গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনার যদি না জানা থাকে। তাহলে আজকের এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। আমড়া খেতে কম বেশি অনেকেই পছন্দ করেন। কিন্তু গর্ভাবস্থায় আমড়া খেলে কি কি উপকার ও ক্ষতি হয় সেই বিষয়ে হইত তেমন কোনো ধারণা রাখেন নাই। তাই আজকে আমি এই সম্পর্কে সঠিকভাবে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবো। তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন। তাহলে আমড়া খাওয়ার নিয়ম, আমড়া খাওয়ার অপকারিতা, আমড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, আমড়া খেলে কি ক্ষতি হয়, এই সকল বিষয়ে সঠিক ধারণা পেয়ে যাবেন।

ভূমিকা

আমড়া একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল। আমড়া খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় আমড়া খেলে গর্ভবতী মা ও শিশু উভয় সুস্থ থাকে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা গর্ভবতী মায়েদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে যে পুষ্টিগুণ রয়েছে সেটা শরীরে বিভিন্ন পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে। অনেকেই আমড়া খেয়ে থাকে কিন্তু গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা এবং আমড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। তাই আজকে আমি এই বিষয়গুলি সম্পর্কে সঠিক একটি ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব। তাই আপনারা যারা এই বিষয়গুলি সম্পর্কে সঠিকভাবে জানেন না। তারা আজকের এই আর্টিকেল থেকে সঠিকভাবে জেনে নিন।

আমড়া খেলে কি ক্ষতি হয়

অনেকেই আমড়া খেতে পছন্দ করি। আমরা সকলেই জানি আমড়া একটি পুষ্টিকর খাবার। কিন্তু আমড়া খেলে কি ক্ষতি হয় সে বিষয়ে তেমন কোন ধারণা রাখি না। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলের অংশটুকুতে এই বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব। তাই আপনারা যারা আমড়া খেতে পছন্দ করেন তারা অবশ্যই এই বিষয়টি সম্পর্কে জেনে যাবেন। আশা করি এই বিষয়টি জানলে আপনি অনেক উপকৃত হবেন। চলুন তাহলে জেনে নিন।

সাধারণত আমড়া খাওয়া স্বাস্থ্যর জন্য উপকারী এবং এর তেমন কোন ক্ষতির প্রভাব নেই। আমড়া শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও আমড়াতে যে ভিটামিন, ফাইবার, খনিজ এবং এন্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে সেটা শরীরের জন্য অনেক উপকারী। আমরা খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু অনেকে রয়েছে যারা অনেক বেশি পরিমাণে আমড়া খেয়ে থাকে। 
কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে আমড়া খাওয়া একদমই উচিত নয়। কারণ অতিরিক্ত আমড়া খেলে পেট খারাপের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদি আপনার পেট খারাপ, ডায়রিয়া বা বমি বমি ভাব থাকে তবে আমড়া খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ আমড়া পেটের সমস্যা আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে। তবে আপনার যদি কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে তবে আমড়া খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

আমড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

আমড়া ফলটি খেতে অনেক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। আমড়া ফলটি বর্ষাকালে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। ফলটি আপনাদেরকে চিনিয়ে দেয়ার প্রয়োজন না পড়লেও এর উপকারিতা সম্পর্কে অবশ্যই জানানোর প্রয়োজনীয়তা আছে। কারণ এর উপকারিতা বা পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষই জানেন না। এই ফলটি ভিটামিন সি এর খুব ভালো উৎস। 

এটি বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্যের ক্ষেত্রে উপকারী। এর মধ্যে রয়েছে মুত্র বর্ধক গুণাবলী। যা আপনার ইউরিন ইনফেকশন এবং প্রস্তাবের সমস্যা দূর করে। এছাড়াও মুখে রুচি বৃদ্ধি করে, ক্যালসিয়ামের চাহিদা মেটায়, ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখে, আয়রনের চাহিদা পূরণ করে, হৃদরোগ প্রতিহত করে এমন অনেক গুণাবলী রয়েছে এই ফলটিতে। আপনি স্বল্প দামে বাজারে এই ফলটির পেয়ে গেলেও এর উপকারিতা কখনোই আন্দাজ করতে পারবেন না। 
সঠিক রোগের ক্ষেত্রে সঠিক নিয়মে ফলটি সেবনের মাধ্যমে অনেক রোগ থেকে আপনি বিনা পয়সায় মুক্তি পেতে পারবেন। তবে আমি বলব এর উপকারিতা কোটি টাকার চেয়েও বেশি। হীরার চেয়েও বেশি মূল্যবান এই ফলটি। এই আমড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জানতে এবং আমড়া খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে এই আর্টিকেলের অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়ুন।    

সুপরিচিত এই ফলটিতে আপনি পাবেন প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও আয়রন। এর মধ্যে যে ক্যালসিয়াম  আয়রন ও প্রোটিন রয়েছে তা আপেলের চাইতে অনেক বেশি। আমাদের দেহের অতি প্রয়োজনীয়  ভিটামিন সি আমড়াতে পাওয়া যায়। ভিটামিন সি যুক্ত খাবার যদি আপনি না খান তাহলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে শুরু করবে। তাই প্রতিদিন ভিটামিন সি যুক্ত খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন। আমরা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ একটি ফল। 

দৈনিক যদি কেউ ১টি আমরা খেতে পারে এর মধ্যে যে ভিটামিন সি পাওয়া যায় তা আপনার শরীরের ৫০ শতাংশ ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করবেন। প্রতি ১০০ গ্রাম আমড়ায় ৪৬.৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে যা অত্যাবশ্যকীয় ভিটামিন ও প্রাকৃতিক এন্টি-অক্সিডেন্ট। আমড়ার ভিটামিন সি আমাদের দেহকে ফ্রি রেডিক্যালস (Free radicals) হাত থেকে রক্ষা করে। যার ফলে আমাদের স্কার্ভি রোগ হয় না। ক্যান্সার দূরে থাকে। 

আমড়া ফল সঠিক মাত্রায় খেতে পারে আপনি বদ হজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। আমড়া ফলে বিভিন্ন দ্রবণীয় ফাইবার রয়েছে এই ফাইবার পাকস্থলের ক্রিয়া প্রক্রিয়া স্বাভাবিক পর্যায়ে রাখতে সাহায্য করে। তাই বদহজম ও পেট ফাঁপা কনস্টিপেশনের মত অস্বস্ত রোগ হলে আমড়া খাওয়া শুরু করে দিন। আর এর জন্য আপনি সকাল ও দুপুরের মাঝামাঝি ২টি আমরা খোসা ছাড়িয়ে ভালোভাবে দাঁতে চিবিয়ে খেয়ে আধাঘন্টা পরে ১ গ্লাস কুসুম গরম পানি খান। 

বদহজম, পেট ফাঁপা ও কনস্টিপেশনের সমস্যা ভালো হয়ে যাবে। এভাবে টানা তিনদিন অবশ্যই করবেন। এর ভিটামিন সি আমাদেরকে সর্দি-কাশি ও ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে  পারে। বিভিন্ন ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা করা ছাড়াও সর্দির কাশি ও ইনফ্লুয়েঞ্জার রোগের হাত থেকে বা জীবাণু থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে আমড়া। আমড়া খেলে মুখে রুচি বাড়ে ও ক্ষুদা বৃদ্ধি পায়। এটি পিত্ত নাশক ও কফ নাশক। 

আমড়া খেলে খুব সহজে রুচি বৃদ্ধি পাবে এবং আপনার ক্ষুদা বাড়বে। এর মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম যা ক্যালসিয়ামের চাহিদা মেটায়। ক্যালসিয়ামের অভাব হলে হাড়ের রোগ হলে মাংসপেশীতে খিচুনি জাতীয় রোগ থাকলে আমড়া খেতে পারেন। আমরা ক্যালসিয়ামের ভালো একটি উৎস। শিশুর দৈহিক গঠনেও আমড়া খুব কার্যকরী। তাই শিশুদের এই ফল খেতে উৎসাহিত করা উচিত। আমরা আয়রনের চাহিদা মেটায়। 

হিমোগ্লোবিন থাকে লোহিত রক্ত কণিকায় তাই আয়রন জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খেলে লোহিত রক্ত কণিকার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। প্রতি ১০০ গ্রাম আমড়ায় ২.৮ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে যা দৈনিক আপনার আয়রনের চাহিদা প্রায় ৩৫ শতাংশ পূরণ করতে পারে। সারা শরীরে অক্সিজেন সরবরাহকারী আয়রন সমৃদ্ধ উপাদান হিমোগ্লোবিন ও মাইগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতে এই ফলের ভূমিকা অপরিসীম। শরীরের সার্বিক কাজ ঠিক ঠাক ভাবে সম্পূর্ণ করতে  ক্লান্ত দুর্বলতা ও অবসাদগ্রস্থ তার সমস্যাকে দূর  করতে আমড়া খুবই প্রয়োজনীয়। 
এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। আমড়া রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আঁশ। প্রতি ১০০গ্রাম আমড়ায় ২৯ ক্যালোরি পাওয়া যায়। তাই ওজন কমাতে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এটি সাহায্যকারী খাবার। এটি হৃদরোগকে প্রতিহত করতে পারে যেহেতু এটি এন্টি-অক্সিজেন সমৃদ্ধ খাবার। গবেষণা দেখা গেছে আমরা সার্বিক কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল (HDL) মাত্রা বাড়ায়। 

এই আমরা খেলে হৃদয় স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। এটি অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করবে। ত্বকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে আমড়া। ত্বক, চুল ও নখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এর উপকারিতা রয়েছে। ত্বকের ব্রণের প্রকোপ কমাতে ও ত্বক উজ্জ্বল রাখতো আমড়া  দারুণ উপকারী। আমড়ায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকার কারণে এটি ত্বকের কোলাজেনকে বৃদ্ধি করে এবং ত্বকের কালো দাগ দূর করে। 

এতে ত্বক মসৃণ হয় এবং ত্বক দীর্ঘস্থায়ী লাবণ্য ফিরে পায়। আমড়া ফলটি হজমের জন্য বেশ উপকারী একটি ফল। আমড়ায় যেহেতু প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আঁশ পাওয়া যায় এর কারণে এটি হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়া হজমের কারণে মানুষের শরীরে যে সমস্ত সমস্যাগুলো দেখা দেয় যেমন গ্যাস, এসিডিটি এই সমস্যাগুলো দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমড়ায় খুব কম পরিমাণে গ্লুকোজ থাকে। 

তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এক আদর্শের খাবার বলা যেতে পারে আমড়াকে। ডায়াবেটিস রোগীরা যে সমস্ত ফল খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন তার মধ্যে একটি অন্যতম ফল হচ্ছে আমড়া। আমড়া খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। আমড়া পেশী শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আমড়াতে রয়েছে থিয়ামিন নামক এক ধরনের উপাদান। এই উপাদানটি পেশির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেটি মানুষের শরীরের পেশি সংকোচন ও স্থায়ী সংকেত সঞ্চালনের সাহায্য করে থাকে। 

যাদের পেশীগত দুর্বলতা আছে বা স্নায়বিক দুর্বলতা আছে, হাত পা থর থর করে কাঁপে কোন জিনিস ধরলে বা কোন জিনিস দেয়ার ক্ষেত্রে হাত থর থর করে কাপতে থাকে এমন ধরনের দুর্বলতা দূর করতে আমড়া বেশ উপকারী। তাই যাবে শরীরে এমন ধরনের দুর্বলতা গুলো আছে তারা অবশ্যই চেষ্টা করবেন খাদ্য তালিকা আমড়া ফলটি রাখার। আমড়া মধ্যে রয়েছে মূত্র বর্ধক গুণাবলীন। আমড়ার রসে অনেক ঔষধি গুণাবলী রয়েছে। 
এটি মূত্র বর্ধক হিসেবে কাজ করেন। অনেকে এমন আছেন যাদের প্রসাব অল্প অল্প করে হয় ক্লিয়ার করে হতে চায় না অথবা ইউরিন ইনফেকশনের সমস্যা রয়েছে পেটে ব্যথা করে, তলপেটে ব্যথা করে, পিছের দিকে ব্যথা করে, প্রসাবের দুর্গন্ধ হয়, প্রসাবের সাথে রক্ত অথবা পুঁচ বেরিয়ে আসে প্রসব করার পরেও মনে হয় যে প্রসব যেন ঠিকমতো হয়নি এই সমস্ত সমস্যা দূর করতে আমড়া খুবই উপকারী।

প্রসাবের এমন ইনফেকশন বা সমস্যা থাকলে আমড়া খেতে পারেন। এটির প্রসাবের মাধ্যমে মানুষের মানুষের শরীর থেকে তরল বের করে দিতে সাহায্য করে ফলে শরীর থেকে সোডিয়াম কমে যায় এবং রক্তচাপটাও নিয়ন্ত্রণ থাকে। এছাড়া এটি খেলে জ্বর হবার সম্ভাবনা একেবারেই কমে যায়।

আমড়া খাওয়ার অপকারিতা 

সবকিছুর যেমন ভালো খারাপ দিক রয়েছে ঠিক তেমনি আমড়া খাওয়ার অপকারিতাও রয়েছে। উপরে আমড়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি এখন আমরা জেনে নিবো আমড়া খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে। আমড়া খেলে তেমন কোনো সমস্যা হবে না। কারণ আমড়ায় কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। তবে আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে আমড়া খান তাহলে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই অতিরিক্ত না খেয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে হবে। এছাড়াও আমড়া হচ্ছে একটি টক জাতীয় খাবার তাই খালি পেটে আমড়া খেলে পেট ব্যথা, বদহজম, ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। তাই আমড়া খেলে পরিমাণ মতো খেতে হবে অতিরিক্ত নয়।          

আমড়া খাওয়ার নিয়ম 

পূর্বে আমরা আমড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এখন আমরা আলোচনা করবো আমড়া খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। অনেকে আমড়া খেতে পছন্দ করেন। আমড়া বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। তবে আপনি যদি সঠিক নিয়মে আমড়া খেতে পারেন তাহলে  অনেক উপকার পাবেন। একজন সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষ দৈনিক কতটি আমড়া খাওয়া প্রয়োজন চলুন এবার জেনে নিন। 

আপনি যদি ছোট সাইজের আমড়া নির্বাচন করেন সেক্ষেত্রে ৩টি আমড়া খেতে পারেন। মাঝারি সাইজের আমড়া নির্বাচন করলে ২টি এবং বড় সাইজের আমড়া হলে ১টি। আমড়া খাওয়ার সময় চাইলে কিন্তু আপনি এর খোসাসহ খেতে পারেন। আমড়া একটু টকটক লাগে এবং খেতেও এর স্বাদ বেশ ভালো এবং এর মধ্যেও যথেষ্ট পরিমাণে উপকারিতা রয়েছে। 
আমড়া ভালোভাবে ধুয়ে এটিকে কেটে টুকরো করে এটিকে আপনি শুধু চিবিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এর মধ্যে কোন পরিমাণ লবণ, ঝাল বা তেল মিশ্রিত করলে এর পুষ্টিমান একেবারেই নষ্ট হয়ে যাবে। ঝাল, মশলা দিয়ে আমরা মিশ্রিত করে খেলে এর মধ্যে কোন পুষ্টি উপকারিতা পাওয়া যায় না। খাবার খাওয়ার পরই আমড়া খাবেন না। অন্ততপক্ষে আধাঘন্টা থেকে ১ ঘন্টা অপেক্ষা করে তারপরে আমড়া খাবেন।

রাতের বেলা আমড়া খাবেন না। আমড়া খাবেন সকাল ও দুপুরের খাবার খাওয়ার মাঝামাঝি এবং বিকেলের নাস্তা হিসেবে। আমড়া খাওয়ার সাথে সাথে পানি না খেয়ে আধা ঘন্টা অপেক্ষা করে ১ গ্লাস কুসুম গরম পানি খেলে পেটের রোগগুলোর ক্ষেত্রে ভালো উপকারিতা পাবেন।

গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা

আমড়া, ভিটামিন সি এবং নানা খনিজ উপাদানের ভরপুর একটি ফল। আমড়া খুবই সুস্বাদু টক মিষ্টি ফল যা এখন কমবেশি সারা বছর জুড়ে পাওয়া যায়। আমড়া গর্ভবতী এবং গর্ভস্থ শিশুর নানা উপকার করে থাকে। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলের অংশটুকুতে গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই আপনারা যারা এই বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জানেন না। তারা এই আর্টিকেলের অংশটুকু থেকে জেনে নিতে পারেন। চলুন তাহলে আর দেরি না করে উপকারিতাগুলো জেনে নিন।

শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ পৃথিবীতে সুস্থ ও রোগ প্রতিরোধক্ষম বাচ্চা আগমনের জন্য মায়ের ভূমিকা অপরিসীম। ভিটামিন সি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, মুখের রুচি বৃদ্ধি করতে আমরা খেতে পারেন। তাছাড়া প্রতি ১০০ গ্রাম আমড়ায় ২৬.৪৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি রয়েছে। যেখানে দৈনিক সর্বনিম্ন ৮৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি গ্রহণ করলেই চলে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর শিশুরা অনেক সময় কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগে থাকে। মা যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য আঁশ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করেন আর বুকের দুধ পান করান তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্যের হাত থেকে সহজে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। আমড়া প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আঁশ রয়েছে যা আপনার খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন। ১০০ গ্রাম আমড়ায় ৩.৫ গ্রাম খাদ্য আঁশ রয়েছে।

গর্ভবতী মায়ের রক্ত শূন্যতা দূর করেঃ একজন গর্ভস্থ শিশুর চরম দুর্ভোগ তখন, যখন গর্ভাবস্থায় রক্তশূন্যতায় ভুগেন। আমাদের দেশের প্রায় 90 ভাগ গর্ভবতী মায়েরা গর্ভকালীন সময়ে রক্তশূন্যতায় ভুগে থাকেন। শরীরের রক্তের হিমোগ্লোবিন কমে গেলে রক্ত শূন্যতা দেখা দেয়। ভিটামিন সি রক্তের হিমোগ্লোবিনের ভারসাম্য ঠিক রাখে। গর্ভস্থ শিশু তখনই ভালো থাকে যখন গর্ভকালীন সময়ে মা ভালো থাকেন। গর্ভাবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হলো প্রি- একলামশিয়া। রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, পা ফুলে যাওয়া, পানি আসা এবং প্রস্রাবে এলবুমিন (Albumin) নির্গত হওয়ার প্রি- একলামশিয়ার লক্ষণ। ভিটামিন সি প্রি-একলামশিয়া প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকরী। তাছাড়া গর্ভ অবস্থায় শিশুর সুস্থ বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ভিটামিন সি। 

শিশুর ত্বক কমল ও মসৃণ করেঃ যদিও বাচ্চা কালো বা ফর্সা আর কোমল ও মসৃণ আলাদা বিষয়। বাচ্চা কালো বা ফর্সা হওয়ার চাইতেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সুস্থ সবল কমল ত্বক। গর্ভাবস্থায় আমড়া গ্রহণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বাড়ে, ঠিক তেমনি বাচ্চা সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

শিশুর হাড় মজবুত করেঃ গর্ভাবস্থায় আপনার শিশু তার প্রয়োজনীয় সকল উপাদান আপনার কাছ থেকে গ্রহণ করবে। তাই সব ধরনের উপাদান আপনার কাছে মজুত থাকা চাই। আমাদের দেহে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও সোডিয়ামের অভাব হলে অস্টিওপোরোসিসসহ হাড়ের নানাবিধ রোগ দেখা দেয়। আমড়াতে এই খনিজ উপাদানসমূহ পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়। এজন্য আমড়া গর্ভাবস্থায় বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
শিশুর হার্টের উন্নয়নেঃ শিশুর সার্বিক উন্নয়ন আপনার গর্ভাবস্থা থেকেই হয়। আমড়া কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা হ্রাস করে হৃদরোগের বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরি করে। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর যতদিন বাচ্চা বুকের দুধ পান করবে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আপনার খাদ্য তালিকার উপরে নির্ভর করবে। তাই নিজের এবং শিশু সুস্বাস্থ্যের জন্য আমড়া খেতে পারেন। আশা করি গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আশা করি গর্ভাবস্থায় আমড়া খাওয়ার উপকারিতা এবং আমড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা দিতে সক্ষম হয়েছি। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এই আর্টিকেলটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করলে আপনার বন্ধুরাও জানতে পারবে। তাই দেরি না করে আপনার বন্ধুদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করুন।

এই রকম আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার কোনো মতামত জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে সেটা জানিয়ে যাবেন। (ধন্যবাদ) আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪