কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনার যদি না জানা থাকে। তাহলে
আজকের এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। আমরা সবাই কাঁচা বাদাম দেখে থাকি এবং খেয়ে
থাকি। কিন্তু কাঁচা বাদাম খেলে শরীরের কি উপকার হয় সেই সম্পর্কে আমাদের জানা নেই।
সেজন্য আমি আজকে একটি সঠিক ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবো। তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ
সহকারে পড়ুন।
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন। তাহলে ভেজা বাদাম খাওয়ার
উপকারিতা সে বিষয়েও সঠিক ধারণা পেয়ে যাবেন। এইগুলো সম্পর্কে আমাদের ধারণা রাখা
প্রয়োজন। তাই দেরি না করে চলুন জেনে নেয়া যাক বিষয়গুলো।
ভূমিকা
কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেরই জানা নেই। কাঁচা বাদাম
আমাদের ডায়েটের একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর অংশ। এগুলি ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার
এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সমৃদ্ধ। প্রতিদিন এক মুঠো (প্রায় ৩০ গ্রাম) কাঁচা বাদাম
খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে, আপনার যদি কোনও অ্যালার্জি বা অন্যান্য
স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে, তাহলে কাঁচা বাদাম খাওয়ার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে
পরামর্শ করা উচিত।
সকালে কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
শরীরের জন্য এই কাঁচা বাদাম অনেক ভালো একটি খাবার। এই কাঁচা বাদামে রয়েছে
অনেকটাই প্রোটিন যা আপনার শরীরের জন্য অনেক কার্যকরী। তবে যাদের হজমের সমস্যা
রয়েছে তারা কাঁচা বাদাম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। হজমের সমস্যা হলে ভাজা বাদাম
খেতে পারেন কাঁচা নয়।
এই কাঁচা বাদাম হাড় মজবুত করতে খুব ভালো কাজ করে। দাঁতের ক্ষয় আটকাতেও বাদাম
অনেক কার্যকারী। যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন তাদের জন্য কাঁচা বাদাম অনেক
বেশি উপকারী। কাঁচা বাদামের মধ্যে ভিটামিন ই রয়েছে যা ত্বকের জন্য অনেক
ভালো। নিয়ম ভাবে যদি বাদাম খেয়ে থাকেন তাহলে শরীর সতেজ থাকবে ও উজ্জ্বলতা
বাড়বে।
নিয়মিত যে সকল মানুষ সকালে কাঁচা বাদাম খেয়ে থাকেন তাদের শরীরে অনেক পুষ্টি
হয়ে থাকে। আমরা অনেকেই জানিনা যে সকালে কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
সম্পর্কে। এই সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই ধারণা রাখা উচিত। কারণ আমাদের শরীরে অনেক
পুষ্টির অভাব হয়ে থাকে। সেই অভাব পূরণ করতে আমাদের কি কি করনীয় সেগুলো অবশ্যই
জেনে রাখা ভালো।
কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনার যদি ধারণা না থাকে।
তাহলে এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। আজকে আমরা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন তাহলে দেরি না করে জেনে নেয়া যাক সে সকল
বিষয়সমূহ।
কাঁচা বাদামে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান থাকে, যেমনঃ
ভিটামিন ইঃ মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা অনেক বেশি শক্তিশালী করে।
ভিটামিন বি-কমপ্লেক্সঃ শরীরের স্থায়ী শক্তির উৎস এই ভিটামিন
বি-কমপ্লেক্স।
মিনারেলঃ ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন,
জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, সেলেনিয়াম এই গুলো পাওয়া যায়।
ফাইবারঃ হজমশক্তি উন্নত করতে ফাইবার সাহায্য করে।
স্বাস্থ্যকর ফ্যাটঃ হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।
প্রোটিনঃ পেশী বৃদ্ধি ও মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় হয়ে থাকে
প্রোটিন। আর এই প্রোটিন বাদামে পাওয়া যায়।
সকালে কাঁচা বাদাম খাওয়ার কিছু উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিনঃ
মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধিঃ কাঁচা বাদামে থাকে ভিটামিন ই ও
বি-কমপ্লেক্স। যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে পারে। কাঁচা বাদাম
স্মৃতিশক্তি উন্নত করে এবং মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ কাঁচা বাদামে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেক বেশি সাহায্য করে।
হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যঃ কাঁচা বাদামে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট
হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এটি খারাপ কোলেস্টেরলের (LDL) মাত্রা
কমিয়ে দিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের (HDL) মাত্রা বৃদ্ধি করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণঃ কাঁচা বাদামে থাকা ফাইবার রক্তে
শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণঃ কাঁচা বাদাম দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা রাখে, যার
ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধঃ কাঁচা বাদামে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
হাড়ের স্বাস্থ্যঃ কাঁচা বাদামে থাকা ক্যালসিয়াম হাড়ের
স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ কাঁচা বাদামে থাকা ভিটামিন ই ও
অন্যান্য মিনারেল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
কতটুকু বাদাম খাওয়া উচিতঃ
- প্রতিদিন সকালে ১০-১২ টি কাঁচা বাদাম ভিজিয়ে খাওয়া যেতে পারে। বেশি খেলে পেট খারাপ হতে পারে।
কিছু টিপসঃ
- বাদাম ভিজিয়ে খাওয়া ভালো।
- বাদাম ভেজানোর জন্য ঠান্ডা পানি ব্যবহার করুন।
- বাদাম লবণ ছাড়া খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- বাদাম খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
সতর্কতাঃ
যাদের বাদামে অ্যালার্জি আছে। তারা বাদাম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
কাঁচা বাদাম খাওয়ার নিয়ম
কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে উপরে সুন্দর একটি ধারণা
দিয়েছি। এখন আমরা কাঁচা বাদাম খাওয়ার নিয়ম গুলো জেনে নিবো । কাঁচা বাদামে
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, শর্করা, ক্যালসিয়াম, যা শরীরের জন্য ভালো
কার্যকারী। সকালের দিকে খালি পেটে ভেজানো বাদাম সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যকর বলে
মনে করেন পুষ্টিবিদরা। রাতের খাবারের সাথেও কাঁচা বাদাম রাখতে পারেন। রাতে
খেলেও অনেক উপকার পাওয়া যায়। বাদাম অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়া যাবে না।
প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ টি কাঁচা বাদাম খাওয়া উচিত। বেশি খেলে হজমের সমস্যা হতে
পারে। কিভাবে খেতে হয় এগুলো বিষয় অনেকেরই জানা নেই। চলুন কিভাবে খেতে হয়
সেটা সম্পর্কেও জেনে নেই। রাতে ঘুমানোর আগে বাদাম ভিজে রাখবেন। সকালে খালি পেটে
সেই বাদাম খাবেন। বাদাম খাওয়ার সময় অবশ্যই চিবিয়ে খাবেন এতে করে আরও বেশি
উপকার পাবেন। বাদামের খোসা খাবেন না ফেলে দিবেন।
কাঁচা বাদাম যাদের জন্য উপকারীঃ
- যাদের হৃদরোগের ঝুঁকি আছে তাদের এই কাঁচা বাদাম খাওয়া অনেক উপকার।
- যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য অনেক উপকার।
- যাদের ওজন কম তারা কাঁচা বাদাম খেয়ে দেখতে পারেন। কারণ কাঁচা বাদাম ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- যে সকল মানুষের কোলেস্টেরলের সমস্যা রয়েছে। তারা কাঁচা বাদাম খেতে পারেন।
- মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা যাদের কম রয়েছে। তারা কাঁচা বাদাম খাবেন। কারণ কাঁচা বাদাম মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
কাঁচা বাদাম যাদের জন্য ক্ষতিকরঃ
- যাদের বাদামের অ্যালার্জি আছে। তারা এই কাঁচা বাদাম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- যাদের হজমের সমস্যা আছে। তারাও খাবেন না।
- যাদের কিডনির সমস্যা আছে। তারা এই কাঁচা বাদাম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতাগুলো কি কি
কাঁচা বাদামের মধ্যে যে প্রোটিন রয়েছে সেটা আমাদের শরীরের মাংসের পরিমাণ
বাড়িয়ে তোলে। যে সকল মানুষ প্রতিদিন শরীরচর্চা করে তাদের জন্য কাঁচা
বাদাম খুবই ভালো একটি খাবার। এর কারণ হচ্ছে শরীরচর্চা করার পরে শরীর অনেক
প্রোটিনের প্রয়োজন হয়। আর সেই প্রোটিন অনায়াসে আপনি বাদামে পেয়ে যাবেন।
আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে সমস্ত কিছু জানিয়ে দেয়ার চেষ্টা করব। চলুন
তাহলে জেনে নেওয়া যাক কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতাগুলো কি কি সেই
সম্পর্কে।
১. পুষ্টিগুণঃ
- কাঁচা বাদাম প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন (ই, বি৬, নিয়াসিন), খনিজ (ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম) এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ।
- এতে থাকা মনো-অ্যানস্যাচুরেটেড এবং পলি-অ্যানস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড হৃৎপিণ্ডের জন্য ভালো।
- কাঁচা বাদামে থাকা ফাইবার হজমশক্তি উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
২. স্বাস্থ্য উপকারিতাঃ
হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারীঃ কাঁচা বাদামে থাকা "ভালো"
ফ্যাট (মনো-অ্যানস্যাচুরেটেড এবং পলি-অ্যানস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড) খারাপ
কোলেস্টেরল (LDL) কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়াতে সাহায্য করে। এটি
হৃৎপিণ্ডের রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: কাঁচা বাদামে থাকা ফাইবার
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে: কাঁচা বাদামে থাকা
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করে।
ওজন কমাতে সাহায্য করে: কাঁচা বাদামে থাকা ফাইবার এবং প্রোটিন
দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা রাখে, ফলে ক্ষুধা কম অনুভূত হয় এবং ওজন কমাতে
সাহায্য করে।
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী: কাঁচা বাদামে থাকা ভিটামিন E এবং
B6 মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে।
ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী: কাঁচা বাদামে থাকা ভিটামিন E ত্বক ও
চুলের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
কাঁচা বাদাম খাওয়ার অপকারিতা
পূর্বে আপনি দেখে আসচ্ছেন যে আমরা কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও
অপকারিতা গুলো কি কি। এখন আপনাদের অবশ্যই কাঁচা বাদাম খাওয়ার অপকারিতা
সম্পর্কে জানার আগ্রহ রয়েছে। আমরা সকলেই জানি যে কাঁচা বাদাম খেতে অনেক
সুস্বাদু এই কাঁচা বাদামে অনেক উপকারিতা রয়েছে। এইগুলো জেনে থাকি। কিন্তু
আমরা জানি না যে কাঁচা বাদাম খাওয়ার অপকারিতাও গুলো কি কি। চলুন আজকে
সেগুলো বিষয়ের উপর একটি সঠিক ধারণা দেয়া চেষ্টা করব।
১. অ্যালার্জিঃ
- কাঁচা বাদাম কিছু লোকের জন্য অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে।
- অ্যালার্জির লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে: চুলকানি, ফোলাভাব, বমি বমি ভাব, এবং শ্বাসকষ্ট।
২. ওজন বৃদ্ধিঃ
- কাঁচা বাদামে ক্যালোরির পরিমাণ বেশি থাকে।
- অতিরিক্ত কাঁচা বাদাম খাওয়া ওজন বৃদ্ধি করতে পারে।
৩. হজমে সমস্যাঃ
- কিছু লোকের কাঁচা বাদাম হজম করতে সমস্যা হতে পারে।
- অতিরিক্ত কাঁচা বাদাম খাওয়া পেট ফাঁপা, গ্যাস এবং বমি বমি ভাবের কারণ হতে পারে।
৪. লবণের পরিমাণঃ
- বাজারে বিক্রি হওয়া কিছু কাঁচা বাদামে লবণের পরিমাণ বেশি থাকে।
- অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
ভেজা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
পুষ্টিগুণ বৃদ্ধিঃ ভেজানো বাদামে ফাইটেজ নামক এনজাইমের পরিমাণ
কমে যায়, যা পুষ্টি উপাদান শোষণে বাধা সৃষ্টি করে। ভেজানোর ফলে খনিজ পদার্থ,
যেমন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং দস্তা, ভিটামিন B6, E এবং ফলিক
অ্যাসিডের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করে।
হজমশক্তি উন্নত করেঃ ভেজানো বাদামে ফাইবারের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়,
যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। বাদামে থাকা স্বাস্থ্যকর চর্বি হজম
প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়ঃ ভেজানো বাদামে থাকা অসম্পৃক্ত চর্বি LDL
(খারাপ) কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে HDL (ভালো) কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি
করে। এতে থাকা পটাসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
মধুমেহ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেঃ ভেজানো বাদাম রক্তে শর্করার
মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।এতে থাকা ফাইবার রক্তে শর্করা শোষণের
হার কমিয়ে দেয়।
ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ ভেজানো বাদাম দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা
রাখে, ফলে অতিরিক্ত খাওয়া কমে। এতে থাকা স্বাস্থ্যকর চর্বি ও
ফাইবার ওজন কমাতে সাহায্য করে।
মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করেঃ ভেজানো বাদামে থাকা ভিটামিন
E এবং ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের কোষের ক্ষতি রোধ করে স্মৃতিশক্তি ও
মনোযোগ বৃদ্ধি করে।
ত্বক ও চুলের জন্য উপকারীঃ ভেজানো বাদামে থাকা ভিটামিন E ত্বকের
বয়সের ছাপ দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল করে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলের
ক্ষতি রোধ করে চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
কিছু টিপস নিচে দেওয়া হলোঃ
- রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে বাদাম ভিজিয়ে সকালে খালি পেটে খান।
- বাদাম ভেজানোর জন্য ঠান্ডা পানি ব্যবহার করুন।
- বাদাম বেশি ভিজিয়ে রাখবেন না, কারণ এতে পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে।
- আপনার ডায়েটে নিয়মিত ভেজানো বাদাম অন্তর্ভুক্ত করুন।
সতর্কতাঃ
যদি আপনার কোনো খাদ্য অ্যালার্জি থাকে, তাহলে বাদাম খাওয়ার আগে ডাক্তারের
পরামর্শ নিন। বাদাম অতিরিক্ত খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত কোনো
কিছুই ভালো না। ওজন বৃদ্ধি ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে।
উপসংহারঃ
ভেজানো বাদাম স্বাস্থ্যর জন্য অনেক ভালো। ভেজানো বাদাম খেলে শরীরের অনেক
পুষ্টির ঘাড়তি পূরণ হয়। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে না খেয়ে সঠিক নিয়মে ভেজানো
বাদাম খেতে পারেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে খেলে অনেক উপকার পারেন এবং রাতে
ঘুমানোর আগে খাবেন। কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
এবং ভেজা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আশা করি সঠিক ধারণা পেয়েছেন।
খালি পেটে চিনা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
খালি পেটে চিনা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই জানা নেই। যা
আজকে আলোচনা করব। এই চিনা বাদাম খেলে শরীরের বিভিন্ন কাজে দেয় যেমন মস্তিষ্কের
কার্যকারিতা উন্নত করতে এই চিনা বাদাম অনেক সাহায্য করে। চিনা বাদামে রয়েছে
প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা আপনার অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত রাখবে। চলুন আজকে
চিনা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন।
১) ওজন কমাতে সাহায্য করে: চিনা বাদামে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে
যা আপনাকে দীর্ঘ সময় ধরে পূর্ণ বোধ করতে সাহায্য করে এবং অতিরিক্ত খাওয়া থেকে
বিরত রাখে।
২) হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো: চিনা বাদামে থাকা
মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের জন্য
ভালো। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং খারাপ কোলেস্টেরলের (LDL) মাত্রা
কমাতে সাহায্য করে।
৩) রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে: চিনা বাদামে থাকা
ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এটি ডায়াবেটিস
রোগীদের জন্য উপকারী।
৪) মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে: চিনা বাদামে
থাকা ভিটামিন E এবং B6 মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি
স্মৃতিশক্তি এবং মনোযোগের উন্নতি করতে পারে।
৫) হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো: চিনা বাদামে থাকা
ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এটি হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে এবং
অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
৬) ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে: চিনা বাদামে থাকা
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।
৭) ত্বক ও চুলের জন্য ভালো: চিনা বাদামে থাকা ভিটামিন
E ত্বক ও চুলের জন্য ভালো। এটি ত্বকের বয়সের ছাপ দূর করতে এবং চুলের ঝরে পড়া
রোধ করতে সাহায্য করে।
৮) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: চিনা বাদামে থাকা
ভিটামিন B6 এবং জিঙ্ক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
কতটুকু খাওয়া উচিতঃ
- প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ৫-৬ টি চিনা বাদাম খাওয়া যেতে পারে। বেশি খাওয়া উচিত নয়।
কারা খাবেন নাঃ
- যাদের বাদামে অ্যালার্জি আছে তারা খাবেন না।
- যাদের পেটের সমস্যা রয়েছে তারা চিনা বাদাম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- যারা ওজন বৃদ্ধি করতে চান। তারা চিনা বাদাম না খেয়ে কাঁচা বাদাম খেতে পারেন। তাহলে ওজন বৃদ্ধি হবে।
দ্রষ্টব্যঃ
- বাদাম খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে নিন।
- বাদাম কাঁচা বা হালকা ভেজে খান।
- বাদাম বেশি খেলে পেট খারাপ, বমি বমি ভাব, এবং ডায়রিয়া হতে পারে।
কাঁচা ছোলা ও বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
কাঁচা ছোলা এবং বাদাম এই দুটি খাবার আমাদের কাছে প্রিয়। আমরা অনেকেই এই
দুটো খাবার অনেক বেশি পছন্দ করে থাকি। কিন্তু কিছু মানুষ রয়েছে ছোলা খেয়ে
থাকে। আবার কিছু মানুষ রয়েছে বাদাম খেয়ে থাকে। কিন্তু ছোলা এবং বাদাম এ
দুটি একসাথে খেলে যে উপকার হবে সেগুলো হয়তো আমাদের জানা নেই। যা আজকে
আলোচনা করব। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক কাঁচা ছোলা ও বাদাম খাওয়ার
উপকারিতা।
কাঁচা ছোলাঃ
হজম উন্নত করেঃ কাঁচা ছোলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা
হজমশক্তি বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এতে থাকা
ফাইবার পেট ভরা রাখে এবং অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত রাখে।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করেঃ কাঁচা ছোলা রক্তে শর্করার
মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা ফাইবার শর্করার শোষণ ধীর
করে দেয় এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়ঃ কাঁচা ছোলা খারাপ কোলেস্টেরলের
(LDL) মাত্রা কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরলের (HDL) মাত্রা বাড়াতে সাহায্য
করে। এতে থাকা ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের জন্য
উপকারী।
ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ কাঁচা ছোলায় প্রোটিন এবং ফাইবার থাকে
যা পেট ভরা রাখে এবং অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত রাখে। এতে ক্যালোরি কম থাকে
এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ কাঁচা ছোলায় প্রচুর পরিমাণে
ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।এতে থাকা
ভিটামিন সি এবং এ ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে।
বাদামঃ
মস্তিষ্কের জন্য উপকারীঃ বাদামে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-3 ফ্যাটি
অ্যাসিড থাকে যা মস্তিষ্কের জন্য উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন ই মস্তিষ্কের
কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের জন্য ভালোঃ বাদাম খারাপ কোলেস্টেরলের (LDL)
মাত্রা কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরলের (HDL) মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। এতে
থাকা মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ বাদামে প্রোটিন এবং ফাইবার থাকে যা পেট ভরা
রাখে এবং অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত রাখে। এতে ক্যালোরি কম থাকে এবং ওজন
কমাতে সাহায্য করে।
ত্বক ও চুলের জন্য উপকারীঃ বাদামে ভিটামিন ই থাকে যা ত্বক ও চুলের
জন্য উপকারী। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের বয়সের ছাপ দূর করতে
সাহায্য করে।
হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ভালোঃ বাদামে ক্যালসিয়াম এবং
ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এতে থাকা ভিটামিন
হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
লেখকের মন্তব্য
এই রকম আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার কোনো মতামত জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে সেটা জানিয়ে যাবেন। (ধন্যবাদ) আসসালামু আলাইকুম।
এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url