চুলের গোড়া শক্ত ও মোটা করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
চুলের গোড়া শক্ত ও মোটা করার উপায় সম্পর্কে আপনার যদি না জানা থাকে। তাহলে
আজকের এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। কম বেশি সকল মানুষেরা চুলের সমস্যায় ভোগেন।
তাই এই সমস্যাটি সমাধানের জন্য আজকের এই আর্টিকেল। আজকে আমি চুলের সমস্যায়
সমাধান নিয়ে আলোচনা করবো। তাই আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ রইল আর্টিকেলটি মনোযোগ
সহকারে পড়ুন।
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন। তাহলে মহিলাদের চুল পড়া
বন্ধ করার ঘরোয়া উপায়, অতিরিক্ত চুল পড়া কিসের লক্ষণ, অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ
করার উপায় , চুল পড়া বন্ধ করার ঔষধ, চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম, এই সকল
বিষয়ে সঠিকভাবে জেনে যাবেন।
ভূমিকা
মানুষের শরীরের সৌন্দর্যের একটি অংশ হচ্ছে চুল। এই চুল অল্প বয়সে ঝরে গেলে
অনেকেরই খারাপ লাগে। তাই এই সমস্যা যাদের হয়েছে একমাত্র তারাই জানে এই সমস্যাটি
কতটুকু বিভ্রান্তিকর। বর্তমান জেনারেশনে যুবক ভাইদের এই সমস্যাটি বেশি হয়। তারা
বিভিন্নভাবে চুলে রাসায়নিক রং কিংবা বিভিন্ন কালার ব্যবহার করে চুল নষ্ট করে
ফেলে। যার কারণে চুল অল্প বয়সেই ঝরে যায়। তবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আজকের
এই আর্টিকেল। আজকে আমরা এই আর্টিকেলে আলোচনা করব চুলের গোড়া শক্ত ও মোটা করার
উপায় এবং মহিলাদের চুল পড়া বন্ধ করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। তাই আপনারা যারা
এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানেন না তারা অবশ্যই এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আশা করি আপনি যে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তা হইত এই আর্টিকেলের মধ্যেই
দেওয়া আছে। আসুন তাহলে আর দেরি না করে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন।
অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
বর্তমান সময়ে অনেক মানুষেরই চুল পড়ে যায়। বিশেষ করে ছেলেদের চুল পড়ে মাথা টাক
পড়ে যায় যার ফলে অনেক ছেলে যুবক বয়সে অনেক আফসোস করে। তাই এই চুল পড়া বন্ধ
করার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক উপায় রয়েছে যা আপনি ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল
পাবেন। বর্তমান সময়ে অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ করার উপায় অনেকেই খুঁজে থাকেন। তাই
আজকে আমি কিছু টিপস নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আসুন আর দেরি না করে জেনে
নিন।
গরম তেল ম্যাসেজঃ চুল পড়া বন্ধ করার জন্য সবচেয়ে কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
হচ্ছে গরম তেল দিয়ে আপনার মাথার ত্বক সুন্দর করে মালিশ করা। অনেকে হয়তো এ
পদ্ধতি সম্পর্কে জানেন না। এটি করার জন্য আপনাকে প্রথমে বাদাম কিংবা নারকেলের তেল
সুন্দর করে হালকা কুসুম গরম করে নিতে হবে। তারপর মাথার ত্বকে সুন্দর করে মালিশ
করতে হবে। এভাবে আপনি করতে থাকলে আপনার চুলের অনেক শক্তি বৃদ্ধি করবে এবং চুল
পড়া রোধ করবে।
নারকেল তেলঃ প্রাচীনকাল থেকেই আমরা সকলেই জেনে আসছি যে নারকেল তেল চুলের
জন্য অনেক কার্যকারী। নারকেল তেল চুলে দিলে অনেক উপাকার পাওয়া যায়। এতে রয়েছে
লরিক এসিড যা এক ধরনের ফ্যাটি এসিড। এটি চুলে ব্যবহার করলে আপনার প্রোটিনের ঘাটতি
কমাবে। এছাড়াও গবেষণা দেখা গেছে যে নারকেল তেল ব্যবহার করলে চুলের ফলিকল এবং
মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য অনেক বেশি ভালো থাকে। তাই চুল পড়া বন্ধ করতে অবশ্যই
নারকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন।
লেবু তেলঃ আপনি যদি ঘরোয়া ভাবে চুল পড়ার সমাধান খুঁজে থাকেন তাহলে লেবু
তেল ব্যবহার করতে পারেন। চুলের বৃদ্ধিতে অনেক বেশিকার্যকরী এই লেবু তেল। লেবুতে
রয়েছে একটি বায়োএকটিভ রাসায়নিক যা সিনাপিক অ্যাসিড নামে পরিচিত। এটা আপনার
চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এই লেবু তেল শ্যাম্পু করার ১৫ মিনিট আগে আপনার মাথার
চুলে সুন্দর করে মালিশ করে নিবেন। এছাড়াও আপনি চাইলে ক্যারিয়ার তেলে লেবুর
অপরিহার্য তেল পাতলা করতে পারেন এটি আপনার চুলের মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করতে
পারেন।
পেঁয়াজের রসঃ আমরা ছোটকাল থেকে শুনে এসেছি পেঁয়াজের রস চুলের জন্য অনেক
বেশি উপকারি। তবে এই কথাটি কতটুকু সত্য চলুন জেনে নিন। পেঁয়াজের রস চুলে এবং
মাথার ত্বকে ব্যবহার করলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়। তবে একটি বিষয় অবশ্যই
লক্ষ্য রাখবেন এটি ধোয়ার আগে ১৫ মিনিটের জন্য রেখে দিবেন।
ডিমঃ আপনার যদি অতিরিক্ত পরিমাণে চুল পড়ে তাহলে প্রতিদিন একটি করে ডিম
খেতে পারেন। তাহলে অনেক উপকার পাবেন। ডিমে রয়েছে ভিটামিন বি যা চুল ঘন ও লম্বা
করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। এছাড়াও ডিমে রয়েছে ভরপুর প্রোটিন, বায়োটিন যা
চুলের গোড়া শক্ত করতে সাহায্য করে।
বাদাম এবং বিভিন্ন বীজঃ আপনার যদি অতিরিক্ত পরিমাণে চুল পড়ে তাহলে আখরোট
চিয়া, তিসির বীজ, কাঠবাদাম এ ধরনের খাবারগুলো প্রতিদিন খেতে পারেন। এতে করে
আপনার চুল ঝরার পরিমাণ অনেক কমে যাবে। এই খাবারগুলোতে রয়েছে ভিটামিন বি ও
বায়োটিন যা চুল পড়া বন্ধ করে এবং চুল অনেক মসৃণ করতে সাহায্য করে।
অ্যালোভেরাঃ চুল পড়ার জন্য সবচেয়ে প্রচলিত ঘরোয়া প্রতিকার হচ্ছে
অ্যালোভেরা। এই অ্যালোভেরা মাথার ত্বককে অনেক প্রশমিত করে এবং চুলের খুশকি কমায়।
আপনি চাইলে এলোভেরার সাথে চুলের কন্ডিশনার এবং শ্যাম্পু ব্যবহার করার পাশাপাশি
এলোভেরা জেল প্রতিদিন মাথার ত্বকে লাগাতে পারেন এতে করে আপনার চুল অনেক শক্ত ও
মজবুত থাকবে।
মেথি বীজঃ চুল পড়া রোধ করতে মেথি বীজ ব্যবহার করতে পারেন। এটা আপনার চুল
পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করবে। এটি ব্যবহারের নিয়ম প্রথমে মেথি বীজ পরিষ্কার
পানিতে সারারাত ভিজে রাখুন। এরপর সকালে ঘুম থেকে উঠে ভেজা মেথি পেস্টে ব্লেন্ড
করুন। আধা ঘন্টা পর সেই পেস্টটুকু আপনার চুলে ভালো করে লাগিয়ে রাখুন।
কারি পাতাঃ চুল পড়া রোধ করতে বেশ ভালো কার্যকারী এই কারি পাতা। এতে
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্ড্রঅক্সিডেন্ট যা চুল পড়া রোধ করে এবং চুল অনেক মজবুত
করতে সাহায্য করে। এটি ব্যবহারের নিয়ম তাজা কারি পাতা পেস্ট তৈরি করে নিবেন।
এরপর সেই পেস্টটুকু আপনি গোসল করার আগে ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত মাথার ত্বকে
লাগিয়ে রেখে দিবেন। তাহলে আপনার চুলের জন্য অনেক উপকার হবে।
চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম
অনেকেই রয়েছেন যারা চুল পড়া নিয়ে খুবই চিন্তার মধ্যে রয়েছেন। বিশেষ
করে যুবক বয়সী ছেলেরা এ সমস্যা বেশি ভুগেন। তাই আজকে আমি যে কয়েকটি তেলের নাম
বলবো এর মধ্যে আপনি যেকোনো একটি তেল ব্যবহার করে চুল পড়া বন্ধ করতে পারেন। আসুন
তাহলে কয়েকটি তেলের নাম জেনে নিন।
চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নামঃ
- নারিকেল তেল (coconut oil)
- অলিভ অয়েল (Olive oil)
- রোজমেরি অয়েল (Rosemary oil)
- অনিয়ন অয়েল (Onion oil)
- আমন্ড অয়েল (Almond oil)
- ভ্রিঙ্গরাজ অয়েল (Bhringraj oil)
- মাস্টার্ড অয়েল (Mustard oil)
- তিলের তেল (sesame oil)
- নিম অয়েল (Neem oil)
- ক্যাস্টর অয়েল (Castor oil)
উপরে যে কয়েকটি তেলের নাম দেওয়া হয়েছে এগুলোর মধ্যে আপনি যেকোনো একটি তেল
ব্যবহার করতে পারেন। আশা করি এই তেলগুলো ব্যবহারের ফলে আপনার চুল পড়া বন্ধ হবে
এবং চুল অনেক মজবুত হবে। তবে এখানে কিছু তেলের নাম দেওয়া হয়েছে যেগুলো হয়তো
বাংলাদেশে সরাসরি না পাওয়া যেতে পারে। তাই যেগুলো পাওয়া যায় সেগুলো আপনি
নিঃসন্দেহে ব্যবহার করতে পারেন। এটা আপনার চুলের জন্য অনেক উপকারে আসবে।
চুল পড়া বন্ধ করার ঔষধ
অনেকেই রয়েছে যারা চুল পড়া বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন ওষুধ ব্যবহার করে থাকেন।
কিন্তু বর্তমান সময়ে এমন অনেক ওষুধ রয়েছে যেগুলো ব্যবহারের ফলে আপনার চুল আরও
বেশি ঝরে যাবে। তাই যে ওষুধ ব্যবহার করবেন সেটা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ
অনুযায়ী ব্যবহার করা ভালো। চুল পড়ার চিকিৎসার জন্য মাত্র দুটি ওষুধ এখন
বর্তমানে প্রচলিত আছে।
১। একটি হচ্ছে মিনোক্সিডিল (Minoxidil) ওষুধ।
- এই ওষুধটি মহিলা ও পুরুষ দুজনেই ব্যবহার করতে পারবেন।
২। আর অন্যটি হচ্ছে ফিনাস্টেরাইড (Finasteride) ওষুধ।
- এই ওষুধটি শুধু পুরুষের জন্য।
আপনারা জানলে অবাক হবেন এই দুটি ওষুধের প্রতিটিরই কিছু না কিছু
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে।তাই এই ওষুধগুলো সবার ক্ষেত্রে সমান কার্যকর হয় না। তবে
মাথার টাক পড়ার সমস্যা নিয়ে অনেকেই ভুগে থাকেন। তবে বিজ্ঞানীরা বলেন যে চুল
পড়ার এমন কোন চিকিৎসা নেই যা সবার জন্য প্রযোজ্য। তাই চুলের সমস্যার জন্য অবশ্যই
সবার প্রথমে ডাক্তারের পরামর্শ করা প্রয়োজন।
অতিরিক্ত চুল পড়া কিসের লক্ষণ
আমরা সাধারণত জানি চুল ঝরে যাওয়াটা একটা স্বাভাবিক ব্যাপার। এটা আমরা
স্বাভাবিকভাবেই নিয়ে থাকি। কিন্তু তা যদি অতিরিক্ত হয় তাহলে দুশ্চিন্তার কারণ
হয়ে দাঁড়ায়। বর্তমান সময়ে যুবক ভাইদের অনেক বেশি চুল পড়ে যাই। যার কারণে
অনেকের কাছেই হাসির পাত্র হয়ে চলতে হয়। অতিরিক্ত চুল পড়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে
যেমন চুলের অযত্ন, অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করা, রং ও রাসায়নিক এর ব্যবহার, ঘন
ঘন স্টাইল পরিবর্তন সহ ইত্যাদি চুলের ক্ষতি করে।
এছাড়াও অনেকে আবার বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে অকালে চুল
হারায়। তবে শুধুই কি তাই? অতিরিক্ত চুল পড়া কিসের লক্ষণ এটা অনেকেই জানেন না।
কখনো অতিরিক্ত চুল পড়া হতে পারে জটিল কোন রোগের লক্ষণ। তাই অবশ্যই এগুলো জেনে
রাখা প্রয়োজন। চলুন তাহলে আর দেরি না করে রোগগুলো চিনে নিন।
হাইপোথাইরয়েডিজমঃ থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিষ্কৃত থাইরক্সিন হরমোন এর
ঘাটতি দেখা দিলে নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দেয় যেমন- ক্লান্তি, মানসিক অনিয়ম,
বিষণ্নতা, ওজন বাড়া,মাসিকের অনিয়ম, কাজে ধীর গতি, কোষ্ঠকাঠিন্য, পা ফোলা,
অতিরিক্ত চুল পড়া, চামড়া খসখসে ভাব ও নখের ভঙ্গুরতা।
হাইপার থাইরয়েডিজমঃ থাইরক্সিন হরমোনের বিভিন্ন সমস্যার কারণেও চুল ঝরতে
পারে। সঙ্গে বুক ধড়ফড় করা, হাতের তালু ঘামা, খিটখিটে ভাব, ওজন হ্রাস, অতিরিক্ত
গরম লাগা ও অস্থিরতা ইত্যাদি।
এসএলই বা লুপাসঃ এই রোগটি হলে মানুষের শরীরের নিজস্ব যে কোষ কলা থাকে
সেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেমন- গিরা ব্যথা, নাক ও গালে র্যাশ, জ্বর,মুখে ঘা, এবং
চুল পড়া।
রক্তশূন্যতাঃ অপুষ্টি, মাসিকের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে কিংবা
পরিপাকতন্ত্রে আলসারের দরুন রক্তক্ষরণের জন্য লৌহের ঘাটতিজনিত রক্তশূন্যতা দেখা
দিতে পারে। এতে করে অতিরিক্ত চুল পড়া, শরীর দুর্বলতা, মাথা ব্যাথা, ফ্যাটাসে
ভাব, অল্প পরিশ্রমে হাপিয়ে ওঠা, ক্লান্তি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়।
এলেপেসিয়া এরিয়েটাঃ যদি আপনার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা অস্বাভাবিক হয় তাহলে
আপনার চুলের গোড়া বা ফলিকল ধ্বংস হতে পারে। এছাড়াও শারীরিক ও মানসিক চাপ এ রোগ
বাড়িয়ে দিতে পারে। এ রোগের কারণে আপনার মাথার চামড়ার বিভিন্ন স্থান থেকে চুল
ঝরে যেতে পারে।
চুলের গোড়া শক্ত ও মোটা করার উপায়
অনেক মানুষ রয়েছে যাদের অকালে চুল ঝরে পড়ে গেছে। অল্প বয়সে টাক পড়ে গেছে। তবে
এটির কারণ হচ্ছে আপনি সঠিকভাবে চুলের যত্ন না নেওয়া। বর্তমান সময়ে চুল ঝরে
যাওয়া এত বেশি যে বলা বাহুল্য। এখন বিভিন্ন রাসায়নিক ব্যবহার করে চুলগুলো
অকালেই ঝরে যাচ্ছে। চুলের গোড়া শক্ত ও মোটা করার জন্য অনেকেই অনেক চেষ্টা
করেন।
কিছু কিছু মানুষ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে থাকেন। চুল হচ্ছে মানুষের সৌন্দর্যের
একটি অংশ। এই চুল পাতলা হয়ে গেলে অনেক খারাপ দেখায়। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলের
অংশটুকুতে চুলের গোড়া শক্ত ও মোটা করার উপায় সম্পর্কে সঠিক একটি তথ্য আপনাদের
সামনে উপস্থাপনা করব। যদি আপনারা আমার নিয়মে কাজ করে থাকেন তাহলে অবশ্যই চুলের
গোড়া শক্ত ও মোটা হবে ইনশাআল্লাহ।
চুলের গোড়া শক্ত ও মোটা করার উপায়ঃ
আমলকিঃ আমরা হয়তো অনেকেই আমলকি ফলটা চিনি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা এই
আমলকি চুলের জন্য কি উপকারে আসে। আমলকিতে রয়েছে ভিটামিন সি ও এমাইনো এসিড যা
চুলের গোড়া অনেক মজবুত করতে সাহায্য করে।
এটি ব্যবহারের নিয়মঃ প্রথমে ২ চামচ আমলকি গুড়া নিন। এরপর ১ চামচ মেথি
ভেজানো পানি ও ১ চামচ কেশুর পাতার রস নিন। এরপরে একটি পরিষ্কার কাচের বাটি নিন
এবং সেখানে ভালো করে এসব গুলো একসঙ্গে মিশে নিন। তারপর পেস্টটি তৈরি করা হয়ে
গেলে চুলের গোড়ায় ভালো করে মেখে ১ ঘন্টা পর্যন্ত রেখে দিন। এরপর পরিষ্কার পানি
দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
লেবুঃ আমরা সকলেই লেবু চিনি। লেবু চুলের জন্য কতটা উপকারী এটা অনেকেই
জানিনা। চুলের জন্য লেবু খুবই উপকারী। চুলের গোড়া মজবুত করতে অনেক বেশি
কার্যকারে এই লেবুর রস। এটি ব্যবহারের নিয়ম অনেকেই জানেন না। চলুন জেনে নিন।
এটি ব্যবহারের নিয়মঃ চুলে তেল দেওয়ার কয়েক মিনিট আগে তাতে লেবুর রস
ব্যবহার করুন। এরপর চুলের গোড়ায় গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে নিন। এক ঘন্টা
অপেক্ষা করার পর পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালো কোনো শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে
ফেলুন। এতে করে আপনার চুলের গোড়া অনেক শক্ত ও মোটা হবে। লেবুতে রয়েছে সাইট্রিক
এসিড ও ভিটামিন সি যা চুলের গোড়া শক্ত করতে অনেক বেশি সাহায্য করে।
পেঁয়াজের রসঃ আমরা কমবেশি সকলেই জানি অনেক প্রাচীনকাল থেকেই পেঁয়াজের রস
চুলের জন্য অনেক উপকারী চুলের গোড়া শক্ত ও মোটা করতে অনেক বেশি উপকারী এই
পেঁয়াজের রস। পেঁয়াজ রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা সালভারের
উপস্থিতি মাথার রক্ত সঞ্চালনের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যার ফলে চুলের
গোড়া অনেক শক্ত ও মোটা হয়।
এটি ব্যবহারের নিয়মঃ প্রথমে একটি মাঝারি সাইজের পেঁয়াজ নিন। এরপর
পেঁয়াজ থেকে রস বের করে নিন। এরপর রসুন বাটা ও একচামচ বাদাম বাটা একসঙ্গে মিশ্রণ
করে নিন। এরপর ভালোভাবে চুলের গোড়ায় ১৫ মিনিট পর্যন্ত লাগিয়ে রাখুন। এরপর
পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
মহিলাদের চুল পড়া বন্ধ করার ঘরোয়া উপায়
অতিরিক্ত টেনশন, প্রতিদিন অনিয়মিতভাবে ঘুমানো, পুষ্টির অভাব সহ আরো বিভিন্ন
কারণে চুল ঝরে। চুল পড়া বন্ধ করতে আপনাকে প্রতিদিন নিয়মিত ঘুমাতে হবে এবং সুষম
খাদ্য গ্রহণ করতে হবে ও নিয়মিত শরীরচর্চাও করতে হবে। এতে করে আপনার চুল পড়া
অনেকটাই কমে আসবে। এছাড়াও আপনি যা করতে পারেন-
- রাতে ঘুমানোর আগে চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত নারকেল তেল দিয়ে ম্যাসাজ করুন। এরপর সকালে ঘুম থেকে উঠে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। এতে করে আপনার চুল পড়া অনেকটাই কমে যাবে।
- এছাড়া এলোভেরার জেল চুলে ব্যবহার করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনাকে এলোভেরার জেল সুন্দর করে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এরপর সেই ব্লেন্ড করা অ্যালোভেরার জেল চুলে এক ঘন্টা পর্যন্ত লাগিয়ে রাখতে হবে। এরপর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে আপনার চুল পড়া দূর হয়ে যাবে পাশাপাশি মাথার ত্বকের চুলকানিও দূর হয়ে যাবে।
- আপনি চাইলে ডিমের কুসুম, অলিভ অয়েল এবং লেবুর রস একসঙ্গে মিশ্রণ করে তুলে ব্যবহার করতে পারেন। এটি আপনার চুলের জন্য অনেক বেশি উপকারী। সেক্ষেত্রে আপনাকে যেটা করতে হবে এই সম্পূর্ণ একসঙ্গে মিশ্রণ করে চলে ১ ঘন্টা লাগিয়ে রাখুন। এরপর পরিষ্কার পানি ও শ্যাম্পু দিয়ে চুল ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এটা আপনার চুল পড়া বন্ধ করবে এবং দ্রুত চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।
- আপনি চাইলে অলিভ অয়েল চুলে ব্যবহার করতে পারেন। অলিভ অয়েল সুন্দর করে চুলে লাগিয়ে রেখে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে শ্যাম্পু করে চুল ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
- আপনি চাইলে পেঁয়াজের রস চুলের গোড়ায় লাগিয়ে রাখতে পারেন। এটি চুলের জন্য খুবই উপকারী। সেক্ষেত্রে আপনাকে যেটা করতে হবে পেয়াজের রস চুলের গোড়ায় ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। এরপর ১৫ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এরপর পরিষ্কার পানি ও শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আশা করি মহিলাদের চুল পড়া বন্ধ করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
লেখকের শেষ কথা | চুলের গোড়া শক্ত ও মোটা করার উপায়
(আসসালামু আলাইকুম) প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আশা করি চুলের গোড়া
শক্ত ও মোটা করার উপায় এবং মহিলাদের চুল পড়া বন্ধ করার ঘরোয়া
উপায় সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন। আপনারা যদি আর্টিকেলটি পড়ে একটুও
উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই আপনারা বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
এই আর্টিকেলটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করলে আপনার বন্ধুরা সহ আরও অনেকেই জানতে
পারবে। তাই আর দেরি না করে আপনার বন্ধুদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করুন।
এই রকম আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। এই আর্টিকেলটি
পড়ে যদি আপনার কোনো মতামত জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে সেটা জানিয়ে
যাবেন। (ধন্যবাদ)
Etto sundor and gurutto purno totho amader k upohar deyar jonno onek onek thanks
thank you so much farjana.........