কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় - কোমরের ব্যথা কমানোর ব্যায়াম
কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আপনার যদি না জানা থাকে। তাহলে আজকের
এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। অনেক মানুষের এই কোমর ব্যথা হয়ে থাকে। কিন্তু এই কোমর
ব্যথা কমানোর যে উপায় রয়েছে সেই সম্পর্কে আমাদের তেমন একটা ধারণা নেই। সেজন্য আমি
আজকে একটি সঠিক ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবো। তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে
পড়ুন।
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন। তাহলে কোমরের ব্যথা কমানোর
ব্যায়াম সম্পর্কেও সঠিক ধারণা পেয়ে যাবেন। এইগুলো সম্পর্কে আমাদের ধারণা রাখা
প্রয়োজন। তাই দেরি না করে চলুন জেনে নেয়া যাক বিষয়গুলো।
ভূমিকা
প্রিয় বন্ধুরা আমরা অনেকেই দেখে থাকি যে কোমরের ব্যথা কতটা যন্ত্রণাদায়ক এই
কোমর ব্যাথার কারণে ঠিকমতো হাঁটাচলা উঠাবসা কোন কিছুই ভালোভাবে করা যায় না এই
কোমর ব্যাথার কারণে অনেক মানুষ অনেক যন্ত্রণায় ভুগেন তাই আজকে আমি কোমরের
ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আলোচনা করতে চলেছি যদি আপনার এই সম্পর্কে
জানার আগ্রহ থাকে তাহলে আজকের এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন এই আর্টিকেলটি ধৈর্য
সহকারে পড়লে সমস্ত কিছু খুব ভালোভাবে বুঝতে পারবেন চলুন তাহলে আর দেরি না করে
সেই সমস্ত বিষয়গুলো জেনে নিন।
মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার
মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে নিশ্চয়ই আপনি জানতে চান। তাহলে
এই পোষ্ট থেকে জেনে নিতে পারেন। খুব সুন্দর করে এই পোষ্টে আলোচনা করেছি। বিশেষ
করে গর্ভবস্থায় মহিলাদের শরীরে ওজন অনেক বৃদ্ধি হয়ে যায় এবং হরমোনের
পরিবর্তনের কারণে এই কোমর ব্যাথা হতে পারে।
মাসিকঃ মেয়েদের এই মাসিক হওয়াটা খুব স্বাভাবিক বিষয়। যদি জরায়ু
সংকুচিত হয় এর ফলে কোমর ব্যাথা হতে পারে। মাসিকের সময় এই ব্যথাটা অনুভব করা
যায়।
মানসিক চাপঃ মহিলাদের বিভিন্ন কারণে মানসিক চাপের মধ্যে থাকতে হয়। এই
মানসিক চাপের কারণে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে কোমর ব্যথাও
হতে পারে।
পেশী টানঃ বিশেষ করে বেশিরভাগ মহিলাদের এই সমস্যাটা হয়। অনেক কাজ করার
ফলে বেশি অনেক টান পড়ে যায়। যেমন ভারী কাজ করা, বিভিন্ন ভারী জিনিস তোলা,
অতিরিক্ত ব্যায়াম এগুলোর কারণে পেশী টান হতে পারে। তাই এই ভুলের কারণে আপনার
কোমর ব্যথা হতে পারে।
অস্বাস্থ্যকর জীবনধারাঃ আপনি যদি অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস করে থাকেন
তাহলে এর থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন। কারণ অস্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়ার ফলে
আপনার শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এতে করে আপনার কোমর ব্যথা অনেক বাড়তে
পারে। তাই অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকবেন।
মেরুদন্ডের সমস্যাঃ অস্টিওআর্থারাইটিস, স্পন্ডিলাইটিস, বা ডিস্ক
হারনিয়েশন এই গুলোর মতো মেরুদন্ডের সমস্যাগুলো কোমর ব্যথার কারণ হতে
পারে।
অন্যান্য কারণেঃ এন্ডোমেট্রিওসিস, কিডনি
পাথর, ফাইব্রোমিয়ালজিয়া এবং ইউটিআই (UTI) মতো ও অন্যান্য অবস্থাও
কোমর ব্যথা হতে পারে।
মহিলাদের কোমর ব্যথার প্রতিকার
নিয়মিত ব্যায়ামঃ যদি আপনি নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারেন তাহলে আপনার
শরীরের নানা ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাবেন। এর পাশাপাশি আপনার স্বাস্থ্য অনেক
ভালো থাকবে এবং কোমর ব্যথা প্রতিরোধে বেশ সাহায্য করে।
বিশ্রামঃ আপনি কাজের পাশাপাশি একটু করে বিশ্রাম করে নিবেন। এটা করলে
আপনার শরীরে অনেক উপকার হবে। যদি আপনার শরীর প্রচুর পরিমাণে ব্যথা করে তাহলে
একটু বিশ্রাম নিলে সে ব্যথা ঠিক হয়ে যায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণঃ অতিরিক্ত ওজনের কারণে কোমরের উপর অনেক বেশি চাপ পড়ে।
আর এই বেশি চাপের কারণে কোমর ব্যাথা সৃষ্টি হতে পারে। তাই অতিরিক্ত ওজন থাকলে
কমিয়ে ফেলার চেষ্টা করুন। এতে করে ব্যথা অনেক কমে যাবে।
ব্যথার ওষুধঃ অ্যাসিটামিনোফেন অথবা আইবুপ্রোফেন এই গুলো ওষুধ
যদি খেতে পারেন তাহলে আপনার কোমর ব্যথা কমে যাবে। এই ওষুধ গুলো ব্যথা কমাতে
সাহায্য করে। তবে এই ওষুধ সেবন করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে
তারপর সেবন করবেন।
সঠিকভাবে বসাঃ যদি আপনি সঠিক ভাবে বসতে না পারেন তাহলে আপনার কোমর ব্যথা
হতে পারে। কোন কিছু তোলার সময় অবশ্যই আপনার কোমর সঠিকভাবে রাখবেন। এমনভাবে
জিনিস তোলার চেষ্টা করবেন যাতে করে আপনার কোমরে অতিরিক্ত চাপ না পড়ে। অতিরিক্ত
চাপের কারণে কোমর ব্যথা হয়ে থাকে। তাই অতিরিক্ত চাপ যেন না হয় সেদিকে একটু
লক্ষ্য করবেন।
ফিজিওথেরাপিঃ আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন এই ফিজিওথেরাপিস্ট শরীরের শক্তি
ও নমনীয়তা বৃদ্ধি করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। এই ফিজিওথেরাপিস্ট কোমর ব্যথাও
অনেক কমিয়ে নিয়ে আসতে সাহায্য করে। তাই যদি আপনার কোমর ব্যথার সমস্যা থাকে
তাহলে ফিজিওথেরাপিস্ট করতে পারেন। এতে করে অনেক ভালো ফলাফল পাবেন।
কোমরে ব্যথা যে কারণে হয়
অনেক সময় দেখা যায় বুক পেট এবং তলপেটের মধ্যে বিভিন্ন অঙ্গের সমস্যার কারণে
এই কোমর ব্যথা সৃষ্টি হয়। এই কোমর ব্যথা খুবই যন্ত্রণাদায়ক। এই কোমর ব্যথার
কারণে অনেক মানুষ রয়েছে ঠিক মতো কাজ করতে পারে না। কোনো কাজ করতে গেলে এই
ব্যাথা আরও বেশি বেড়ে যায়। কোমর ব্যথা যে কারণে হয় অনেকক্ষণ পর্যন্ত বসে
থাকলে ব্যথা হয়ে থাকে।
কিছু কোমর ব্যথার কারণ নিচে দেওয়া হলোঃ
- যারা দীর্ঘক্ষণ ধরে অফিস করে থাকেন এবং একই ভঙ্গিতে বসে কাজ করেন। তাদের কোমর ব্যথা অনেক বেশি হয়ে থাকে।
- আপনি যে চেয়ার টেবিলে বসে কাজ করেন। সেই চেয়ার টেবিলে ঠিকমতো বসতে না পারলে এই কোমর ব্যথা হতে পারে। এছাড়াও সামনে-পিছনে ঝুলে বসে কাজ করলেও অনেক বেশি ব্যথা পেতে পারেন।
- অনেকক্ষণ পর্যন্ত ডাইভিং করলে অথবা সামনে বেশি করে ঝুলে গাড়ি চালালে এই কোমর ব্যথা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য ড্রাইভিং করার সময় পেছনে কিছুর সাপোর্ট নিবেন। তাহলে সমস্যা হবে না।
- যারা কাত হয়ে অথবা শুয়ে বই পড়েন বা কাজ করেন। তাদের মেরুদন্ড অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে করে ব্যথা অনুভব হয়।
- অনেকেই রয়েছে যারা ভারী জিনিস সঠিকভাবে তোলেন না। ফলে মেরুদন্ডতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে যায়। যার ফলে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ব্যথা অনুভব হয়।
উপরে যে কারণগুলো আলোচনা করা হলো ঠিক এইগুলোই কারণে কোমর ব্যথা হতে পারে। তাই
এগুলো কারণ থেকে অবশ্যই একটু বিরত থাকার চেষ্টা করবেন। আর সঠিক নিয়মে কাজ
করবেন এতে করে কোমর ব্যথা হবে না।
কোমরের ব্যথা কমানোর ট্যাবলেট
কোমরের ব্যথা কমানোর ওষুধ সম্পর্কে অনেকেরই জানার আগ্রহ রয়েছে। অনেকেই
কোমর ব্যথার সঠিক ওষুধ খুঁজে পাচ্ছেন না। কোমর ব্যথার বিভিন্ন ওষুধ রয়েছে
বাজারে খেয়ে আরাম পাই না। কোমর ব্যাথা হলে অনেক কষ্ট পেতে হয় এইটা সবাই
জানি। এই কোমর ব্যথা সারানোর জন্য খুব দ্রুত যে ওষুধগুলো কাজ করবে সে
ওষুধগুলো নিয়ে আজকে আমরা আলোচনা করেছি। কোমর ব্যথা অথবা লো-ব্যাক পেইন এটি
খুব মারাত্মক একটি রোগ।
পৃথিবীতে প্রায়ই কম বেশি অনেক মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। কোমর ব্যথা হলে
অস্বাভাবিক যন্ত্রণা করে। এই কোমর ব্যাথার কারণে ঠিকমতো বসতে পারেনা
হাটাহাটি করতে পারেনা। এগুলো করলে আরো বেশি কষ্ট পায়। তাই যে ওষুধগুলো খুব
দ্রুত কাজ করবে সে ওষুধ গুলোর নাম এবং খাওয়ার নিয়ম সকল বিষয়ে আলোচনা
করব। চলুন তাহলে জেনে নিন।
ঔষধের নামঃ অ্যানাফ্লেক্স ম্যাক্স ৩৭৫ (Anafiex max 375)
এই ওষুধটি খুবই কার্যকরী একটি ওষুধ। এই ওষুধের মূল উপাদান হচ্ছে
নেপ্রোক্সেন (Naproxen) ও এসোমেপ্রাজল (Esomeprazole) কোমরের ব্যথা দূর
করতে এই নেপ্রোক্সেন সাহায্য করে এবং গ্যাস্ট্রিক দূর করতে এসোমেপ্রাজল
সাহায্য করে।
আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন যে ব্যথার ওষুধ খেলে গ্যাসের ওষুধ
খেতে হয়। তবে অ্যানাফ্লেক্স ম্যাক্স ৩৭৫ এই ওষুধটি খেলে গ্যাসের কোন ওষুধ
খেতে হয় না। আপনারা এই ওষুধ বাজারেই পাবেন বিভিন্ন নামের রয়েছে, যেমন
অ্যানাফ্লেক্স ম্যাক্স, সোনাপ ইত্যাদি নামে পাওয়া যায়।
অ্যানাফিক্স ম্যাক্স ৩৭৫ খাওয়ার নিয়মঃ
এই ওষুধটি আপনি সকালে একটি করে খেতে পারেন এবং রাতে একটি করে খেতে পারেন।
তাহলে ব্যথা অনেক আরাম পাবেন। তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপর
ঔষধ সেবন করবেন। আশা করি বিষয়টি বুঝাতে পেরেছি।
মায়োরেল (Mayoral)
এটি হচ্ছে ব্যথার ওষুধ। এই ওষুধ আপনি বাজারে পাবেন। এই ওষুধটি ৫ মিলিগ্রাম
ও ১০ মিলিগ্রাম আকারেও পেয়ে যাবেন। এই ওষুধের মূল উপাদান হচ্ছে
ব্যাক্লোফেন। এই ওষুধ কোমর ব্যথা দূর করতে বেশ সাহায্য করে।
যে সকল
কারণে ব্যাথার ঔষধ কাজ করে না সেক্ষেত্রে ব্যাক্লোফেন মতো ওষুধটি মাংসপেশি
শিথিল করন হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এই মায়োরেল ওষুধ খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে
সকালে একটি করে খাবেন এবং রাতে একটি করে খাবেন।
নাপাদোল ওষুধটি প্যারাসিটামল ও ড্রামাডল হাইড্রোক্লোরাইড এই দুটি মেডিসিন
দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। সাধারণত এই ওষুধটি ব্যথা দূর করতে এবং যাদের কামড়ে
ব্যথা হয় তাদের জন্য এই ওষুধটি ব্যবহার করতে বলা হয়।
তবে এই ওষুধটি
শুধুমাত্র প্রাপ্ত বয়স্কেরাই খেতে পারবেন। এই ওষুধ খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে
দিনে দুইটি করে খেতে হবে অর্থাৎ সকালে এবং রাতে। এই ওষুধ খাওয়ার আগে
অবশ্যই গ্যাসের ওষুধ খেয়ে তারপর ওষুধ খাবেন। এই ওষুধটি খাওয়ার পর
খাবেন।
যদি এইগুলো ওষুধ খেয়ে আরাম না পেয়ে থাকেন। তাহলে আরও কিছু ওষুধ রয়েছে
যেগুলো খেলে আরাম পাবেন। এই ঔষধগুলো আরো বেশি কার্যকরী। এই ওষুধ ব্যথার
জন্য অত্যন্ত ভালো। নিচে আরো ওষুধের নাম দেওয়া হলোঃ
- ন্যপ্রক্সেন সোডিয়াম--(Naproxen sodium)।
- আইবুপ্রোফেন--(Ibuprofen)।
এছাড়াও বাজারে আরো অনেক রকমের ওষুধ পাবেন ওষুধগুলোর নাম হলোঃ
- Naspro--(500mg)।
- Nuprafen--(500mg)।
- Naprox--(500mg)।
- Napro--(500mg)।
- Sonap--( 500mg)।
- Ecless--(500mg)।
- Napro A--(500mg)।
- Xenapro--(500mg)।
- Napryn--( 500mg)।
- Diproxen--(500mg)।
কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
পৃথিবীতে ব্যথায় ভোগা মানুষের অভাব নেই। ডানে বামে চারপাশে তাকিয়ে থাকলেই
শুধু মানুষের এই সমস্যা দেখা যায়। দিন দিন এই ব্যথার সংখ্যা অনেকটা বেড়ে
যাচ্ছে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা দেখা দিতে পারে। এই ক্ষেত্রে কোমরের
ব্যথা আরো বেশি যন্ত্রণাদায়ক দেখা দেয়। এই কোমরের ব্যথার সঙ্গে সঙ্গে
শরীরে আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তাই এটা খুব দ্রুত ভাবে যদি আপনি ভালো না করেন তাহলে এই যন্ত্রণাদায়ক
ব্যথা নিয়ে সারা জীবন থাকতে হবে। কোমরের ব্যথার কারণে প্রায় অনেকেই ঠিকমত
বসতে পারেনা, হাঁটতে পারে না, ঠিকমতো উঠতে পারে না, এইজন্য যারা এই
সমস্যায় আক্রান্ত তাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।
কোমরের সমস্যার সমাধানঃ
কোমরে যে ব্যথা সৃষ্টি হয় সেই ব্যাথা সমাধান আমাদের হাতের কাছেই থাকে।
আবার আমরা চাইলে ঘরোয়া উপায়ে এই ব্যথা দূর করতে পারি। চলুন জেনে নেয়া
যাক কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে।
- বেশিক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকবেন না। বেশিক্ষণ বসে থাকলে আপনার কোমরের ব্যথা হতে পারে।
- সব সময় বসে না থেকে একটু উঠে ব্যায়াম করতে পারেন। হালকা করে কোমর ভাজ করে কিছু শরীরচর্চা করতে পারেন। এতে করে কোমরের সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। তবে মাটিতে বসে কাজ করবেন না। এতে করে সমস্যা হতে পারে।
- নরম বিছানায় ঘুমাবেন না। নরম বিছানায় ঘুমালে আপনার কমোর ব্যথা করতে পারে। এছাড়াও নরম ম্যাট্রেস অথবা ফোমের বিছানায় ঘুমাবেন না।
এছাড়াও যে সব ঘরোয়া উপায়ে কোমরের ব্যথা দূর করবেনঃ
আদাঃ কোমরের ব্যথায় আরো অনেক ভালো কার্যকরী এই আদা। কারণ এই আদতে
রয়েছে খুব ভালো পরিমাণে পটাশিয়াম। আর এই পটাশিয়ামের অভাবে নার্ভের
সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই প্রতিদিন যদি আপনি নিয়ম করে আদা খেতে পারেন।
তাহলে আপনার কোমরের যন্ত্রণা অনেকটা কমে যেতে পারে।
সেঁক দেওয়াঃ যদি আপনার কোথাও ব্যথা হয়ে থাকে তাহলে প্রাথমিকভাবে
সেঁক দিলে অনেকটা ব্যথা আরাম পাওয়া যায়। এজন্য কোমরের যেখানেই ব্যাথা হোক
না কেন সেখানেই সেঁক দিতে পারেন। এতে করে অনেকটা আরাম পাবেন।
এছাড়াও হট
ওয়াটার ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। এই হট ওয়াটার ব্যাগে গরম পানি ঢেলে
যেখানে আপনার ব্যথা সেখানে দিয়ে রাখতে পারেন। যদি কোমরে ব্যথা হয় তাহলে
সেখানে দিলে আরো বেশি উপকার পাবেন।
লেবুর শরবতঃ যদি আপনি লেবুর শরবত খেতে পারেন তাহলে খুবই ভালো কাজে
দেবে। কারণ লেবুতে রয়েছে অনেক পরিমান ভিটামিন সি যা ব্যথা কমাতে সাহায্য
করে।
মেথি বীজঃ গুড়া দুধ ও মেথি বীজ একসঙ্গে মিশে যদি আপনি ব্যথার
জায়গায় লাগিয়ে রাখতে পারেন। তাহলে অনেক উপকার পাবেন। এতে করে ব্যথা
কিছুটা কমে যাবে।
হলুদঃ প্রতিদিন নিয়ম করে এক গ্লাস দুধের সঙ্গে সামান্য পরিমাণে
হলুদ মিশিয়ে খেলে আপনার কোমরের ব্যথা কমে যাবে।
ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম জাতীয় খাদ্য গ্রহণঃ আপনি যদি প্রতিদিন
নিয়ম করে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম জাতীয় খাদ্য খেতে পারেন। তাহলে এই
ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তাই প্রতিদিন নিয়ম করে শাকসবজি, ফল, দুধ,
বাদাম সহ আরো ইত্যাদি ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার খেতে পারেন।
অ্যালোভেরাঃ প্রতিদিন নিয়ম করে অ্যালোভেরা শরবত খেলে কোমরের ব্যথা
কমে যেতে পারে।
উপরে যে বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করলাম সেটা হচ্ছে কোমরের ব্যথা কমানোর
ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। আশা করি এই সম্পর্কে একটি সঠিক ধারণা পেয়েছেন। আমরা
উপরে সমস্ত কিছু খুব সুন্দর করে আলোচনা করেছি। এই সকল নিয়ম মেনে যদি আপনি
চলতে পারেন। তাহলে আশা করি খুব ভালো ফলাফল পারেন।
কোমরের ব্যথা কমানোর ব্যায়াম
কোমরের ব্যথা এটি খুব সাধারণ একটি সমস্যা। কিন্তু এই সমস্যা যদি অতিরিক্ত
হয়ে যায় তাহলে অনেক সমস্যা দেখা দেয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অসতর্কভাবে
হাঁটাচলা করা বা ওঠা বসার কারণে এই সমস্যা হয়ে থাকে। সঠিকভাবে ওঠাবসা
হাঁটাচলা করলে কোমর ব্যথা সাধারণত হয় না।
কিছু ব্যায়াম রয়েছে যে
ব্যায়াম কোমর ব্যথা প্রশমনে অনেক সাহায্য করে। এমনকি এইটা ওষুধের চেয়েও
বেশি ভালো কাজ করে। খুব অল্প সময়ে এই ব্যায়াম সহজেই করা যায়। চলুন তাহলে
জেনে নেয়া যাক কোমরের ব্যথা কমানোর ব্যায়াম সম্পর্কে।
- প্রতিদিন সকালে ও রাতে শুয়ে থেকে এই ব্যায়াম করতে পারেন। তবে অল্প সময়ে এই ব্যায়াম করলে খুব ভালো ফল পাবেন। সর্বোচ্চ সাত মিনিট ব্যায়াম করলে অনেক ভালো ফল পাবেন।
- নরম একটি বিছানায় চিৎ হয়ে শুয়ে পড়বেন। এরপর শরীরের দুই পাশে দুই হাত রেখে দুই পা সোজা করে শুতে হবে। এরপর আপনার যে হাঁটুর রয়েছে সে হাঁটু ভাঁজ না করেই এক পা উপরে আকাশের দিকে তুলে ধরে থাকুন। এইভাবে পা ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ড তুলে রাখুন। অথবা ১০ থেকে ১৫ বার গুনবেন। এরপর গুনা শেষ হলে পা নামিয়ে অপর পা টি আবার একই ভাবে তুলে নামিয়ে নিতে হবে।
- এরপর দুই হাটু ভাজ না করে যতদূর সম্ভব আকাশের দিকে দুই পা একসঙ্গে তুলবেন। ১০ সেকেন্ড অথবা ১০ গুনা পর্যন্ত পা উপরেই রাখবেন। তারপর আস্তে আস্তে নামাবেন।
- এবার দুই হাত দিয়ে হাটু ভাঁজ করে শক্ত করে বুকে লাগিয়ে রাখার চেষ্টা করুন। এইভাবে ১০ সেকেন্ড রাখতে পারেন। এরপর অপর হাঁটু সেই একইভাবে বুকে লাগিয়ে রাখুন। এরপর সময় পার করুন।
- এবার দুই হাত দিয়ে একসঙ্গে দুই হাটু ভাঁজ করে বুকে জড়িয়ে 10 সেকেন্ড রাখার পর ছেড়ে দিন।
- সর্বশেষ ধাপটি হচ্ছে আপনার দুই পা একদম সোজা করে পায়ের পাতা বরাবর সটান করে ১০ সেকেন্ড রেখে দিবেন। এরপর সময় পার হলে আবার আগের মত রেখে দিবেন। এই ধাপগুলো যদি আপনি অনুসরণ করেন। তাহলে কোমর ব্যথা থেকে অনেক আরাম পাবেন।
এইভাবে প্রতিদিন সকালে ও রাতে দুই থেকে তিনবার করতে হবে এতে করে কোমরের যে
মাংসপেশীর প্রদাহ রয়েছে সেটা কমায় ও শক্তিশালী করে। ফলে খুব দ্রুত ব্যথা
কমিয়ে আসে। আশা করি কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় ও কোমরের ব্যথা
কমানোর ব্যায়াম সম্পর্কে সঠিক একটি ধারণা দিতে সক্ষম হয়েছি।
কোমরের ব্যথা কমানোর বেল্ট
কোমরে ব্যথা কমানোর বেল্ট সম্পর্কে ডাক্তার শামিম আহম্মেদ বলেছেন যে,
ট্রাকশন যে বিষয়টি সে বিষয়টি অনেক জটিল। আর এই বিষয়ে বলেছেন যে অনেক
রোগীরা রয়েছে ব্যাথা হলেই বেল্ট ব্যবহার করেন। কিন্তু এটা ঠিক নয়। যে সকল
রোগীরা কোমরে বেল্ট ব্যবহার করে তাদের কোমর অথবা ঘাড়ে পেশি অ্যাট্রোপি হয়ে
যায়। কারণ বেল্ট দিয়ে চেপে রাখার কারণে এই সমস্যা দেখা দেয়।
ডাক্তার শামিম আহম্মেদ আরো বলেছেন যে, আমরা বেল্ট পড়তে বলি কখন যখন
নড়াচড়া করার সময় অনেক ব্যথা বেড়ে যায় সেই সময় বেল্ট ব্যবহার করতে
বলি। তাহলে অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন যে কোমরে যদি বেল্ট ব্যবহার করেন তাহলে
সমস্যা কমবে না বরং বেড়ে যাবে।
তাই বেল্ট ব্যবহার করার আগে অবশ্যই
ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপর কোমরের বেল্ট ব্যবহার করবেন। আশা করি কোমরের
ব্যথা কমানোর বেল্ট ও কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বুঝতে
পেরেছেন।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আশা করি কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া
উপায় এবং কোমরের ব্যথা কমানোর ব্যায়াম সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা
দিতে সক্ষম হয়েছি। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে
অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এই আর্টিকেলটি বন্ধুদের
সাথে শেয়ার করলে আপনার বন্ধুরাও জানতে পারবে। তাই দেরি না করে আপনার
বন্ধুদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করুন।
এই রকম আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। এই
আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার কোনো মতামত জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট
করে সেটা জানিয়ে যাবেন। (ধন্যবাদ) আসসালামু আলাইকুম।
এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url