আখের রস কখন খাওয়া উচিত - খালি পেটে আখের রস খেলে কি হয়
আখের রস কখন খাওয়া উচিত এই সম্পর্কে আপনার যদি না জানা থাকে। তাহলে আজকের এই
আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। অনেকেই আখের রস খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু আখের রস কখন
খেলে উপকার পাওয়া যাবে সেটা অনেকেই জানেন না। তাই আজকে আমি এই সম্পর্কে সঠিকভাবে
জানিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবো। তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন। তাহলে গর্ভাবস্থায় আখের রস
খাওয়ার সতর্কতা, গর্ভাবস্থায় আখের রসের উপকারিতা, খালি পেটে আখের রস খেলে কি
হয়, প্রতিদিন আখের রস খেলে কি হয়, আখের রস খাওয়ার নিয়ম, এই সকল বিষয়ে সঠিক
ধারণা পেয়ে যাবেন।
ভূমিকা
প্রিয় বন্ধুরা আপনারা অনেকেই রয়েছেন যারা আখের রস খেতে অনেক পছন্দ করেন। আখের
রস শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। আমরা সাধারণত যখন অনেক
বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়ি তখন আখের রস খেয়ে থাকি। কারণ আখের রস ক্লান্তি দূর করতে
সাহায্য করে। এছাড়াও এর পাশাপাশি আরও বিভিন্ন সমস্যা দূর করতেও এই আখের রস খুবই
সাহায্য করে। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলে আখের রস কখন খাওয়া উচিত এবং খালি পেটে
আখের রস খেলে কি হয় এই সম্পর্কে সঠিক একটি তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করব। তাই আপনারা
যারা এই সম্পর্কে সঠিকভাবে জানেন না তারা আজকের এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিতে
পারেন। এই আর্টিকেলে যে বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়েছে সেটা যদি আপনি জানতে পারেন
তাহলে আশা করি অনেক উপকৃত হবেন। তো চলুন প্রিয় বন্ধুরা আর দেরি না করে এ
বিষয়গুলো সঠিকভাবে জেনে নিন।
প্রতিদিন আখের রস খেলে কি হয়
আজকে আমরা আলোচনা করব প্রতিদিন আখের রস খেলে কি হয় এই বিষয়ে। অনেকেই রয়েছে
যারা আখের রস খেতে পছন্দ করেন কিন্তু অনেকেই জানেন না প্রতিদিন এটি খেলে কি কি
উপকার হয়। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলে এই বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
তাই আপনারা যারা এই বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না তারা আশা করি এই আর্টিকেল থেকে
জেনে নিতে পারবেন। আপনারা যদি এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে পারেন তাহলে আশা
করি অনেক উপকৃত হবেন। তো চলুন আর দেরি না করে এই বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে
নিন।
প্রতিদিন আখের রস খেলে ক্লান্তি দূর হয় এবং পরিবেশের দূষণের হাত থেকে বাঁচা
যায়। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী নারীরা আখের রস খেতে পারেন এটি খুবই উপকারী।
যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তারাও খেতে পারেন। তবে পরিমাণ এর চেয়ে একটু কম
খাবেন কারণ আখের রসে চিনির পরিমাণটা বেশি থাকে আর ডায়াবেটিস রোগীরা পরিমাণের
চেয়ে অতিরিক্ত খেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে। এই আখের রস কিডনির কার্যক্ষমতা
বৃদ্ধি করতে অনেক বেশি সাহায্য করে।
এছাড়াও হজম শক্তি উন্নতি করে, লিভারের সমস্যা দূর করতেও অনেক উপকারী এই আখের রস।
এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, থিয়ামিন,
ম্যাগনেসিয়াম, উপকারি অ্যামাইনো অ্যাসিড, জিঙ্ক ও রাইবোফ্লেবিন রয়েছে। এই
সমস্ত কিছু শরীরে প্রবেশ করার ফলে শরীরের তেমন কোন ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
শারীরিক সুস্থতার জন্য এই উপাদানগুলো খুবই উপকারী। তবে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর
করতে অনেক বেশি সাহায্য করে এই আখের রস। চলুন এবার সেগুলো জেনে নিন।
গরমে ক্লান্তি দূর করেঃ আখের রস খেলে গরমের ক্লান্তি দূর করতে অনেক
সাহায্য করে। এছাড়াও ডিহাইড্রেশন রোধ করতেও সহায়তা করে।
শরীরের এনার্জি বাড়ায়ঃ আমাদের শরীরের শক্তির প্রাথমিক উৎস হচ্ছে চিনি যা
গ্লুকোজ নামে পরিচিত। সাধারণত আখের রসে চিনি ফ্রুক্টোজ এবং গ্লুকোজে রয়েছে যা
শরীরের এনার্জি বাড়াতে অনেক বেশি সাহায্য করে।
দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো থাকেঃ আখ চিবিয়ে খেতে পারলে দাঁতের স্বাস্থ্য
ভালো থাকে। এছাড়াও এটি শরীরের হাড় ও দাঁত মজবুত রাখতে অনেক বেশি সাহায্য করে।
হজমের উন্নতি করেঃ আখের রসে ফাইবার থাকে যা হজমশক্তি উন্নত করতে এবং
কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
লিভার ও জন্ডিসের সমস্যা দূর করেঃ আখের রস খেলে লিভারের সমস্যা দূর হয় এবং
জন্ডিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ আখের রসে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
গর্ভবতী মায়েদের জন্যঃ একজন গর্ভবতী মা যদি আখের রস খায় তাহলে তার
বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে বাচ্চার শারীরিক উন্নতি করতেও সাহায্য
করবে। তাই একজন গর্ভবতী মায়েদের নিয়মিত পরিমাণ মত আখের রস খাওয়া প্রয়োজন।
বয়সের ছাপ কমায়ঃ আখের রস খেলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং
ফ্লেবোনয়েডের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আর এর ফলে ত্বক এবং শরীরের ভেতরে
থাকা ক্ষতিকর টক্সিক শরীর থেকে বের করে শরীর অনেক ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং
পাশাপাশি ত্বকের বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে।
খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়ঃ অনেকেই রয়েছে যাদের খারাপ কোলেস্টেরলের
কারণে বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন। তবে চিন্তার কোন কারণ নেই নিয়মিত আখের রস খেতে
পারলে অনেক উপকারী মিলবে। এই আখের রসে থাকা কিছু উপাদান খারাপ কোলেস্টেরলের
মাত্রা কমাতে অনেক বেশি সাহায্য করে। সেই সাথে হাটের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও
সহায়তা করে।
প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া দূর করেঃ যাদের প্রস্রাব করার সময় অনেক
জ্বালাপোড়া হয় তারা প্রতিদিন পানিজাতীয় খাবার কিংবা আখের রস খেতে পারেন। এটি
আপনার প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া দূর করে এবং কিডনি ভালো রাখে।
আখের রস খাওয়ার নিয়ম
প্রিয় বন্ধুরা আজকে আমি এই আর্টিকেলের অংশটুকুতে আখের রস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনা করব অনেকেই রয়েছেন যারা আখের রস খেতে পছন্দ করেন তবে কি নিয়মে
খেলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে সেটা অনেকেই জানেন না তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলের
অংশটুকুতে সঠিকভাবে জানিয়ে দেয়ার চেষ্টা করব তাই আপনারা যারা জানেন না তারা
আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন চলুন তাহলে দেরি না করে জেনে নিন।
আখের রস খাওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে যেমনঃ
পরিমাণঃ
- প্রতিদিন ১ থেকে ২ গ্লাস আখের রস খাওয়া যথেষ্ট এর বেশি খেলে পেট ফাঁপা, পাতলা পায়খানা, ওজন বৃদ্ধি সহ ইত্যাদির সমস্যা হতে পারে। তাই পরিমাণ এর চেয়ে বেশি না খাওয়াই ভালো। ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া উচিত।
সময়ঃ
- আপনি যদি খাবারের আগে আখের রস খেতে পারেন তাহলে অনেক উপকার পাবেন। খাবারের সাথে খেলে পেট ফাঁপার সমস্যা হতে পারে। তবে সবচেয়ে ভালো সময় হচ্ছে সকাল বেলা খালি পেটে খাওয়া। সকাল বেলা খালি পেটে খেলে শরীরে আখের রসের পুষ্টি উপাদান ভালোভাবে শোষিত হয়।
তবে মনে রাখবেন, আখের রস ঠান্ডা করে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে করে আপনার শরীরে
ক্লান্তি দূর হবে এবং অনেক উপকার হবে। বাজার থেকে কেনার সময় অবশ্যই আপনাকে
পরিষ্কার ও টাটকা আখের রস কিনতে হবে। তবে আপনি যদি ঘরে তৈরি করতে পারেন তাহলে আরো
ভালো। তবে ঠান্ডা লাগা কাশি ইত্যাদির সমস্যা থাকলে আখের রস খাওয়া এড়িয়ে চলা
উচিত। এছাড়াও গর্ভবতী মহিলা ও শিশুদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আখের রস
খাওয়া উচিত। ডায়রিয়া হলে আখের রস খাওয়া বন্ধ করতে হবে। আশা করি বিষয়টি বুঝতে
পেরেছেন।
আখের রস কখন খাওয়া উচিত
অনেকেই রয়েছে যারা আখের রস খেতে পছন্দ করেন। তবে কখন খাওয়া উচিত সেটা অনেকেই
জানেন না। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলের অংশটুকুতে আখের রস কখন খাওয়া উচিত এই
বিষয়ে সঠিক একটি তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করব। তাই আপনারা যারা এই বিষয়টি সম্পর্কে
জানেন না তারা আজকের এই আর্টিকেলের অংশটুকু থেকে এই বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নিতে
পারেন। তো চলুন আর দেরি না করে এই বিষয়টি সম্পর্কে সঠিক একটি তথ্য নিন।
যখন আপনার বিভিন্ন ধরনের শরীরের সমস্যা দেখা দিবে ঠিক তখন আপনি আখের রস খেতে
পারেন। এছাড়া অনেক সময় দেখা যায় প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া সহ শরীরে অতিরিক্ত
ক্লান্তি গরমে ছটফট করা সহ ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। এই সময় খুব দ্রুত ১ থেকে ২
গ্লাস আখের রস খেতে পারলে এই সমস্যাগুলো থেকে অনেক আরাম পাওয়া যাবে।
সকালে খালি পেটে আখের রস খেলে শরীরকে দ্রুত শক্তি দিতে এবং রক্তের শর্করা মাত্র
নিয়ন্ত্রণ রাখতে অনেক বেশি সাহায্য করে। তাই আপনারা যারা আখের রস বিভিন্ন সময়ে
খেয়ে থাকেন তারা অবশ্যই সকালে খেতে পারেন। এটি সকালে খেলে খুবই উপকারী। এছাড়াও
গরমের দিনে ডিহাইড্রেশন রোধ করতে এবং শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে আখের
রস।
এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম হাইবার প্রোটিন কার্বোহাইডেট এবং পটাশিয়াম
রয়েছে এই সমস্ত কিছু শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। আখের রস খেলে
জন্ডিসের সমস্যা দূর করে পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা ও দূর করে। তাই যারা এখনো
আখের রস খেতে অপছন্দ করেন তারা আজ থেকেই খেতে পারেন। আশা করি আখের রস কখন খাওয়া
উচিত সেটা আপনি সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন।
খালি পেটে আখের রস খেলে কি হয়
আজকে আমরা আলোচনা করব খালি পেটে আখের রস খেলে কি হয় এই সম্পর্কে। তীব্র গরমের
মধ্যে অনেকেই অনেক ক্লান্ত হয়ে পড়ে। বিভিন্ন কাজ কর্মের ক্ষেত্রে এই তীব্র
রোধ সহ্য করা খুবই কষ্টকর। তাই খালি পেটে আখের রস খেলে এই সমস্যাগুলো দূর হয়ে
যায়। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলে খালি পেটে আখের রস খেলে কি হয় এই সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই আপনারা যারা এই বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না তারা
আজকের এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিতে পারেন। চলুন তাহলে আর দেরি না করে এই বিষয়টি
সম্পর্কে জেনে নিন।
- প্রতিদিন আপনি যদি খালি পেটে আখের রস খেতে পারেন তাহলে আপনার দুর্বলভাব অনেকটা কমে যাবে।
- খালি পেটে আখের রস খেতে পারলে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়। পাশাপাশি শরীরে এনার্জি নিয়ে আসতেও সাহায্য করে।
- নিয়মিত খালি পেটে আখের রস খেতে পারলে শরীরের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ থাকে এবং বাড়তি ওজন কমাতে অনেক বেশি সাহায্য করে।
- এই আখের রস দামে সস্তা হলেও এর উপকারিতা অনেক বেশি। এটি খালি পেটে খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- প্রতিদিন সকালে খালি পেটে আখের রস খেলে মুখের দাগ কমে। তাই যাদের মুখে দাগ রয়েছে তারা আখের রস খেতে পারেন।
- আপনার যদি বদহজমের সমস্যা থাকে তাহলে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে আখের রস খেতে পারেন এটি খেলে আপনার বদহজমের সমস্যা দূর হয়ে যাবে। পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যাও দূর হবে।
এছাড়াও এর বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে। তাই আপনারা যারা খালি পেটে আখের রস খেতে
অপছন্দ করেন তারা আজকের এই বিষয়টুকু থেকে অবশ্যই জানতে পেরেছেন যে খালি পেটে
আখের রস খেলে কি কি উপকারিতা হয়। তাই নিয়মিত খালি পেটে পরিমাণ মতো আখের রস
খেতে পারলে আপনার শরীর স্বাস্থ্য খুবই ভালো থাকবে আশা করি বিষয়টি ভালো হবে।
গর্ভাবস্থায় আখের রসের উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় আখের রস অনেক উপকারী। আখের রসে যে উপকারিতা রয়েছে সেটা আপনার ও
আপনার শিশুর জন্য খুবই দরকারি। আখের রসের ভিটামিন এ, ভিটামিন বি-১, ভিটামিন
বি-২, ভিটামিন বি-৩, বি-৫, বি৬ ও ভিটামিন সি রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে
ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রন রয়েছে যা স্ট্রেস, ক্লান্তি ও পরিবেশ
দূষণের হাত থেকে বাঁচাতে আখের রস পান করা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য খুবই
দরকার।
আমরা বর্তমানে যে প্রকৃতি বা সমাজে বাস করি সেখানে পরিবেশ দূষণ অনেক বেশি হয়ে
থাকে। বিশেষ করে শহরে গর্ভবতী মায়েদের জন্য আখের রস খাওয়া খুবই দরকার। আখের রস
একজন মায়ের মর্নিং সিকনেস অর্থাৎ সকালে অসুস্থতা মোকাবেলা করতে সহায়তা করে।
আখের রস পান করলে মর্নিং সিকনেস থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সকালে অসুস্থতা লক্ষণ
গুলো কাটিয়ে উঠতে আপনি কয়েক ফোঁটা আদার রসের সাথেও আখের রস মিশ্রণ করে খেতে
পারেন।
গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য খুবই সাধারণ সমস্যা। গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য
আপনাকে অনেক বেশি যন্ত্রণায় ফেলতে পারেন। তাই এই সময় আখের রস পান করলে
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দিতে পারে। তাছাড়া প্রেগনেন্সিতে আখের রস পান করলে
পেটের বিভিন্ন সংক্রমণ ও পেটের ব্যথা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। পাশাপাশি গ্যাস
এসিডিটির সমস্যা একেবারেই কম হয়। নানা ধরনের সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াই করার
জন্য গর্ভবতী মায়েদের শক্তি প্রদান করে থাকে।
প্রেগনেন্সি ডায়াটে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ অন্তর্ভুক্ত করা খুবই প্রয়োজন। আখের
রস পান করা কেবলমাত্র পুষ্টি সরবরাহই করবে না আপনাকে পাশাপাশি এর
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আপনার শরীরে ব্যাকটেরিয়া ছত্রাক ও ভাইরাল সংক্রমণের হাত
থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে। আখের রস যদি আপনি দাঁত দিয়ে চিবিয়ে খেতে পারেন
তাহলে গর্ভাবস্থার দাতের সাথে উন্নতি ঘটবে। গর্ভবতী নারীদের বিভিন্ন স্বাস্থ্য
সমস্যার মধ্যে অন্যতম হলো দাঁতের সমস্যা।
আখের রসে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা প্রেগনেন্সির সময় দাঁতের
স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রেগনেন্সির সময় দাঁতের
স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ও দাঁতের সমস্যা কমাতে আখের রস খেতে পারেন। পাশাপাশি আখের
রস খেলে আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ হবে যা আপনার শিশুর হাড় গঠনের
জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আখের রস লিভার ঠিক রাখতে সাহায্য করে। লিভারের
সঠিকভাবে কাজ করার জন্য সঠিক পরিমাণে বিলিরুবিনের প্রয়োজন।
আর নিয়মিত আখের রস খেলে বিলিরুবিনের মাত্রা ঠিক থাকে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বাড়ে, গর্ভাবস্থায় ক্লান্তি ও অসুস্থতা বোধ দূরে থাকে। আখের রস পান করলে আপনি
যেমন সুস্থ থাকবেন ঠিক তেমনি সুস্থ থাকবেন আপনার শিশুটিও। পাশাপাশি জন্মের পর
অনেক শিশুদেরই জন্ডিস হওয়ার মত সমস্যা দেখা যায়। নিয়মিত যে সমস্ত গর্ভবতী
নারীরা আখের রস পান করে থাকেন তাদের শিশুদের জন্মের পরে জন্ডিস হওয়ার মতো
সমস্যা দেখা যায় না।
কারণ আখের রস বিলিরুবিনের ওপরের স্তর সঠিক রাখতে সাহায্য করে থাকে। গর্ভবতী
মহিলাদের ঠান্ডা লাগা ও কাশি খুবই সাধারণ সমস্যা। আপনি যদি এই সমস্যা থেকে
মুক্তি পেতে চান তাহলে আখের রস পান করতে পারেন। এর জন্য আপনি কখনোই ফ্রিজে রাখা
আখের রস খাবেন না। সবসময় চেষ্টা করবেন টাটকা আখের রস খেতে। গর্ভবতী নারীরা
আজেবাজে অতিরিক্ত ক্যালরি বা শর্করাযুক্ত খাবার না খেয়ে যদি আখের রসের মতো
পুষ্টিকর শর্করাযুক্ত খাবার খান তাহলে আপনাদের ওজনটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
পাশাপাশি আপনারা পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি পাবেন। চিনি জাতীয় খাবার খেলে আমাদের
ওজন বাড়ে, তবে সে অনুযায়ী আপনি যদি দৈনিক ১ গ্লাস করে আখের রস খান তাহলে
আপনার চিনি খাওয়ার ইচ্ছেটাও পূরণ হবে আর ওজনটাও নিয়ন্ত্রণ থাকবে। আখের মধ্যে
পলিফেনল (Polyphenols) নামক উপাদান রয়েছে। যা বিপাকের গতি বাড়িয়ে তুলতে
সহায়তা করে এবং আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকে। তাই আখের রস খাওয়ার ফলে আপনার হজম
ভালো হয়। আখের রস গর্ভবতী নারীদের হরমোনের ইন ব্যালেন্স দূর করতে সহায়তা করে।
যার ফলে আপনার যখন তখন ক্লান্তি, দুর্বলতা, মাথা ব্যথা, ঘাড় ব্যথা বা শরীরের
সমস্যা হলে তা দূর হয়ে যায়।
গর্ভাবস্থায় আখের রস খাওয়ার সতর্কতা
এবারে বলছি গর্ভাবস্থায় আখের রস খাওয়ার কিছু সতর্কতা সম্পর্কে। গর্ভাবস্থায়
সবসময় এমন কিছু স্বাস্থ্যবিধি আপনাকে মেনে চলতে হবে যা আপনার সন্তানের জন্য ও
আপনার জন্য ভালো। নিশ্চিত করুন যে আপনি কোন জায়গা থেকে আখের রস কিনছেন। আখের
রস অবশ্যই স্বাস্থ্যকর হতে হবে তাই রাস্তায় বিক্রেতাদের কাছ থেকে আখের রস কখনই
কিনবেন না। কারণ এতে আপনার ও আপনার সন্তানের জন্য বিষক্রিয়া ও সংক্রমনের
সৃষ্টি করতে পারে।
সবচেয়ে ভালো হয় আপনি উন্নত মানের আখ কিনে নিবেন। যার মধ্যে কোন রোগ নেই এবং
লাল দাগ মুক্ত। এটি ভালোভাবে বাসায় এনে ধুয়ে পরিষ্কার করে এটিকে জুসারের
মাধ্যমে রস বের করে পান করুন। যারা দাঁত দিয়ে চিবিয়ে আখের রস খেতে পারছেন তারা
দাত দিয়ে চিবিয়ে আখের রস খাবেন। আখের রস গ্রহণের সময় আপনাকে খেয়াল রাখতে
হবে আপনার গর্ভস্থ কালীন ডায়াবেটিস আছে কিনা।
আপনার গর্ভস্থ কালীন ডায়াবেটিস থাকলে আখের রস খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের
পরামর্শ নিতে হবে। কারণ এ রসের যেহেতু চিনির পরিমাণ বেশি তাই প্রয়োজনের চেয়ে
বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেললে নানারূপ স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। দৈনিক আপনি
১ গ্লাসের বেশি আখের রস খাবেন না। সেটি আপনি দুটি ভারী খাবার খাওয়ার মাঝখানে
খেতে পারেন। বিশেষ করে খেয়াল রাখবেন বাইরে থেকে কেনা বা ভ্যানে বিক্রি করা
আখের রস কখনোই খাবেন না।
আখের রসের স্বাদ ও পুষ্টিমাণ বাড়াতে এর মধ্যে সামান্য পরিমাণে লেবুর অথবা আদার
রস মিশ্রিত করতে পারেন। গর্ভাবস্থায় আখের রস আপনার জন্য স্বাস্থ্যকর এবং
প্রচুর উপকারী। তবে এর অর্থ এই নয় যে আপনি এটিকে অনেক বেশি পরিমাণে পান করতে
পারবেন। আপনার গর্ভাবস্থায় ডায়েটে সুস্বাদু ও সতেজ পানীয় যুক্ত করার জন্য
ডক্টর আপনাকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আর সেখানে জুস হিসাবে আপনি আখের রস রাখতে
পারেন। যাদের গর্ভস্থ কালীন মারাত্মক রকমের স্বাস্থ্য জটিলতা আছে তারা আখের রস
খাওয়ার পূর্বে বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করে নিবেন।
শেষ কথা | আখের রস কখন খাওয়া উচিত
প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আশা করি আখের রস কখন খাওয়া উচিত এবং
খালি পেটে আখের রস খেলে কি হয় এই সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা দিতে সক্ষম
হয়েছি। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের
সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এই আর্টিকেলটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করলে আপনার
বন্ধুরাও জানতে পারবে। তাই দেরি না করে আপনার বন্ধুদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার
করুন।
এই রকম আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। এই আর্টিকেলটি
পড়ে যদি আপনার কোনো মতামত জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে সেটা
জানিয়ে যাবেন। (ধন্যবাদ) আসসালামু আলাইকুম।
এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url