জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আপনার যদি না জানা থাকে। তাহলে আজকের এই
আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। আমাদের সবার প্রায় জ্বর হয়ে থাকে কিন্তু এই জ্বর থেকে
মুক্তি পাওয়ার উপায় সম্পর্কে আমাদের তেমন একটা ধারণা নেই। সেজন্য আমি আজকে একটি
সঠিক ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবো। তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন। তাহলে শিশুর জ্বর কমানোর
ঘরোয়া উপায় সে বিষয়েও সঠিক ধারণা পেয়ে যাবেন। এইগুলো সম্পর্কে আমাদের ধারণা
রাখা প্রয়োজন। তাই দেরি না করে চলুন জেনে নেয়া যাক বিষয়গুলো।
ভূমিকা
মানুষের শরীরে জ্বর হবে স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু এই জ্বর যদি অতিরিক্ত তাপমাত্রায়
হয়ে যায় তাহলে অনেক সমস্যা। জ্বরের কারণে মানুষের শরীরে অনেক সমস্যা দেখা দিতে
পারে। তাই আমাদের অবশ্যই জেনে নেয়া উচিত যে জ্বর কিভাবে আমরা ঘরোয়া উপায়ে
দূর করতে পারি সেই সম্পর্কে। আজকে আমরা আলোচনা করতে চলেছি জ্বর কমানোর
ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। অনেকেরই জানা নেই যে কীভাবে কি করবো। চলুন তাহলে আর দেরি
না করে সেই সমস্ত বিষয়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
জ্বর হলে কি স্যালাইন খাওয়া যাবে
মানুষের শরীরে এই জ্বরের সমস্যা থেকেই যায় বেশিভাগ। বিভিন্ন কারণে জ্বর হতে পারে
জ্বর মানুষের শরীরে সব সময় থাকে কারো কম কারো বেশি। আজকে আমরা জেনে নিব যে জ্বর
হলে কি স্যালাইন খাওয়া যাবে এই সম্পর্কে। এইগুলো আপনার অবশ্যই জানা প্রয়োজন।
কারণ জ্বর হলে কি স্যালাইন খাওয়া যাবে কি না সেগুলো ধারণা না রাখলে সমস্যা থেকেই
যাবে। তাই এই সম্পর্কে আপনার জানা জরুরী বলে আমি মনে করি। তাহলে চলুন দেরি না করে
জেনে নেয়া যাক সেই সমস্ত বিষয়গুলো।
আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে জ্বর হয়ে থাকে তাহলে আপনি অবশ্যই স্যালাইন খেতে
পারবেন। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে যাবেন না। যদি আপনার জ্বরের মাত্রা(১০৩)ডিগ্রির
ওপরে হয়ে যায় তাহলে আপনি স্যালাইন ইনজেকশন করে নিতে পারেন। তবে অবশ্যই
ডাক্তারের পরামর্শ স্যালাইন ইনজেকশন করবেন। জ্বর মানুষের শরীরে অনেক সমস্যার কারণ
হয়ে দাঁড়ায়। তাই এইটা খুব দ্রুত সমাধান করা উচিত।
আপনার শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখার জন্য আপনাকে অবশ্যই পানি পান করতে হবে তবে
এটা স্যালাইনের পানি হলে আরো ভালো হয়। জ্বর ছাড়াও আপনি স্যালাইন খেলে আপনার
শরীরের জন্য অনেক উপকার। শরীরের পানি শূন্যতা দূর করতে স্যালাইন অনেক ভালো
সাহায্য করে। জ্বর হলে শরীরের অতিরিক্ত তাপমাত্রা হয়ে যায় এর ফলে অনেক সমস্যা
দেখা দেয়। তাই সমস্যা থেকে একটু শান্তি পেতে এই স্যালাইন খেতে পারেন। আশা করি
বিষয়টুকু বুঝতে পেরেছেন।
জ্বর হলে ডিম খাওয়া যাবে কি
জ্বর হলে ডিম খাওয়া যাবে কি এই ব্যাপারে আপনার জানা না থাকলে আজকের পোষ্ট থেকে
জেনে নিন। আপনার যদি জ্বর হয় তাহলে আপনি ডিম ও খেজুর আরো অন্যান্য পুষ্টিকর
খাবার খেতে পারেন। ডিম এ রয়েছে অনেক পুষ্টি যা খেলে আপনার শরীরে অনেক ঘাটতি
পূরণ করবে। ডিমে থাকা প্রোটিন আপনার শরীরের জন্য ভালো। জ্বর হলে শরীর অনেক
দুর্বল হয় পড়ে। শরীরে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য এবং শরীরের
যে দুর্বলতা রয়েছে সেটা দূর করার জন্য।
রোগীদের পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার খাওয়া খুবই প্রয়োজন। সঠিক পুষ্টিকর
খাবার রোগীকে খুব দ্রুত সেরে উঠতে খুব সাহায্য করবে। তাই জ্বর হলে আপনাকে
অবশ্যই ওষুধের পাশাপাশি ভিটামিনযুক্ত খাবার খেতে হবে যেমন ডিম। এই ডিমে রয়েছে
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, ও বিভিন্ন পুষ্টি। এই পুষ্টিকর খাবার খেলে
আপনার শরীর দুর্বলতা অনেক কমে উঠতে সাহায্য করবে। বিশেষজ্ঞ মতে যেকোনো রকমের
পুষ্টিকর খাবার খেলে আক্রান্ত রোগীদের প্রোটিনের মাত্রা খুব দ্রুত বৃদ্ধি
করে।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। মুরগী মাংস, ডিম, মাছ এগুলোতে
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন-বি৬, বি-১২ জিংক এবং
সেলেনিয়াম। এই সকল কিছুই শরীরের হাড় মজবুত করার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যের
উন্নত করতে বেশ সাহায্য করে। শরীর দুর্বলতা কাটানোর জন্য এগুলো খাবার অনেক
প্রয়োজনীয়। তাই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় এইসব পুষ্টিকর খাবার রাখা খুবই
জরুরী।
বাচ্চার জ্বর কমানোর উপায়
সাধারণত এই জ্বর বাচ্চাদের একটি ভাইরাস। শরীরের অন্যান্য সংক্রমণ হলে এই
জ্বরে ভোগেন। দেহের একটি প্রতিরোধমূলক প্রক্রিয়া বলা যায় এই জ্বরকে। জ্বরের
কারণে জীবাণু অনুপ্রবেশ করে। শরীর তার বিরুদ্ধে লড়াই করার ফলে সেই জ্বর গড়ে
ওঠে। তবে ঘন ঘন জ্বর হওয়া একেবারে ভালো লক্ষণ নয়। এসব ক্ষেত্রে বাচ্চাদের
কোন সমস্যা রয়েছে কিনা সেটা জানা অবশ্যই প্রয়োজন। আজকে আমরা বাচ্চার জ্বর
কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করি মনোযোগ সহকারে পড়বেন
বিষয়গুলো।
- যেসব বাচ্চারা বেশি ঠান্ডা ও সর্দি কাশিতে ভোগেন। তাদের বেশিরভাগই সমস্যা হয়ে থাকে কান পাকা ও সাইনাস ইনফেকশন। এটা দ্রুত চিকিৎসা নেয়া অবশ্যই উচিত।
- কিছু কিছু রোগ রয়েছে যেটা বারবার আক্রমণ করতে পারে যেমন জ্বর। শরীরে জ্বর না থাকলে অসুস্থ বোঝা যাবে না। কিন্তু সব সময় জ্বর থাকলে সমস্যা দেখা দিবে। এই জ্বরের কারণে যক্ষা ম্যালেরিয়া ও টাইফয়েড জ্বরও হতে পারে।
- সব সময় যদি বাচ্চার শরীরে জ্বর থেকে থাকে সেরে না ওঠে। তাহলে এইটার কোন জটিল রোগ আছে কিনা সেটা দেখতে হবে। যেমন কিডনি ক্যান্সার এইগুলো দেখতে হবে।
জ্বর সেরে উঠতে করণীয়ঃ
অনেক সময় দেখা যায় যে জ্বর আসার কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। কিন্তু
শরীরে জ্বর চলে আসে বাইরের জনিত বা সর্দি জ্বরে বাচ্চাদের শরীরে অনেক ব্যথা
অনুভব করে অস্বস্তিকর হয়ে পড়ে। জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে প্রচন্ড কাঁপুনি শুরু
করে তাই প্যারাসিটামল খেতে সেরে যায়।
বাচ্চাদের জ্বর হলে বেশি বেশি বিশ্রাম দিতে হবে। কোন কাজ করা, স্কুলে যাওয়া,
খেলাধুলা করা এগুলোর প্রয়োজন নেই। বারবার প্রচুর পানি ও তরল জাতীয় খাবার
দিতে হবে। মুখে খাবার স্যালাইন অথবা পরিষ্কার বিশুদ্ধ পানি দিতে পারেন। তবে
জ্বর হলে কোনরকম ড্রিঙ্কস জোশ এগুলো খাওয়ানো থেকে বিরত থাকবেন। বাচ্চাদের
জ্বর হলে যে পানি দিয়ে গোসল করাবেন সেটা হচ্ছে কুসুম গরম পানি।
শরীরে যদি জ্বর থাকে তাহলে সেটা অবশ্যই ভালো করা উচিত। কারণ বেশি জ্বরের
কারণে অনেক বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। জ্বর হলে সর্বপ্রথম একটি পরিষ্কার
গামছা দিয়ে শরীর ভালো ভাবে মুছে নিবেন। আপনার কপালে সুন্দর করে জলপট্টি
ব্যবহার করবেন। পুষ্টিকর তরল জাতীয় খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন। পর্যাপ্ত
পরিমাণে ঘুম এবং বিশ্রাম করবেন। আর বেশি বেশি পানি পান করবেন। এইগুলো করলে
আপনার শরীরে জ্বর অনেকটা কমে আসবে।
বাচ্চার জ্বর অনেক সময় হয়ে থাকে সেজন্য তুলসী পাতার রস খাওয়াতে পারেন।
অথবা তুলসী পাতা সুন্দর করে বাটা করে কপালে লাগিয়ে রাখতে পারেন এতে করে জ্বর
অনেকটা কমে যাবে। যদি বাচ্চার অতিরিক্ত পরিমাণে জ্বর হয়ে থাকে তাহলে আপনি
অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। আশা করি বাচ্চার জ্বর কমানোর উপায়
সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।
ভাইরাস জ্বর কমানোর উপায়
বছরের যে কোন সময় ভাইরাস জ্বর হতে পারে এই রোগ বেশিরভাগ দেখা যায় আবহাওয়া
পরিবর্তনের সময় সাধারণত এই রোগটা ছোঁয়াচে ভাবে হয়ে থাকে। সেজন্য এই
ভাইরাসজনিত রোগটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে পরিবারের অনেকেরই একসঙ্গে
আক্রান্ত হতে পারে। কিন্তু কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে এই ভাইরাস জ্বর থেকে
আপনি অনেক মুক্তি পাবেন। অধিকাংশ সময় জ্বরের বিভিন্ন ধরন উপসর্গ দেখেই
ভাইরাস জ্বর নির্ণয় করা যায়।
ভাইরাস জ্বর কমানোর উপায় সম্পর্কে ডাক্তার বলেছেন যে এই জ্বর হলে আতঙ্কিত
হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। অন্যান্য জ্বরের মতোই এই জ্বরটি আপনার ভালো হতে ৫
থেকে ১৪ দিনের মতো লাগবে। এই ভাইরাসজনিত জ্বরের অন্যান্য যে রোগ রয়েছে
সেগুলোর মতই কোন প্রতিষেধক নেই এবং টিকাও নেই। সেজন্য এটা অন্যান্য জ্বরের
মতোই সঠিকভাবে চিকিৎসা করতে হয়।
ভাইরাস জ্বরের যে লক্ষণগুলো রয়েছে সেগুলোর মধ্যে প্রধান লক্ষণ গুলো হচ্ছে
চোখ লাল হয়ে যাওয়া, শরীরের পেশীতে খুব বেশি ব্যথা হওয়া, নাক দিয়ে পানি পড়া
এগুলো বড়দের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে শরীর প্রচুর পরিমাণে
গরম থাকবে, মুখ লাল বর্ণের হয়ে থাকবে, মাথা প্রচন্ড ব্যথা করবে সঙ্গে কাশি ও
সর্দি হবে, সব সময় বাচ্চাদের মাথা ভারী মনে হবে, এগুলো কারণ দেখা গেলে
বাচ্চাদের এই সমস্যা হয়ে থাকে। আরো কিছু নিচে উল্লেখ করা হলো--
ভাইরাস জ্বর হলে কিভাবে বুঝবেনঃ
- হঠাৎ করেই আপনার জ্বর চলে আসবে এবং এই জ্বর ৭ থেকে ৮ দিন পর্যন্ত চলতে থাকবে।
- শরীরের যে তাপমাত্রা রয়েছে সেটা দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। ১০৩ থেকে ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত জ্বর হয়ে থাকে।
- জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে আপনার প্রচুর পরিমাণে মাথা ব্যথা করবে। শরীর ঝিমঝিম করবে।
- বেশিরভাগ সময় জ্বরের সাথে সাথে সর্দি কাশি থাকবে।
- পেট ব্যথা ডায়রিয়া বমি এগুলো জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিতে পারে।
- শরীরে প্রচুর ব্যথা করবে হাত-পায়ে ব্যথা করবে। গলায় প্রচুর ব্যথা করবে এগুলো কারণ দেখা দিবে।
- জ্বরের মাত্রা যদি প্রচুর পরিমাণে হয়ে যায় তাহলে বাচ্চারা অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।
কিভাবে ভাইরাস জ্বর কমাবেনঃ
- শরীরে যদি জ্বর থাকে অথবা ব্যথা থাকে তাহলে শরীর ব্যথার ওষুধ খেতে পারেন।
- জ্বর নিয়ন্ত্রণ করতে হলে আপনার শরীর গামছা দিয়ে পানিতে ভিজে মুছতে হবে এবং মাথা সুন্দর করে ধুয়ে বাতাস করাতে হবে। জ্বর কোন সময়ের জন্য বাড়তে দেওয়া যাবে না। এতে করে সমস্যা হবে।
- স্বাভাবিকভাবে খাওয়া-দাওয়া করতে হবে। তবে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। পুষ্টিকর খাবার খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখে।
- প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে এবং বিশ্রাম করতে হবে। সাথে ফলমূল খেতে হবে। বাইরের কোন খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
- যদি আপনার গলা ব্যাথা সর্দি কাশি এগুলো হয় তাহলে সন্ধ্যাবেলা কপি অথবা চা খেতে পারেন।
সতর্কতাঃ
তবে হ্যাঁ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাবেন না।
এন্টিবায়োটিক ঔষধ খাওয়ার আগে অবশ্যই পরামর্শ নিয়ে তারপর খাবেন।
জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে অনেকেরই অজানা। আমাদের দেশে প্রায় মানুষই
কম বেশি জ্বরে ভুগেন। এই জ্বর থাকার কারণে শরীরে অ্যান্টিবডি অনেক
দুর্বল হয়ে যায় এবং জ্বর চলে আসে। কিছু কিছু মানুষের অল্প সময়ের জন্য জ্বর
থাকে। আবার কিছু কিছু মানুষের দীর্ঘ সময় পর্যন্ত জ্বর শরীরে থাকে। শরীরে
জ্বর থাকলে মুখের কোন রুচি থাকে না। খাবারের রুচি অনেকটা কমে যায় এই জ্বরের
কারণে।
জ্বর এলে অনেকে রয়েছে খুব দ্রুত সেরে উঠার জন্য নিজের মতো করে ওষুধ খেয়ে
থাকেন। কিন্তু এটা মোটেও ঠিক নয়। অবশ্যই জ্বর আসলে আপনার চিকিৎসার পরামর্শ
অনুযায়ী ওষুধ খাওয়াটা প্রয়োজন। এছাড়াও কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি আমি আজকে
আপনাদের সামনে বলবো। যে পদ্ধতিগুলো আপনি ব্যবহার করলে শরীরের জ্বর খুব দ্রুত
সহনশীল পর্যায়ে চলে আসবে।
পানিপট্টি দেওয়াঃ জ্বরের তাপমাত্রা যদি অতিরিক্ত পর্যায়ে চলে যায়
তাহলে পানিপট্টি দেওয়া উচিত। কারণ পানিপট্টি দিলে জ্বর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে
নিয়ে এসে যায়। এই ক্ষেত্রে যা করবেন একটি পরিষ্কার রুমাল পানিতে ভিজিয়ে
নিবেন। এরপর রুমাল সুন্দর করে কপালে দিয়ে রাখবেন। কিছুক্ষণ পর সেটা তুলে
নিবেন। তারপর আবার পানিতে ভিজিয়ে কপালে লাগাবেন। এইভাবে আপনি কয়েকবার কপালে
পানিপট্টি দিয়ে রাখবেন। তাহলে আশা করি ভালো ফল পাবেন।
তুলসী পাতাঃ জ্বর কমানোর জন্য অনেক প্রাচীনকাল থেকে এই তুলসী পাতার
ব্যবহার করে আসছে মানুষ। এই তুলসী পাতা জ্বর কমানোর জন্য অনেক কার্যকারী একটি
উপাদান। এই তুলসী পাতা তুলে নিয়ে এসে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে সেটা সুন্দর
করে বেটে কপালে লাগিয়ে রাখতে পারেন। এতে করে অনেক আরাম পাবেন।
অন্যদিকে তুলসী পাতার রস খেতে পারেন। তুলসী পাতার রস খেলে আপনার শরীরের জ্বর
শুধু কমবে না অন্যান্য অসুস্থ থাকলেও সেগুলো সুস্থ হয়ে যাবে। এই তুলসী পাতা
অনেক কার্যকরী একটি ঘরোয়া ঔষধ। এইটা ডাক্তারেরাও পরামর্শ দিয়ে থাকে
খেতে।
কুসুম গরম পানি ও নিম পাতা গোসলঃ আপনার যদি প্রচন্ড পরিমাণে শরীরে
জ্বর আসে তাহলে আপনি নিমপাতা গরম পানির সাথে মিশিয়ে গোসল করতে পারেন। এতে
করে জ্বর অনেক কমে যাওয়ার আশ্বাস থাকে।
আদা ও মধু মিশ্রণঃ গ্লাসে অল্প কিছু পরিমাণ গরম পানি নিবেন। এরপর বাটা
আদা ও মধু মিশে নিবেন। মিশ্রণ করার পর সেটা দুইবার অথবা তিনবার পান করবেন।
তাহলে ভালো ফলাফল পাবেন। যদি পারেন সাথে একটু লেবু মিশাতে পারেন।
তরল খাবার খাওয়াঃ আপনার শরীরে জ্বর থাকা অবস্থায় আপনাকে প্রচুর
পরিমাণে তরল খাবার খেতে হবে। বিশুদ্ধ পানি পান করবেন ফলমূল খাবেন এগুলো আপনার
শরীরে অনেক উপকার করবে। সাথে চা খেতে পারেন তাহলে অনেক উপকার পাবেন।
মধু ও লেবু মিশ্রণঃ শরীরে প্রচুর পরিমাণে জ্বর আসলে গ্লাসে অল্প কিছু
পরিমাণ পানি নিয়ে তার সাথে মধু ও লেবু মিশ্রণ করে নিবেন। এরপর সে মধু ও লেবু
মিশ্রণ পানি পান করবেন দিনে দুইবার। এতে করে আপনার শরীরের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস
করতে সাহায্য করবে এবং জ্বরও কমবে।
বিশ্রাম নেওয়াঃ জ্বর আসলে আপনি যত বেশি পারবেন বিশ্রাম নেবেন। কারণ
বিশ্রাম নিলে জ্বর কমে যায়। সেজন্য অবশ্যই জ্বর আসলে বিশ্রাম নিবেন।
শরীর পানি দিয়ে মুছতে পারেনঃ যদি আপনার তীব্র জ্বর শরীরে
থেকে থাকে তাহলে আপনি অবশ্যই একটি পরিষ্কার গামছা পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিয়ে
সারা শরীর মুছে নিতে পারেন। তাহলে অনেক উপকার পাবেন। এতে করে জ্বর কিছুটা কমে
আসবে।
শিশুর জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
পূর্বে আমরা জেনেছি জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। এখন আমরা জেনে নিব
শিশুর জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় গুলো সম্পর্কে। বিভিন্ন সময় শিশুদের শরীরে
জ্বর চলে আসে। কখন আসবে বলা মুশকিল হয়ে পড়ে। শরীরে জ্বর আসে আবহাওয়া
পরিবর্তনের কারণে। সন্তানদের জ্বর নিয়ে মা বাবা অনেক বিপদে থাকে। শিশুর
শরীর যদি বেশি গরম হয় তখন প্রচন্ড পরিমাণে কান্না শুরু করে।
হঠাৎ করেই শিশুদের জ্বর চলে আসে এগুলো দূর করতে হলে অবশ্যই আপনাকে সেই
সম্পর্কে জানতে হবে। শিশুর শরীরে তীব্র তাপমাত্রা হলে শরীরে প্রচুর জ্বর
এসে যায়। তাই কিছু ঘরোয়া নিয়ম মানলে শিশু অনেকটা বিপদমুক্ত থাকবে।
চলুন তাহলে জেনে নিন যে সমস্ত বিষয়সমূহ।
পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল খাবারঃ শিশুর যদি জ্বর হয় তাহলে তাকে
পর্যাপ্ত পরিমাণ তরল খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন। কেননা শিশুদের জ্বর হলে
শরীর থেকে খুব দ্রুত তরল কমতে থাকে। এতে ডিহাইড্রেশন শুরু হয়ে যায়। সেজন্য
নিয়মিত ডাবের পানি, বিশুদ্ধ পানি, শরবত ইত্যাদি খাওয়াবেন। তবে শিশুকে ভুল
করেও কফি অথবা চা খাওয়াবেন না। এতে করে পানি শূন্যতা দেখা দিবে।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ঘুমঃ
শিশুকে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম করানো উচিত। কারণ শারীরিক অবস্থা শিশুর ভালো
থাকে না। শিশুর শরীর খুব দ্রুত দুর্বল হয়ে যায়। সেজন্য শিশুর ঘুম ও
বিশ্রামের প্রয়োজন। এতে করে দুর্বল অনুভব কেটে যাবে। জ্বর হলে অবশ্যই শিশুকে
বিশ্রামের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে সঠিক বিশ্রাম শিশুর সুস্থতার নিয়ে আসবে।
কুসুম গরম পানিতে গোসলঃ শিশুকে অবশ্যই কুসুম গরম পানিতে গোসল
করাবেন। এতে করে জ্বর অনেক কমে যাবে।
তুলসী পাতার ব্যবহারঃ বিশেষ করে শিশুদের জন্য তুলসী পাতা অনেক
কার্যকরী একটি উপাদান। শিশুকে তুলসী পাতার রস খাওয়াতে পারেন কিংবা তুলসী
পাতা তুলে নিয়ে এসে সুন্দর করে পরিষ্কার করে পিষে কপালে লাগিয়ে রাখতে
পারেন। কিছুক্ষণ লাগানোর পরে ফেলে দিন। এতে করে শিশুর জ্বর অনেকটা কমে যাবে।
ঘরোয়া উপায়গুলো মেনেও যদি জ্বর না কমে তাহলে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের
পরামর্শ নিবেন। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে জ্বরের সিরাপ অথবা প্যারাসিটামল
খাওয়াতে পারেন। পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে এমন কিছু ফলমূল
খাওয়াতে পারেন ও অন্যান্য খাবার খাওয়াতে পারেন।
জ্বর কমানোর দোয়া জেনে নিন
এখন আবহাওয়া পরিবর্তনের সময়। এই সময় গুলোতে শরীরে বিভিন্ন অসুস্থতা দেখা
দিতে পারে। এইটা স্বাভাবিক বিষয়। এই অসুস্থতার মধ্যে সবথেকে বেশি হয়ে থাকে
জ্বর ও ঠান্ডা ইত্যাদি। সেজন্য আজকে জ্বর কমানোর দোয়া জেনে নিন।
দোয়াঃ
বিসমিল্লাহিল--কাবির--আউজু--বিল্লাহিল--আজিমি--মিন--শাররি--ইরকিন--না--আর--ওয়া--মিন--শাররি--হাররিন--নার।
অর্থঃ মহান আল্লাহ তায়ালার নামে, আমি মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে আশ্রয়
প্রার্থনা করছি, রক্তচাপের আক্রমণ থেকে এবং জাহান্নামের উত্তপ্ত আগুনের ক্ষতি
থেকে।
জ্বর অথবা অন্যান্য কোন ব্যথা হলে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এই দোয়াটি পড়তে বলেছেন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকল ধরনের অসুস্থতা
থেকে মুক্ত রাখুন। আমিন
লেখকের মন্তব্য
এই রকম আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার কোনো মতামত জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে সেটা জানিয়ে যাবেন। (ধন্যবাদ) আসসালামু আলাইকুম।
এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url