কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে বিস্তারিত জেনে নিন
কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে এই সম্পর্কে আপনার যদি জানা না
থাকে। তাহলে আজকের এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। বাংলাদেশে এমন অনেক মানুষ রয়েছে
যাদের হাত পা জ্বালা করে। কিন্তু কোন ভিটামিনের অভাবে জ্বালা পোড়া করে সেই
সম্পর্কে জানেন না। তাই আপনারা যারা জানেন না তাদের কাছে আমার অনুরোধ রইলো
আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আপনারা যদি আর্টিকেল শেষ পর্যন্ত পড়তে পারেন তাহলে বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারবেন
যা আপনার জন্য অনেক কাজে দিবে। যেমন- শরীর জ্বালা পোড়ার কারন ও প্রতিকার, হাত
পা জ্বালা পোড়ার ঘরোয়া চিকিৎসা, শরীর জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তির দোয়া,
ডায়াবেটিস রোগীর পা জ্বালাপোড়া, এই সকল বিষয়ে জানতে পারবেন।
ভূমিকা
বর্তমান সময়ে মানুষের একটি সাধারণ সমস্যা সেটি হচ্ছে হাত পা জ্বালাপোড়া করা।
বিশেষ করে রাতের সময় হাত-পা জ্বালা অনেক বেশি করে। তবে কোন ভিটামিনের অভাবে এই
সমস্যাগুলো হয় এটা অনেকেই জানেন না। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলে যে বিষয়টি
নিয়ে আলোচনা করব সেটি হয়তো আপনার জন্য অনেক উপকারে আসতে পারে। সেটি হচ্ছে কোন
ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালাপোড়া করে এবং শরীর জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তির
দোয়া সম্পর্কে। এছাড়াও এই আর্টিকেলে আরো অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা
করেছি যা আপনার হাত-পা ও শরীর জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করবে।
তাহলে আসুন আর দেরি না করে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে
পড়ুন।
হাত পা জ্বালা পোড়ার ঘরোয়া চিকিৎসা
হাত-পা জ্বালাপোড়া একটি সাধারণ সমস্যা, যার পেছনে নানা কারণ থাকতে পারে। যদিও
ঘরোয়া কিছু উপায় দিয়ে কিছুটা উপশম পাওয়া যেতে পারে, তবে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার
ক্ষেত্রে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ অত্যন্ত জরুরী। তাই আজকে আমি হাত পা জ্বালা
পোড়ার ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিতও আলোচনা করব। তাই আপনারা সবাই
আর্টিকেলের সাথেই থাকুন।
হয়তো অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে কেন হাত-পা জ্বালাপোড়া হয়? দেখুন বিভিন্ন
সমস্যার কারণে একটা মানুষের হাত পা জ্বালাপোড়া হতে পারে যেমন কিছু ওষুধের
পার্শ্ব প্রতিকার কারণে অথবা বিভিন্ন ভিটামিনের ঘাটতির অভাবে ইত্যাদির কারণে
স্নায়ুর ক্ষতি ঘটিয়ে এই সমস্যাটি সৃষ্টি হয়। এছাড়াও হৃদরোগ, রক্তনালীর রোগ,
ইত্যাদির কারণে রক্ত সঞ্চালনে বাধা দিয়ে জ্বালাপোড়া অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে
তাই যত দ্রুত সম্ভব ঘরোয়া কিছু উপায়ে এটি ঠিক করা প্রয়োজন আসুন সে উপায় গুলো
জেনে নিন।
- যদি আপনার হাত পা জ্বালাপোড়া করে সেক্ষেত্রে যেটা করবেন একটি ঠান্ডা পানির বোতল অথবা আইস প্যাক জ্বালাপোড়া স্থানে লাগিয়ে রাখতে পারেন এতে করে অনেকটা উপশম পাওয়া যেতে পারে।
- এছাড়াও আপনার হাত-পা জ্বালাপোড়া করলে বেশি বেশি পানি পান করুন। গোসল কিংবা হাত মুখ ধোয়ার ক্ষেত্রে গরম পানি অথবা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা বন্ধ করুন। ধূমপান ও মদ এড়িয়ে চলুন এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
- এছাড়াও আপনি চাইলে গরম পানিতে এপসম সল্ট মিশিয়ে হাত-পা ভিজিয়ে রাখলে জ্বালাপোড়া কমতে পারে। তাই চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
- অ্যালোভেরা জেলের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য আপনার হাত-পা জ্বালাপোড়া কমাতে অনেক বেশি সাহায্য করতে পারে। তাই এটিও অন্যান্যের পাশাপাশি ব্যবহার করতে পারেন।
- হাত-পা জ্বালাপোড়া করলে জ্বালাপোড়া স্থানে ঠান্ডা দই, ঘন দই পানি, ঘন দই ও মধু মিশিয়ে তৈরি মিশ্রণ, তেল মিশিয়ে মিশ্রণ ইত্যাদি জ্বালাপোড়া স্থানের দিয়ে রাখলে সামান্য উপকারিতা দিতে পারে।
- এছাড়াও হাত-পা জ্বালাপোড়া করলে সম্পূর্ণ বিশ্রাম গ্রহণ করা উচিত। এতে করে অনেকটা আরাম পাওয়া যায়।
উপরে উল্লেখিত যে পদ্ধতিগুলো বলা হয়েছে সেগুলো হাত পা জ্বালাপোড়া দূর করার
ঘরোয়া উপায়। এগুলো করার পরও যদি আপনার জ্বালাপোড়া করতে থাকে তাহলে যত দ্রুত
সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন। এটি আপনার জন্য অনেক ভালো একটি পদ্ধতি বলে
আশা করি।
ডায়াবেটিস রোগীর পা জ্বালাপোড়া
ডায়াবেটিস রোগীদের পা জ্বালাপোড়ার কারণ তাদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন না করা। যদি
ডায়াবেটিস রোগীরা খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে পারে তাহলে অবশ্যই তাদের পাওয়ার
জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তি পাবে। এছাড়াও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধের যে মাত্রা
রয়েছে সেটা পাল্টাপাল্টি করতে হবে এবং নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে যাতে করে রক্ত
চলাচল ভালো থাকে।
একটা ডায়াবেটিস রোগীর যদি রক্ত চলাচল ভালোভাবে না থাকে তাহলে পা জ্বালা পোড়া
শুরু হতে পারে। বা জ্বালাপোড়া কোন রোগ নয় বরং রোগের লক্ষণ। সাধারণত স্নায়ু
ক্ষতিগ্রস্ত হলে হলে পা জ্বালার অনুভূতি দেখা দেয়। এই সমস্যাটি ডায়াবেটিসসহ আরো
অনেক ধরনের রোগের কারণে হতে পারে। শতকরা ৬০ থেকে ৭০ ভাগ ডাইবেটিস রোগী রক্তের
উচ্চমাত্রার শর্করা থাকার কারণে জটিলতায় আক্রান্ত হচ্ছে। এই সমস্যাকে ডায়াবেটিক
নিউরোপ্যাথি বলা হয়।
শুরুতেই পা অনেক ঝিনঝিন করে এবং অনুভূতি শক্তিটা কমে যায়। অনেকে আবার বলেন যে
পায়ের পাতা বা তলা মরিচের মতো জ্বলে যায়। আবার অনেক সময় দেখা যায় সামান্য
একটু স্পষ্ট করলে বিভিন্ন ধরনের অনুভূতি হয়। যখন আপনার প্রান্তীয় স্নায়ু
ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন এরা মস্তিষ্কে বারবার ব্যথার একটা অনুভূতি সৃষ্টি করে।
যার ফলে কোনরকম ক্ষত না থাকলেও অনুভূতির কারণে অনেক বেশি জ্বালা কিংবা ব্যথা পায়।
অনেক সময় দেখা যায় পায়ের উপর কাঁথা কাপড় পর্যন্ত রাখলে পায়ের জ্বালা সহ্য
করতে পারে না। রাতে ঘুমানোর ক্ষেত্রে পা কাঁথা থেকে বের করে রাখতে হয়। এই
সমস্যাগুলো যখন পা জ্বালা পোড়া করে ঠিক তখন হয়ে থাকে।
তবে ডায়াবেটিস ছাড়াও আরও যেসব কারণে নিউরোপ্যাথি হয় এর মধ্যে, থাইরয়েড, ক্রনিক
কিডনি রোগ, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন বি১২, থায়ামিন, লিভারের অসুখসহ আরো নানা হরমোন
জনিত রোগ অন্যতম। এছাড়াও এইডস, অ্যালকোহল সেবন, ভারী ধাতু দূষণসহ আরো বিভিন্ন
কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে প্রান্তীয় স্নায়ু।
ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসাঃ
যদি ডায়াবেটিস রোগীদের এরকম সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে সবার প্রথমে যে বিষয়টির উপর
নজর দিতে হবে সেটি হচ্ছে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের দিকে। এছাড়াও
খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধের মাত্রা
পরিবর্তন করতে হবে। এছাড়াও ধূমপান, তামাক, অ্যালকোহল সেবন, মদপান ও জর্দাসহ
যতগুলো ক্ষতিকারক দ্রব্য রয়েছে সেগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
ফলিক এসিড, ভিটামিনের ১২ সহ বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
বিশেষ করে টাটকা শাকসবজি ও ফলমূল রাখলে খুবই উপকারী হবে। ক্ষতিগ্রস্ত স্নায়ু
সমস্যা দূর করার জন্যডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে। প্রতিদিন
সকালে ঘুম থেকে উঠে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে যাতে করে রক্ত চলাচল অনেক ভালো
থাকে। পাশাপাশি পায়ের যত্ন নিতে হবে। এ সমস্ত কাজগুলো করতে পারলে আপনার পা
জ্বালা পোড়া আশা করি দূর হয়ে যাবে।
কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে
আজকে আমি আলোচনা করব কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে এই বিষয়ে। অনেক সময় দেখা যায় একটা মানুষের হাত-পা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি গরম হয়ে
যায়। এরপর হঠাৎ করে শুরু হয় জ্বালাপোড়া। এরকম সমস্যার সম্মুখীন হাজার হাজার
মানুষ প্রতিদিন হচ্ছে। তবে এমন সমস্যা শরীরের বিশেষ ধরনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে জানা
যায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন আপনার শরীর যদি তিনটি ভিটামিনের অভাব হয় তাহলে আপনার
হাত-পা প্রায় সময় জ্বালাপোড়া করবে।
চিকিৎসকরা বলেন এই সমস্যার সমাধান পেতে চাইলে আপনাকে লাইফ স্টাইল ও ডায়েটে
পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে। বর্তমান সময়ে হাত-পা জ্বালাপোড়ার সমস্যাটি আরো বৃদ্ধি
হচ্ছে যার কারণে এটি যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সঠিকভাবে সমাধান করা
প্রয়োজন। হাত-পা জ্বালাপোড়ার সমস্যার জন্য যে তিনটি ভিটামিনের অভাব রয়েছে
সেগুলো হলো-
ভিটামিন বি ৬ঃ যদি আপনার ভিটামিন বি ৬ এর অভাব হয় তাহলে আপনার
পেলেগ্রা রোগ হতে পারে। আর এই রোগ হলে আপনার হাত-পা জ্বালাপোড়া অন্যতম একটি কারণ
হতে পারে। তাই শরীরে কখনো ভিটামিন বি ৬-এর অভাব রাখবেন না।
ভিটামিন ডিঃ ভিটামিন ডি শরীরের ক্যালসিয়ামের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ
রাখতে সাহায্য করে। যদি আপনার কোন কারণে শরীর থেকে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি এখা দেয়
তাহলে আপনার অস্টিওম্যালাসিয়া রোগ হতে পারে। আর ঠিক এই কারণেই আপনার হাত-পা
জ্বালাপোড়া করতে পারে। তাই শরীরে কখনো ভিটামিন ডি এর ঘাটতি রাখবেন না। আশা করি
বিষয়টি বুঝাতে পেরেছি।
ভিটামিন ডি ১২ঃ একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে একটা মানুষ শরীরে ভিটামিন
বি ১২ এর ঘাটতি রাখলে সে ব্যক্তির পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথিক সমস্যা সৃষ্টি হতে
পারে। ঠিক এই সমস্যার কারণে সেই ব্যক্তির হাত পা জ্বালাপোড়া শুরু করতে পারে। তাই
শরীরে কখনো ভিটামিন ডি ১২ এর ঘাটতি রাখা উচিত নয়।
সমস্যার সমাধানঃ
হাত-পা জ্বালাপোড়া করলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনাকে পর্যাপ্ত
পরিমাণ পানি পান করতে হবে। এছাড়াও হাত পা জ্বালাপোড়া করলে সেখানে ঠান্ডা পানি
অনেকক্ষণ পর্যন্ত দিয়ে রাখুন যতক্ষণ না হাত-পা জ্বালাপোড়া কমছে। এছাড়া আপনি
চাইলে ডায়েটে টক জাতীয় ফল বাড়িয়ে নিতে পারেন এতে করে আপনার হাত-পা
জ্বালাপোড়া করা থেকে মুক্তি পাবেন।
এছাড়াও গোসলে কিংবা হাত মুখ ধোয়ার ক্ষেত্রে কখনোই গরম পানি কিংবা কুসুম পানি
ব্যবহার করবেন না। যদি পারেন তাহলে ফ্রিজ থেকে বরফ বের করে জ্বালাপোড়া স্থানে
কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখতে পারেন। এতে করে আপনার হাত-পা জ্বালাপোড়া অনেকটা কমে আসতে
পারে। আশা করি কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে সেই সম্পর্কে
সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন।
শরীর জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তির দোয়া
বর্তমান সময়ে অনেক মানুষের শরীরে জ্বালা যন্ত্রণা হয়ে থাকে। অনেকে ওষুধ খেয়ে
সমস্যার সমাধান করতে চান আবার অনেকেই আল্লাহ তায়ালা দোয়া পড়ে ভালো হতে চান।
কিন্তু কিভাবে আপনি সে দোয়াটি পড়বেন এবং শরীরের জ্বালা যন্ত্রণা ও পরা
নিরাময়ের জন্য কি কি আমল করতে হবে তা আজকের এই আর্টিকেলের অংশটুকুতে জানিয়ে
দেয়া হবে।
তাই আপনারা যারা শরীর জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তির দোয়া সম্পর্কে জানেন না তারা অবশ্যই এই আর্টিকেলের
অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়বেন। কারণ আপনি অথবা আপনার পরিবারের হয়তো কারো শরীরে
জ্বালার সম্মুখীন হতে পারে। তাই আসুন আর দেরি না করে দোয়া ও আমল জেনে নিন।
**দোয়াটি পড়ার আগে সবাই মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে হবে।
১) সূরা তাকবির পড়ে যমযমের পানি উপর ফুঁক দিয়ে রোগীকে পান করাবেন। ইনশাআল্লাহ
অনেক উপকার পাবে।
২) একশত একবার নিম্নোক্ত আয়াতগুলো পড়ে পানির উপর ফুঁক দিয়ে ৪১ দিন পর্যন্ত পান
করবে। ইনশাআল্লাহ সুস্থ হয়ে যাবে।
দোয়াটি হলোঃ অন্না-যি‘আ-তি র্গাক্বঁও, অন্না-শিত্বোয়া-তি নাশ্ত্বোয়াঁও,
অস্সা-বিহা-তি সাব্হান্, ফাস্সা-বিক্ব-তি সাব্ক্বান্, ফাল্মুদাব্বির-তি আম্র।
(সূরা নাযিয়াতঃ আয়াত নং ১-৫)
শরীর জ্বালা পোড়ার কারন ও প্রতিকার
অনেক মানুষেরা সবচেয়ে বেশি যে সমস্যায় ভোগেন সেটি হল হাত-পায়ে অথবা শরীরে
জ্বালাপোড়া করা। এ সমস্যাটি কম বেশি অনেক মানুষেরই হয়ে থাকে। বিশেষ করে রাতে
ঘুমানোর সময় হঠাৎ করে পায়ে প্রচণ্ড জ্বালা অনুভব করে। শুধু যে রাতে জ্বালাপোড়া
হয় তা নয় এটি অন্যান্য সময়ও হয়ে থাকে। এই সমস্যাটি হওয়ার কারণে অনেক মানুষ
খুব অস্বস্তিকর এবং কষ্টদায়ক এর মধ্যে থাকে।
বিশেষ করে নারীদের শরীর আগুনের মত গরম অনুভুতি হয় এবং রাতের বেলায় ঘাম হওয়া ও
দুশ্চিন্তা হওয়া ঘুম না হওয়া এ সমস্যাটি সাধারণভাবে হয়ে থাকে। তবে এই
সমস্যাটিও ওয়েস্ট্রোজেন হরমোনের অভাবে হয়। এটি মানুষের মস্তিষ্কের সাথে সম্পর্ক।
সাধারণত তাপমাত্রা পরিবর্তন হলে শরীর সেটির সাথে খাপ খেয়ে নেয়।
কিন্তু যখন ওয়েস্ট্রোজেন হরমোনটি কমে যায় তখন মানুষের শরীরের তাপমাত্রা দুর্বল
হয়ে যায় যার ফলে মানুষের মস্তিষ্ক মনে করে শরীরের তাপমাত্রা অনেক বেশি গরম
লাগছে। ওয়েস্ট্রোজেন হরমোনটি মানুষের মেজাজের ওপর প্রভাব ফেলে এই হরমোনটি কমে
গেলে অনেক দুশ্চিন্তা বেড়ে যায় তাছাড়া অনেক কারণে হতে পারে যেমন-
- যদি একজন মানুষের কিডনি ও থাইরয়েডের সমস্যা থাকে তাহলে তার এ সমস্যাটি হতে পারে।
- একজন মানুষের শরীরে ভিটামিন বি ও ভিটামিন এক এর অভাব হলে এটি হতে পারে।
- রক্ত চলাচলের সমস্যা থাকলে।
- অতিরিক্ত মানসিক চাপ অথবা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা।
- মদ্যপান ও রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস ইত্যাদি রোগ থাকলে হতে পারে।
- ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে ও পায়ে জ্বালাপোড়া হতে পারে।
- বিষন্নতা থেকে মানুষের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ জ্বালাপোড়া করে আবার মাথা জ্বালাপোড়া করে কখনো কখনো আবার সারা শরীর জ্বালাপোড়া করে।
- যদি আপনি একজন গর্ভবতী নারী হন তাহলে এটা আপনার কোলেস্টাসিসের কারণেও হতে পারে। তাই জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তি পেতে ওষুধের উপর কখনো নির্ভর করবেন না বিভিন্ন প্রাকৃতিক বস্তু ব্যবহার করে মুক্তি পেতে পারেন।
বর্তমানে এখন একটি সাধারণ সমস্যা বললে বলে মানুষের হাত ও পায়ের জ্বালাপোড়া। এটি
থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনারা বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করেন। আসুন কয়েকটি উপায়
আপনাদের সামনে আলোচনা করি।
যদি আপনার হাত ও পা জ্বালাপোড়া করে তাহলে রাতে ঘুমানোর আগে গোসল করুন। গোসলের
সময় অবশ্যই মনে রাখবেন কোনভাবেই যেন পানি গরম না হয় কারণ পানি গরম হলে শরীর
থেকে প্রাকৃতিক তেল ধুয়ে যেতে পারে যার ফলে স্ক্রিন-ডাই হয়ে যেতে পারে। আবার
দীর্ঘ সময় গোসল না করা ভালো। দীর্ঘ সময় গোসল করলে আপনার ত্বক ড্রাই হয়ে যাওয়া
সম্ভাবনা থাকে। এর ফলে আপনার হাতে পায়ে বা শরীরে জ্বালাপোড়া বেড়ে যাওয়ার
সম্ভাবনা থাকে।
ময়শ্চারাইজার ব্যাবহার করুনঃ যখন আপনার অনেক বেশি জ্বালাপোড়া কিংবা
চুলকানি হবে এগুলো প্রশমিত করতে হলে আপনাকে ওয়েল বেজ লোশন ব্যবহার ব্যবহার করতে
হবে। এই লোশনটি ব্যবহার করলে আপনার ত্বক অনেক সফট থাকবে এবং স্কিনের সেলস গুলো
রক্ষা করবে। বর্তমানে আপনার নিকটস্থ বাজারে একটি ফার্মেসির খোঁজ করলে দেখবেন
দোকানে হাত ও পা জ্বালাপোড়া এবং চুলকানি প্রশমিত করার জন্য অনেক লোশন পাওয়া
যায়। সেখান থেকে লোশনটি কিনে নিয়ে এসে রাতে ঘুমানোর আগে অথবা গোসলের পর ভেজা
শরীরের রসুন ব্যবহার করুন। এতে করে অনেক আরাম পাবেন।
টক ফল খানঃ প্রতিদিন অল্প পরিমাণ হলেও টক ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ টপ
ফল শরীরের এসিড মুক্ত রাখে। এটি প্রতিদিন পানিতে মিশে এক ঘন্টা পর পর খাওয়ার
অভ্যাস করুন এতে করে শরীরের জন্য অনেক উপকার হবে। এছাড়াও প্রতিদিন 50 গ্রাম
আঙ্গুর খেলেও শরীরের জ্বালা কমবে।
প্রচুর পানি পান করুনঃ অনেক সময় একটু লক্ষ্য করলে দেখা যায় শরীরে পানি
শূন্যতা দেখা দিলে শরীর জ্বালা শুরু হয়। তাই সাধারণত শরীরে পানি শূন্যতা কখনোই
করা উচিত নয়। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন। এতে করে আপনার হাত-পা ও শরীর
জ্বালাপোড়া অনেক অংশে কমে যাবে। আশা করি শরীর জ্বালা পোড়ার কারন ও প্রতিকার
সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
লেখকের শেষ কথা | কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে
(আসসালামু আলাইকুম) প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আশা করি কোন ভিটামিনের
অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে এবং শরীর জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তির দোয়া এই
সম্পর্কে আশা করি সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন। আপনারা যদি আর্টিকেলটি পড়ে একটুও
উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই আপনারা বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এই
আর্টিকেলটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করলে আপনার বন্ধুরা সহ আরও অনেকেই জানতে পারবে।
তাই আর দেরি না করে আপনার বন্ধুদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করুন। এই রকম আরো
আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার
কোনো মতামত জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে সেটা জানিয়ে যাবেন। (ধন্যবাদ)
এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url