বার্তা কক্ষ কি - সহ-সম্পাদক কি ও দায়িত্ব কি কি জেনে নিন

বার্তা কক্ষ কি এবং সহ-সম্পাদক কি ও দায়িত্ব কি কি এই সম্পর্কে আপনার যদি না জানা থাকে। তাহলে আজকের এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। অনেকেই এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে চাই। কিন্তু সঠিক তথ্য অনেকেই জানতে পারে না। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলে সঠিকভাবে জানিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবো। তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
বার্তা কক্ষ কি - সহ-সম্পাদক কি ও দায়িত্ব কি কি জেনে নিন
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন। তাহলে শিরোনাম কি বা শিরোনাম কাকে বলে, সহ-সম্পাদক কি কি দায়িত্ব পালন করেন, এই সকল বিষয়ে আশা করি সঠিক ধারণা পেয়ে যাবেন।

ভূমিকা

অনেকেই রয়েছেন যারা বিভিন্ন শিক্ষা মূলক তথ্য জানতে চাই। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলে বার্তা কক্ষ কি এবং সহ-সম্পাদক কি ও দায়িত্ব কি কি এই বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোচনা করেছি। তাই আপনারা যারা এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে চান তারা অবশ্যই এই আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়বেন। এই আর্টিকেলে এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও এই আর্টিকেলে আরো বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে যা জানলে আপনি অনেক উপকৃত হবেন। চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নিন।

বার্তা কক্ষ কি?

বার্তা কক্ষ কি? বা বার্তা কক্ষ কাকে বলে সেটা অনেকেই জানেন না। তাই আজকে আমি এই বিষয়ে সঠিক একটি ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবো। চলুন জেনে নিন। কোন সংবাদপত্র বা সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানের যে রুমে রিপোর্টারদের কেস রয়েছে সেখানে সংবাদকৃত হয় সংবাদ অনুবাদ হয়, কপি সম্পাদনা কপি পরীক্ষা, বাচাই, শুদ্ধিকরণ সংক্ষিপ্তকরণ ও উৎকৃষ্ট সাধনে ব্যস্ত থাকেন অর্থাৎ কপি সম্পাদনা করেন সেটাই সংবাদ কক্ষ বা বার্তা কক্ষ। 

মোট কথা বলা যায়, সংবাদ কক্ষ বা বার্তা কক্ষ হচ্ছে অফিসের সেই কক্ষ যেখানে বসে রিপোর্ট লেখা ও সম্পাদনা করা হয়। কখনো কখনো এ ধরনের সংবাদ কক্ষে বিভিন্ন ধরনের রিপোর্ট তৈরি করা হয়। অনুরূপভাবে রেডিও এবং টেলিভিশন অর্থাৎ ইলেকট্রনিক মিটার প্রচারের জন্য যে রুমে বসে সংবাদ লেখা ও সমবেদনা করা হয় সেটাও সংবাদপত্র হিসেবে পরিচিত। আসলে সংবাদপত্রের প্রধান বিভাগটি হচ্ছে বার্তা বিভাগ। 

অন্য সব বিভাগ বার্তা বিভাগকে ঘিরে আবর্তিত। এই বিভাগের প্রধান হচ্ছে বার্তা সম্পাদক। এখানে কাজ করা হয় পালাক্রমে। প্রতিপালনাই থাকেন একজন শিফট ইনচার্জ কয়েকজন সহ সম্পাদক এবং প্রুফ রিডার। বার্তা বিভাগের রয়েছে দুটি শাখা যথা (১)প্রতিবেদন শাখা এবং (২) সম্পাদনা শাখা। প্রতিবেদন শাখার প্রধান হচ্ছে নগর সম্পাদক বা চীফ রিপোর্টার। সম্পাদনা শাখার প্রধান হচ্ছে চিফ সাব এডিটর।
 
কক্ষের কার্যাবলীঃ বার্তা কক্ষ বা সংবাদ কক্ষ হচ্ছে একটি কর্ম চঞ্চল এবং শব্দ মুখর এলাকা। সেখানে থাকে এক বা একাধিক টেলি প্রিন্টারের খটখটানি রিপোর্টারদের টাইপ রাইটার এবং সাফ এডিটরদের অনরপক আলাপ প্রচারিত শব্দ। এই শব্দময়ই পরিবেশেও সংবাদপত্রের কুশিলকর নির্বিবাদে এবং গভীর মনোযোগের সঙ্গে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে থাকেন। সংবাদকক্ষে কাজ হয় পালাক্রমে। প্রতিটি পালায় থাকেন একজন পালা প্রধান বা শিফট ইনচার্জ। 

তার অধীনে থাকেন সহ সম্পাদকরা। শিফট ইনচার্জ তাদের মধ্যে কপি বন্ধন করে দেন সম্পাদনার জন্য। তারা কপি সম্পাদনা করে শিফট ইনচার্জ এর কাছে ফেরত দেন তিনি পুনর্বার কপি দেখে সন্তুষ্ট হলে কপি পাঠিয়ে দেন কম্পোজের জন্য। কম্পোজের পর কপিও প্রুপ চলে যায় প্রুফ সেকশনে। সেখানে মুদ্রণ সংশোধনের পর নির্দেশ মোতাবেক সংবাদটিকে যথাযথভাবে অক্ষর বিন্যস্ত করা হয়। অন্যদিকে শিফট ইনচার্জ চিফ সাব বার্তা সম্পাদক বা মেক আপ এডিটর ডামি শিটে পত্রিকার পৃষ্ঠা সজ্জা করেন। 

নিউজের সঙ্গে ছবি থাকলে তার মাপ নির্ধারণ করে পাঠানো হয় পজেটিভ করার জন্য এবং সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগে সেগুলো আবার ফেরত আসে মেকাপ ম্যান দামিতে প্রদর্শিত পৃষ্ঠা সজ্জা দেখে। ছবিগুলো যথাস্থানে বিন্যস্ত করেন এরপর নিউজ ছবি ও বিজ্ঞাপন ঠাসা পত্রিকার মেকআপকৃত পৃষ্ঠাটি চলে যায় প্লেট সেকশনে মুদ্রণের পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য।

সম্পাদকীয় বিভাগঃ ছোট বড় যেকোনো সংবাদপত্রের গঠন অনুযায়ী সেখানে পাঁচটি বিভাগ আলাদা ভাবে কাজ করে থাকে। যেমনঃ সম্পাদকীয় বিজ্ঞাপন উৎপাদন প্রচার এবং বাণিজ্য। সংবাদ কক্ষ সম্পাদকীয় বিভাগের অন্তর্ভুক্ত এবং অন্য সবগুলো বিভাগ থেকে এই বিভাগের প্রতি পাঠক এবং ভিআইপি ব্যক্তিদের দৃষ্টি থাকে প্রখর। যদিও একটি সংবাদপত্রের সকল বিভাগের দায়িত্ব সমান এবং একে অপরের পরিপূরক। সম্পাদকীয় দপ্তরে অন্তত ছয়টি শাখা রয়েছে। যেমন সম্পাদকীয় রিপোর্টিং নিউজ ফিচার, প্রুফ রিডিং এবং ফটোগ্রাফি।

সম্পাদকীয় বিভাগের কাজের মধ্যে রয়েছে সম্পাদকীয় নিবন্ধ লেখা। সম্পাদক লেখেন লিডার অর্থাৎ প্রথম সম্পাদকীয়। অন্যান্য শাখার কাজের মধ্যে রয়েছে সংবাদ প্রতিবেদন সংগ্রহ ও লেখা, অনুবাদ, সম্পাদনা ও পূর্ণলিখুন, কপি পরীক্ষা, শিরোনাম রচনা, ছবি বাঁচায় ও সম্পাদনা এবং পৃষ্ঠাসজ্জা ইত্যাদি। সম্পাদকীয় দপ্তরের সঙ্গে যারা সম্পর্কিত রয়েছেন তারা হলেন সম্পাদক, ব্যবস্থাপনার সম্পাদক। সম্পাদকীয়, পাতার সম্পাদক, বার্তা সম্পাদক, নগর সম্পাদক, চিত্রকলা সম্পাদক, কপিডেক্স প্রধান, কপি-প্রধান এবং রিপোর্টার।

সহ-সম্পাদক কি ও দায়িত্ব কি কি?

পূর্বে আমরা আলোচনা করেছি বার্তা কক্ষ কি? বা বার্তা কক্ষ কাকে বলে এই বিষয়ে। এখন আমরা আলোচনা করবো সহ-সম্পাদক কি ও দায়িত্ব কি কি এই বিষয়ে? চলুন আর দেরি না করে এই বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। সহ-সম্পাদক সম্পাদনা পক্ষ অনেক সম্পাদকের মতে একটি ভালো সংবাদপত্রের হৃৎপিণ্ড। প্রতিবেদকরা যখন সংবাদ লিখে জমা দেন তখন সেগুলোকে প্রায় সবই শতকরা একশ ভাগ নির্ভুল থাকে না।

ছাপার উপযুক্ত করে তুলতে প্রয়োজন হয় খুব সতর্কতার সাথে সেসব পড়ে ভুলগুলো শুদ্ধ করা। এছাড়া পাঠকের সামনে পরিবেশনের উপযুক্ত করে তুলতে সংবাদে প্রক্রিয়াজাত করার অন্যান্য কাজও করতে হয় সহ-সম্পাদক বা সাব এডিটরদের। যুক্তরাষ্ট্রে এই সাব-ইডিটরদের বলা হয় কপি এডিটর। খুব ছোট করে বললে সহ-সম্পাদক রাই সম্পাদনার পুরো প্রক্রিয়াটি নিষ্পন্ন করেন। এই প্রক্রিয়ার মূল ব্যাপারটি হচ্ছে প্রতিবেদকের জমা দেওয়া প্রতিবেদনের সব রকম ভুল সংশোধন করে প্রতিবেদনটি ছাপার যোগ্য করে তোলা।

কিন্তু এই কাজগুলো করতে গিয়ে যৌথভাবে অসংখ্য সমন্বিত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয় সহ-সম্পাদকদের। সহ-সম্পাদকরা দিনের শুরুতে বিভিন্ন মাধ্যম বিশেষ করে সংবাদ সংস্থা থেকে আসা অসংখ্য খবর থেকে কিছু খবর প্রকাশের জন্য নির্বাচন করেন। নিজেদের প্রতিবেদকদের করা খবরগুলো একেকজন সহ সম্পাদক কে ভাগ করে দেওয়া হয়। এরপর সেসব খবরে রয়ে যাওয়ার তথ্য বানান ও ব্যাকরণের ভুলসহ অন্যান্য সব ধরনের ভুল সহ-সম্পাদকরা দূর করেন।

তারা প্রতিবেদনগুলো থেকে মানহানিকর উক্তি বা বিবৃতি বাদ দেন ভাষার উন্নতি করেন সঠিকতা নিশ্চিত করেন প্রাপ্ত স্থানের সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রতিবেদনটিকে আরো ছোট করেন সংবাদ শিরোনামদের পত্রিকার পৃষ্ঠা সজ্জা করেন। আসলে সংবাদপত্র কার্যালয়ের সংবাদ সম্পাদনা কক্ষ একটি শোধনাগার। এই শোধনাগারের সার্বভৌমতার অধিকারী সহ সম্পাদক কে বলা হয় লাস্ট চেকপোস্ট অফ এ নিউজ পেপার। 

তিনি সর্বশেষ ব্যক্তি যার হাত দিয়ে একটি প্রতিবেদন ছাপা হওয়ার জন্য কম্পিউটারের রুমে। তাকে পালন করতে হয় তার সংবাদপত্রের ওয়াচ দগ-এর ভূমিকা এবং তিনিই হচ্ছেন প্রতিবেদকদের রক্ষাকারী চূড়ান্ত অভিভাবক। সংবাদপত্রে ভুল হওয়ার আশঙ্কা থাকে খুবই বেশি। এ কারণে একটি সংবাদপত্রের জন্য সহ-সম্পাদনা খুব গুরুত্বপূর্ণ যত্নশীল পরিশ্রমের কাজ। একজন প্রতিবেদক তার প্রতিবেদনের কি লিখতে পারেন আর কি লিখতে পারেন না তা নিবিক্ষণ করা থেকে শুরু করে সম্ভাব্য সব রকমের ভুল সংশোধন করতে হয় সহ-সম্পাদককে। 

সংবাদপত্রের কোন ভুল চলে গেলে তার দায় ও দায়িত্ব দুটোই বহন করতে হয় এই সহ-সম্পাদককেই। অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ বিরোহ আর মূল্যায়ন ভূমিকা পালন করেন এই সহ সম্পাদকরা। আসলে তারাই নির্মাণ করেন প্রতিদিনের সংবাদপত্র। এতসব কাজ করেন সহ-সম্পাদকরা অথচ তাদের কথা জানেন না কেউ। একজন প্রতিবেদকের জীবনে অসংখ্যবার হয়তো ছাপা হয় বাইলাইন স্টোরি একদম সফল প্রতিবেদক। 

তার কথা সংবাদ এর জন্য অসংখ্যবার হয়তো অনেক মানুষের বাহবা কিন্তু সহ-সম্পাদক যিনি প্রতিটি প্রতিবেদনের পাঠ্য যোগ্য যথার্থ ও নির্ভুল করা সহ এত অসংখ্য কাজ করেন তিনি চিরকাল থেকে যান পর্দার অন্তরালে। পত্রিকায় তার নাম ছাপা হয় না কোনদিন কোন টেলিফোন বেজে ওঠেনা তার প্রশংসা পাঠক তার নামে উচ্চারণ করেন না কোন মঙ্গলধ্বনি। কিন্তু তাতে থেমে যায় না সহসম্পাদকের সাধনা। সংবাদপত্রের এই নির্ভীক নায়ক প্রতিদিন সম্পূর্ণ করেন তার অসামান্য কাজ।

সহ-সম্পাদক কি কি দায়িত্ব পালন করেন জেনে নিন

কপি বাছাই করাঃ সহ-সম্পাদককে যে কাজটি শুরুতেই করতে হয় তা হচ্ছে সংবাদ বাছাই করা। প্রতিদিনই একটি সংবাদ প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সংবাদ চ্যানেল আসে থেকে অসংখ্য সংবাদ। এসব সংবাদ এর মধ্যে থেকে খুব কম সংখ্যক সাংবাদই স্থান পায় পরের দিনের সংবাদপত্রে। হাজারো সংবাদের ভিড় থেকে ছাপারযোগ্য কপিগুলো বাছাই করতে হয় সংশ্লিষ্ট পৃষ্ঠার সহ সম্পাদকদের। 

সংবাদ মূল্য নির্ণায়ক আর সংবাদ উপাদান সম্পর্কে ভালো ধারণা একজন সহজ সম্পাদকের জন্য এই কাজটি সহজসাধ্য করে দেয়। একটি সংবাদপত্রে যে পরিমাণ সংবাদ ছাপা হতে পারে তার চেয়ে একটু বেশি পরিমাণ সংবাদই প্রথম পর্যায়ে বাছাই করেন তারা। এই বাছাই করা সংবাদগুলো চিহ্নিত করার পর শুরু হয় পরবর্তী ধাপের কাজ।

সঠিকতা নিশ্চিত করাঃ সংবাদ নির্বাচনের পর সহ-সম্পাদকের মনোযোগ দিতে হয় সংবাদের সঠিকতা নিশ্চিত করার কাজে। সংবাদের সঠিক কথা নিশ্চিত করা সহ- সম্পাদকদের জন্য নির্দিষ্ট নানা কাজের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন। প্রথমত তথ্যগত ভুলগুলো তাকে সংশোধন করতে হয় তারপর দেখতে হয় ব্যাকরণ বা ভাষাগত ভুল এমনকি বানান ভুলগুলো সংশোধন করতে হয় এই যাচাইয়ের কাজটি করতে একজন সহ-সম্পাদকদের। একজন সহ-সম্পাদক প্রতিটি ঘটনার বিস্তারিত খুঁটিনাটি জানবেন এটি আশা করা অন্যায়।

কিন্তু তারপরেও তাকে সেই দায়িত্ব পালন করা হয়। প্রথমে কপি পরে দেখতে হয় সহজ-সম্পাদককে কাণ্ডজ্ঞান বা কমনসেন্স কাজে লাগিয়ে বোঝার চেষ্টা করতে হয় যে সাংবাদিকটিতে যা কিছু বলা হয়েছে তার সবকিছু যুক্তিসঙ্গত কিনা। যদি যাচাইয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়ে ওঠে অনিবার্য। এই যাচাইয়ের কাজটি করতে একজন সহ সম্পাদককে জানতে হয় মোটামুটি সবকিছু সব সংবাদ আর ঘটনা তাকে মাথায় রাখতে হয়। 

যদি সবকিছু তিনি মাথায় না রাখতে পারেন সে ক্ষেত্রে তাকে জানতে হয় কোথায় কাঙ্খিত তথ্য গুলো পাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও বিশাল গ্যানভাণ্ডার ব্যাকআপ থাকলেই কেবল একজন সহ সম্পাদকের পক্ষে অতি গুরুত্বপূর্ণ এক যোগ্যতা অর্জন করা সম্ভব হয় সেটি হচ্ছে সন্দেহ জনক প্রতিটি বাক্য সংক্রিয়ভাবে যাচাই করে নেওয়ার অভ্যাস। একজন সহ-সম্পাদক দেশের বড় বড় শহর যে শহরে সংবাদপত্র সে শহর রাস্তাঘাট বড় বড় ইমারত নামকরা ব্যক্তি সরকারি কর্তা ব্যক্তিদের কাছে জানেন।

তার কাছে অথবা নাগালের মধ্যে থাকবে নানা রকমের অভিধান মানচিত্র বিশ্বকোষ সংবাদপত্রের ক্লিপিং এবং অন্যান্য অসংখ্য রেফারেন্স। প্রায় সব ঘটনা প্রেক্ষাপট জানা থাকা আর অসংখ্য রেফারেন্স কাছে থাকার কারণে সমস্ত রকমের ভুল তিনি শুদ্ধ করতে সক্ষম হন এবং এভাবেই একজন সহ সম্পাদক তার সংবাদপত্রের শতকরা ১০০ ভাগ সঠিকতা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেন। অবশ্য প্রতিবেদক যদি প্রতারণা করার নিয়ত করে তাহলে সহ সম্পাদকের কাছে কবে জমা দেন কিংবা যদি সন্দেহ হওয়ার পরও তথ্য যাচাই করতে প্রয়োজন হয়।

ঘটনাস্থলে যাওয়ার বা সংবাদ সে রকম ক্ষেত্রে সহ সম্পাদকের কিছুই করার থাকে না। যাই ঘটক না কেন সাধারণ সহ সম্পাদকরা সন্দেহ হলেই সাথে সাথে সিদ্ধান্ত না নিয়ে যথাযথ প্রক্রিয়ায় যাচাই করে তবেই সংশোধনের মনোযোগী হন। 

সংবাদ এর সঠিক নিশ্চিত করতে সহ-সম্পাদকের আরো যা যা করতে হয় সেটা হচ্ছেঃ

  • ব্যাকরণগত ভুল সংশোধন। 
  • মানহানিকর বক্তব্য পরিহার করা।
  • সংবাদকে সহজ সরল করা।
  • অসম্পূর্ণতা দূর করা।
  • সংবাদ ছোট করা।
  • পত্রিকার স্টাইলের সাথে সংবাদ খাপ খাওয়ানো।
  • মতামত মুক্ত করা।
  • সংবাদ সূচনার কার্যকারিতা যাচাই করা।
  • সংবাদ কে পরিসীলিত এবং উন্নত করা।
  • কপি চিহ্নিত করা এবং নির্দেশনা দেওয়া।
  • অনুবাদ করা।
  • শিরোনাম দেওয়া।
  • চিত্র সম্পাদনা ও ক্যাপশন রচনা করা।
  • নীতি অনুসরণ করা।

শিরোনাম কি বা শিরোনাম কাকে বলে

শিরোনামকে বলা হয় সুপার লিড। খবরের মূল কথাটি জানিয়ে তৈরি করা হয় সংবাদ সূচনা বা লিড। আর এই লিডের মূল কথাটি ন্যূনতম শব্দে তুলে ধরতে হয় শিরোনামে। লিট যেখানে ন্যূনতম বাক্যের রচিত হয় সেখানে শিরোনাম রচিত হয় ন্যূনতম শব্দ ব্যবহারে অথচ লিডের যা কাজ যে লক্ষ্য উদ্দেশ্য শিরোনামেরও তা প্রায় একই রকম। শিরোনামের প্রথম কাজ হচ্ছে খুব সংক্ষেপে ও তাৎক্ষণিকভাবে পাঠক কে মূল সংবাদটি জানিয়ে দেওয়া।

দ্বিতীয় যে কাজটি শিরোনাম দিয়ে হাসিল করার চেষ্টা করা হয় তা হচ্ছে পাঠক কোন সংবাদটি পড়বেন আর কোন সংবাদটি পড়বেন না তা বাছাই করতে সহায়তা করা। শিরোনামের তৃতীয় কাজটি হচ্ছে পাঠকের মনে কৌশল জাগিয়ে তোলা। দোকানের বাইরে সাজিয়ে রাখা পণ্য দেখে তা কিনতে যেমন ক্রেতা আকৃষ্ট হন তেমনি শিরোনাম দেখিয়ে পাঠককে আকৃষ্ট করার চেষ্টা থাকে সহ-সম্পাদকের আর একটি কাজে শিরোনামকে ব্যবহার করা হয় সেটি হচ্ছে সংবাদপত্রের পৃষ্ঠা সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্য সৃষ্টি।

প্রতিটি সংবাদের জন্য এই সুপারলিট বা সংবাদ শিরোনাম নির্মাণের দায়িত্ব পালন করতে হয় সম্পাদকেরই। পুরো খবরটি পড়ে সময়ের চাপ থাকলে শুধুই সংবাদ সূচনা করে সহ সম্পাদক একটি খবরের শিরোনাম দেওয়ার চেষ্টা করেন সাধারণত এই শিরোনামটি তিনি একটি পৃথক কাগজে লিখে সংবাদটির সাথে গেটে পাঠিয়ে দেন কম্পোজ সেকশনে কোন সংবাদের কেমন হতে পারে তাও নির্ধারণ করতে হয় সহ-সম্পাদকের।

শিরোনামের পয়েন্ট আর হরফের চেহারা পরিবর্তন করে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করে সহ-সম্পাদকরা শিরোনাম যেহেতু খুব ছোট হয় তাই তার কাঠামোয় বৈচিত্র্য আনার সুযোগ খুবই একটা থাকে না।

সচরাচর ছয় রকম কাঠামোর শিরোনাম সংবাদপত্রে ব্যবহৃত হয় সেগুলো নিচে দেওয়া হলোঃ

ক) ক্রস লাইন বা বার লাইনঃ
___________________

খ) উল্টো পিরামিডঃ

=============
 =========
    ===

গ) স্টেপ লাইন বা ড্রপ অফলাইনঃ

============
       ==============
           ==========

ঘ) হ্যাংগিং ইনডেন্টঃ

=============
========
     ========
            =======
                   ====

ঙ) ওয়েস্ট লাইনঃ

============
   ======
============

চ) ফ্ল্যাশ লেফটঃ

===========
========
======
====

সহ-সম্পাদকরা এই কাঠামোর একটু বেশি ব্যবহার করেন আরেকটি বিবেচনা থাকে সেটি হচ্ছে খুব বেশি দীর্ঘ শিরোনাম না হলে ইউনিট গণনার প্রয়োজন পড়ে না। প্রয়োজন মত স্থানে ভেঙ্গে পরিবর্তন পঙ্গক্তিতে চলে যাওয়া যায়। সহসম্পাদকরা এই সুবিধার কারণে বেশ স্বাধীনভাবে শিরোনাম ছোট বড় করতে পারেন আরো কার্যকর শিরোনাম লেখায় ভালো অবদান রাখে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আশা করি বার্তা কক্ষ কি এবং সহ-সম্পাদক কি ও দায়িত্ব কি কি এই সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা দিতে সক্ষম হয়েছি। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এই আর্টিকেলটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করলে আপনার বন্ধুরাও জানতে পারবে। তাই দেরি না করে আপনার বন্ধুদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করুন।

এই রকম আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার কোনো মতামত জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে সেটা জানিয়ে যাবেন। (ধন্যবাদ) আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪