দাঁতের মাড়ি ফোলা ও ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় জেনে নিন

দাঁতের মাড়ি ফোলা ও ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আপনার যদি না জানা থাকে। তাহলে আজকের এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। আমাদের সবার দাঁতের মাড়িতে ব্যথা হয়ে থাকে কিন্তু এই ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে আমাদের ধারণা নেই। সেজন্য আমি আজকে একটি সঠিক ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবো। তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
দাঁতের মাড়ি ফোলা ও ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন। তাহলে দাঁতের মাড়ি ফোলা কমানোর ঔষধ সে বিষয়েও সঠিক ধারণা পেয়ে যাবেন। এইগুলো সম্পর্কে আমাদের ধারণা রাখা প্রয়োজন। তাই দেরি না করে চলুন জেনে নেয়া যাক বিষয়গুলো।

ভূমিকা 

দাঁতের মাড়ি ফোলা যে ব্যথা সেই ব্যথা প্রচন্ড যন্ত্রণায়ক ও ভয়াবহ হয়ে থাকে। সাধারণত কোনো কিছু খেলে আর বেশি জোরে যদি আঘাত লাগে তাহলে এই মাড়ি দিয়ে রক্ত বের হয় এবং দাঁতের মাড়ি অনেক ফোলা হয়ে যায়। তখন প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করা হয়। আজকে আমি এই আর্টিকেলের মধ্য দিয়ে দাঁতের মাড়ি ফোলা ও ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ুন। এই আর্টিকেলের মধ্যে সকল বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি পড়লে বুঝতে পারবেন।

দাঁতের মাড়ি ফোলা কমানোর উপায়

সাধারণত দাঁতের মাড়ি ব্যথা প্রায় অনেকেরই হয়ে থাকে। কিন্তু এই ব্যথা প্রচন্ড পরিমাণে হয়ে থাকে। মাড়িফোলা সমস্যা দাঁতের ব্যাথার চেয়েও কম নয় এইটা একদম অস্বস্তিকর মনে হয়। এই সমস্যাটা অনেক যন্ত্রণাদায়ক। মাড়ি ফোলাতে আমরা ঠিকমতো খেতে পারি না। খেতে গেলেই মাড়িতে প্রচন্ড ব্যথা করে। পাশাপাশি দাঁত মাজতে গেলেও প্রচন্ড ব্যথা লাগে। সাধারণত এই মাড়ি রঙ হয়ে থাকবে গোলাপী কালারের মত কিন্তু এই মাড়ির রঙ বদলে যেতে পারে এই সমস্যার কারণে।  

এই সমস্যার কারণে বিভিন্ন রঙ হতে পারে যেমন ফ্যাকাসে হতে পারে,  লাল হতে পারে, কালচে হতে পারে। এই মাড়ির সমস্যা আরও বিভিন্ন কারণে হতে পারে অনেক সময় দেখা যায় যে, দাঁতের যত্ন না নিলে, এগুলো সমস্যা হয়। আবার অপুষ্টির কারণে মুখের সংক্রমণ ভালোমতো মুখ নিয়মিত পরিষ্কার না করা আরো ইত্যাদি সমূহ। ঠিক এইগুলো কারণে মাড়ির সমস্যাও হতে পারে। সুতরাং আমাদের জেনে নিতে হবে যে দাঁতের মাড়ি ফোলা কমানো উপায়।

লেবু পানিঃ প্রতিদিন নিয়মিত ঘুম থেকে উঠে আমরা দাঁত মাজার আগে লেবু পানি দিয়ে অবশ্যই কুলি করে নেব। এতে করে মাড়ির সমস্যা অনেকটা দূর হয়ে যাবে। 

লবণ পানিঃ নিয়মিত লবন পানি দিয়ে কুলি করলে মুখের সংক্রমণ বা জীবাণু খুব দ্রুত নষ্ট করে দেয়। এতে করে বাড়ির ফোলা ভাবটা অনেক দ্রুত কমে যায়। অনেক আরাম মেলে এই লবণ পানি ব্যবহার করলে।  

হলুদঃ হলুদ দাঁতের সমস্যার জন্য অনেক উপকারী একটি উপাদান। এই উপাদানে রয়েছে কারকিউমিন। এতে থাকা আন্টিঅক্সিডেন্ট ব্যথা ও  ফোলাভাব খুব দ্রুত কমাতে সাহায্য করে। 
  • ১ চামচের ৪ অংশের ১ ভাগ হলুদের গুড়া নিন। তারপর সেই গুড়ার মধ্যে সামান্য পরিমাণে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
  • হাত পরিষ্কারভাবে ধুয়ে আঙ্গুল দিয়ে এই পেস্ট মাড়িতে লাগিয়ে রাখুন ৬ থেকে ৭ মিনিট। এরপর আলতোভাবে দুই মিনিট ম্যাসাজ করুন।
  • হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ খুব সুন্দর করে ধুয়ে ফেলুন।
  • প্রতিদিন এইটা ঘুম থেকে উঠে সকালে এবং রাতে ঘুমানোর আগে করবেন। সপ্তাহে এইটা দুই দিন ব্যবহার করবেন। এতে করে অনেক আরাম পাবেন।
বাবলা গাছের ডালঃ বাবলা গাছের ডাল দাঁতের মাড়ি ফোলা ব্যথা অনেকটা কমিয়ে দেয়। এই সমস্যার কারণে আপনাকে যা করতে হবে--
  • প্রথমে গাছের ডাল গরম পানি দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিতে হবে এবং সেকে নিতে হবে
  • তারপর সেই গরম পানি একটু হালকা ঠান্ডা করে নিতে হবে
  • এরপর সুন্দর করে দুই থেকে তিনবার কুলি করতে হবে। এতে করে আপনি অনেক উপকার পাবেন।
আদাঃ মুখের সংক্রমণ দূর করার জন্য সেই আদিমকাল থেকে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে এই আদা। শুধু যে সংক্রমণ নষ্ট করায় এমন নয়। নতুন করে দাঁতে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করলে সেটা অনেকটা রোধ করতে আদা সাহায্য করে। তাই আদা ব্যবহার করতে পারেন। 

চা পাতা তেলঃ মাড়ি সমস্যার জন্য আরেকটি উল্লেখযোগ্য উপকরণ হচ্ছে চা পাতার তেল। এই তেল দাঁতের গোড়ায় সুন্দর করে আলতোভাবে মালিশ করে নিন। কিছুক্ষণ পর আপনি মাড়ির ফোলা অস্বস্তির হাত থেকে মুক্তি পাবেন। এতে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। আপনি চাইলে ব্যবহার করতে পারবেন। কোলো রকম সমস্যা হবে না। 
 
প্রিয় বন্ধুরা আজকে আমি দাঁতের মাড়ি ফোলা কমানো উপায় জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি এই উপায় গুলো আপনি নিয়মিত পালন করলে আপনার দাঁতের মাড়ি ফোলা অবশ্যই কমে যাবে। এইগুলো নিয়মিত ব্যবহারের ফলে যদি আপনার মাড়ি ব্যথা না কমে, তাহলে আপনি অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তাহলে অনেক ভালো হবে।

কোন ভিটামিনের অভাবে দাঁতের মাড়ি ফুলে যায়

দাঁত এবং দাঁতের মাড়ি সুস্থ রাখার জন্য মুখ সবসময় আমাদের পরিষ্কার রাখতে হবে। অপরিষ্কার থাকলে দাঁতের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিবে। দাঁতের মাড়ি ভালো রাখতে হলে আপনাকে প্রয়োজনে ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। আজকের আলোচনায় আমরা আপনাদের সাথে বলতে চলেছি যে কোন ভিটামিনের অভাবে দাঁতের মাড়ি ফুলে যায়। চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নিন।

দাঁতের মাড়ি যে ভিটামিনের অভাবে ফুলে যায় সেগুলো হচ্ছে ভিটামিন ডি, ভিটামিন সি, ডেফিসিয়েন্সি এবং প্রেগনেন্সির সময় প্রেগনেন্সি জিনজিভাইটিসের কারণে দাঁতের মাড়ি ফুলে যেতে পারে। এইগুলো ভিটামিনের অভাবে দাঁতের মাড়ি ফুলে যায়।

যেসব ভিটামিন দাঁতের মাড়ি ভালো রাখেঃ

ভিটামিন-এঃ ভিটামিন এ মাড়ির স্বাস্থ্য কে খুব ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং মুখের যে লালা রয়েছে সে লালা প্রবাহকে ভালো রাখে। সবুজ শাকসবজি, গাজর, আম, মিষ্টি, আলু, মাছের তেল ইত্যাদি এগুলোতে ভিটামিন-এ থাকে। এগুলো আপনি খেলে আপনার দাঁত অনেক সুস্থ থাকবে।

ভিটামিন-বিঃ মুখের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে ভিটামিন বি অনেক কার্যকারী। এইটা জিব্বার ঘা প্রতিরোধ করতে বেশ সাহায্য করে। সবুজ শাকসবজি, সিম, মাংস, মটরশুঁটি ইত্যাদিতে এই ভিটামিন বি রয়েছে।

ভিটামিন-সিঃ মাড়ি এবং দাঁত দুটোই মজবুত করতে এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে মুক্তি রাখতে এই ভিটামিন সি অনেক উপকারী। এই ভিটামিন সি এর অভাবে মাড়িতে রক্তপাত হতে পারে। সেজন্য ভিটামিন সি খাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। আমলকি, কমলালেবু, পিয়ারা, কাঁচা মরিচ ইত্যাদিতে এই ভিটামিন সি পাওয়া যায়। 

ভিটামিন-ডিঃ ভিটামিন ডি এ অনেক ক্যালসিয়াম রয়েছে। এটি শরীরের হার ও দাঁতের জন্য বেশ উপকারী। এছাড়াও মাড়ি মজবুত রাখতে এই ভিটামিন অনেক প্রয়োজন। ভিটামিন ডি ভালো পরিমানে থাকলে মাড়ির রোগ প্রতিরোধ করতে বেশ ভালো সাহায্য করবে। সূর্যের আলোতে  ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। এটি একটি ভালো উৎস। এছাড়াও রয়েছে মাছ, ডিম এগুলোতো ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। 

ভিটামিন-কেঃ শরীরে রক্ত জমাট বাঁধতে বেশ সাহায্য করে ভিটামিন কে। ভিটামিন কে এর অভাবে  রক্তপাত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এটির অভাব কখনোই করা যাবে না। সবুজ শাকসবজি সয়াবিন এগুলোতে ভিটামিন কে রয়েছে। এইগুলো খেতে পারেন ভিটামিন কে অভাব পড়লে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন। 

দাঁতের মাড়ি ফুলে গেলে করণীয়

মুখের দাঁত ও মাড়ির সমস্যা থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শে সমাধান করতে হবে। রাতে ঘুমানোর আগে ও সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর দিনে দুইবার করে ব্রাশ করতে হবে। মুখ সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। তাহলে মুখের কোন সমস্যা হবে না। মুখে যদি দন্ত-পাথর জমে থাকে তাহলে স্কেলিং করতে হবে। আবার আপনি যদি মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করেন তাহলে মাড়ি ফোলা রোধ করা যায়। 

এই সমস্যাগুলো বেশিরভাগ দেখা যায় নারীদের মাঝে। কেননা তারা প্রেগনেন্সি জিনটিভাইটিস ও ভিটামিন ডি ডেফিসিয়েন্সির শিকার হয়ে থাকেন। অন্যদিকে আবার বাচ্চাদের ক্ষেত্রে মাড়ির থেকে দাঁতের প্রদাহ ও বেশি দেখা যায় যাকে বলা হয় পালপাইটিজ। বাচ্চাদের এই ধরনের সমস্যা যাতে না হয় সেজন্য মাকে বেশি সচেতন থাকতে হবে। 

প্রেগনেন্সির যে ৯ মাস থাকে সেই নয় মাস মাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিনযুক্ত খাবার খেতে হবে। মুখ সবসময় সুন্দর করে পরিষ্কার রাখতে হবে। এমনকি বাচ্চা কেউ খাওয়ার আগে ও পরে সুন্দর করে মুখ পরিষ্কার করে দিতে হবে। যদি আপনি নিজে ও বাচ্চার মুখ সবসময় পরিষ্কার না রাখেন তাহলের মাড়ি ফুলে যেয়ে সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেজন্য এইগুলো বিষয়ে সতর্ক থেকে কাজ করতে হবে।  
  • মাড়ি ফোলা সমস্যা দূর করতে অবশ্যই আপনাকে টুথপেস্ট ব্যবহার করতে হবে। টুথপেস্ট বা মাউথ ওয়াশ আপনি ১০ থেকে ১৫ ভাগ সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।
  • মাড়ি ফোলা রোধে লবণ পানি বেশ কার্যকরী। তবে শুধু যে লবন পানি ব্যবহার করলে হবে তেমন নয়। অন্য পদ্ধতির সঙ্গেও আপনি লবণ পানি ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনার মাড়ি ফোলা অনেক উপকার পাবেন।
মারি ফোলার সমস্যা দূর করতে আপনাকে নিয়মিত প্রতিদিন ব্রাশ করতে হবে। যদি আপনি যথাযথভাবে নিয়মিত ব্রাশ করেন। তাহলে আপনার দাঁত ও মাড়ি কোনরকম সমস্যা দেখা দিবে না। যদি কোন ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে সমস্যাটা ঠিক হতে কিছুটা বাধা সৃষ্টি হতে পারে। দাঁতের মাড়ি ফুলে গেলে করণীয় কি সেগুলো সম্পর্কে আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

দাঁতের মাড়ি ফোলা ও ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়

দাঁতের মাড়ি ও দাঁত ব্যথা হলে কতটা যে যন্ত্রণাদায়ক তা ভুক্তভোগীরাই জানেন। সামান্য পরিমাণে যদি মাড়ি ব্যথা হয় তাহলে কমে যায়। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যথা হলে সেটার যন্ত্রণা ভয়াবহ হয়। কখনো কখনো দাঁতের মাড়িতে জীবাণু সংক্রমনের কারণে এই ধরনের ব্যথা সৃষ্টি হয়। এই ব্যথা সৃষ্টি হওয়ার কারণে দাঁতেরও সমস্যা হয়ে থাকে। 

এই তীব্র ব্যথা যদি আপনার হয় তাহলে আপনি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। তাহলে খুব দ্রুত সমাধান পেয়ে যাবেন। তবে দাঁতের মাড়ি ফোলা ও ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে কিছু টিপস দিব আশা করি এগুলো নিয়মিত করলে উপকার পাবেন। চলুন তাহলে দেরি না করে জেনে নিন।

লবঙ্গঃ আমরা অবশ্যই লবঙ্গ চিনে থাকি কিন্তু এই লবঙ্গ যে দাঁতের মাড়ি ব্যথা কমাতে পারে সেটা কি জানি? এই লবঙ্গ মাড়ির ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে খুব ভালোভাবে যুদ্ধ করে সেই ব্যথাগুলো কমাতে সাহায্য করে। কয়েকটি লবঙ্গ যদি আপনি চিবান তাহলে অনেকটা আরাম পাবেন।

লেবুঃ দাঁতের ব্যথার জন্য আরেকটি কার্যকারী হচ্ছে লেবু। লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি এটি দাঁতের স্বাস্থ্যর জন্য খুব ভালো। যদি দাঁতের কোন ব্যাথা হয় তাহলে সেই ব্যথা দূর করতে লেবুর রস মাড়িতে লাগাতে পারেন। তাহলে খুব দ্রুত এটির ভালো ফল পাবেন।

কাঁচা রসুনঃ মাড়ির ব্যথার জন্য কাচা রসুন অনেক কার্যকরী একটি উপাদান। কাঁচা রসুন সুন্দর করে থেঁতলে করে নিয়ে মাড়ির ভিতরে লাগিয়ে রাখুন কিছুক্ষণের জন্য তাহলে মাড়ি ব্যথা কমে যাবে। 

পেঁয়াজ দাঁতের ব্যথা ও বাড়ির ব্যথা দূর করতে পিয়াজ অনেক কাজে দেয় পেঁয়াজ ব্যাকটেরিয়া সঙ্গে খুব ভালোভাবে লড়াই করে এক টুকর ো পিঁয়াজ এক থেকে দুই মিনিট জীবাণুর পর ফেলে দিন তাহলে ব্যথা কিছুটা কমে যাবে।

হলুদঃ মাড়ি ফোলা দূর করতে হলুদ খুব ভালো একটি ঘরোয়া উপাদান। এটির মধ্যে রয়েছে কারকিউমিন। হলুদের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহ রোধী উপাদান ব্যথা ও ফোলা ভাব দূর করতে বেশ সাহায্য করে। 

প্রিয় বন্ধুরা ওপরে আমরা আলোচনা করেছি যে দাঁতের মাড়ি ফোলা ও ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। অনেক মানুষ এই সমস্যায় ভুগছেন। এই সমস্যা দূর করতে কিছু ঘরোয়া টিপস আপনাদের সামনে উপস্থাপনা করেছি। আশা করি এই সকল ঘরোয়া উপায় আপনি যদি নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন তাহলে অনেক উপকার পাবেন। যদি আপনার এগুলো টিপস নিয়মিত কাজ করার পর ভালো না হয়, তাহলে আপনি অবশ্যই দ্রুত অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

দাঁতের মাড়ি ফোলা কমানোর ঔষধ

দাঁতের মাড়ি ফোলা যে যন্ত্রণাদায়ক সেটা যার হয় সে বোঝে। আসলে এটার কারণ হচ্ছে অযত্ন। নিয়মিত ব্রাশ না করার ফলে এই ভয়াবহ যন্ত্রণাদায়ক ব্যথা সৃষ্টি হয়। এটা কিভাবে নির্ণয় করবেন এটা আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে। দাঁতের মাড়ি ফোলা কমানো ওষুধ সম্পর্কে আমরা আজকে এই আর্টিকেলে আলোচনা করব। এই ভয়াবহ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অনেক মানুষ অনেক চিকিৎসা করে থাকেন। এই সমস্যা হলে দাঁত অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আপনাকে কোনো দক্ষ চিকিৎসকের কাছে যে দাঁত পরীক্ষা করে নিতে হবে এবং দাঁতে হালকা টোকা মেরে স্পর্শের ও চাপের প্রতি তার সংবেদনশীলতা দেখাতে হবে। দাঁতের মাড়ি ফোলা অন্যান্য পরীক্ষার মধ্যে রয়েছে,
  • সর্বপ্রথম এক্সরে করে নিতে হবে। তারপর দাঁতের ফোলা ভাব চিহ্নিত করতে হবে এবং কতটা সংক্রমণ ছড়িয়েছে তা বোঝা যাবে।
  • আপনার দাঁতের মাড়ির সমস্যার কারণে সিটি স্ক্যানের ও নির্দেশ দেওয়া হতে পারে।
সংক্রমনের বিস্তার বন্ধ করতে কয়েকটি চিকিৎসার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এই পদ্ধতি গুলো অবশ্যই আপনার জানা প্রয়োজন এর মধ্যে রয়েছে,
  • ইনজেকশন ও ড্রেনেজ।
  • আন্টিবায়োটিক।
  • দাঁত তুলে ফেলা।
  • রুট ক্যানাল চিকিৎসা।
আপনি নিয়মিত দাঁতের যত্ন নিলে কোনো রকম মাড়ি ফোলা বা অন্যান্য কোন সমস্যা দাঁতের মধ্যে হবে না। এই যত্নে যা করতে পারেন,
  • খাওয়ার পরে লবণ পানি দিয়ে মুখ সুন্দর করে কুলকুচি করে নিবেন। যাতে করে মুখের ভেতর করা কোনো খাদ্য মুখে থেকে না যায়। 
  • পেইনকিলার খেতে পারেন এইটা (ব্যথার ওষুধ)।
  • সকালে ঘুম থেকে উঠে ও রাতে ঘুমানোর আগে টুথপেস্ট দিয়ে ব্রাশ করে নিবেন। এতে করে দাঁত ও দাঁতের মাড়ি পরিষ্কার ও সুন্দর থাকবে।
  • সুষম খাদ্য খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে করে মুখের সংক্রমণ ও দুর্গন্ধের সম্ভাবনা কম থাকবে।
  • আন্টিসেপ্টিক মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন এতে করে আপনার দাঁত অনেক ভালো থাকবে কোন রকম সমস্যা হবে না।
প্রিয় বন্ধুরা পূর্বে আমরা আলোচনা করেছি যে দাঁতের মাড়ি ফোলা ও ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। এখন জেনে নিয়েছি যে দাঁতের মাড়ি ফোলা কমানোর ওষুধ গুলো সম্পর্কে আশা করি এ সকল বিষয় আপনি বুঝতে পেরেছেন। কয়েকটি ওষুধের নাম এবং পরামর্শ দিয়েছি এগুলো সেবন এবং প্রয়োগ করার আগে অবশ্যই দক্ষ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সেবন এবং প্রয়োগ করবেন। আশা করি বিষয়গুলো বুঝাতে পেরেছি।

দাঁতের মাড়ি দিয়ে  রক্ত পড়লে করণীয় কি

অনেকেরই দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ে থাকে। মুখ দিয়ে কোনো কিছু খেলে দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত বের হয়। এমনকি ব্রাশ করার সময়ও এ সমস্যা হয়ে থাকে। এই সমস্যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হয়ে থাকে জিনজিভাইটিস বা মাড়ির প্রদাহ। দাঁত থেকে রক্তপাত হওয়াটা খুব স্বাভাবিক একটি রোগ। কিন্তু শুরুতেই আপনি যদি ডেন্টিস্টের কাছে যে নিরময় করে নেন তাহলে এটা সহজেই প্রতিকার পাওয়া যায়।  

মূলত মাড়িতে কোনো রকম সংক্রমণ থাকলে এই সমস্যা হয়। সাধারণত দাঁতের কোন জায়গায় খাদ্য কণা জমে থাকলে সেখানে ব্যাকটেরিয়া জন্ম হয়। আর এই ব্যাকটেরিয়া থেকে এক ধরনের টক্সিক্রেটের কারণে রক্তপাত হয়ে থাকে। আবার অনেকেরই শুরুতে দাঁতের ওপরে একটি সাদা বর্ণের আস্তর জন্মায় যেটিকে বলা হয়ে থাকে ডেন্টাল প্লাগ। ধীরে ধীরে সেটা ক্যালকুলাসে বা পাথরে পরিণত হয়। প্রাথমিক অবস্থায় চোখে দেখা যায় না এমন পাথর হয়। 

কিন্তু এক পর্যায়ে সেটা বড় হয়ে দাঁতের রক্ত বাদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এইটা হয় নিয়মিত দাঁত ব্রাশ না করার কারণে। আপনি যদি নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করেন তাহলে এইগুলো সমস্যা একটুও হবে না। দাঁত ও মাড়ির মাঝখানে অবস্থান করে ক্যালকুলাস এবং এইটা প্রতিনিয়ত নরম মাড়ির সাথে সংঘর্ষের কারণে খুব সহজেই মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় এর কারণে মাড়ি ফুলে অনেক যন্ত্রণা হয়। জোরে জোরে ব্রাশ করলে এগুলো সমস্যা হবে। 

দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়লে করণীয় কি এ সম্পর্কে নিচে আরো বলা হয়েছে। দাঁতের স্কেলিং করতে হবে। স্কেলিং এর পর সাধারণত রক্তপাত হয় না। এইটা ছয় মাস পর পর করাতে হবে। স্কেলিং করলে দাঁতের মাড়ির ক্ষয় হয়। এরকম ধারণা সঠিক নয়। প্রতিদিন সকালে নাস্তার পরে ও রাতে ঘুমানোর আগে ব্রাশ করতে হবে। এতে করে দাঁত পরিষ্কার থাকবে এবং রোগ জীবাণু খুব কম হবে। ভালো মানের পেস্ট এবং ভালো মানের ব্রাশ ব্যবহার করবেন। একটা পেস্ট অনেকদিন পর্যন্ত ব্যবহার করবেন না। 

প্রচুর পরিমাণে পানি খাবেন। দিনে অন্তত ৩ লিটার পানি খাবেন। তাহলে দাঁত বাদেও শরীরের অন্যান্য সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভালো থাকবে। দাঁতের সুস্থতার জন্য সুষম খাবার খেতে হবে। আঁশযুক্ত খাবার খেতে পারেন যেমন সবুজ শাক-সবজি দাঁতের জন্য অনেক ভালো। নিয়মিত ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন। এছাড়াও আমলকি, কমলালেবু, আমড়া, লেবু এগুলো ফলে ভিটামিন সি থাকে। দুই বেলায় দাঁত পরিষ্কার রাখতে হবে। মাঝেমধ্যে মাউথ ওয়াশ দিয়ে যদি কুলি করবেন তাহলে মুখের দুর্গন্ধ আর হবে না।

দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়লে করণীয় কি এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। এইখানে সঠিক একটি ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি পড়ে আপনি অনেক উপকৃত হবেন। যদি এইগুলো সম্পর্কে আপনি ধারণা নিয়ে নিয়মিত কাজ করেন তাহলে অবশ্যই ভালো ফলাফল পাবেন। যদি লেখার মধ্যে ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তাহলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন। (ধন্যবাদ)

লেখকের মন্তব্য 

প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আশা করি দাঁতের মাড়ি ফোলা ও ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় এবং দাঁতের মাড়ি ফোলা কমানোর ঔষধ সে ব্যাপারে একটি সুস্পষ্ট ধারণা দিতে সক্ষম হয়েছি। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এই আর্টিকেলটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করলে আপনার বন্ধুরাও জানতে পারবে। তাই দেরি না করে আপনার বন্ধুদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করুন। 

এই রকম আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার কোনো মতামত জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে সেটা জানিয়ে যাবেন। (ধন্যবাদ) আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪