জন্ডিস হলে কি ডিম খাওয়া যাবে এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
আপনি কি জন্ডিস হলে কি ডিম খাওয়া যাবে সম্পর্কে জানতে চান? আপনার যদি এই বিষয়টি
সম্পর্কে জানা না থাকে তাহলে আজকের এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। অনেকেরই জন্ডিস
হয়। কিন্তু জন্ডিস হলে ডিম খাওয়া যাবে কিনা। তাই আজকে আমি এই সম্পর্কে সঠিকভাবে
জানানোর চেষ্টা করব। তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন। তাহলে জন্ডিস হলে কি ঔষধ
খাব, আখের গুড়ের অপকারিতা, জন্ডিস হলে কি কলা খাওয়া যাবে, জন্ডিস হলে কি
স্যালাইন খাওয়া যাবে, জন্ডিস হলে কি কি সমস্যা হয়, জন্ডিস হলে কি কি সমস্যা
হয়, এই সকল বিষয়ে সঠিক ধারণা পেয়ে যাবেন।
ভূমিকা
জন্ডিস এমন একটি সমস্যা এই সমস্যাটি মানুষের হলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে
হয়। তাই এই জন্ডিসের সমস্যা ঠিক করতে আপনাকে অবশ্যই সঠিকভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করতে
হবে। জন্ডিস হলে কি কি খাবার খেতে হবে এবং কি কি খাবার খাওয়া যাবেনা এই
বিষয়গুলো অনেকেই জানেন না। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলে জন্ডিস হলে কি ডিম খাওয়া
যাবে এবং জন্ডিস হলে কি খাবার খাওয়া উচিত এই সম্পর্কে সঠিক একটি ধারণা দেয়ার
চেষ্টা করব। তাই আপনারা যারা এই বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না তারা অবশ্যই এই
আর্টিকেল থেকে নিন। চলুন তাহলে আর দেরি না করে এই বিষয়গুলো সঠিকভাবে জেনে নিন।
জন্ডিস হলে কি স্যালাইন খাওয়া যাবে
প্রিয় বন্ধুরা আজকে আমি এই আর্টিকেলের অংশটুকুতে আলোচনা করব জন্ডিস হলে কি
স্যালাইন খাওয়া যাবে এই বিষয়ে। অনেকেই রয়েছে যারা এই বিষয়টি সম্পর্কে জানেন
না। তাই যারা জানেন না তারা আজকের এই আর্টিকেলের অংশটুকু থেকে জেনে নিতে পারেন।
চলুন তাহলে আর দেরি না করে এই বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে নিন।
জন্ডিস হলে কখনোই স্যালাইন খাওয়া যাবে না। কারণ স্যালাইন হচ্ছে শরীরের লবণ পানির
ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে। আর জন্ডিস হচ্ছে একটি হেপাটাইটিস রোগ। তাই এই রোগের
সমস্যায় অন্যান্য খাবার গ্রহণ করতে হবে। স্যালাইন খেলে সমস্যাটি আরো বেড়ে যেতে
পারে। তাই অবশ্যই জন্ডিস হলে স্যালাইন খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলতে হবে। আশা করি
সঠিক উত্তরটি আপনি খুব সহজেই জানতে পেরেছেন।
জন্ডিস হলে কি কি সমস্যা হয়
অনেকে রয়েছে যারা জন্ডিস হলে কি কি সমস্যা হয় এই বিষয়ে জানেন না। তাই যারা
জানেন না তারা আজকের এই আর্টিকেলের অংশটুকু থেকে জেনে নিতে পারেন। কারণ জন্ডিস
খুব মারাত্মক একটি রোগের লক্ষণ। আর এই রোগের লক্ষণ থেকে মুক্তি পেতে অবশ্যই
আপনাকে সঠিক উপায় অবলম্বন করতে হবে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে নিন।
- জন্ডিস হলে সাধারণত যে উপসর্গ গুলো দেখা যায় সেটা হচ্ছে চোখ ও প্রস্রাবের রং হলদে হয়ে যাওয়া। এই সমস্যাটি দেখা দিলে ভেবে নিবেন জন্ডিসের লক্ষণ।
- ত্বক ও মুখের ভেতরে হলুদ দেখালে জন্ডিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। আর এই সমস্যাটি খুবই মারাত্মক একটি সমস্যা।
- জন্ডিস হলে বমি বমি ভাব, খাবারের অরুচি, জ্বর জ্বর ভাব, পেট ব্যথা, ক্ষুধামান্দ্য ও অবসাদ, হতে পারে।
- এছাড়াও জন্ডিস হলে যে সমস্যাটি হয়ে থাকে সেটা হচ্ছে চুলকানি। কখনো কখনো চুলকানির মত সমস্যাও হতে পারে।
উপরে উল্লেখিত সমস্যাগুলো জন্ডিস হলে দেখা দেয় তাই যত দ্রুত সম্ভব এ সমস্যাগুলো
দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা অবশ্যই প্রয়োজন। আশা করি এই বিষয়টি বুঝে আপনি অনেক সতর্কতা অবলম্বন
করবেন। এবার আমরা জানবো জন্ডিস হলে কি ডিম খাওয়া যাবে এই সম্পর্কে।
জন্ডিস হলে কি ডিম খাওয়া যাবে
আজকে আমি এই আর্টিকেল এর অংশটুকুতে যে বিষয়টি সম্পর্কে আলোচনা করব সেটি হচ্ছে
জন্ডিস হলে কি ডিম খাওয়া যাবে এই সম্পর্কে। জন্ডিস একটি রোগের লক্ষণ। তবে এই
লক্ষণ ঠিক করার জন্য কিছু খাবার অবশ্যই আপনাকে নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে। তবে এই
জন্ডিস হওয়ার সময় আপনাকে সকল বিষয়গুলো জেনে তারপরে ডিম খেতে হবে। তাহলে চলুন
আজকে সেই সকল বিষয়গুলো জেনে নিন।
- জন্ডিস যাকে হলুদ জ্বরও বলা হয়। এই সমস্যাটি হলে চোখ ও প্রস্রাবের রং হলদে হয়ে যায়। এছাড়াও ত্বক ও মুখের ভেতরে হলুদ রঙ দেখা দেয়। তবে এই সমস্যাগুলো হওয়ার অবশ্যই কারণ রয়েছে এটি অতিরিক্ত বেলুরুবিন রক্তের জমা হওয়ার কারণে এই সমস্যাটি ঘটে।
- ডিম একটি পুষ্টিকর খাবার। এই ডিমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ভিটামিন ও খনিজ থাকে। তবে জন্ডিস রোগীদের জন্য ডিম খাওয়া যাবে কিনা এই বিষয়টি সম্পর্কে অবশ্যই জানা প্রয়োজন। তাই কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা এই আর্টিকেলের অংশটুকুতে বলা হবে যেগুলো জানলে আপনি বুঝতে পারবেন জন্ডিস হলে ডিম খাওয়া যাবে কিনা।
- জন্ডিসের ধরণ এবং তীব্রতার উপর নির্ভর করে ডিম খাওয়ার পরিমাণ এবং ধরণ পরিবর্তিত হতে পারে। তাই, জন্ডিসের সময় ডিম খাওয়ার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
- যে সকল রোগীদের উচ্চ উচ্চ বিলিরুবিনের মাত্রা রয়েছে তাদের ডিমের সাদা অংশ খাওয়া নিরাপদ। কারণ ডিমের সাদা অংশে চর্বির পরিমাণটা অনেক কম থাকে। তাই ডিমের সাদা অংশ খেতে বলা হয় জন্ডিস রোগীদের।
- ডিমের কুসুমে খুব বেশি পরিমাণে চর্বি থাকে। তাই জন্ডিস রোগীদের ডিমের কুসুম বাদ দিয়ে খেতে বলা হয়। জন্ডিস রোগীদের ক্ষেত্রে ডিমের কুসুম এড়িয়ে চলা উচিত।
জন্ডিসের সময় ডিম ছাড়াও অন্যান্য খাবার খাওয়া যেতে পারেঃ
শাকসবজিঃ শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার থাকে।
ফলঃ ফলেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার থাকে।
সবুজ পাতার শাকসবজিঃ সবুজ পাতার শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে লৌহ,
ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন থাকে।
ওটমিলঃ ওটমিল ফাইবারের একটি ভালো উৎস।
বাদামঃ বাদামে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ থাকে।
জন্ডিসের সময় এড়িয়ে চলা উচিত এমন কিছু খাবারঃ
চর্বিযুক্ত খাবারঃ চর্বিযুক্ত খাবার হজম করা কঠিন হতে পারে এবং লিভারের
উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
মাশলাযুক্ত খাবারঃ মাশলাযুক্ত খাবার পেটে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে।
জন্ডিস হলে কি খাবার খাওয়া উচিত?
আজকে আমরা এই আর্টিকেলের অংশটুকুতে জেনে নিবো জন্ডিস হলে কি খাবার খাওয়া উচিত এই বিষয়ে। জন্ডিস রোগীদের জন্য খাদ্যতালিকা তৈরি করার সময়, লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করা,
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেওয়া এই
তিনটি লক্ষ্য মাথায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
খাওয়া উচিত এমন খাবারঃ
শাকসবজিঃ পালং শাক, লাউ শাক, শসা, গাজর, বিট, মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়া
ইত্যাদি।
ফলঃ আপেল, পেঁপে, আনারস, কলা, লেবু, বাতাবি লেবু, জাম্বুরা, ডাবের পানি,
লেবুর শরবত, আখের রস।
সবুজ পাতার শাকসবজিঃ শালকপাতা, মেথি পাতা, ধনে পাতা, পুঁইশাক ইত্যাদি।
ডালঃ মসুর ডাল, মুগ ডাল, ছোলা ডাল ইত্যাদি।
মাছঃ রুই, কাতলা, বোয়াল, ইলিশ ইত্যাদি (চর্বি কম করে খেতে হবে)।
ভাত ও মাংসঃ সাদা ভাত, ওটমিল, মুরগির মাংস, খাসির মাংস (চর্বি কম করে খেতে
হবে)।
ডিমঃ (সাদা অংশ বেশি করে খেতে হবে)।
বাদামঃ কাজুবাদাম, পেস্তা বাদাম, চিনাবাদাম, দুধ ও দই মধু ইত্যাদি।
পানিঃ প্রচুর পরিমাণে পানি (দিনে ৩ থেকে ৪ লিটার) পান করা গুরুত্বপূর্ণ।
খাবার খাওয়ার সময় ছোট ছোট করে বারবার খাবার খাবেন। ভালো করে খাবার চিবিয়ে খাবেন।
খেয়াল রাখবেন খাবারে যেন তেল-মশলা বেশি না থাকে। বেশি থাকলে সমস্যা আরও বেড়ে যেতে
পারে। বাইরের যে খাবারগুলো রয়েছে সেগুলো এড়িয়ে চলুন। পর্যাপ্ত বিশ্রাম করুন এবং
নিয়মিত ব্যায়াম করুন। ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করুন।
মনে রাখবেনঃ
- এই তালিকাটি কেবলমাত্র একটি নির্দেশিকা। আপনার ডাক্তার বা পুষ্টিবিদের সাথে পরামর্শ করে একটি ব্যক্তিগতকৃত খাদ্যতালিকা তৈরি করা উচিত। জন্ডিসের ধরণ এবং তীব্রতার উপর নির্ভর করে খাদ্যতালিকা পরিবর্তিত হতে পারে। আপনার যদি কোনও অ্যালার্জি বা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে তবে সে সম্পর্কে আপনার ডাক্তারকে জানাবেন। আশা করি জন্ডিস হলে কি খাবার খাওয়া উচিত সেই বিষয়ে সঠিক একটি ধারণা দিতে সক্ষম হয়েছি।
জন্ডিস হলে কি কলা খাওয়া যাবে
হ্যাঁ, জন্ডিস হলে কলা খাওয়া যাবে। আসলে, জন্ডিস রোগীদের জন্য কলা একটি ভালো
ফল। কারণ কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬ এবং ফাইবার থাকে যা
জন্ডিসের রোগীদের জন্য উপকারী। পটাশিয়াম শরীর থেকে অতিরিক্ত তরল বের করে দিতে
সাহায্য করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। জন্ডিস রোগীদের প্রায়শই পেট
ফোলাভাব এবং রক্তচাপের সমস্যা হয়, তাই তাদের জন্য পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার
খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়াও ভিটামিন বি৬ লিভারের বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। ফাইবার
হজমশক্তি উন্নত করতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। জন্ডিস
রোগীদের প্রায়শই হজম সমস্যা হয়, তাই তাদের জন্য ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া
গুরুত্বপূর্ণ।
তবে, জন্ডিসের সময় কলা খাওয়ার সময় কিছু বিষয় মনে রাখা উচিতঃ
পাকা কলা খাবেনঃ কলা পাকা হলেই খাওয়া উচিত। কাঁচা কলা হজম করা কঠিন হতে
পারে।
মাঝারি পরিমাণে খাবেনঃ দিনে ২ থেকে ৩টি কলা খাওয়া যথেষ্ট। বেশি খেলে
পেট ফোলাভাব হতে পারে।
জন্ডিস হলে কি ঔষধ খাব
জন্ডিস হলে কি ঔষধ খেতে হবে সেটা অনেকেই জানেন না। যেহেতু জন্ডিস কোন রোগ নয়
তাই জন্ডিস হলে কি ওষুধ খাব সেটাও নির্ভর করে জন্ডিসের কারণ, ধরণ এবং তীব্রতার
উপর। তবে, জন্ডিস কোন রোগ নয় তাই এর কোন ওষুধও নেই। সুতরাং ৭ থেকে ৩০ দিনের
মধ্যে যদি বেলুরুবিনের পরিমাণ স্বাভাবিক হয়ে যায় তাহলে এমনিতেই জন্ডিস ঠিক
হয়ে যাবে। তবে এই সময় আপনাকে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম ও চিকিৎসা নিতে
হবে।
এই সময় কিছু ব্যথার ওষুধ খেতে পারেন যেমন প্যারাসিটামল, ঘুমের ওষুধ ও
অ্যাসপিরিন সহ ইত্যাদি। আপনাকে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে অপ্রয়োজনীয় ও
কবিরাজি ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তবে সবশেষে এক কথায় অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ
ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ওষুধই সেবন করা উচিত নয়। এতে করে হিতে বিপরীত
হওয়ার ঝুঁকিটা অনেক বেশি থাকে।
শেষ কথা | জন্ডিস হলে কি ডিম খাওয়া যাবে
প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আশা করি জন্ডিস হলে কি ডিম খাওয়া যাবে
এবং জন্ডিস হলে কি খাবার খাওয়া উচিত এই সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা দিতে
সক্ষম হয়েছি। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই
বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এই আর্টিকেলটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার
করলে আপনার বন্ধুরাও জানতে পারবে। তাই দেরি না করে আপনার বন্ধুদের সাথে
আর্টিকেলটি শেয়ার করুন।
এই রকম আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। এই আর্টিকেলটি
পড়ে যদি আপনার কোনো মতামত জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে সেটা
জানিয়ে যাবেন। (ধন্যবাদ) আসসালামু আলাইকুম।
এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url