বিশেষ করে বলেছেন একজন মানুষের শরীরে থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ বেশি হয়ে গেলে সেই রোগীর খিদে বেড়ে যায় এর ফলে ওজন কমতে থাকে এবং অতিরিক্ত মাত্রায় ঘাম সৃষ্টি হয়।

টেনশন ও ভয়ঃ একজন মানুষ অতিরিক্ত টেনশন এবং ভয় করলে সে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি ঘেমে যাবে। তবে এই সমস্যা যত দ্রুত সম্ভব ঠিক করতে হবে। কারণ ভয় ও টেনশন মানুষকে মৃত্যুর কোলে নিয়ে যেতে পারে। আশা করি বিষয়টা সঠিকভাবে বুঝতে পেরেছেন।

শীতল ঘাম হওয়া কোন রোগের লক্ষণ

একজন মানুষের গরম কালে ঘাম হওয়াটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু এর মধ্যে অনেক মানুষের দেখা গেছে শীতকালেও ঘেমে থাকেন। কিন্তু কেন ঘেমে যায় সেটা সম্পর্কে অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে। এই পরিস্থিতিতে আপনাকে যত সম্ভব চেষ্টা করতে হবে নিজেকে সতর্ক রাখার। শীতকাল যেমন ভালো ঠিক তেমনি খারাপ। এ সময় নানা ধরনের রোগ আপনার শরীরে বাসা বাঁধে। তাই এবার চলুন জেনে নিন শীতল ঘাম হওয়া কোন রোগের লক্ষণ।
শীতল ঘাম হওয়া কোন রোগের লক্ষণ বিস্তারিত জেনে নিন
ঝাল খেয়ে হতে পারেঃ অতিরিক্ত পরিমাণে কোন কিছু খাওয়ায় ভালো নয়। তাই অতিরিক্ত কখনো ঝাল খাওয়া উচিত নয় এতে করে ভালোর চেয়ে খারাপ অনেক বেশি হতে পারে। আপনি যখনই পরিমাণের চেয়ে বেশি ঝাল খাবেন তখন আপনার শরীর ঘেমে যেতে পারে তাই অবশ্যই এ বিষয়গুলো নিয়ে সতর্ক থাকুন।
হরমোন জনিত কারণে হতে পারেঃ প্রতিটা মানুষের হরমোন আলাদা। অনেক মানুষের শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোন শীতকাল সময়ে বেড়ে যায়। আর এর ফলে মানুষের শরীর থেকে বের হতে পারে অতিরিক্ত পরিমাণে ঘাম।

শরীরে বেশি ওজন থাকলেঃ একজন ব্যক্তির স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি ওজন বেড়ে গেলে শরীরের বেশ কিছু সমস্যা তৈরি হয়। যেমন- বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম করতে গেলে, হাঁটাচলা করতে গেলে বেশি ওজন মানুষের সমস্যা তৈরি হয়। আর এর ফলে শরীর থেকে ঘাম বের হয়।

ব্লাড প্রেশার বেড়ে গেলেঃ একজন ব্যক্তির ব্লাড প্রেসার বেড়ে গেলে তার শুরু থেকে এমনিতেই স্বাভাবিকের মত বের হয়। কিন্তু সেই শরীর থেকে অতিরিক্ত ঘাম বের হলে সেটা অনেক বিপদজনক হতে পারে। তাই এদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখা প্রয়োজন।

অতিরিক্ত মাথা ঘামার কারন কি

আজকে আমি আলোচনা করব অতিরিক্ত মাথা ঘামার কারন কি এই সম্পর্কে। অনেক মানুষের অতিরিক্ত ঘামের কারণে মুখ দিয়ে, চুলের গোড়া দিয়ে টপটপ করে ঘাম ঝরে। এ নিয়ে অনেক বিব্রতিকর পরিস্থিতিতে পড়েন তাঁরা। অতিরিক্ত ঘাম এর স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এটাকে বলা হয় হাইপার হাইড্রোসিস। অতিরিক্ত মাথা ঘামার অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। 

তবে অনেকের ক্ষেত্রে এ সমস্যাটি বংশানুক্রমিক হয়ে থাকে। কিন্তু এটি কখনো কখনো কোনো গুরুতর রোগের লক্ষণও হতে পারে। তাই এই সমস্যাটি উপেক্ষা করা উচিত নয়। একজন সুস্থ মানুষের শরীরে ঘামের প্রয়োজন রয়েছে কিন্তু অতিরিক্ত ঘাম কখনো স্বাভাবিক হতে পারে না এটি আপনার বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে। অতিরিক্ত ঘামার একটি অন্যতম কারণ হলো উদ্বেগ। 
যাকে ইংরেজিতে বলা হয় (concern). এই উদ্বেগ সমস্যাটি হওয়ার কারণে অনেকের প্রচন্ড আকারে মাথা ঘেমে যায় এবং হাতের তালু ঘেমে ঠান্ডা হয়ে যায়। তাই যে সকল মানুষের এই সমস্যা রয়েছে তাঁদের উদ্বেগ কমানোর ওষুধ বা সাইকোথেরাপি প্রয়োজন হতে পারে। এছাড়াও হাইপার থাইরয়েডিজম রোগের কারণে অধিক মাত্রায় ঘাম হয় এবং খুব গরম লাগে। 

তবে এই রোগের সঙ্গে অন্যান্য উপসর্গ রয়েছে যেমনঃ হঠাৎ করে মুখ কান লাল হয়ে যাওয়া, বুক ধরফর করা, ডায়রিয়া হওয়া, ওজন কমে যাওয়া, অতিরিক্ত মাত্রায় গরম লাগা সহ ইত্যাদি। শরীর থেকে ঘাম বের হওয়া একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। এটি আমাদের শরীরের নিঃসারক পদ্ধতির মধ্যে পড়ে। কিন্তু একই আবহাওয়া অন্যদের তুলনায় আপনার অতিরিক্ত মাত্রায় ঘাম বের হওয়া স্বাভাবিক কোনো প্রক্রিয়া নয়।

একজন মানুষের শরীরের যে অংশগুলোতে বেশি পরিমাণে ঘেমে যায় সেগুলো হল- পেটের দিকে, ঘাড়ের অংশ গুলোতে, বগলে, পিঠের দিকে, এ সমস্ত জায়গা থেকে সবচেয়ে বেশি ঘাম বের হয়। এছাড়াও শরীরের আরো যে জায়গাগুলো রয়েছে সে সকল জায়গাগুলোতেও অতিরিক্ত ঘেমে যায়। এটি হওয়ার একটাই কারণ হতে পারে সেটি হচ্ছে আপনার শরীরের হরমোন। 
যদি হরমোনের কোন সমস্যা থাকে তাহলে অতিরিক্ত ঘাম শরীর থেকে বের হয়। এর পাশাপাশি ডায়াবেটিস রোগীদের বিশেষ করে হঠাৎ করে প্রচন্ডভাবে মাথা ঘেমে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। এ সমস্যাটি স্নায়ুর সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। যদি আপনার জীবন যাপনে পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারেন তাহলে আশা করা যায় অতিরিক্ত ঘাম থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। যেমনঃ

  • তাই বেশি বেশি তেল মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলতে হবে।
  • অধিক মাত্রায় কফি পান বন্ধ করে দিতে হবে।
  • শরীরে এমন কাপড় পরিধান করতে হবে যে কাপড় গুলোর ভিতর দিয়ে বাতাস চলাচল করতে পারে। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
  • একবারে অনেক বেশি খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে খাবার খেতে হবে।
  • এমন জায়গায় কাজ করুন যেখানে আপনার ফ্যানের বাতাস লাগে। (হোক সেটা অফিস কিংবা বাড়ি)
  • গরমের সময় মুখে ভারি মেকাপ করবেন না।
  • প্রতিদিন পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করবেন।
  • আপনার শরীরের ঘাম মোছার জন্য পরিষ্কার রুমাল অথবা পাতলা কাপড় কাছে রাখুন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করার পর বা হাঁটার পর গোসল করবেন।
  • গরমে কোনরকম তেলাক্ত ক্রিম অথবা ফাউন্ডেশন লাগাবেন না। এতে করে আপনার সমস্যা হতে পারে।
উপরে উল্লেখিত যে পদ্ধতি গুলো দেওয়া হলো সেগুলো প্রতিদিন আপনার জীবন যাপনের মাধ্যমে করলে অবশ্যই অতিরিক্ত ঘাম থেকে মুক্তি পাবেন। যদি আপনার এ সমস্ত কাজ করার পর সমস্যা থেকেই যাই তাহলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। আশা করি অতিরিক্ত মাথা ঘামার কারন কি এই সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন।

বাচ্চাদের মাথা ঘামার কারণ

একটা শিশুর মাথা ঘামা নিয়ে অনেক মা-বাবা খুবই দুশ্চিন্তা করেন। সাধারণত ছোট শিশুদের অসুখ-বিসুখ হবে এটাই স্বাভাবিক। রাতের বেলা ঘুমানোর সময় শিশুদের মাথা ঘেমে যাওয়া হাত-পা ঘেমে যাওয়া এ সমস্যাগুলো অনেক বাচ্চারই দেখা যায়। কিন্তু অনেক মা-বাবা রয়েছে শিশুর মাথা ঘেমে গেলে খুব দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়ে যান তারা। 
কিন্তু বাচ্চাদের মাথা ঘামার কারণ সম্পর্কে অনেক মা-বাবার জানার ইচ্ছা থাকলেও সঠিকভাবে জানতে পারেন না। তাই চিন্তার কোন কারণ নেই অতিরিক্ত মাথা ঘামার কারন কি এর পাশাপাশি বাচ্চাদের মাথা খামার কারণ সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই আপনারা যারা এই আর্টিকেলটি দেখছেন তারা অবশ্যই মনোযোগ সহকারে সমস্ত বিষয়গুলো সঠিকভাবে পড়বেন। আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।

কেন শিশুদের মাথা ঘামেঃ

  • বাচ্চাদের রিকেটস রোগের জন্য ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দিলে মাথার ঘাম বেড়ে যেতে পারে।
  • ক্যাফেইনযুক্ত যে খাবারগুলো রয়েছে সেগুলো বাচ্চারা খেলে মাথার ঘাম বেড়ে যেতে পারে।
  • শিশুর পড়নে অতিরিক্ত মোটা কাপড় পরিধান করালে শিশুর মাথার ঘাম বেড়ে যেতে পারে।
  • জন্মগতভাবে হৃদরোগের কারণে একটি বাচ্চার অতিরিক্ত মাথা ঘেমে যেতে পারে। তবে এই ক্ষেত্রে বাচ্চার অন্য কোন লক্ষণ থাকতে পারে। তাই যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
  • থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত হরমোন তৈরির কারণে বাচ্চাদের মাথার ঘাম বেড়ে যেতে পারে। এই ক্ষেত্রে বাচ্চাদের ওজন কমে যাওয়া বুক ধরফর ইত্যাদির সমস্যা হয়ে থাকে।
  • কিছু কিছু ওষুধ যেমনঃ পেথিডিন, থাইরোক্সিন, অ্যামফিটামিন এই ওষুধগুলো বাচ্চার মা খেলে সেই মায়ের বাচ্চা দুধ খেলে মাথা ঘেমে যেতে পারে।
  • শিশুদের ইডিওপ্যাথিক হাইপারহাইড্রোসিস নামক রোগের কারণেও অতিরিক্ত মাথা ঘেমে যেতে পারে।
উপরে উল্লেখিত যে কারণগুলো দেয়া হয়েছে সেগুলো আপনার বাচ্চার মাথা ঘামার কারণ। যদি আপনি বাচ্চার মাথা ঘাম নিয়ে চিন্তিত হন, তাহলে অবশ্যই একজন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন। বাচ্চাকে হালকা পোশাক পরান, ঘর ঠান্ডা রাখুন এবং প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়ান। নিশ্চিত করুন যে বাচ্চা সঠিক পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি পাচ্ছে কিনা।

বিঃদ্রঃ: আর্টিকেলটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

লেখকের শেষ কথা | অতিরিক্ত মাথা ঘামার কারন কি

(আসসালামু আলাইকুম) প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আশা করি অতিরিক্ত মাথা ঘামার কারন কি এবং বাচ্চাদের মাথা ঘামার কারণ এই সম্পর্কে আশা করি সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন। আপনারা যদি আর্টিকেলটি পড়ে একটুও উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই আপনারা বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এই আর্টিকেলটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করলে আপনার বন্ধুরা সহ আরও অনেকেই জানতে পারবে।
তাই আর দেরি না করে আপনার বন্ধুদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করুন। এই রকম আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার কোনো মতামত জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে সেটা জানিয়ে যাবেন। (ধন্যবাদ)

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪